![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাবা, ওই দুই ভদ্রলোক কবে মরবে?
গত ২০ নভেম্বর শুক্রবার রাতে বাসায় ফেরার পর ঠিক এভাবেই আমাকে প্রশ্নটি করেছিল আমার মেয়ে। এটা কিন্তু নিছক কোনো নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন ছিল না। বরং তার উচ্চারণে কিছু একটা ছিল, যেন সে জানতে চাচ্ছে, কেন মৃত্যুদ-প্রাপ্ত দুই যুদ্ধাপরাধীর রায় দ্রুত বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না? আমার মেয়ে দেশের রাজনীতির বিষয়ে তেমন একটা আগ্রহী নয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার প্রায় আড়াই দশক পর তার জন্ম। ওদের কাছে মুক্তিযুদ্ধ কল্পকথার মতো। তারা যখন মুক্তিযুদ্ধের নৈতিক ভিত্তির কথা শোনে বড়দের কাছে, বিশ্বাস করে না। সামাজিক বৈষম্যের প্রতিবাদেই যদি এই যুদ্ধ হয়ে থাকে, মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠাই যদি এই যুদ্ধের পটভূমি হয়ে থাকে, একটা ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সমাজ কায়েম করা যদি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আকাক্সক্ষা ছিল, তা হলে কোথায় সেই যুদ্ধজয়ের প্রাপ্তি? এ সবের কোনো কিছুই কি আছে আমাদের চলমান বাস্তবতায়?
তারপরও মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাঁথা এই প্রজন্মকে আপ্লুত করে। একটা প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনী, তাদের অত্যাধুনিক সব মারণাস্ত্রের বিরুদ্ধে এই দেশের সাধারণ মানুষের প্রতিরোধ যুদ্ধ এবং শেষ পর্যন্ত জয়ী হওয়া, এসব শুনতে শুনতে তাদের চোখমুখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। আর বিপরীত দিকে, রাজাকার-আলবদরকে কর্মকাণ্ডের কথাগুলো যখন বলা হয়, তাদের চোখেমুখে দেখা যায় ঘৃণার ছায়া। মিলাতে পারে না তারা এই দেশের মানুষ হয়েও কিভাবে পাকিস্তানি বাহিনীর সমর্থনে নিরীহ বাঙালিদের ওপর এমন অত্যাচার করেছে, তাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে, ধর্ষণ করেছে। লুটপাট করেছে সহায় সম্পদ।
তাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি নিয়ে এই প্রজন্মের মধ্যে তেমন কোনো আপত্তি আমি দেখিনি। তারপরও আমার মেয়ে যখন জানতে চাইল ওই ‘দুই ভদ্রলোক’ কবে মরবে, কিছুটা অবাক কিন্তু হয়েছি। এই প্রজন্ম আচার আচরণে যথেষ্ট পরিশীলিত। তাই মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার মতো অপরাধ করা সত্ত্বেও এরা অপরাধীদের ‘ভদ্রলোক’ বলেই সম্বোধন করে। এরা তো অসহিষ্ণুও নয়। তা হলে কেন তার তর সইছে না? সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ডের চূড়ান্ত রায় হয়ে গেছে। আইনগত আর কোনো ধাপই বাকি নেই। দণ্ড কার্যকর হবেই, দুদিন আগে আর পরে। তারপরও কেন স্বভাববিরুদ্ধ আচরণ করছে এই ছেলেমেয়েরা? কেন তারা দ্রুত দণ্ড কার্যকরের কথা বলছে? আসলে এই দ্রুত দণ্ড কার্যকরের আকাক্সক্ষার পেছনে রয়েছে ফেসবুক, ভাইবার। ওরা ফেসবুক, ভাইবার ব্যবহার করতে পারছে না। কার কাছে যেন শুনেছে, দুই যুদ্ধাপরাধীর দণ্ড কার্যকর করা হলে দেশব্যাপী একটা গণ্ডগোল হতে পারে, এই আশঙ্কায় ফেসবুক, ভাইবার এসব সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফাঁসিটা দেওয়া হয়ে গেলেই ফেসবুক খুলে দেওয়া হবে। এই জন্যই হয়ত সাংবাদিক পিতার কাছে কন্যার জানতে চাওয়া, ওদের মৃত্যু কবে হবে।
যা হোক, দুদিন পর হলেও ওই দুই ভদ্রলোকের মৃত্যু হয়েছে। এরপর প্রায় এক সপ্তাহ পার হতে চলল, এখনো ফেসবুক খুলে দেওয়া হলো না। ভাইবার কখনো চলে, কখনো চলে না। ইন্টারনেট সেবাও যেন আর নেই আগের মতো সাবলীল। এর মধ্যে টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম একটা আজব কথা বললেন। কথা অবশ্য তিনি গত কয়েকদিন ধরেই বলে চলেছেন। সে সব কথাকে অযৌক্তিক, উদ্ধত, স্বৈরতান্ত্রিক এ রকম নানা বিশেষণে বিশেষায়িত করা যায়। তবে আজব কথাটার বিষয়ে আগে বলে নিই। তিনি বললেন, এই যে ফেসবুক বন্ধ রাখা হয়েছে, তা নিয়ে দেশের একজন মানুষও অসন্তুষ্ট নয়! আচ্ছা, ভদ্রমহিলার সমস্যাটা কি? আমি এখন পর্যন্ত এমন একজন মানুষও পাইনি যিনি এই ফেসবুক বন্ধ করা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেননি। আর সংশ্লিষ্ট প্রতিমন্ত্রী বলছেন দেশের একজন মানুষও অসন্তুষ্ট নন! তা হলে এত এত ফেসবুক ব্যবহারকারীকে উনি কি মানুষই মনে করেন না? উনি যে বললেন, একজন মানুষও অসন্তুষ্ট নয়, তার এই বক্তব্যের ভিত্তিটাই বা কি? তিনি কিন্তু কোনো তথ্যসূত্রের কথা উল্লেখ করেননি। এটা কি কোনো জরিপের ফল? নাকি হাজার হাজার মানুষ দল বেঁধে ওনার কাছে গিয়ে বলে এসেছে যে, ফেসবুক বন্ধ করায় তারা মোটেই অসন্তুষ্ট নন?
টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী মাঝে একদিন বললেন, যারা বিকল্প উপায়ে ফেসবুক ব্যবহার করছেন, তাদের ওপর নজর রাখা হচ্ছে। এটা কি হুমকি? এই হুমকি দেওয়ার এখতিয়ার কি ওনার আছে? কে দিয়েছে তাকে সেই অধিকার? সরকার কি সাধারণ মানুষকে ফেসবুক ব্যবহার করতে মানা করেছে? কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে? না, তা করেনি। সরকার তার ক্ষমতা খাটিয়ে ফেসবুক বন্ধ করে দিয়েছে। দেশের মানুষ তাদের সেই আচরণে খুশি হয়েছে নাকি বিরক্ত হয়েছে, বিষয়টি জানার প্রয়োজন পর্যন্ত মনে করেনি। তারপরও তারা নিজ দায়িত্বে ফেসবুক বন্ধ করে দিয়েছে। ফেসবুক বন্ধ করেছে, কিন্তু ফেসবুক ব্যবহার নিষিদ্ধ করেনি। করলে সরকারেরই কোনো কোনো মন্ত্রী বিকল্প উপায়ে এটি ব্যবহার করতেন না।
যেহেতু ফেসবুক নিষিদ্ধ করা হয়নি, তাই কেউ যদি বিকল্প উপায়ে সেটি ব্যবহার করে তাদের ওপর নজরদারির কথা উচ্চারণের দরকারটা কোথায়? এর মধ্যে প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম একটা খোলাচিঠিও লিখেছেন। লিখেছেন তিনি ফেসবুক বন্ধ করার পুরো দশদিন পরে। তারানা হালিম যে খুবই মেধাবী মানুষ, তার প্রমাণ আরও একবার পাওয়া গেল তার সুলিখিত এই চিঠিটিতে। কিন্তু মেধা এক জিনিস, আর নিয়ত আর এক জিনিস। ভুল লক্ষ্যে মেধার ব্যবহার কোনো ভালো ফল নিয়ে আসে না।
খোলাচিঠিতে তিনি ইনিয়ে-বিনিয়ে অনেক কথাই বললেন। বলার চেষ্টা করলেন, ফেসবুক বন্ধ করে দেওয়ার কারণেই নাকি এবার দুই যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসিকে কেন্দ্র করে কোনো গণ্ডগোল হয়নি। আচ্ছা, গণ্ডগোল কি কামারুজ্জামানের ক্ষেত্রে খুব একটা হয়েছিল? তবে গণ্ডগোল কিছু হয়েছিল কাদের মোল্লার ক্ষেত্রে, তাকে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার প্রতিবাদে হইচই হয়েছিল। আর সেটা অবশ্যই হয়েছিল এই ফেসবুকের কারণে। মাননীয় প্রতিমন্ত্রী কি সেটা ভুলে গেছেন? নাকি তখন তিনি তাতে দুঃখিত হয়েছিলেন? তখন ফেসবুক ব্যবহারকারী অনলাইন এক্টিভিস্টদের সেই প্রতিবাদ না হলে আইন পরিবর্তন হতো না, সরকারপক্ষ আপিল করতে পারত না, যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসিও হতো না। সরকার হয়ত ওই যাবজ্জীবন দিয়েই বেশ একটা আত্মতৃপ্তি অনুভব করতেন।
কেবল গণজাগরণ মঞ্চের কথাই বা কেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ভ্যাট আরোপের যে উদ্ভট সিদ্ধান্ত এই সরকার নিয়েছিল, সেটাও তো বাতিল করা যেত না যদি না এই ফেসবুকের মাধ্যমে ছাত্ররা ঐক্যবদ্ধ হতো। সরকারের অংশ হিসেবে তারানা হালিমের কাছে ওই ঘটনাটিকে আরামদায়ক মনে না-ই হতে পারে। কেবল তারানা হালিমই কেন, তার মন্ত্রিসভার অনেক সিনিয়র আর জাঁদরেল সদস্যের উদ্ধত ও দাম্ভিক উচ্চারণ তখন ওইসব ছোট ছোট বাচ্চার যুক্তির কাছে হাস্যকর বলে প্রতীয়মান হয়েছে। এবার অন্তত আমার তো কোনো সন্দেহ নেই যে, আগামী বছর সরকার আবার যখন ছাত্রদের ওপর এই ভ্যাট আরোপের উদ্যোগ নেবে, অবধারিতভাবেই তখন ফেসবুক বন্ধ করে দেবে।
সিলেটের শিশু রাজন হত্যার কথাই ধরা যাক। কিংবা খুলনার সেই শিশু রাকিব। ফেসবুকে ওদের নিয়ে লেখালেখি না হলে হতো এই নির্মমতার বিচার? সরকারের পুলিশ তো রাজনের হত্যাকারী কামরুলকে বিদেশ চলে যেতে সাহায্যই করেছিল। ফেসবুকে কি কেবল রাজনীতিই হয়? কত লক্ষ হাজার গ্রুপ যে সেখানে আছে, সেটা মুক্তবুদ্ধির চর্চা যারা না করে তারা বুঝবে কিভাবে? আমি নিজে এরকম কয়েকটি গ্রুপের সদস্য। শুদ্ধ বানান চর্চা (শুবাচ) নামে একটা গ্রুপ আছে, কোনো বানান নিয়ে দ্বিধা দেখা দিলে সেটা নিয়ে সেখানে আলোচনা করি।
বাংলা একাডেমির বানান অভিধান অনেক সমস্যার সমাধান যেমন করেছে, তেমনি বেশ কিছু ক্ষেত্রে বিভ্রান্তিও তৈরি করেছে। এরকম কিছু বিভ্রান্তি থেকে বের হতে এই পেজটি আমাকে সাহায্য করে। কেবল এ রকমই নয়, মনস্তাত্ত্বিক, স্মৃতিচারণমূলক, উদ্দীপনামূলক, সহমর্মিতামূলক, সাংগঠনিক অনেক পেজ রয়েছে। আমি নিশ্চিত, তারানা হালিম এসব বিষয়ে ভালোভাবেই জানেন। কিন্তু তিনি কি তার সিনিয়র সহকর্মী বা নেতা-নেত্রীদের বিষয়গুলোকে ঠিকমতো বুঝিয়ে বলতে পেরেছেন? নাকি ওনারা চেয়েছেন, আর সেই ইচ্ছাপূরণে নিজের মেধা-জ্ঞান-যুক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন?
বাজারে অনেক বই প্রকাশিত হয়। কিছু ভালো বই, কিছু মন্দ বই। কিছু বই মানুষকে জ্ঞান দেয়, আবার কিছু বই মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ায়। বিভ্রান্তিমূলক পুস্তক সরকার কয়টা বন্ধ করে থাকে? বরং উগ্রপন্থি জঙ্গিরা সে ধরনের বই বন্ধের জন্য বিক্রেতা, লেখক এবং সবশেষে প্রকাশকের ওপর হামলা চালায়। বিশ্বজিতকে হত্যা করা হলো, দীপনকে হত্যা করা হলো এই মানসিকতার দাপটেই। হত্যাকারীদের ধরতে সরকারের আন্তরিকতা কতটুকু ছিল বা আছে বলা মুশকিল। তবে দৃশ্যমান তৎপরতা যে ন্যূনতমের চেয়েও কম, সেটা উপলব্ধি করতে বিশেষ গবেষণার দরকার পড়ে না। বরং বিশ্বজিৎ বা দীপন নিহত হওয়ার পর সরকারের কর্তাব্যক্তিরা যেসব মন্তব্য করেন তাতে প্রকারান্তরে হত্যাকারী ধরতে সরকারের নেতিবাচক মনোভাবই প্রকাশিত হয়। তা হলে সরকার কি ওই গলাটিপে ধরার জঙ্গি মানসিকতাকে উৎসাহ দিচ্ছে?
সরকার অবশ্য খুব কালেভদ্রে কিছু কিছু বইকে নিষিদ্ধ করে। যেগুলোকে তারা সরকারবিরোধী, রাষ্ট্র বা ধর্মবিরোধী মনে করে সেগুলোকে নিষিদ্ধ করে। পুরো সমাজের স্থিতিশীলতা বা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে নিরাপদ রাখার কথা বলে বইগুলোকে নিষিদ্ধ করা হয়ে থাকে। এটা কেবল এই দেশেই নয়, পৃথিবীর বহু দেশেই হয়েছে। কিন্তু লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, পৃথিবীতে এ যাবৎ যত বই নিষিদ্ধ হয়েছে, তার সবই পরবর্তীকালে কখনো না কখনো আবার অবাধভাবে চালু হয়েছে এবং প্রতিবারই সেই নিষিদ্ধকরণের বিরুদ্ধে সমালোচনা হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনো কিছু নিষিদ্ধকরণেরই পক্ষে নই। যদি কোনোটি ক্ষতিকর হয়, কুরুচিপূর্ণ হয়, তাহলে তা মানুষই প্রত্যাখ্যান করবে। মানুষের কোনটা গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করা উচিত তা তাদের ওপরই ছেড়ে দেওয়া দরকার। সবার দায়িত্ব তো আপনার কাঁধে নিতে কেউ বলেনি।
ফেসবুক বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টিকে আমি কিন্তু ওই গ্রন্থ নিষিদ্ধের চেয়েও ভয়াবহ বলে মনে করি। কোনো একটি বই মন্দ হলে, কেউ কি পুরো প্রকাশনা শিল্পকেই বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলবেন? অথচ ফেসবুকের ক্ষেত্রে কিন্তু সেটাই হয়েছে। কেউ যদি আপত্তিকর কোনো পোস্ট দেয়, সেটি আপনি বন্ধ করে দিন, পোস্টটি যে দিয়েছে তাকে ধরুন। কিন্তু তা না করে পুরো ফেসবুকই বন্ধ করে দেওয়া তো মূর্খতা ভিন্ন আর কিছু নয়। খোলাচিঠিতে তারানা হালিম বলেছেন, ফেসবুক বন্ধ থাকার কারণে নাকি সরকার অনেক অপরাধীকে ধরতে পেরেছেন। ভালো কথা। তবে, কাকে কাকে ধরেছেন এবং সেটা ফেসবুক বন্ধ থাকার কারণে কিভাবে সম্ভব হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত যদি তিনি বলতেন, তাহলে ভালো হতো।
আমি এখানে তেমন কোনো যুক্তি খুঁজে পাই না। বরং যতদূর জানি, ফেসবুক থাকলেই আপত্তিকর পোস্টদাতাকে খুঁজে পাওয়াটা সহজ হয়ে থাকে। আসলে, ফেসবুক বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্ত, তার পক্ষে আইন নিয়ে পড়ালেখা করা টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রীর ওকালতি, এর কোনো কিছুই মুক্তবুদ্ধির মানুষের কাছে প্রশংসিত হয়নি। সরকার যদি গণমতের ওপর বিন্দুমাত্র তোয়াক্কাও করত, তা হলে এতবড় তুঘলকি সিদ্ধান্ত নিতে পারত না। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে ফেসবুকে সরকারের নানা কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে অনেকে পোস্ট দিয়ে থাকে। সে সবকে তো সরকারের আরও উৎসাহিত করা উচিত, সেখান থেকে নিজেদের ভুলগুলোকে চিহ্নিত করা উচিত।
কেউ ভুল ধরিয়ে দিলে আপনি ক্ষেপে যাবেন, এতটাই ক্ষিপ্ত হবেন যে ভুল ধরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমটিকেই বন্ধ করে দেবেন, আর তারপর নিজেকে ‘গণতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক’ বলে তারস্বরে চিৎকার করবেন- এটা হয় না।
ফেসবুক তো আসলে সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর। মানুষের গলাটিপে ধরে কথা বলতে না দেওয়ার নাম গণতন্ত্র নয়। এর নাম স্বৈরতন্ত্র।
০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:২৯
মাসুদ কামাল বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:২৮
নীলসাধু বলেছেন: বক্তব্যে শতভাগ সহমত জানাই।
ধন্যবাদ আপনাকে।
০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৩০
মাসুদ কামাল বলেছেন: লেখাটি কষ্ট করে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
৩| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:০৬
দিগন্ত জর্জ বলেছেন: খুবই যুক্তিযুক্ত কথা। ভালো লিখেছেন। আপনার চিন্তাকে পূর্ণ সমর্থন জানাই।
০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৩৩
মাসুদ কামাল বলেছেন: আমার চিন্তার প্রতি আপনার সমর্থনের জন্য উৎসাহিত বোধ করছি। ধন্যবাদ আপনাকে।
৪| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:১৫
এইচ আর খান বলেছেন: অসাধারন লেখা। তবে, আপনার সাথে একটি বিষয়ে দ্বিমত "তারানা হালিম যে খুবই মেধাবী মানুষ, তার প্রমাণ আরও একবার পাওয়া গেল তার সুলিখিত এই চিঠিটিতে। " চাটুকারিতা আর মেধা এক নয়। তার হেডলাইনটা বোধয় ছিল এরকম - সাধারন মানুষের প্রাণ রক্ষার্থে ফেসবুক বন্ধ করায় ক্ষমাপ্রার্থি"
এই লাইনটাই একটা ভন্ডামি।
যাইহোক, সরকারের অন্য মন্ত্রীরাও(জনসম্পৃক্ত যারা) এ ব্যাপারে তার সাথে দ্বিমত করছেন। কিন্তু, এইটা একান্তই তার সিদ্ধান্ত এবং সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে মৌনতার কারনে কোন সিদ্ধান্ত হচ্ছে না।
তবে, এইরকম লোকদেখানো টাইপ মন্ত্রী সরকারের জন্য আদতে ভালোর থেকে খারাপ ছাড়া কিছুই করছে না
০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৩৬
মাসুদ কামাল বলেছেন: আমি আপনার সঙ্গে একমত। তারপরও এটা কিন্তু সত্য যে, সরকারের অন্য কোন মন্ত্রী হয়তো এত কষ্ট করে একটা খোলা চিঠি লিখতেন না। এই জায়গাটিতে এই ভদ্রমহিলাকে কিছুটা কৃতিত্ব তো দেয়াই যায়, কি বলেন?
৫| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৫:৪২
কবি এবং হিমু বলেছেন: অনেক চমৎকার একটি লেখা।তারানা হালিম যে মেধাবী তাতে আমার কোন দ্বিমত নেই।তিনি অনেক মেধাবী তার প্রমান আমরা পেয়েছি।টিভিতে(নাটক) আমরা সেটার নমুনা ও দেখেছি।তবে তিনি যে চিঠিখানা লিখলেন সেটা নাটকের সংলাপ ছাড়া আর কিছুই মনে হয় নি।কি আবেগ রে বাবা---সাধারন মানুষের প্রাণ রক্ষার্থে ফেসবুক বন্ধ করায় ক্ষমাপ্রার্থি"।চোঁখে জল এসে গেল
০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৩৮
মাসুদ কামাল বলেছেন: তারানা হালিম তাহলে আপনার চোখে জল আনতে পেরেছেন! এটাই বা কম কি?
৬| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৫২
এইচ আর খান বলেছেন: এই সময়োপযোগী লেখাটা এত কমবার হিট পড়লো কেন বুঝলাম না। যাই হোক, আমরা কিন্তু তারানার এই সিদ্ধান্তে, ক্ষুব্ধ, বিক্ষুব্ধ এবং ত্যাক্ত বিরক্ত। বিশেষ করে আমার মতো যারা, ফেসবুক বা অন্যান্য সোস্যাল মিডিয়াতে কাজ করি। আমার অ্যাড এজেন্সির কাজ এখন প্রায় দশভাগের এক ভাগ। আর আমার অনলাইন ষ্টোরে গত ১৫ দিনে বিক্রি কমেছে ৮০ ভাগের মতো। আই অ্যাম ফেড-আপ। টোটালি ফেড-আপ
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:১৫
প্রামানিক বলেছেন: কেউ ভুল ধরিয়ে দিলে আপনি ক্ষেপে যাবেন, এতটাই ক্ষিপ্ত হবেন যে ভুল ধরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমটিকেই বন্ধ করে দেবেন, আর তারপর নিজেকে ‘গণতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক’ বলে তারস্বরে চিৎকার করবেন- এটা হয় না। ফেসবুক তো আসলে সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর।
ধন্যবাদ