বেয়াদবি মাফ করবেন মাননীয় সরকার বাহাদুর।

১২ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৮

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে টানা তিনদিনের ভয়াবহ দুর্যোগে কয়েক লাখ মানুষের কষ্টেও যখন আপনার ঘুম ভাঙে না, তখন এটাই প্রমাণ হয় যে, আপনারা দেশের মানুষের ওপর নির্ভরশীল নন।

মানুষের প্রতি আপনাদের কোনো দায়িত্ব নেই, জবাবদিহিতা নেই। কোনো কাণ্ডজ্ঞান নেই। আপনার মন্ত্রীরা সারাদিন নোংরা রাজনীতির প্রলাপ বকেন। মানুষের কষ্ট নিয়ে টু শব্দ নেই। আপনারা ওপর থেকে বসে হুকুম করলেই তো অনেক মুশকিল আসান হয়ে যায়। আচ্ছা মানলাম কোনো বিহীত করার মতো মানসিকতা আপনাদের নেই। একটু সহানুভূতি তো জানাতে পারেন!

তিনদিন ধরে গোটা মহাসড়কের অর্ধেকজুড়ে অচলাবস্থা, আপনাদের কোনো উদ্বেগ নেই! আপনারা যে মানুষের ভরসায় নয়, কব্জির জোরে, বন্দুকের জোরে, মাথামোটা নেতা-মন্ত্রীদের প্রলাপ বক্তৃতার জোরে টিকে থাকতে চান, এটাই সত্য।



ওভারপাস নির্মাণ করছেন ভালো কথা। তাই বলে এতগুলো দিন কেন মানুষকে এই অবর্ণনীয় দুর্যোগে পড়ে থাকতে হবে? উপযুক্ত বিকল্প ব্যবস্থা যখন করতে পারবেন না, আগে থেকে ঘোষণা দিয়ে কয়েকদিনের জন্য এই মহাসড়ক পরিত্যক্ত ঘোষণা করে দিলেই তো পারতেন।

এই দুর্যোগ শুধু তিনদিন ধরে না, গত দুই মাস ধরে চলছে। হয়তো সপ্তাহের কোনো একটা বা দুটো দিন পরিস্থিতি কিছুটা ভালো থাকে। বাকি সব দিনের অবস্থা এমন নাজুক।

মাসখানেক আগে এই যানজটে আমি পড়েছিলাম। ঢাকা থেকে মিরসরাইয়ের বারইয়ারহাট পৌঁছাতে আমার লেগেছিলো ১৫ ঘণ্টা। পুরো পথে সব যাত্রীদের খুবই কষ্ট হয়েছিলো। বিশেষ করে প্রকৃতির টান মারলেই কষ্টটা বোঝা যায়। পথে কয়েকবার ফিলিং স্টেশনের শৌচাগার কাজে লেগেছিলো। তবে সেই ফিলিং স্টেশনের একটিমাত্র টয়লেটে নারী-পুরুষ একসঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়ে... খুবই দুর্বিষহ পরিস্থিতি।

আমরা যারা দিনের পর দিন এমন অমানবিক কষ্টে ভুগে যাচ্ছি, আমরা তো মানুষ। আমাদেরও বোধ আছে। আমরা সহ্যের সীমানা অতিক্রম করছি। নিরুপায় আমরা আকাশের দিকে তাকিয়ে বিচার দিচ্ছি।

এই দুর্যোগ গা সওয়া করে নিলে চলবে না। সবাই মিলে আওয়াজ তুলুন। এই দুর্যোগের কথা তুলে ধরুন। সবাই মিলে প্রশ্ন করুন— এ রাষ্ট্রের নাগরিক হয়ে কী এমন ক্ষতি করেছি আমরা? রাষ্ট্র, জবাব দাও।

৬ টি +১/-০