নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাসুদ কামাল

মাসুদ কামাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বনানীর ধর্ষণকাণ্ড: শাস্তি কি হবে?

১৮ ই মে, ২০১৭ রাত ২:৩২


বানানীতে হোটেল কক্ষে আটকে রেখে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা অবশেষে একে একে ধরা পড়েছে। মামলা করার ছয়দিন পর, বৃহস্পতিবার (১১ মে, ২০১৭) রাতে সিলেটে প্রধান আসামী সাফাত আহমেদ এবং তিন নম্বর আসামী সাদমান সাকিফকে দিয়ে গ্রেফতার শুরু হয়েছে। আর শেষ হয়েছে আরও চারদিন পর নাঈম আশরাফকে গ্রেফতারের মধ্যে দিয়ে। চাইলে বাংলাদেশের পুলিশরা যে অনেক কিছুই পারে, সেটা আরও একবার প্রমাণ হলো। পুলিশের এই শেষ দিকের কর্মতৎপরতায় সন্তোষ প্রকাশ করা যায়। তবে এই সন্তোষ যে শুরুর দিকের অসন্তোষকে একেবারেই ভুলিয়ে দেবে তেমন কিছুও আশা করতে পারছি না। ধর্ষিতা মেয়ে দু’টি যখন মামলা করতে বনানী থানায় গিয়েছিলেন, তখন সেখানকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাদের সঙ্গে কি আচরণ করেছিলেন, সেটাও ইতোমধ্যে আমাদের জানা হয়ে গেছে।
প্রথম যেদিন এই ঘটনার খবরটি মিডিয়াতে এলো, সেদিন এক সহকর্মী বলেছিলেন, ‘এটা যে একেবারে পিঙ্ক মুভির মত!’ তার মতো আরও অনেকেই এরকম মিল দেখেছিলেন। কিছু মিল হয়তো আছেও। দুই জায়গাতেই বড় লোকের বখে যাওয়া ছেলেরা অপকর্মগুলো করে। তারপর তারা পুলিশকে হাত করে নেয়, পুলিশ মামলা নিতে গড়মসি করে। মামলা যখন হয়, তখন ক্ষতিগ্রস্ত মেয়েদের আরও বেশি লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়। মেয়েগুলো সামাজিকভাবেও নানা হেনস্তার শিকার হয়। এতসব মিলের বিপরীতে কিছু অমিলও নিশ্চয়ই আছে। সেখানে একটা ইতিবাচক পরিণতি দেখানো হয়। দিপক সেহগালের মত একজন জাঁদরেল আইনজীবী মেয়ে তিনটির জন্য লড়াই করেন। পুলিশকে কাঠগড়ায় তুলে তাদের পক্ষপাতিত্বকে একেবারে নগ্ন করে দেন। বিচারকের কাছ থেকে একটি অত্যন্ত মানবিক রায় আসে। এই যে পরের কথাগুলো বলা হলো, সেগুলোকে ঠিক অমিল হয়তো এখনই বলা যাবে না। কারণ, ওই অধ্যায়গুলোতে এখনো তো যায়ইনি বনানীর ঘটনাটি। বরং প্রথম অধ্যায়ের ক্ষেত্রেও এক অমিল দেখতে পাচ্ছি। পিঙ্ক মুভিতে দুষ্ট বালকগণ একদিনের জন্যও গ্রেফতার হয়নি, এখন হয়েছে। তাহলে কি বলা যাবে যে, বানানীর রেজাল্ট পিঙ্কের চেয়েও ভালো কিছু হবে?
আমি কিন্তু অতটা আশাবাদী নই। এমনিতে আমি আশাবাদী মানুষ হলেও এই একটি ক্ষেত্রে তেমন জোরালো কোন সম্ভাবনা কেন যেন দেখতে পাচ্ছি না।
আমরা যদি বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিচার করি, বনানীর এই ঘটনাটি মোটেই অভূতপূর্ব কিছু নয়। এই দেশে, এই সমাজে মেয়েরা প্রায়ই এরকম লাঞ্ছিত হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোন বিচার হয় না। বিচার চাইতে গিয়ে ধর্ষিতা এবং তার আত্মীয় স্বজন থানায় কিংবা জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে সুবিচারের পরিবর্তে গালমন্দই লাভ করেন। গাজীপুরের হযরত আলির কথা মনে করুন। কন্যার নির্যাতনকারীর বিরুদ্ধে মামলা পর্যন্ত করতে পারেননি তিনি। দিনের পর দিন বসে থেকেছেন থানায়, পুলিশের পা ধরছেন। তারপর শিশু কন্যার অপমান সহ্য করতে না পেরে, বিচার দূরের কথা- বিচারের ন্যূনতম কোন প্রতিশ্রুতিও না পেয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। একা নয়, কন্যাটিকে নিয়ে। বাবা- মেয়ে এক সঙ্গে জীবন দিয়ে প্রতিবাদ করেছেন দেশের এই বিচারহীনতার। হযরত আলির বিধবা স্ত্রী বিলাপ করে বলছেন, দুনিয়াতে বিচার না পেয়ে ওরা আল্লাহ’র কাছে গেছে বিচার চাইতে! এই অসহায় নারীর বিলাপ কি আমাদের সমাজ, সরকার, বিচার ব্যবস্থার গালে কঠিনতম চপেটাঘাত নয়? সেরকমই তো হওয়ার কথা। কিন্তু আমরা কি অপমাণিত হয়েছি, কিছু মাত্র ব্যথিত হয়েছি? যে থানার বারান্দায় দিনের পর দিন হযরত আলি বিচারের জন্য বসে থেকেছেন, সেই থানা তো এখনো আছে। যে পুলিশের পা ধরেছেন সেই পুলিশও তো আছে বহাল তবিয়তে! আমাদের কাছে এই সবই যেন স্বাভাবিক।
কিংবা একবার ভাবুন তো কুমিল্লার তনু মেয়েটির কথা। সেও তো ধর্ষিতা হয়েছিল। কেবল ধর্ষণই নয়, তারপর নির্মমভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছিল। বিচার পেয়েছেন কিছু? বিচারের কোন সম্ভাবনাও কি তৈরি হয়েছে? বিষয়টি নিয়ে সবাই যেন কেমন চুপ মেরে গেছে? কেন সবাই স্তব্ধ? কেউ কোন জবাব দূরে থাক, প্রশ্ন করতেও যেন জড়তা অনুভব করছে। কেন? মাঝখান থেকে তনুর পরিবার পড়েছে মহাবিপদে। মুক্তভাবে চলাফেরা করতে পারছে না, নিজেদের দুঃখের কথা, বেদনার কথা বলতে পর্যন্ত পারছে না। আমাদের শাসকশ্রেণী যখন দেশজুড়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হয়ে গেছে বলে গলার রগ ফুলিয়ে চিৎকার করে, আত্মপ্রসাদ অনুভব করে, তখন তনুর অসহায় চেহারাটা কি একবারও তাদের স্মৃতিতে ভেসে ওঠে না?
এরকম আরও অনেক ঘটনার কথাই বলা যাবে। কিন্তু ডিটেইলে না গিয়ে বরং মোটা দাগে একটা হিসাব দেয়া যাক। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সেন্টারের এক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত বছর অর্থাৎ ২০১৬ সালে এই দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৭৩৯ জন নারী। এর মধ্যে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৫৩ জন! তারপরও কি এই দেশকে নারীর জন্য খুব বেশি নিরাপদ বলা যাবে?
নিরাপদ যে নয় সেটা এখন আর গবেষণা করে বলতে হয় না। সেদিন আমার ভার্সিটি পড়ুয়া মেয়েটি দুঃখ করে বললো, অনেকেই নাকি বনানীর ওই মেয়ে দুটিকে দোষ দিচ্ছে। তারা কেন অত রাতে ওই হোটেলে কারও জন্মদিনের পার্টিতে গেল? এমনকি সে তার দুই খালার উদাহরণ দিয়ে বললো- তারাও নাকি মেয়ে দুটিকে দোষ দিয়েছে। এরপর তার প্রশ্ন- সন্ধ্যার পর তাহলে কোন মেয়ে কি ঘরের বাইরে থাকতে পারবে না? এটা কেমন কথা? মা-খালাদের মানসিকতাই বা এমন কেন?
আমার মেয়ের প্রশ্ন খুবই যৌক্তিক। কিন্তু মা খালা অবিভাবকদের উদ্বেগটাও কি একেবারে অমূলক? তারা মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। অথচ এই উদ্বেগটা থাকার কথা ছিল সরকারের, পুলিশের। এরা যদি উদ্বিগ্ন হতেন, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতেন, তাহলে বন্ধুর অনুষ্ঠান থেকে মধ্যরাতে ফিরলেও মেয়েকে নিয়ে চিন্তা করতেন না মা খালারা। কিন্তু সরকার সেই কাজটি করতে পারেনি। সুর্য ডোবার পর থেকেই পুরো দেশটাকে তারা নির্লিপ্ততার সঙ্গে হায়েনাদের বিচরণভূমিতে পরিণত হতে দিয়েছে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই হায়েনাদের কি শাস্তি হবে না? পাঠক, একটা বিষয় লক্ষ্য করবেন, আমি কিন্তু ‘বিচার’ শব্দটি বলিনি, ‘শাস্তি’ বলেছি। কারণ, বিচার নিয়ে আসলেই আমি খুব বেশি আশাবাদী নই। বিচারের সঙ্গে অনেক কিছু জড়িত। আইন, আইনজীবী, সাক্ষ্য, প্রমাণ, অনেক কিছু। এই যে গ্রেফতার হয়েছে, এটা খুবই প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ। এটি করতেই পুরো দেশের সচেতন মানুষ, মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে মাঠে নামতে হয়েছে। তারপরও সবকটিকে ধরতে পুরো দশদিন লেগে গেছে। এখন পরবর্তী কাজগুলো কি? পুলিশ তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে, তারপর একটা প্রতিবেদন দাখিল করবে আদালতে। পুলিশের এই প্রতিবেদনের উপরেও কিন্তু অনেক কিছু নির্ভর করবে। শব্দের সামান্য একটু মারপ্যাচের কারণে আইন ধর্ষককে আটকে রাখতে পারবে না। এরকম তো চলছেই। পুলিশ যে প্রতিবেদন তৈরি করবে, সেটাও অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে। তারাও সাক্ষ্য প্রমাণ নেবে, কিছু কিছু তথ্য খুঁজবে। হয়তো কিছু প্রমাণ খুঁজে পাবে না, অথবা পেতে চাইবে না। আবার পুলিশেরও মন বলতে একটা বিষয় আছে। তাদের যদি মনে হয়- ঘটনাটি এভাবে ঘটেনি, তাহলেই বা আপনার আমার কি করার থাকতে পারে? যেমন এবার, বনানী থানার ওসির মনে হয়েছিল মেয়েদুটির অভিযোগ সত্য নয়, মনে হয়েছিল মেয়ে দুটি বুঝি নর্তকী গোছের কেউ, তাই তিনি মামলাই নেননি। উপর থেকে চাপ দেয়া না হলে আজও হয়তো গাজীপুরের সেই হযরত আলীর মত এই দুই মেয়েকে থানার বারান্দায় ঘোরাঘুরি করতে হতো। পুলিশের আরও মনে হয়েছে- যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই লোকগুলো আসলে ধর্ষক নয়, বরং খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রাতঃস্মরণীয় ব্যক্তি। তাই মহানন্দে তারা থানার মধ্যে দাঁড়িয়েই সেলফি তুলতে পেরেছিল। পুলিশের মনে হয়েছে, ধরা না দিয়ে লুকোচুরি করলেও এরা খুবই ভদ্রটাইপ সম্মানিত মানুষ। তাই গ্রেফতার করা হলেও শুরুতে তাদের হাতকড়া পরানো হয়নি। এদেশে শিক্ষক, সাংবাদিক, রাজনীতিকদেরও মতলবী মামলায় হাতকড়া পরানো হয়। কিন্তু ধর্ষককে গ্রেফতারের পর হাতকড়া পরানো হয় না। কেন হয় না, তা নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না। পুলিশের মন বলে কথা। পুলিশের মন যে কিসে টলে সেটা বলা বড় ঝুঁকির ব্যাপার। পুলিশের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন করা প্রায় দেশদ্রোহের সামিল। কদিন আগে এই মামলা নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান একটা মন্তব্য করেছিলেন, বলছিলেন- বনানীর ওসি শুরুর দিকে মেয়ে দুটির সঙ্গে যে আচরণ করেছেন তা প্রত্যাশিত ছিল না। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান একটি সাংবিধানিক পদ। সম্মানিত পদ। সরকার অনেক বিচার বিবেচনা করে সৎ এবং ন্যায়নিষ্ঠ ব্যক্তিদেরকেই এই পদের মনোনয়ন দিয়ে থাকেন। সেরকম একজন ব্যক্তিও কিন্তু পুলিশের সমালোচনা করে রেহাই পাননি। তিনি যে মন্তব্যটি করে ঠিক করেননি, সেটা রীতিমত বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন উর্ধতন এক পুলিশ কর্মকর্তা! এই যখন অবস্থা, তখন আমার আপনার মতো আম জনতার কি এখতিয়ার থাকতে পারে পুলিশের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার?
আগেই বলেছি, আলোচিত এই ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিয়ে খুব একটা আশাবাদী নই আমি। এই দেশে বিচার নিয়ে বহুল উচ্চারিত একটা প্রবাদ আছে। “যদি ধনীর সঙ্গে গরীবের মামলা হয়, তাহলে গরীব মরে। ধনীর সঙ্গে ধনীর মামলা হলে আইন মরে। আর যদি গরীবের সঙ্গে গরীবের মামলা হলে আইন বাঁচে ।” বানানীর এই ঘটনা নিয়ে এখন মামলা চলবে। কতদিন চলবে কে জানে। তনু, ত্বকী, মিতুর মত সবাই এসব ঘটনার কথা এক সময় ভুলেও যাবে। কদিন পর এই ধর্ষকদের আবার দেখা যাবে জামিনে বের হয়ে অস্ত্রধারী বডিগার্ড নিয়ে ঘুরে বেড়াতে। পুলিশের বড় কর্তাদের সঙ্গে সেলফি তুলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিতে। আর সান্তনা পেতে আপনারা আমরা সবাই জানবো- বিচার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে, মামলা চলছে। ধনীর সঙ্গে গরীবের মামলা।
আর তাতে কে মরবে, কে বাঁচবে- তা নিয়েও চিন্তায় থাকতে হবে না। প্রবাদ তো আর এমনি এমনি তৈরি হয়নি।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই মে, ২০১৭ রাত ৩:৩৩

সৌমিক আহমেদ খান বলেছেন: সবাই তাহলে ধরা পড়সে। অন্য ইস্যু সার্চ করা লাগবে

১৯ শে মে, ২০১৭ রাত ১:৩০

মাসুদ কামাল বলেছেন: অন্য ইস্যু! হুম, ভালো বলেছেন।

লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

২| ১৮ ই মে, ২০১৭ ভোর ৬:০৮

মানবী বলেছেন: "মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সেন্টারের এক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত বছর অর্থাৎ ২০১৬ সালে এই দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৭৩৯ জন নারী। এর মধ্যে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৫৩ জন"

- পরিসংখ্যানটি নিঃসন্দেহে এক ভয়ংকর চিত্র তুলে ধরে!! নির্মম সত্য হলো পরিসংখ্যানের এই সংখ্যাটি শুধু রিপোর্টেড কেসগুলোরকেই তুলে ধরে, যেসব ধর্ষণ বা নির্যাতন লোকলজ্জার ভয়ে আড়াল করে রাখা তা এই পরিসংখ্যানে উঠে আসেনি। সবচেয়ে বড় কথা এই পরিসংখ্যানের কয়টি কেস হাইলাইটেড হয়েছে, কজন কুলাঙ্গার ধর্ষকের নাম পরিচয় গণমাধ্যমগুলোতে উঠে এসেছে, জনগণ জানতে পেরেছে!
দু একটি হাইপ্রোফাইল কেস ছাড়া আমাদের দেশের পত্রপত্রিকা বা মিডিয়ায় যে অপেআধী/ধর্ষকের ছবি ছাপা হয়না এটা খুব বেশী হতাশাজনক। বিচারে প্রমাণের আগে ধর্ষক বলা যাবেনা মানছি, তবে অ্ভিযুক্ত আসামী হিসেবে ছবিগুলো আসতে পারে। হতদরিদ্র আসামীদের কিছু কিছু(সব নয়) ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম ঘটে অবশ্য।

"প্রশ্ন- সন্ধ্যার পর তাহলে কোন মেয়ে কি ঘরের বাইরে থাকতে পারবে না? এটা কেমন কথা? "
- জবাবটি দুঃখজনক ভাবেই "না"। আর এটাই অপ্রিয় বাস্তবতা। অন্ধকার বা রাত্রীকালিন সময়টা হায়নার পালের জন্য খুব অনুকূল তা একটি ধ্রুবসত্য। আর শুধু বাংলাদেশেই নয়, এই সুরক্ষিত যুক্তরাষ্ট্রেও রাতে বের হবার সময় মেয়েদের অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হয়। তবে সতর্ক থাক বা না থাক, কোন কুলাঙ্গার নারীকে স্পর্শ করলে এখানে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনে এতোটুকু দ্বিধা করেনা, এই নিশ্চয়তা নারী তথা জনগণকে ভরসা দেয় আর হায়নার পালকে কিছু হলেও আতংকিত রাখে।

বনানীর ঘটনাটি স্পষ্টই একদল বখে যাওয়া অকালকুষ্মান্ডের পশুপ্রবৃত্তির দুঃখজনক কুফল, মেয়ে দুজনকে স্যালুট যুদ্ধ চালিয়ে যাবার জন্য। একটি বিষয় স্পষ্ট নয়, বাংলাদেশের মা বাবারা এখন অনেক বেশী নিশ্চিন্ত না ইগনোরেন্ট সেটা বুঝতে পারছিনা! মেয়েরা বান্ধবীর সাথে বন্ধুর জন্মদিনের পার্টিতে গিয়েছে- এপর্যন্ত ঠিক আছে; তবে মেয়েরা যে সারারাত বাড়ী ফিরছেনা এটা নিয়ে কোন উদ্বিগ্ন হওয়া বা পার্টির স্থানে গিয়ে খোঁজখবর ব্যাপারটি কোথাও চোখে পরছেনা! ভিক্টিম দুজনের অভিভাবকদের এই সামান্য রুটিন কনসার্ন মেয়েদুজনের দুর্ভোগ হাজারগুন কমাতে সাহায্য করতো তা হলফ করে বলা যায়।
স্কুলছুটির পর সন্তান সময় মতো ঘরে না ফিরলে মা বাবার উদ্বিগ্ন হওয়া স্বাভাবিক, ঠিক তেমনি কোন পার্টিতে গেলে(তা কন্যা অথবা পুত্র) নির্দিষ্ট সময় পর ঘরে না ফিরলে খোঁজ নেয়াটাও স্বাভাবিক হবার কথা। অন্তঃত ফোনে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া, খোদ যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণ ধর্ম নির্বিশেষ অভিভাবকদের এমনটাই করতে দেখি।

স্বর্ণব্যসায়ী আর তার কুলাঙ্গার সন্তানদের কিছু গ্রেফ্তার হেনস্তার মাঝেই এই ধর্ষণের বিচার সীমাবদ্ধ থাকবেনা আশাকরি, আমাদের প্রার্থনা অন্তঃত আলোচিত এই ধর্ষণের ঘৃণ্য আসামীরা যেন প্রাপ্য শাস্তিটা পায়।

লেখাটির জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা মাসুদ কামাল।
ভালো থাকুন সব সময়।

১৯ শে মে, ২০১৭ রাত ১:৩২

মাসুদ কামাল বলেছেন: আপনিও ভালো থাকবেন।

৩| ১৮ ই মে, ২০১৭ সকাল ৯:৫৪

জোয়ান অব আর্ক বলেছেন: একমাত্র শাস্তি যেটা জনগন দিতে পারে, তা হল আপন জুয়েলার্সের ব্যবসার ১২ টা বাজিয়ে দিতে পারা। আর কোন শাস্তি কামনা করা ঠিক হবেনা। জেলে আসামীদের অন্যায় আবদার মেটাতে কারা কর্তৃপক্ষ গলদঘর্ম হচ্ছে। তাদের যাতে কোন শাস্তি না হয়, তার জন্য ব্যাপক আয়োজন চলছে।

নতুন কোন আলোচিত ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা চলছে, যাতে সবার দৃষ্টি সেদিকে ঘুরে যায়।

১৯ শে মে, ২০১৭ রাত ১:২৮

মাসুদ কামাল বলেছেন: আপনি ঠিকই বলেছেন, এই সকল অর্থলোভী ব্যক্তিদের জন্য তাদের অর্থের উৎসে আঘাত হানাটাই সবচেয়ে বড় শাস্তি। কিন্তু সেটাই যথেষ্ট নয়। বনানীতে যা হয়েছে, সরাসরি তারও শাস্তি হওয়া দরকার, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।

আপনার 'ব্যাপক আয়োজন চলছে' লিংকে যেয়ে যা পেলাম, তা সত্য হলে অবশ্যই উদ্বেগের। এরকম কিছু গুজবের কথা, আমিও শুনেছি, কিন্তু যথাযথ তথ্যপ্রমাণ পাইনি। যেমন, গাফফার চৌধুরীকে টাকা দেয়া কিংবা টিকেট দেয়ার বিষয়টি প্রমাণিত নয়।

৪| ১৮ ই মে, ২০১৭ সকাল ১০:৫৬

ঢাকাবাসী বলেছেন: ধরে নিন কারো একটা চুল বাঁকা হবেনা। মাঝখান থেকে মেয়ে দুটো পুলিশ উকিল আর সাংবাদিক দ্বারা চরম হেনস্তা আর অপমানিতা হবে। জুয়েলারীর দোকান থেকে বা মালিক দিলদার সাহেবের কাছ থেকে কয়েক ডজন কোটি টাকা এর মধ্যেই সরকারের, পুলিশের, কাস্টমসের কেউ কেউ হাতিয়ে নিয়েছেন বলে শোনা যায়।

১৯ শে মে, ২০১৭ রাত ১:৩৩

মাসুদ কামাল বলেছেন: হুম, অনেক কিছুই শোনা যাচ্ছে। কি আর করবেন, এটাই হয়তো আমাদের নিয়তি।

৫| ১৮ ই মে, ২০১৭ দুপুর ১২:০৪

মানবী বলেছেন: জোয়ান অব আর্ক, অনেক ধন্যবাদ ভয়ংকর ষড়যন্ত্র সম্পর্কে লিংকটি শেয়ার করার জন্য।
আপনার পোস্টটি তেমন কারো পড়া হয়নি বলে এখানে আবার মন্তব্য করা।

৬| ১৮ ই মে, ২০১৭ রাত ১১:০০

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: এবার মনে হয় কিছু একটা হবে। মিডিয়া অনেক শাক্তিশালী। শাস্তি পেতেই হবে...

১৯ শে মে, ২০১৭ রাত ১:৩৪

মাসুদ কামাল বলেছেন: আপনার প্রত্যাশা ফলপ্রসূ হোক, এই কামনা থাকলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.