নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অস্তিত্বকে ছাড়তে নেই,ভুলতে নেই...

মৃত্তিকামানব

আজীবন মাটির মানুষ হয়ে থাকতে চাই।হিংসা, অহংকার,ভন্ডামী এই তিন শক্তিশালী শত্রুর বিরুদ্ধে জিততে চাই

মৃত্তিকামানব › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রবীণ

১২ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:০১

গত পহেলা অক্টোবর বরাবরের মতই নিরবে চলে গেলো বিশ্ব প্রবীণ দিবস।প্রবীণের কথা আসলেই আমার মনে পড়ে জীবনের শেষদিকে করা শাহ আব্দুল করিমের গান 'আগের বাহাদুরি এখন গেল কই?' আবার মনে পড়ে সায়ানের আমি সুন্দর হব গানের একটা লাইন 'জানি কোন বৃদ্ধের বহুবার বলা গল্পটা একঘেয়ে, আমি আবার শুনবো বহুবার শোনা গল্পটা মন দিয়ে'। বেশ কয়েকজন বৃদ্ধাকে খুব কাছ থেকে জীবনের শেষ অবস্থায় দেখে বারবার নিজের কথা মনে হত, আমি যদি বার্ধক্য পর্যন্ত বেঁচে থাকি সে সময় কি একটু কথা বলার জন্য কাউকে পাবো? আজকের এত বন্ধু-বান্ধব,আত্মীয়স্বজন কারো সাথে কি দেখা হবে তখন? আমি আমার সন্তান,নাতি-নাতনীদের কাছে বোঝা হয়ে যাব না তো!, আমার ডাকে তারা কি বিরক্ত হবে? প্রবীণ সম্পর্কে সম্ভবত সবচেয়ে সহজ সরল ব্যাখ্যাটি দিয়েছিলেন আমার সদ্যপ্রয়াত দাদা। তিনি একবার আমাকে চট্টগ্রামের ভাষায় বলেছিলেন, "বাচ্চারা দাদা বলে বুঝাতে চাই 'দা, দা, আঁরা আইসসি তঁরা এহন দা'(পালিয়ে যা, পালিয়ে যা, আমরা এসেছি তোরা এখন পালিয়ে যা) আর নানা বলে বুঝাতে চাই 'না,না,আঁরা আইসসি তঁরা আর না' (না,না, আমরা এসেছি তোরা আর না)"

দাদা,দাদী,নানা,নানী,মা,বাবা এরা হলেন আমাদের পারিবারিক ব্যবস্থার খুঁটি। একজন মারা গেলেই হেলে পড়ে আমাদের সম্পর্কের দালান।নানা-নানী দুনিয়া ছেড়ে চলে যাবার পর মামা,খালাদের মধ্যকার সম্পর্কে আস্তে আস্তে মরিচা পড়ে যায়,নানারবাড়ী হয়ে যায় মামারবাড়ী।শৈশব কৈশোরের স্মৃতিবিজড়িত সে বাড়ী আর টানতে পারে না আমাদের। এদিকে আমাদের ঘরও বাড়তে থাকে ধীরে ধীরে।আমরাও মামা-খালা হই,মা-বাবা হয়ে একসময় দাদা-দাদী, নানা-নানী হয়ে জীবনচক্র সম্পন্ন করে মিশে যাই মাটিতে।

সুকান্ত বলেছিলেন, "এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য ক'রে যাব আমি,নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।"
প্রবীণ দিবসে বলতে ইচ্ছা করে, 'এ প্রবীণদের সুন্দর বিদায় দিবো আমি,প্রবীণ দিবসে এ আমার চির অঙ্গীকার।'

সুকান্তের কথা আমরা রাখতে পারি নি, বরঞ্চ এ বিশ্বকে শিশুদের জন্য বসবাসের অযোগ্য করে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত।এবার অন্তত নিজেদের জন্য হলেও প্রবীণদের কথা ভাবতে পারি।

একজন নিঃসঙ্গ বৃদ্ধাকে খুব কাছ থেকে দেখে গতবছর করোনা মহামারীর শুরুর দিকে লিখেছিলাম নিচের গান-

সময় যখন যাইরে ফুরাই
কেউ থাকে না পাশে
আপন মানুষ যাইরে চেনা
গেলে শেষ বয়সে

বয়স যতই সামনে হাঁটে
ততই বাড়ে ঘর
কাছের মানুষ ছিল যারা
হইতে থাকে পর

ঘরের লোকে ভাবে বোঝা
বাধা তাদের রঙ্গ রসে
আপন মানুষ যাইরে চেনা
গেলে শেষ বয়সে

দেশদুনিয়া ঘুইরা মানুষ
পইড়া থাকে বিছানায়
আছে বহু বন্ধু স্বজন
কথা কইবার কেহ নাই

এই দুনিয়ায় চলে সবাই
যোগ বিয়োগের অঙ্ক কষে
আপন মানুষ যাইরে চেনা
গেলে শেষ বয়সে।

সময় যখন যাইরে ফুরাই
কেউ থাকে না পাশে
আপন মানুষ যাইরে চেনা
গেলে শেষ বয়সে।


মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:৫৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


শেখ হাসিনা দেশের কিছু বয়স্কদের সামান্য সাহায্য করছেন; মনে হয়, উনি বাজেট থেকে দিচ্ছেন; সব বয়স্কদের জন্য যদি এই ব্যবস্হা করা যায়, ইহা হবে, আসল পদক্ষেপ; উহা কিভাবে করা যায়?

২| ১২ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:৫৬

চাঁদগাজী বলেছেন:





৬ বছরের ৬০টির মতো মন্তব্য করেছেন, আপনি কি অন্যদের লেখা পড়েন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.