নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন মানুষ হিসাবে আমার সবচেয়ে বড় পরিচয়: আমি একজন মুসলিম। মুসলিম পরিচয় বিহীন বাঙ্গালী হওয়ার কোন ইচ্ছে আমার নেই।

সত্য খুঁজিয়া বেড়াই

সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ তায়ালার, আমি আরও বেশী জানতে, শিখতে, অর্জন করতে চাই, মহান আলাহ রব্বুল আলামিনের নিকট চাওয়া, তিনি যেন আমাকে সঠিক জ্ঞান দান করেন

সত্য খুঁজিয়া বেড়াই › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাশিয়া ন্যাটো যুদ্ধ ০২

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:৩০

রাসুলুল্লাহ (সা) এর নব্যুওয়াতের প্রাথমিক যুগে আন্তর্জাতিক বিশ্বের পরিস্থিতি ছিল ভয়াবহ। সেসময় দুই পরাশক্তি বায়জেন্টাইন সাম্রাজ্য ও পারস্য সাসানিদ সাম্রাজ্যের মধ্যে যুদ্ধ চলছিল। বায়জেন্টাইন সাম্রাজ্য ছিল একেশ্বরবাদী সাম্রাজ্য। অন্যদিকে,পারস্য সাম্রাজ্য ছিল পৌত্তলিক। মক্কার পৌত্তলিক কুরাইশগণ পারস্যের পৌত্তলিক সাম্রাজ্যের অন্তর্গত এবং তারা পারস্যসম্রাটের সাহায্য পেয়ে আসছিল। মক্কার নব্য অসহায় মুসলিমগণ তখন একেশ্বরবাদী বায়জেন্টাইন সাম্রাজ্যের পক্ষে অবস্থান নেয় যেহেতু তারা তওহীদপন্থী। মক্কার পৌত্তলিকরা যখন মক্কার অসহায় মুসলিমদের উপর ভয়াবহ অত্যাচার শুরু করে দেয়,তখন মুসলিমদের হিজরতের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। কিন্ত মদিনার দরজা তখন মুসলিমদের জন্য বন্ধ ছিল। কারণ,মক্কার পৌত্তলিকদের সাহায্যকারী হলো পারস্য সাম্রাজ্য। মদিনা তাই ভীত ছিল।
মক্কার অসহায় মুসলিমগণ তখন বায়জেন্টাইন সাম্রাজ্যের অন্তর্গত অর্থোডক্স খ্রিস্টান রাজ্য আবিসিনিয়ায় হিজরত করেন। আবিসিনিয়া মুহাজির মুসলিমদেরকে পৌত্তলিক মক্কার বিরুদ্ধে সামরিক নিরাপত্তা প্রদান করে। যখন আবিসিনিয়া মুসলিমদের পক্ষে অবস্থান নেয়, তখন মদিনার দরজাও মুসলিমদের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায়। কারণ,আবিসিনিয়া বায়জেন্টাইন সাম্রাজ্যের অধীন। তাই তাদের আর পারস্য সাম্রাজ্যের আক্রমণের ভয় থাকে না। অর্থাৎ আল্লাহ সুবহানওয়াতালা রুমের দ্বারা প্রাথমিক যুগের অসহায় মুসলিমদের রক্ষা করেন। নইলে মুসলিম জাতি মক্কার পৌত্তলিকদের দ্বারা বিলুপ্ত হয়ে যেত।
আল্লাহ সুবহানওয়াতালা সুরা রুমে রুমের বিজয় ভবিষ্যতবাণী করেছেন এবং সে বিজয়ে মু’মিনদের উল্লাস প্রকাশ করার কথা ঘোষণা করেছেন। সেসময় পারস্য সাম্রাজ্য বায়জেন্টাইনকে প্রায় নাস্তানাবুদ করে ফেলেছিল। তাই পবিত্র কোরানের এই আয়াত অবতীর্ণ হলে অবিশ্বাসী সম্প্রদায় ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করতে থাকে আর মুনাফিকরা সন্দেহে পড়ে যায়,”এটা কীভাবে সম্ভব!” কিন্তু আল্লাহর ঘোষণা মানে আল্লাহর ঘোষণা। পবিত্র কোরানের ভবিষ্যতবাণীর পরপরই খেলা ঘুরে যায়। বায়জেন্টাইন সম্রাট হিডাক্লিয়াসের বুদ্ধিমত্তা ও সামরিক দক্ষতার কাছে পারস্য সাম্রাজ্যকে পরাজয় স্বীকার করে নিতেই হয়। যদি পারস্য সেই যুদ্ধে জিতে যেত,তবে খ্রিস্টান ধর্মের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়ে যেত। তাই খ্রিস্টানদের চোখে এই যুদ্ধ এমন একটি পবিত্র যুদ্ধ যা খ্রিস্টান ধর্মকে রক্ষা করেছিল। বায়জেন্টাইন সাম্রাজ্যের বিজয়ে মুসলিমরাও উল্লাস প্রকাশ করেছিল এবং রাসুলুল্লাহ (সা) মদিনাকে মুসলিম দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সমর্থ হয়েছিলেন। মক্কার পৌত্তলিক কুরাইশগণ পারস্য সাম্রাজ্যের পরাজয়ে ভেঙে পড়ে এবং পারস্যের সাহায্যও হারিয়ে ফেলে। ফলে তারা মুসলিমদের সাথে “হুদাইবিয়ার চুক্তি” করতে বাধ্য হয় যে চুক্তিকে পবিত্র কোরান মুসলিমদের স্পষ্ট বিজয় বলে ঘোষণা করে এবং তৎকালীন অত্যাচারী ইহুদি রাস্ট্র খাইবার বিজয়ের পর মুসলমানরা বিনা বাঁধায় মক্কা বিজয় করতে সমর্থ হয়। সুতরাং,বায়জেন্টাইন রুম বা অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের বিজয় এবং মুসলিমদের বিজয় পরষ্পর সম্পর্কযুক্ত। অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের বিজয়ে ইসলামের চাঁদ উদিত হয়েছিল এবং সেই চাঁদ ধীরে ধীরে বড় হয়ে একটি পূর্ণ শক্তি হিসেবে ভূরাজনীতিতে আবির্ভূত হয়েছিল।
সূরা রূমে আছে, “রোমকরা পরাজিত হইয়াছে। অতি শীঘ্রই তাহারা (জাযিরাতুল আরবের) নিকটবর্তী অঞ্চলে বিজয়ী হইবে। কয়েক বছরের মধ্যে। পূর্বের ও পরের ফয়সালা আল্লাহ্‌রই। এবং সেদিন মু’মিনরা আনন্দিত হইবে। (সূরা রূম, আয়াত ২ – ৪)
আল্লাহ্‌ বলছেন, পূর্বের ও পরের ফয়সালা আল্লাহ্‌রই। অর্থাৎ পূর্বেও যেমন মুসলমানরা রোমকদের বিজয়ে আনন্দিত হইয়াছিল ইহা আবার পরেও হইবে। অর্থোডক্স খ্রিস্টান আবার বিজয়ী হবে এবং মুমিন মুসলিমদের জন্য তা আশীর্বাদ বয়ে নিয়ে আসবে।
পবিত্র কোরান নাযিলের সময় পূর্বরুম ছিল আনাতোলিয়ায় বা বর্তমান তুরস্কে। অটোমান সাম্রাজ্য কন্সট্যান্টিনোপল দখল করে রুমকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। সুতরাং,রুম চলে যায় রাশিয়ায়। রাশিয়ায় উষ্ণজলের সমুদ্রের খুব অভাব। কিন্তু সেসময় নৌবাহিনীই ছিল ক্ষমতার উৎস। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটেন ও ফ্রান্স রাশিয়াকে লোভ দেখায় যে, তাদের পক্ষে যুদ্ধ করলে অটোমান সাম্রাজ্য অর্থাৎ বর্তমান তুরস্ক তাদের দিয়ে দেয়া হবে। তুরস্ক পাওয়া মানে কৃষ্ণসাগর পাওয়া। রাশিয়া তাই এ প্রস্তাবে রাজি হয়। কিন্তু যুদ্ধের পর পশ্চিমারা ইহুদিদের দ্বারা রাশিয়ায় বলশেভিক রেভ্যুলেশন ঘটায়। ফলে রাশিয়ার আর তুরস্ককে পাওয়া হয়না বরং নিজেরই অস্তিত্ব হারিয়ে নাস্তিক সোভিয়েত ইউনিওনে পরিণত হয়। সোভিয়েত ইউনিওন সৃষ্টি করা হয়েছিল রাশিয়াকে তথা অর্থোডক্স খ্রিস্টান বা রুমকে ধ্বংস করার জন্য। সোভিয়েত ইউনিওন রাশিয়ার একমাত্র উষ্ণসমুদ্রের উৎস ক্রিমিয়াকে ইউক্রেনের কাছে হস্তান্তর করে যাতে রাশিয়ার পরাশক্তি হয়ে ওঠার শেষ সম্ভাবনাকেও ধ্বংস করে রাশিয়াকে সম্পূর্ণভাবে পঙ্গু করে দেয়া যায়। যখন ইহুদিরা নিশ্চিত হলো,রুম শেষ,তখন তারা সোভিয়েতকে ভেঙে দিয়ে দলে দলে ইজরাইলে পাড়ি দিল। কিন্তু তারাও পরিকল্পনা করে আর আল্লাহও পরিকল্পনা করেন। আর আল্লাহ শ্রেষ্ঠ পরিকল্পনাকারী। রাশিয়া সেই ধ্বংস থেকে পুনরায় গড়ে উঠতে থাকে এবং ভ্লাদিমির পুতিনের নেতৃত্বে পুনরায় একটি পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়। শুধু পরাশক্তি হিসেবেই নয়,বরং বিশ্বাসী পরাশক্তি হিসেবে। রাশিয়া সোভিয়েত শয়তানিজম থেকে পুনরায় অর্থোডক্স খ্রিস্টানের পথে,রুমের পথে আসতে শুরু করে। যেখানে ভ্যাটিকান সিটির পোপ পর্যন্ত ইঞ্জিলে বর্ণিত সোডোম ও গোমরাহর শিক্ষা ভুলে,আল্লাহর আদেশকে অমান্য করে সমকামীতার পক্ষে অবস্থান নেয়,সেখানে রাশিয়া ঘোষণা করে,নো গে, নো লেসবিয়ান। নো এলজিবিটি ইন রাশিয়া। যেখানে পশ্চিমারা নিজেদের খ্রিস্টান পরিচয়ের চেয়ে সেক্যুলার এথিস্ট পরিচয় দেয়াটাকেই সাইন্টিফিক ও যুক্তিযুক্ত মনে করে আনন্দ প্রকাশ করে বলে, “খোদা এখন সভ্যতার যাদুঘরে থাকে”;সেখানে রাশিয়ায় “খোদা নেই” বললে গ্রেফতার করা হয়। রাশিয়ার ধর্মীয় নেতা বলেন,”রাশিয়া জানে ধর্মহীন রাস্ট্র কেমন হয়। তাই রাশিয়া প্রত্যাবর্তন করছে বিশ্বাসের পথে।”
রাশিয়া হলো সেই রুম যে রুম পুনরায় বিজয় অর্জন করবে এবং মুমিন মুসলমানদের জন্য সুসংবাদ ও আশীর্বাদ বয়ে নিয়ে আসবে। আশীর্বাদ ইসলামের নতুন চাঁদ উদিত হওয়ার আর সুসংবাদ খোলাফায়ে রাশেদিনের সেই সত্যিকারের ইসলামী শাসনতন্ত্র পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার। মুসলমানরা সেদিন আনন্দিত হবে কারণ তা জেরুজালেম বিজয়ের পথ খুলে দিবে, যেভাবে অতীতে রোমকদের বিজয় মক্কা বিজয়ের পথ খুলে দিয়েছিল।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.