![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
“স্যাটেলাইট বানিয়েছে কারা?
- ফ্রান্সের কোম্পানি
উৎক্ষেপন করছে কারা?
- অামেরিকা
অরবিট ভাড়া দিয়েছে কারা?
- রাশিয়ার কোম্পানি
পরিচালনা হবে কোথা থেকে?
- অামেরিকা থেকে
দেশে কারা দেখবে?
- দরবেশ বাবার বেক্সিমকো (বিটিঅারসি না কিন্তু!)
কোন দেশের উপর দিয়ে প্রদক্ষিন করবে?
- চীন, লাওস, থাইল্যান্ড, মায়ানমার, জাপান।
অবস্থান?
- ১১৯.১ ডিগ্রি দ্রাঘিমাংশে
বাংলাদেশ থেকে কত ডিগ্রিতে স্যাটেলাইটের অবস্থান?
- ৩০ ডিগ্রি
দেশের ক্রেডিট কি?
- প্রকল্পের সুযোগে অাওয়ামী লীগের ব্যাংক ভরা!!
এ লস প্রজেক্টের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার দুর্নিতি করবে কারা?
- অাওয়ামী লীগ
অামাদের টাকায় করা লস প্রজেক্টের ক্রেডিট নিবে কে?
- জয়...”
এই কল্পকাহিনি ফেসবুকজুড়ে ঘুরছে। আরেকটি দল এর উত্তরও রেডি রেখেছে—
“বাড়ি বানিয়েছে কে?
- মেস্ত্রী।
ইট, বালু, রড়, সিমেন্ট কোথা হতে এসেছে?
- দোকান থেকে।
টাকা দিয়েছে কে?
- আপনি।
আপনিতো শুধু টাকাই দিয়েছেন, তাহলে কোথায় আপনার কৃতিত্ব? কিন্তু আপনি গর্ব করে বলেন আপনার বাড়ি!”
এই হলো দেশের সাম্প্রতিক অবস্থা। এক স্যাটেলাইটই আলোচনার একমাত্র বিষয়বস্তু! রোজা আসতে দেখে বাজারে যে আগুন লেগেছে, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যে অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে, এই বঙ্গের মানুষের সেদিকে কোনো দৃষ্টিপাত নেই।
লোকজন হঠাৎ মহাকাশ বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছে। তুমুল গবেষণা চলছে। ১১৯.১ ডিগ্রি দ্রাঘিমাংশ ধরে এই তড়িৎগতির বিজ্ঞানীরা বলে দিচ্ছেন যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রদক্ষিণ করবে চীন, লাওস, থাইল্যান্ড, মায়ানমার, জাপানের আকাশে!
স্যাটেলাইট প্রকল্পের ব্যয় মেটাতে সরকার একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ঋণচুক্তি করেছে। প্রতিষ্ঠানটি সম্ভবত বেক্সিমগো গ্রুপের। তো লোকজন সমালোচনা শুরু করলে এই স্যাটেলাইট নাকি বেক্সিমকো কিনে নিয়েছে।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন যে, লোকের কথা মিথ্যে। এই স্যাটেলাইট কারও কাছে বিক্রি করে দেওয়া যায় না।
মানলাম, আপনি মন্ত্রীর কথায় বিশ্বাসী নন। তবু একটু ধৈর্য ধারণ করা তো যেতে পারে। স্যাটেলাইট তার খেল দেখাক আগে। এটা কোনো বহুজাতিক কোম্পানির কাছে বেচে দেয়া হয়েছে কি-না, তা তো নিশ্চয়ই দেখবেন।
আমরা যখন সরকারের কাজের সমালোচনা করবো, অবশ্যই সত্যের ওপর ভর করে তা হওয়া উচিত। মিথ্যের ওপর দাঁড়িয়ে কেউ তো সফল হতে পারে না।
সরকার তো আরও নানা খাতে টাকা ওড়াচ্ছে। কাজেও, অকাজেও। সেসব নিয়ে কথা বলুন। গঠনমূলক সমালোচনা করুন। ৩০ টাকার পেঁয়াজ যে এক লাফে ৫৫-৬০ হয়ে গেছে, সেটা নিয়ে কথা বলুন। গরীব মানুষ এই জিনিষগুলো নিয়েই ভূগছে।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের ক্ষেত্রে আমার যেটা মনে হয়েছে, এটিকেও আমরা স্রেফ রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করছি। আওয়ামী লীগ সরকার এটি করেছে বলে বিরোধী পক্ষের কাছে তা অগ্রহণযোগ্য হলো। শহীদ জিয়ার আমলে কিংবা খালেদা জিয়ার সময়ে যদি আসলেই এমন কিছু হয়ে যেত, তখনও চিত্রনাট্যটা এমনই হতো!
কম্পিউটার কারসাজি করে অনেকগুলো ভিডিও আর স্থিরচিত্র ছড়িয়ে স্যাটেলাইট নিয়ে ব্যঙ্গ করা হচ্ছে। কেউ মনে হলো পানির পাম্প স্টার্ট দিলো! একজনকে দেখলাম স্যাটেলাইটের মাথা আর পিঠে চড়ে মহাকাশে উড়ে গেছে! এসব করে তো নিজের দেশটাকেই ছোট করা হচ্ছে।
এই কু-রাজনৈতিক সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসাটা বেশি জরুরি।
©somewhere in net ltd.