![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দুলালী আমার! এ কথা মনে রেখো, মেয়েরা যতই সম্পদ,মর্যাদা ও সু-খ্যতির অধিকারিণী হোক না কেন,দুনিয়ার জীবনে তাদের সর্বোচ্চ কামনা হলো কারো প্রিয়তমা স্ত্রী কিংবা শ্রদ্ধেয় ও মমতাময়ী মা অথবা কোন পরিবারের সুযোগ্য অভিভাবিকা হওয়া। আর এ ক্ষেত্রে কালের রাণী-শাহজাদী ও হলিউডের খ্যাতিমান অভিনেত্রী (যাদের মাধ্যমে অনেক সরলমনা মেয়েরাও আজ প্রভাবিত) সবাই সমান।
নাম জিজ্ঞেস না করার শর্তে বলতে পারি। মিসর ও সিরিয়ার দুজন সুপ্রসিদ্ধ লেখিকা সম্পর্কে আমি জানি- সাহিত্য, সম্পদ ও মর্যাদা যাদের পদচুম্বন করেছে। কিন্ত নিছক বিয়ের সুযুগ থেকে বঞ্চিত হওয়ায় তারা আজ পাগলপ্রায়।
আবারও বলছি, ক্ষণিকের এ জীবনে প্রত্যেক নারীর সর্বোচ্চ আশা ও প্রাপ্তি হলো একজন সুযোগ্য ও সৎ ছেলের সাথে পরিণয়ে বসা। যদিও সে মেয়ে হোক সংসদ সদস্যা কিংবা অঢেল ধন-সম্পদ ও বিপুল ক্ষমতার মালিক।
মেয়ে আমার! বিশ্বাস করো। নির্লজ্জ ও চরিত্রহীন মেয়েকে কেউ কনে হিসেবে গ্রহণ করতে চায় না। এমনকি ঐ লম্পটও। যে কিনা বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কোন শরীফ ঘরের সম্ভ্রান্ত মেয়েকে বিপথগামী করতে সক্ষম হয়েছে। মেয়েটি যখন তার ফাঁদে পড়ে নিজের সব হারিয়ে পথহারা হলো! তখনি সে অন্যকোনো সতী মেয়ের সাথে প্রণয়ের চেষ্টায় গোপনে কেটে পড়ে!
তুমি কি জানো এর কারণ?
কারণ, সে কখনো চায় না। কোন পতিতা ও নষ্টা মেয়ে তার গৃহিণী ও সন্তানের মা হোক!
তুমি দেখবে, যুবকরা যতই পাপাচারী ও অপরাধী হোক। ফূর্তি ও ভোগের বাজারে যখন সে এমন কোন মেয়েকে পাবে না। যে তার চোখের ইশারায় নিজের মানমর্যাদা ও সতিত্ব বিলিয়ে দিবে এবং যে কিনা মালউনের স্বভাবে কুকুর-বিড়ালের মতো তার সাথে পাপাচারে মেতে উঠবে। তখন সে ধীরে ধীরে ইসলামের আদর্শিত পথে কোন ভদ্র ও বিনম্র মেয়েকে বিয়ে করতে চেষ্টা করবে। এবং সত্যিই কোন ভাল মেয়ের সন্ধান পেতে তার তেমন বেগও পেতে হবে না।
আর এক্ষেত্রে ঐ সব বেহায়া মেয়েরা (যারা যুবকদেরকে অন্যায় পথে ফূর্তির সুযোগ করে দিচ্ছে) না থাকলে, তোমাদের মতো চরিত্রবান ভদ্র মেয়েদের বিয়ের বাজারও আজ এতো মন্দা ও নীরব হতো না।
অন্যদিকে পাপের বাজারও এমন রঙীন ও গরম হতো না...কিন্তু হায়! ঐসব উম্মাদনায় মত্ত বোকা মেয়েদের কারণে আজ তোমাদের বিয়ের বাজারও মন্দাময়।
এত কিছুর পরও কেন তোমরা, শরীফ মেয়েরা, এই সমাজবিধ্বংসী ব্যাধির বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছো না?
আর এ বিষয়ে তোমাদের প্রচেষ্টা আমাদের চেয়েও বেশি কার্যকর। কারণ তোমরা মেয়েদেরকে বোঝানোর ভাষা ও পদ্ধতি আমাদের চেয়ে ভাল জানো ও বুঝো।
সুতরাং তোমাদের মতো ভদ্র ও আত্মসংযমী এবং ধার্মিক মেয়েরাই এ সর্বনাশা মহামারীতে আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও কেন এর প্রতিকারের চেষ্টা করছো না?
যুবকরা ‘খলীলাতদের’ (প্রেমিকাদের) নিয়ে ব্যস্ত... তাই ‘হালীলাতদের’ (স্ত্রীর) প্রয়োজন বোধ না করায় আজ সিরিয়াসহ কতো দেশের প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে অনেক প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে রয়েছে যাদের বিয়ের কোন সু-ব্যবস্থা হচ্ছে না।
তাই আমি বলি, শোনো- তোমরা মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সচ্চরিত্রবান ছাত্রীরা মিলে এমন একটি সংঘ তৈরী করো। যার একমাত্র কাজ হবে ওসব পথহারা অসহায় মেয়েদেরকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা।
তোমরা প্রথমে তাদেরকে আল্লাহ তা'লার আযাবের ভয় দেখিয়ে শুরু করো। এতে যদি কাজ না হয়, তবে তাদের পাপাচারের কারণে সৃষ্ট সমাজ বিধ্বংসী রোগ-ব্যাধির ভয় দেখাও। আর এতেও যদি সুফল না হয়। তবে বাস্তবতার ভাষায় তাদের বলো, ও বান্ধবীরা! দেখো, তোমরা আজ সুন্দরী,লাবণ্যময়ীও তরুণী বলেই তোমাদের প্রতি যুবকদের ক্ষণিকের এ আকষর্ণ।
আচ্ছা বলোতো, তোমাদের এ যৌবন ও রূপ-লাবন্য কি আ-জীবন থাকবে?!
আচ্ছা এ-দুনিয়াতে কখনো কোন যুবতির যৌবন ও সুন্দরীর রূপ-লাবন্য ও সৌন্দর্য কি স্থায়ী ছিল যে, তোমাদের যৌবন ও রূপ-সজ্জাও স্থায়ী থাকবে?
তাহলে একটু চিন্তা করে দেখোতো সেদিন তোমাদের কি পরিণতি হবে যেদিন তোমাদের সুন্দর এ চেহারায় বয়সের ছাপ ফুটে উঠবে ও মেরুদণ্ড কুঁজো হয়ে আসবে।
কে সেদিন তোমাদের গুরুত্ব দিবে? কে তোমাদের খোঁজ-খবর নিবে?
জানো, কুঁজো বুড়িকে কারা সম্মান করে? কারা তার দেখাশোনার দায়িত্ব নেয়? তার সন্তান-সন্ততি ও নাতি-নাতনীরা। ওখানেই চলে কুঁজো বুড়ির রাজত্ব। সেখানেই তিনি হন মুকুটহীন রাণী।
অন্যদিকে এ-পরিণত বয়সে চরিত্রহীন নারীদের কি করুণ দশা...!!
এ সম্পর্কে তোমরা আমার চাইতে ভাল জানো। এই স্বল্প সময়ের ক্ষণস্থায়ী আনন্দের সাথে সেই দীর্ঘ সময়ের কঠিন দুঃখের কি কোন তুলনা হতে পারে? পাপ-পঙ্কিলতায় ঘেরা এমন সূচনার বিনিময়ে তুমি কি বরণ করতে চাও সেই কঠিন পরিণতি?
এ ধরনের সাধারণ কথা বলতে ও বোঝাতে কোন দলিল-প্রমাণের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু এতে করে অনেক পথহারা মেয়ে সঠিক পথের দিশা পাবে। তা না হলেও,কমপক্ষে ভাল মেয়েরাতো এ মরণব্যাধি থেকে দূরে থাকবে?
... চলবে ইনশা আল্লাহ্।
#পুনশ্চ: বিচারপতি আলী তানতাভী #রহ. আরব বিশ্বের কিংবদন্তী লেখক। ইয়া বিনতী বা আদুরী মেয়ে শিরোনামে ১৯৫৯ সালের দিকে লেখা তাঁর চিঠিটি যেন পহেলা বৈশাখে হেনস্তা হওয়া আমাদের প্রিয় বোনদের উদ্দেশ্যে লেখা। এ চিঠিটি আরবী, ইংরেজি ও ফরাসীসহ পৃথিবীর বহু ভাষায় লক্ষ লক্ষ কপি ছাপা হয়েছে। বছর দু'য়েক আগে বাংলায় অনুবাদের চেষ্টা করা হয়েছিল। কতটুকুন কি হয়েছে জানি না। প্রিয় বোনদের উজ্জত-আব্রু নিয়ে যে ভয়ংকর খেলা শুরু হয়ে গেছে। শাইখ তানতাভী রহ. এর মতো এক মহিরথীর কাছে হয়তো এর কিছুটা সমাধান পেতে পারি। মাওলার দরবারে সে কামনা।
©somewhere in net ltd.