নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনের অনুভূতি গুলো যখন অক্ষর দিয়ে সাজাই

ডাঃ এন এইচ সার্জা

ডাঃ নেহাল এইচ সার্জা https://about.me/drnhsarja

ডাঃ এন এইচ সার্জা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্রোধ নিবারনে আমরা দীর্ঘশ্বাস নেয়ার কথা বলি, কিন্তু কেনো? কিভাবেই বা কাজ করে?

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৫

এই পোস্টের প্রাক কথা –



ক্রোধ বা রাগ – এধরনের টপিকস এ লেখার প্লান ছিলোনা, বরং কিডনীতে পাথর নিয়ে একটা টপিকস এ লিখবো ভাবছিলাম, কিন্তু সাম্প্রতিক সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে মনে হলো আপাতত এটাই বেশি জরুরি!








আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের বড় অংশ জুড়ে যেমন রয়েছে আনন্দ, ঠিক তেমনি একটা অংশ দখল করে রাখেবেদনা এবং ক্রোধের মত দুঃখজনক ব্যপার! আর আমাদের সবার জীবনেই এই ক্রোধ রিলেটেড নানা ধরনের বিপত্তির গল্পের কোনো অভাবও নেই।



সত্য বলতে যা খারাপ তার ফল কখনোই ভালো কিছু হতে পারে না!



আমরা অনেকেই শুনেছি যে ক্রোধ নিরারনে দীর্ঘশ্বাস নেয়াটা বেশ কার্যকরি, এবং কেউ যদি এটা চেষ্টা করে থাকেন, তবে কিছুটা হলেও সফলতাও পেয়েছেন, কেননা এই সিস্টেমটা বৈজ্ঞানিক ভাবেই সত্য প্রমানিত।



ক্রোধ প্রধানত আমাদের স্নায়ুতন্ত্র তথা নার্ভাস সিস্টেম আর এন্ডোক্রাইন বা হরমোনাল সিস্টেমের উপর নির্ভর করে।



রাগ বা ক্রোধ আমাদের সেরিব্রাল হেমিস্ফেয়ারেই সৃষ্টি হয় (ব্রেনের ডিসিশান মেকিং এবং মেমোরি অংশে)। আর ক্রোধ প্রথম ২- ৫ সেকেন্ড ডিপেন্ডেন্ট থাকে নার্ভাস সিস্টেমের উপর আর ২ সেকেন্ড পর থেকে এর ইফেক্ট অনেকটাই হরমোন প্রিডমিনেন্ট হয়ে যায়।



আর দীর্ঘশ্বাস নেয়ার পদ্ধতিটা কাজ করে উভয় (নার্ভাস + হরমোনাল) সিস্টেমের উপরই!



তবুও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রাগ কমিয়ে আনার পদ্ধতি ফলো করাই ভালো, কেনোনা রাগান্বিত অবস্থায় কেউই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না বরং রাগান্বিত অবস্থায় বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়ার ফলে সৃষ্টি হয় বিভিন্ন সামাজিক এবং পারিবারিক সমস্যা!







কিভাবে নার্ভাস সিস্টেমের উপর কাজ করে?



আমাদের অটোনমিক নার্ভাস সিস্টেমে ২ ধরনের ব্যবস্থা আছে , একটির নাম সিম্প্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম , আরেকটি হচ্ছে প্যারাসিম্প্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম।



রাগ বা ক্রোধের জন্য সিম্প্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম প্রধানত রেসপন্সেবল।



আরেকটু অন্যভাবে ভেবে দেখুন, মনে করুন রাগ আপনার ব্রেনে সৃষ্টি হওয়া কোনো একটা সিদ্ধান্ত, যেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে আপনার সিম্প্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম কাজ করে অত্যাধিক মাত্রায় স্টিম্যুলেটেড হওয়ার মাধ্যমে, তার ফলেই আপনার ব্লাড প্রেসার আর পালস রেট স্বাভাবিকের চাইতে অনেক বেড়ে যায়, সৃষ্টি হয় উচ্চ রক্ত চাপ আর মাথা ব্যথা, শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া খুব দ্রুত হয়ে ওঠে নিজের অগোচরেই, সৃষ্টি হয় রেস্পিরেটরি এলকালোসিস আর মানুষ একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিতে থাকে কেননা ব্রেনের সিদ্ধান্ত গ্রহনের সেন্টারে ততক্ষনে হরমোনাল ইফেক্টে প্রচুর এড্রেনালিন চলে আসার কারনে স্বাভাবিক নিউরোট্রান্সমিটার কার্যপ্রনালি ব্যহত হয়ে সেগুলো খুব দ্রুত পরিবাহিত হতে থাকে!



আর ঠিক এই সময়ে যখন কেউ ৩০ থেকে ৬০ সেকেন্ডের জন্য ধীরে ২ – ৩ বার দীর্ঘশ্বাস নেয়ার চেষ্টা করে, তখন আর সম্পূর্ন সিম্প্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম এর প্রক্রিয়া ব্যহত হয়, কেননা সিম্প্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম যেমন দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া আর ব্লাড প্রেসার ও পালস রেট বাড়িয়ে দেয় ঠিক উলটা ভাবে প্যারাসিম্প্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম এই সকল প্রক্রিয়ার বিপরীতে কাজ করে, ফলে ক্রোধ আর এর ইফেক্ট অনেকাংশেই কমে আসে শারীরিক ভাবে।







আর কিভাবে হরমোনাল সিস্টেমের উপর কাজ করে?



ক্রোধ বা রাগ হরমোনাল সিস্টেমে প্রধানত কাজ করে এড্রেনালিন এর মাধ্যমে তার সাথে সাথে রক্তে টেসটস্টেরন বেড়ে যায় আর কর্টিসল কমে যায়! এর ইফেক্টে তারা শরীরে সৃষ্টি করে এলকালোসিস (রক্তের pH এর মাত্রা স্বাবাবিকের চাইতে বেড়ে যায়)।আর তার ফলে শরীরের স্বাভাবিক সকল মেটাবলিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রাস্ত হয় এবং মানুষ সঠিক সিদ্ধান্তে উপনিত হতে পারে না, এমনকি অনেক কাজ ও ঠিক মতো করতে পারে না এবং বিভিন্ন বেফাস কথা বলে ফেলে। (খেয়াল করে দেখবেন, রাগের মাথায় আপনি মোবাইলে কোনো প্রয়োজনীয় নাম্বার বের করতে বা কিছু লিখতে ও ভুল করে ফেলেন যা সাধারন সময়ে কখনোই হয় না)!



ঠিক এই সময়ে যখন কেউ ৩০ থেকে ৬০ সেকেন্ডের জন্য ধীরে দীর্ঘশ্বাস নেয়ার চেষ্টা করে, সে সরাসরি রেসপিরেটরি সিস্টেমে কমপেন্সেশানের মাধ্যমে রক্তের এলকালোসিস কে কমিয়ে স্বাভাবিক pH আনতে চেষ্টা করে বা রক্তের pH অনেকটাই স্বাভাবিকের কাছাকাছি চলে আসে আর এড্রেনালিন-এর নিঃসরন ও কমিয়ে দেয়। ফলে শরীর অনেকটা স্বাভাবিক অবস্থায় চলে আসে।



সে জন্য রেগে গেলে বা ক্রোধান্বিত হলে চেষ্টা করুন তা কমিয়ে এনে অন্য নতুন কোনো সমস্যা সৃষ্টি না করতে।



ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন!







ফেসবুক-এ আপডেট পেতে ফলো করুন – Dr. N. H. Sarja



টুইটার-র আপডেট পেতে ফলো করুন – @drnhsarja

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৮

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: নার্ভাস সিস্টেমের কাজ আসলেই আশ্চর্যজনক। খুব দরকারী পোস্ট।

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৭

ডাঃ এন এইচ সার্জা বলেছেন: ধন্যবাদ!

২| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৯

িসরাজ উদদীন বলেছেন: রাগ উঠলে কি আর অত কিছু মনে থাকে?

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৮

ডাঃ এন এইচ সার্জা বলেছেন: হাহা, ভালো বলেছেন! :P

৩| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:২০

সুমন কর বলেছেন: শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫০

ডাঃ এন এইচ সার্জা বলেছেন: শুভেচ্ছা!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.