২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:০৫

ইসলামী সমাজ ব্যাবস্থায় war of the sexes
বা 'নারী-পুরুষের লিঙ্গ ভিত্তিক
যুদ্ধের' কোন অবকাশ নেই ৷ মানবকুলের
একক হিসেবে এবং আল্লাহর
সৃষ্টি হিসেবে নারী ও পুরুষ সমান
এবং কাউকে ছাড়া কারো চলবে না -
এই
সত্যটা বুঝতে হবে এবং বুঝতে হবে যে,
সংসার জীবনটা এই দু'য়ের মধ্যকার কোন
যুদ্ধ ক্ষেত্র নয় ৷ বরং পারিবারিক,
সামাজিক ও জাতীয় জীবনের
প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারী ও পুরুষ
একে অপরের সম্পূরক ও পরিপূরক ৷ মার্কিন
মুসলিমাহ শ্রদ্ধেয়া আমিনাহ
আসসিলমি তার এক বক্তৃতায় দু'টো ভিন্ন
ভিন্ন ফুলের উদাহরণ দিয়ে বলেন যে,
"দু'টো ভিন্ন ফুলের গুণাগুণ ভিন্ন ৷ আর
তাই তাঁদের গুণাগুন comparable বা তুলনীয়
নয় ৷ বরং প্রত্যেকে নিজ নিজ
গুণে বিশেষ ৷ কারণ উভয়ে ফুল ৷ আর তাই
ফুল হিসেবে মর্যাদাগত দিক
থেকে উভয়ে সমান মর্যাদার
অধিকারী ৷" যেমন ধরুন, গোলাপ ফুল আর
বেলী ফুল, এদের গুণাগুণ যেহেতু ভিন্ন,
সুতরাং comparable নয় ৷ গোলাপের
রং হয়তো আকর্ষণীয়, আর বেলী ফুলের
সুঘ্রাণ বহুদূর পর্যন্ত ছড়ায়
এবং মানুষকে মোহিত করে ৷
তেমনি নারী ও পুরুষের ভিন্ন
মেরুধর্মিতা (polarity) আসলে জীবনের
সৌন্দর্যের এক অফুরন্ত আধার ও আল্লাহ
সৃষ্ট অদ্ভূত সুন্দর এক রহস্যময় ব্যাপার ৷
আল্লাহর সৃষ্টির সর্বত্র আমরা বিপরীত
মেরুধর্মিতার একটা সমন্বয় দেখতে পাই
এবং এক ধরণের দ্বৈততাও (duality)
দেখতে পাই ৷ চুম্বকের উত্তর ও দক্ষিণ
মেরু, পরমানুর ইলেক্ট্রণ-প্রোটন বা আলো-
আঁধার - সৃষ্টির মাঝে এ ধরণের অসংখ্য
মেরুধর্মিতা এবং দ্বৈততা সুস্পষ্ট ৷
আসলে অনেকে বলতে চান,
স্বয়ং আল্লাহই হচ্ছেন non dual reality
বা "একমাত্র একক বাস্তবতা", যার কোন
বহুবচন নেই ৷ বিপরীত বা জোড়া স্বত্বাও
নেই ৷ বাকী সবকিছু, অর্থাৎ তাঁর
গোটা সৃষ্টিতে polarity, plurality ও duality
বিদ্যমান ৷ যাহোক, আমার
কথা হচ্ছে এইযে, polarity বা ভিন্ন
মেরুধর্মিতাই হচ্ছে জীবনের আনন্দ ও
অনুপ্রেরণার এক অফুরন্ত উৎস ৷
আমরা (বিশেষত নারী সম্প্রদায়ের
একাংশ) ক্রোধবশত এটাকে অস্বীকার
করতে চাইলেও তা আমাদের
অস্তিত্বের মতই বাস্তব ৷ ক্রোধবশত জোড়
করে নারী-পুরষের সহজাত
পার্থক্যকে অস্বীকার করাটা সৃষ্টির
এবং প্রকৃতির সবচেয়ে বড়
একটা সত্যকে অস্বীকার করার প্রচেষ্টার
নামান্তর মাত্র ৷ ক্রোধটা এই পার্থক্যের
উপর বর্ষিত না হয়ে বরং এই পার্থক্যের
অবমূল্যায়ন ও অপমূল্যায়নের উপর বর্ষিত
হওয়া উচিত ছিল ৷

০ টি +০/-০