![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শিরনামে অনেকের রাগ হতে পারে।
রাজনৈতিক নিরাসক্তির এই সময়ে, দুই ভিন্ন প্রান্তের দুই অপ্রত্যাশিত ব্যক্তি আমাদের গণতন্ত্র সম্পর্কে কিছু গভীর বার্তা দেয়। একজন বাংলাদেশের গ্রামীণ পটভূমি থেকে উঠে আসা একজন ব্যঙ্গাত্মক মেমে-প্রতীকে পরিণত হওয়া প্রার্থী, আর অন্যজন পৃথিবীর সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় শহরের একজন প্রগতিশীল সংসদ সদস্য। কিন্তু বাইরের পার্থক্যের বাইরে, হিরো আলম ও জোহরান মামদানি এক ধরনের রাজনৈতিক স্পন্দনের প্রতিফলন—এলিট রাজনীতির বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের সাহসী প্রতিবাদ।
হিরো আলম, বগুড়ায় চরম দারিদ্র্যের মধ্যে জন্ম নেন। স্বল্পশিক্ষিত এই মানুষটি সস্তা ভিডিও তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় তারকা হয়ে ওঠেন। কোনো রাজনৈতিক বংশ না থাকা সত্ত্বেও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন। কখনও জেতেননি, কিন্তু একাধিকবার ৩০ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছেন—যা দেখায় মানুষ কিভাবে পুরনো, চেনা রাজনীতিতে ক্লান্ত।
জোহরান মামদানি, উগান্ডায় জন্ম নিয়ে নিউ ইয়র্কে বড় হন। তার পিতা অধ্যাপক মাহমুদ মামদানি ও মাতা চলচ্চিত্র নির্মাতা মীরা নায়ার। ওয়েসলিয়ান ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা শেষে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক সোশালিস্টস অফ আমেরিকা (DSA)-এর মাধ্যমে রাজনীতিতে যুক্ত হন। ২০২০ সালে নিউ ইয়র্কের ৩৬তম জেলা থেকে অভিজ্ঞ ডেমোক্রেট প্রার্থীকে হারিয়ে সংসদ সদস্য হন।
দুজনের জীবনপথ সম্পূর্ণ আলাদা, কিন্তু দুজনই প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক কাঠামোতে ভাঙন ঘটিয়েছেন।
জোহরান মামদানিকে “নিউ ইয়র্কের হিরো আলম” বলা আপাতদৃষ্টিতে বিস্ময়কর মনে হলেও এটি আমাদের রাজনৈতিক বৈধতা ও জনপ্রিয়তার সংজ্ঞা পুনর্বিবেচনা করতে সাহায্য করে। যেমন:
এলিটবিরোধী প্রতীক: হিরো আলম বাংলাদেশে বংশীয় ও দলীয় রাজনীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। মামদানি নিউ ইয়র্কের ডেমোক্রেটিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সংগঠন গড়ে জয় লাভ করেন।
আসল হওয়ার শক্তি: হিরো আলমের সাদামাটা ও মজাদার ভিডিও তাকে সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় করেছে। মামদানি তার সমাজতান্ত্রিক অবস্থান ও খোলামেলা বক্তব্যের মাধ্যমে মূলধারার বাইরে নিজস্ব অবস্থান তৈরি করেছেন।
ভোট সংখ্যা কৌতুক নয়: হিরো আলমের ভোট ছিল প্রতিবাদের প্রতিচ্ছবি, কৌতুক নয়। মামদানি প্রমাণ করেছেন নিচুতলার সংগঠন দিয়েও বিজয় অর্জন সম্ভব।
নিচ থেকে আগমন: হিরো আলম এলিট সংযোগ ছাড়াই উঠে এসেছেন। মামদানি এলিটের সরঞ্জাম ব্যবহার করে জনগণের পক্ষে কথা বলেছেন।
নিঃসন্দেহে, মামদানির সাংস্কৃতিক মূলধন ও আন্তর্জাতিক সংযোগ রয়েছে যা হিরো আলমের নেই। আলমকে হাস্যরসের বস্তু বানানো হয়েছে, মামদানিকে Jacobin, The Nation এ প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু সেটাই এই তুলনাকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে—কারণ উভয়ই দেখিয়েছেন, যেখানে প্রথাগত রাজনীতি ব্যর্থ, সেখানেই নতুন কণ্ঠস্বর উঠে আসে।
হিরো আলম প্রমাণ করেছেন যে মানুষ এমন কাউকে চায় যে দেখতে তাদের মতো, কথা বলে তাদের মতো—গান গায় তাদের মতো। মামদানি দেখিয়েছেন মানুষ এমন কাউকে চায় যে সাহস করে তাদের পক্ষে কথা বলে—যদিও তিনি এলিট পরিবার থেকে আসেন।
তাই, হ্যাঁ—জোহরান মামদানি নিউ ইয়র্কের হিরো আলম। তারা এক নয়, কিন্তু তারা এক দিকে এগিয়ে চলেছেন—একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, নিচুতলা-নির্ভর, মানুষ-নির্ভর গণতন্ত্রের পথে।
২| ২৮ শে জুন, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৫
মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: মামদানির বিজয়ে আমি অবাক হয়েছি।
৩| ২৮ শে জুন, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮
মেঠোপথ২৩ বলেছেন: হিরো আলম প্রান্তিক জনগোষ্ঠির একজন মানুষ। তার এক শ্রেনীর ফলোয়ার আছে। বিগত স্বৈরাচারের আমলে তিবি বেশ সাহসিকতার সাথে লীগের আয়োজিত বিতর্কিত নির্বাচনে দাড়ানোর সাহস দেখানোয় , মানুষের প্রসংসা পেয়েছে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে তিনি রাজনীতি করার মত যোগ্য কোন প্রার্থী।
জোহরান মামদানি আপন যোগ্যতাবলে আজকের রাজনৈিক অবস্থানে এসেছেন।জোহরান মামদানির সাথে আপনি তুলনা করতে পারেন এনসিপির নাহিদ, হাসনাত, সারজিসদের যারা অসীম সাহসিকতা ও আপন যোগ্যতাবলে আমাদের প্রথাগত প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক কাঠামোতে ভাঙ্গন ধরিয়েছেন। প্রথাগত রাজনীতিকে ব্যর্থ করে দেয়া হাসনাতদের নতুন কন্ঠস্বর ব্যপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে যা জোহরান মামদানীরসাথেই তুলনীয়।
২৮ শে জুন, ২০২৫ রাত ৮:১১
মুনতাসির বলেছেন: আপনি ঠিকই বলেছন। এখানে তুলনা করতে হলে আরও অনেকগুলো বিষয় নিয়ে আসতে হয় বা হওয়া উচিত। যেমন যদি ইকোনমিক ক্লাসের কথা বলা হয় তবে মামদানি সাহেব মধ্যবিত্ত বটে। হাসনাত সাহেবদের জনপ্রিয়তার সাথে প্রাতিষ্টানিক সহযোগীতা আছে। যেমন সেটা আছে মামদানি সাহেবেও। কিন্তু হিরো আলমের বিপরীতে যে ধরনের প্রচার যন্ত্র কাজ করেছিল, মামাদানি সাহেবের ক্ষেত্রেও অনেকটা তাই দেখা যাচ্ছে। এখানে এন্টাইস্ট্যাবলিশমম্ট/ সামাজতান্ত্রিক সহমর্মীতার অবস্থানের বিপরিতে প্রায় সব বড় বড় প্রচার মাধ্যম।
কে যোগ্য সেটার জন্যই আসলে ভোটের দরকার পরে। এই যে আপনি বললেন - "কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে তিনি রাজনীতি করার মত যোগ্য কোন প্রার্থী।" এখানেই আসলে দুই জনের তুলনা চলে আসে। আপনি আপার ইস্টসাইড, স্টেটেন আইল্যান্ড এ মামদানিকে হিরো আলমের মতনই মনে হবে।
আবার হানসাত সাহেব কেও আসলে একটা নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে আসতে হবে। তার আগ পর্যন্ত তার জনপ্রিয়তা / গ্রহণযোগ্যতা কেমন, সেটা বল শক্তই।
৪| ২৮ শে জুন, ২০২৫ রাত ৮:২৮
কামাল১৮ বলেছেন: হিরো আলমের মতো সাহস যদি অন্য রাজনৈতিক দলের থাকতো তবে দেশের আজকের যে অবস্থা এমনটা হয় না।দেশ গনতান্ত্রিক থাকতো।অধিকার কেউ কাউকে দেয় না,অধিকার আদায় করে নিতে হয়।
৫| ২৮ শে জুন, ২০২৫ রাত ১০:১৪
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: হিরো আলম রিয়ামনিকে না পাওয়ার কারণে সুইসাইড করতে চায় ।
৬| ২৮ শে জুন, ২০২৫ রাত ১১:০৬
অপু তানভীর বলেছেন: নাহ, হিরো আলমকে যেভাবে আপনি চিত্রায়িত করলেন সেটা সম্ভবত ঠিক হল না। রাজনীতির মাঠে হিরো আলম কোন ভাবে প্রান্তিক মানুষকে রিপ্রেজন্ট করে না। সাধারণ প্রান্তিক মানুষ আর হিরো আলমের মত ভাড় এক নয়। হিরো আলম না হয়ে যদি কোন বর্গাচাষী দাড়াতো তাহলে হয়তো আপনার এই কথাগুলো আমার কাছে যুতসই মনে হয়।
রাজনীতির মাঠে হিরো আলমের প্রতি মানুষের যে দৃষ্টি গেছে সেটার কৃতিত্ব আমি স্বৈরাচার আওয়ামীলীগকেই দেব। এখানে হিরো আলম না হয়ে যদি একটা কলা গাছকে দাড় করিয়ে দেওয়া হত তবে সেও হিরো আলমের মত একই রকম প্রক্রিয়া পেত। এখানে হিরো আলম ফ্যাক্টর না, ফ্যাক্টর হচ্ছে স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে কে দাড়াচ্ছে সে !
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে জুন, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪৮
জুনায়েদ আহমেদ নেজাদ বলেছেন: সত্যি বলতে শিরনাম দেখে রাগের বদলে হাসি পেয়েছে