নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন সমালোচক,তবে তা সংশোধনরে জন্য। আবার একজন প্রশংসাকারিও বটে, তবে তোষামোদকারি নয়।জানতে চাই অনেক কিছু।হতে চাই কালের সাক্ষী।

মুসাফির নামা

সত্যানুসন্ধানী

মুসাফির নামা › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের সেলী (ছোট গল্প)

১৫ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:০৬



সামনে ঠায় তাকিয়ে বড় ভাইয়ের চলে যাওয়া দেখছে সেলী। কেমন যেন অসহায় মনে হচ্ছে নিজেকে । বুকের ভিতরে যেন খাঁ খাঁ করে উঠল বাড়ির সবার জন্য। মা নিশ্চয়ই তার কথাই ভাবছে। হঠাৎ ধাক্কা দিয়ে কুসুম শিকদার তাকে বলল, " দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি ভাবছিস । চল ভিতরে চল, তোর রুমটা দেখিয়ে দিই।" ইউনিভার্সিটিতে রসায়নে ভর্তি হওয়া ১ম বর্ষের ছাত্রী, অসম্ভব মেধাবী সেলী বড় ভাইয়ের অনুপ্রেরণায় তার এতদূর পর্যন্ত আসা। বড় ভাই গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, তাই শিক্ষার প্রতি তার রয়েছে বিশেষ অনুরাগ। তাছাড়া অশিক্ষিত মায়ের সারা জীবন বঞ্চনা সে নিজ চোখে দেখেছে। তাই তারও মনে মনে জিদ, নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে মায়ের দুঃখ কিছুটা হলেও লাগব করবে। তাইতো এতদূর পর্যন্ত আসা। এলাকার পরিচিত বড়বোন কুসুম শিকদারের সহযোগীতায় হলে একটা সিটও পেয়ে গেল। পড়াশুনায় অসম্ভব মেধাবী হলেও সেলী দেখতে অত বাহারী না । তারপরও শহুরে হাওয়া চেহারা ফুটে উঠা শুরু করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর সামনে দাঁড়িয়ে সেলী। গরীব পরিবারের সেলী, তারপক্ষে সকল বই কিনা সম্ভব হয়নি। তাই লাইব্রেরীতে আসা। কিন্তু কিভাবে কি করবে বুঝতে পারছেনা ।" আপনি রসায়ন ১ম বর্ষের ছাত্রী, তাই না? " একটি উসকো খুসকো চুলের ছেলে এসে জিজ্ঞাসা করল। সেলী অবাক হলেও উত্তর দিল," হ্যাঁ।" "লাইব্রেরীতে পড়তে চাচ্ছেন?" আবারও ছেলেটি প্রশ্ন করল। আবারও এক কথায় জবাব দিল," জ্বি। " "চলেন আমি সব ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।" ঘন্টা খানিক পড়ে সেলী হলে চলে গেল। দু- একদিন পরের ঘটনা । তার ক্লাসের সামনে কিছু ছেলে তাকে আন্টি আন্টি বলে ডাকছিল। সেলী নিজেকে খুব অসহায় মনে হলো। তার চোখে জল চলে এলো।" এই তোদের কি কোন কাজ নেই, মানুষকে উক্ত্যক্ত করা ছাড়া।" হঠাৎ একটি ছেলে এসে তাদের এসব বলে ঐখান থেকে উঠিয়ে দিল। সেলী মাথায় উঁচু করে দেখলো, এইতো সে উসকো খুসকো চুলের ছেলেটা। সেলীর কলিজায় পানি আসল। ছেলেটা তার কাছে এসে তাকে বলল," কিছু মনে করবেন না। এরা একটু বদকিছুমের ছেলে।" এবার সেলী ছেলেটার দিকে তাকিয়ে হেঁসে দিল। আস্তে আস্তে ছেলেটার সাথে সেলীর পরিচয় হল। সে শুভ, তার ডিপার্টমেন্টের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র । দিন দিন তাদের ঘনিষ্টতা বাড়তে থাকল। সেলীও পেল একটা অবলম্বন। এখন আর তাকে কোথাও গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়না। কেউ উক্ত্যক্তও করে না ।ঢাকা শহরটাও তার আস্তে আস্তে দেখা হল। ছোট খাট আর্থিক সমস্যাও সহজে সমাধান হয়ে যাচ্ছে। শুভ সম্বন্ধে তার ধারণা, আধুনিক প্রগতিশীল মনের ভাল মানুষ। সেলী শুভকে তার সম্ভাব্য জীবন সঙ্গী হিসাবেই ভাবতে শুরু করল। যদিও শুভ তাকে মাঝে মাঝে সেকেলে অপ্রগতিশীল বলে কিন্তু তার কথার মর্ম সে পুরোপুরি বুঝেনা , বুঝলেও সে ভাবে- না শুভ কখনোই এত খারাপ না।গত দুই দিন শুভকে ক্যাম্পাসের কোথাও দেখা যাচ্ছে না। তার সেল ফোনটাও বন্ধ। সেলী কিছুটা বিচলিত । হঠাৎ একদিন সেলী ডিপার্টমেন্টে যাওয়ার পথেই মটর সাইকেল নিয়ে শুভ হাজির। শুভ সেলীকে বলে তার সাথে তার বন্ধুর বাসায় যাওয়ার জন্য ।গত দুই দিন যাবত শুভর জন্য ব্যকুল সেলী শুভর অল্প পীড়াপিড়িতে যেতে রাজী হয়। বন্ধুর বাসায় শুভ আর সেলী ছাড়া আর কেউ নেই। শুভ সেলীর খুব কাছে এসে বসে। সেলী কিছুটা আড়স্ট হয়ে আসে। বুঝতে পারছেনা কি করবে। শুভ সেলীর ঠোঁট কামড়িয়ে ধরে। আধুনিক কাম বিদ্যায় পারদর্শী শুভ। অল্প সময়েই নিষ্ক্রিয় সেলী সক্রিয় হয়ে উঠে। ধাক্কা মেরে শুভকে বিছানায় ফেলে দেয়। ভেঙ্গে ফেলে সকল বাঁধ। আর বাঁধ যখন একবার ভাঙ্গে তখন জোয়ার আসলেই পানি ডুকে পড়বে, এটাই স্বাভাবিক। আর সেলীর জীবনেও শুভ জোয়ারের পানি দ্বারা বারবার ভাসিয়ে দিয়েছে। আর আধুনিক জীবনে জোয়ারের পানি যেন কোন জিনিস ভাসিয়ে নিয়ে যেতে না পারে তার ব্যবস্থাও হাতের নাগালে। সেলী এখন পোশাকে আশাকে অনেক প্রগতিশীল হয়ে গেছে। চিন্তা চেতনায়ও সে এখন অনেক প্রগতিশীল। কিন্তু তারপরও সে মাঝে মাঝে রুমে একা বসে কাঁদে। আবার চোখ মুছে উঠে দাঁড়ায় । দেখতে দেখতে সেলী ২য় বর্ষে পদার্পণ করল। একদিন সেলী দেখে শুভর ভাইকের পেছনে নতুন ১ম বর্ষের একটি মেয়ে। সেলীর বুঝতে বাকী থাকে না।শুভ রুচি পরিবর্তন করতে চাইছে। সেলীও থেমে থাকেনা। তার জীবনেও আসে নতুন জোয়ার । আর জোয়ার যদি নাই আসে , নদীর কি’বা মূল্য থাকে।


ছবিসূত্রঃ-নেট

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:১৬

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: ভাল লিখেছন!!!
জোয়ার যদি নাই আসে , নদীর কি’বা মূল্য থাকে।

১৫ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:২৫

মুসাফির নামা বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।

২| ১৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:১৩

মিজানুর রহমান মিরান বলেছেন: ভালই লিখেছেন। নিবেদিত প্রানের মুখোশ পরা শুভ রা এই সমাজে অহরহ।

১৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:২০

মুসাফির নামা বলেছেন: এরকম হাজারো শুভ ছড়িয়ে আছে। মেয়েদের দুর্বলতার সুযোগ নেয়। আর এর নাম দেয় প্রগতিশীলতা।

৩| ১৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:১৩

মিজানুর রহমান মিরান বলেছেন: ভালই লিখেছেন। নিবেদিত প্রানের মুখোশ পরা শুভ রা এই সমাজে অহরহ।

৪| ১৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:৩৫

কামরুল হাসান বলেছেন: বাঁধ যখন একবার ভাঙ্গে তখন জোয়ার আসলেই পানি ডুকে পড়বে,
অসাধারণ++++

১৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ২:০২

মুসাফির নামা বলেছেন: অসাধারণ এসব শুভরাও।ধন্যবাদ।

৫| ১৬ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৯:১০

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:
সমাজের একটি সত্যকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।

১৬ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:৪৩

মুসাফির নামা বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।

৬| ১৬ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:৪৪

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: জোয়ার যদি নাই আসে , নদীর কি’বা মূল্য থাকে।
একমত...........

১৬ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:৫৫

মুসাফির নামা বলেছেন: বাঁধ যখন একবার ভাঙ্গে তখন জোয়ার আসলেই পানি ডুকে পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।
এজন্য বাঁধ রক্ষা করা জরুরী।মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।

৭| ১৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:৫২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন:

জোয়ার ভাটায় পইড়া এই মন
নদী হইয়া যাবে.....
পোড়া চোখে যা দেখিলাম
ছাই হইয়া যাবে..

বাংলা সিনেমার পুরানো কোন একটা গানের মাঝৈ মনে হয় এমন.. গুনগুন হচ্ছে..

++++

১৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:৫৫

মুসাফির নামা বলেছেন: সৈয়দ আব্দুল হাদীর এই গানটি আমার খুবই প্রিয়।মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।ভাল থাকবেন।

৮| ১৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:০৬

উল্টা দূরবীন বলেছেন: ভালো লিখেছেন।

১৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:৫৬

মুসাফির নামা বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।ভাল থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.