নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাঈম্

নাঈম্ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামে দৃষ্টিতে ধুমপান : ‘ইসলামে ধূমপানকারীকে বিয়ে করা নিষিদ্ধ’

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৩৮

যারা ধূমপান করে তাদের যদি আপনি জিজ্ঞাসা করেন, ভাই ধূমপান কি ভাল জিনিস? সে অবশ্যই বলবে “না”। তাহলে ইসলাম কি ধূমপান সমর্থন করে? অনেকে এটার কারন হিসেবে ধূমপান করাকে ইসলামে মাকরুহ বা অপছন্দনীয় হিসেবে আখ্যায়িত করে।
কিন্তু সমস্ত আলেম ও ইসলামিক স্কলাররা একমত যে ধূমপান করা সম্পূর্ণ হারাম। এমনকি একান্ত বাধ্য না হলে (যেমন- তাকে কেউ বিয়ে করছে না, কিংবা বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে কিন্তু উপযুক্ত ছেলে পাওয়া যাচ্ছেনা এমন পরিস্থিতি না তৈরি হলে) ধূমপানকারীকে বিয়ে করাও ইসলামে নিষিদ্ধ।
ধূমপান কেন হারাম?
১. মুসলমানদের জন্য খাদ্যদ্রব্য দুই প্রকার। হালাল আর হারাম। এর বাহিরে কিছু নেই। আল্লাহ বলেন, “……তিনি (আল্লাহ) তাদের জন্য পবিত্র ও ভাল বস্তুকে হালাল করেদেন, আর খারাপ বস্তুকে করেন হারাম”। (সূরা আরাফঃ ১৫৭)
সিগারেট কি পবিত্র ও ভাল বস্তু? অবশ্যই এটা খারাপ বস্তু, আর উপরক্ত আয়াত দিয়ে আল্লাহ খারাপ বস্তুকে হারাম করেছেন।
২. আল্লাহ বলেন, “… এবং খাও ও পান কর, কিন্তু অপব্যয় ও অমিতাচার করোনা। কেননা, আল্লাহ অপব্যয়কারীদের ভালবাসেন না?” (সূরা আরাফঃ ৩১)
এই পৃথিবীর সবাই জানে, ধূমপান করা মানে টাকার অপচয় করা। এমন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ আছে কি যে সিগারেটকে অপচয় বলবে না? আর সকল অপচয় হারাম। ধূমপানের জন্য যে পরিমান অর্থ সারা পৃথিবীতে ব্যয় হয়, তা দিয়ে কোটি কোটি ক্ষুধার্ত ও দরিদ্র মানুষদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা যেত।
৩. সিগারেটের গন্ধ আশপাশের মানুষকে কষ্ট দেয়। এই গন্ধ যে কতটা অসহ্য তা শুধু অধূমপায়ীরাই বুঝে। ঘুম থেকে উঠার পরে একজন ধূমপায়ীর মুখে যে দুর্গন্ধ হয়, তা দুনিয়ার কোন বাজে গন্ধের সাথেও তুলনা করা যাবেনা।
রাসুল (সঃ) বলেছেন,
“যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাস রাখে সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়৷” (বুখারী)
ধূমপানকারী তার ধুমপানের দ্বারা স্ত্রী-পরিজন, বন্ধু বান্ধব ও আশে-পার্শের লোকজনকে কষ্ট দিয়ে থাকে৷
অনেকে নীরবে কষ্ট সহ্য করে মনে মনে ধূমপান কারীকে অভিশাপ দেন ৷ তাছাড়া বিভিন্ন গবেষনায় দেখা গেছে, চেইন স্মোকারদের স্ত্রীদের ফুসফুসে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভবনা বেশি।
৪. মহানবী (সঃ) রসুন বা পেয়াজের গন্ধ নিয়ে মসজিদে প্রবেশ করতে নিষেধ করেছেন কেননা এই গন্ধ অন্য মুসল্লিদের কষ্ট দেয়। আর সিগারেটের গন্ধ তো সেগুলো হতে কয়েক হাজারগুন বেশি কষ্টদায়ক।
৫. আল্লাহ বলেছেন,
“তোমরা নিজেদের হত্যা করোনা। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তোমাদের প্রতি অতি দয়ালু।” (সূরা নিসাঃ২৯)
রাসুল (সঃ) বলেছেন, “তোমার প্রতি তোমার শরীরের অধিকার আছে।”
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতিবছর ১০ লাখের বেশি মানুষ মারা যায় ধূমপানের কারণে। যারা ফুসফুসের ক্যান্সারে মারা যায়, তাদের মধ্যে ৯০% হল ধুমপানের কারণে।
এছাড়া হৃদ রোগ, গ্যাস্ট্রিক আলসারসহ অনেক জীবননাশকারি রোগ সৃষ্টি করে ধূমপান। এমনকি গর্ভবতী মায়েরা ধূমপান করলে তাদের বাচ্চাদের বিকলাঙ্গ হয়ে জন্মানোর সম্ভবনা অনেক বেশি থাকে। ইসলামে কখনো এভাবে নিজের বা মানুষের ক্ষতি করা সম্পূর্ণ হারাম।
৬. আল্লাহ বলেছেন, “এবং তোমরা নিজ হাতে নিজেকে ধ্বংসে পতিত করো না।” (সূরা বাকারাঃ আয়াত ১৯৫)
ধূমপান ক্যান্সার, যক্ষা প্রভৃতির মত ধ্বংসাত্মক রোগের কারণ। ধূমপান নিজে নিজেকে ধ্বংস করে দেয়।
৭. ধূমপান যে বিষপান এটা সবাই একবাক্যে স্বীকার করে। এমনকি ইউরোপে একসময় এটাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এবং ধূমপানকারীকে শাস্তি প্রদানও করা হত।
ইসলামে সকল বিষাক্ত জিনিস ভক্ষন করা নিষিদ্ধ। রাসুল (সঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি বিষ পানে আত্মহত্যা করবে, সে জাহান্নামের আগুনের মধ্যে অনন্তকাল তাই চাটতে থাকবে। সেখানে সে চিরকাল অবস্থান করবে।” (সহিহ মুসলিম)
৮. আল্লাহ রাব্বুল আলামীন জাহান্নামীদের খাদ্যের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন,
“এটা তাদের পুষ্টিও যোগাবেনা ক্ষুধাও নিবারণ করবে না৷” (সূরা আল-গাশিয়াহ : ৭)
ধুমপানের মধ্যে এ বৈশিষ্ট্যই রয়েছে যে তা পানকারীর পুষ্টির যোগান দেয় না, ক্ষুধাও নেভায় না৷ ধুমপানের তুলনা জাহান্নামী খাবারের সাথেই করা যায়৷
৯. বাস্তবতার আলোকে দেখা যায় এটা সমাজের ভাল মানুষের কাজ না। সমাজে যারা বিভিন্ন অপরাধ করে বেড়ায় তাদের ৯৮% ভাগ ধূমপান করে থাকে৷ যারা মাদক দ্রব্য সেবন করে তাদের ৯৫% ভাগ প্রথমে ধুমপানে অভ্যস্ত হয়েছে তারপর মাদক সেবন শুরু করেছে৷
আপনি একজনকে সিগারেট খাওয়ালেন কিংবা তাকে খাওয়া শিখাইলেন। তাহলে উপরক্ত হাদিস অনুযায়ী আপনি আজীবন তার পাপ পেতে থাকবেন। আবার আপনি যদি সিগারেট হারাম, এটা প্রচার করে মানুষকে তা থেকে বিরত রাখলেন, তাহলে আজীবন তার সওয়াব পেতে থাকবেন।
যারা ধূমপান এখনো করছেন, তারা খাস দিলে আল্লাহর কাছে তওবা করে যেভাবে পারেন, এই মুহূর্তে ধূমপান ও অন্যান্য পান বন্ধ করুন। আর কাফফারা সরূপ ভাল কাজ যেমন- নামাজ বেশি বেশি করে আদায় করুন। আল্লাহ আপনাকে নিশ্চিত উত্তম প্রতিদান দিবেন।
আল্লাহ বলেন,
“হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহর নিকট তওবা কর, একেবারে বিশুদ্ধ তওবা যাতে আল্লাহ তোমাদের ক্রুটি-বিচ্যুতি মার্জনা করে দেন এবং তোমাদেরকে সেই জান্নাতে প্রবেশ করান যার পাদদেশ দিয়ে ঝরনাধারা প্রবাহিত।” (সূরা আত্ তাহরীম-আয়াত-৮) ।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:২৪

মোগল সম্রাট বলেছেন: আপনি কি ধুমপান করেন ?

২| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৫৫

হেডস্যার বলেছেন:
ইহাতে প্রমানিত হয় ধুমপান হারাম। বাহ !! বাহ !!
মাকরূহ নামের যেই বিষয়টা আছে সেইটা কি হুজুর এক্কেরে বাদই দিয়া দিলেন !!?? :||

৩| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:১৬

ডাইরেক্ট টু দ্যা হার্ট বলেছেন: ধুমপানের পক্ষে বলছিনা তবে বিপক্ষে বলতেও পারছিনা কারণ আমি নিজেও একজন ধুমপায়ী মানুষ।এটাকে ছেড়ে দিয়েছে জীবনে বহুবার তবে সুখের বিষয় হলো আমার অনেক চেনা জানা মানুষ আছে যারা অন্য নেশা করে,তাদের সাথে নানা কারণে উঠাবসা ছিলো তবুও আমাকে জড়াতে পারেনি,সিগারেটকে এক রকম ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ওসব থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পেরেছি,ছোট মন্দ দিয়ে বড় মন্দকে প্রতিহত করা বলা যায়.,।

আমার ছোট মামা আর আমি একসাথে ধুমপান করি, একদিন মামাকে বললাম মামা এটা ছেড়ে দিতে চাই কিন্তু পারছিনা, তিনি বললো এটাতো একদম সহজ, জীবনে কতবার যে ছেড়েছি এটা কোন ঘটনা হলো।মামার মুখে প্রায় শুনতাম,সিগারেট আমাকে বুঝে কিন্তু তোর মামি আমাকে বুঝনারে ভাগনে।
তবে একবার আমার এক অতি প্রিয় মানুষের কথায় বেশ কিছুদিন পান করিনি,কিযে কষ্টে গেছে দিন গুলো,কতকিছুযে খেতাম তখন সিগারেট না খাওয়ার জন্য কিন্তু শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারিনি।আবার শুরু করে দিয়েছি।

এই পর্যন্ত ঘোটা ২৫ দেশ দেখেছি তার মধ্যে সব চেয়ে বেশি ধুমপায়ী দেশ আর মানুষ হলো সাউদি আরব আমার মতে। এরা এমন ধুমপায়ী যে কোন প্রতিষ্ঠান নেই যে ওদের যেখানে ওরা ধুমপান করেনা, শুধু মসজিদ ব্যতিত।প্রায় দুই বছর ঢাকাস্থ সাউদি এম্বাসীতে কাজ করার সুযোগ হয়েছিলো আমি দেখেছি কন্স্যুলার হাতে সিগারেট নিয়ে ভিসায় সাইন করতে গিয়ে পাসপোর্টে সিগারেটের আগুন পড়েছে পুড়েছে।

সবাই কি জন্য খায় আমি জানিনা বলতে গেলে আমি এমনি এমনি খাই, আর বিয়ের কথা বলছেন? সেটার আগুন সিগারেটের আগুনের চেয়ে মারাত্বক,সিগারেট মাকরুহ হলে বিয়ে তাহলে হারাম :)

আমার এক ইন্ডিয়ান ফ্রেন্ড আছে বিদেশে আমি যেখানে থাকি সেখানে আমার ষ্টোরের সামনে সে সিগারেট খায় দাড়িয়ে দাড়িয়ে আর আমাকে দেখলে বলে ইয়ে সিগারেট কা ধোয়া নেহি হ্যায়,ইয়েতো ম্যারা দিল জলরাহা হ্যায়।:)


কোরানের উদ্বৃতি দিয়ে যেভাবে সিগারেটে বিপক্ষে উঠে পড়ে লেগেছেন মনে হয়না সিগারেট এত ভয়ংকর কিছু,এই সমাজে অনেকেই অনেক কঠিন তরন বায়বীয় জিনিস খায়,যা তার চেয়ে ভয়াবহ,সেগুলো নিয়ে শ্রম দিলে জাতি উপকৃত হবে, সিগারেট শুধু ধুমপায়িকে ধরাশায়ী করে কিন্তু হিরোইনা ইয়াবা গাজা ঘুষ সুদ যে খায় তাকেও করে সমাজকে করে।

৪| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৩২

অগ্নিঝরা আগন্তুক বলেছেন: কমেন্ট কারী দের বলছি , আপনি নিজে যে নিষিদ্ধ কাজ টি করে অভ্ভস্ত সেটার পক্ষেই আপনি সাফাই গাইবেন , স্বাভাবিক। যে কোনো নিষিদ্ধ কাজ ই ইসলাম এ হারাম অথবা হারামের সমপর্যায়ের । এটুকু আপনাকে মানতেই হবে।

হালাল-হারামের বিধান দিতে গিয়ে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, হে মানবমণ্ডলী, পৃথিবীর হালাল ও পবিত্র বস্তু সামগ্রী ভক্ষণ করো আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না; সে নিঃসন্দেহে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। সে তো এ নির্দেশই তোমাদের দেবে যে, তোমরা অন্যায় ও অশ্লীল কাজ করতে থাকো এবং আল্লাহর প্রতি এমন সব বিষয়ে মিথ্যারোপ করা, যা তোমরা জান না। আর যখন তাদের কেউ বলে যে, সেই হুকুমেরই আনুগত্য করো, যা আল্লাহ তায়ালা নাজিল করেছেন। তখন তারা বলে কখনো না, আমরা তো সেই বিষয়েরই অনুসরণ করব যাতে আমরা আমাদের বাপ-দাদাদের দেখেছি। যদিও তাদের বাপ-দাদারা কিছুই জানত না, জানত না সরল পথও। বস্তুত এহেন কাফেরদের উদাহরণ­ এমন যেন কেউ এমন জীবকে আহ্বান করছে­ যা কোনো কিছুই শোনে না, হাঁক-ডাক আর চিৎকার ছাড়া বধির মূক ও অন্ধ। সুতরাং তারা কিছুই বুঝে না। হে ঈমানদার, তোমরা পবিত্র বস্তুসামগ্রী আহার করো যেগুলো আমি তোমাদেরকে রুজি হিসেবে দান করেছি এবং শুকরিয়া আদায় করো আল্লাহর, যদি তোমরা তাঁরই বন্দেগি করো। (সূরা বাকারা)।

৫| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৬

ডাইরেক্ট টু দ্যা হার্ট বলেছেন: ভাইরে সিগারেট যে খারাপ সেটা বুঝতে বুঝাতে কোরানের আয়াতের মত এত বিশাল বিষয় টানতে হয়না, এটা একজন ধুমপায়ী মানুষ সহজে বুঝতে পারে। আল্লাহর কোরাণ আয়াতকে যেখানে সেখানে টেনে আনবেননা ভাই,এই আয়াত দিয়ে আল্লাহ ধুমপান বুঝায়নি,এটা দিয়ে মানুষের মধ্যে আরো বিশাল অন্যায় আর অখাদ্য থেকে সাবধান করার জন্য দিয়েছে,আপনাকে কপির করে এনে সিগারেটের পিছে বসানোর জন্য আল্লাহ পাক এই আয়াত নাযিল করেননি,

উপরে লেখক এই আয়াত দিয়ে ধুমপায়িদের বিয়ে বন্ধ করে বসে আছে বলে একটু লাগলো,আমার মতে সকল ধুমপায়ি অবিবাহিত সবারই লাগার কথা, :)

আপনাকে আর লেখককে বলবো আয়াত গুলোর আগে পিছে আরো ভালো করে পড়ুন দেখুন এগুলো সমাজের কোন দিকটার ইঙ্গিৎ দিয়েছে কোন অখাদ্য গুলোকে হাইলাইট করেছে সেটা বুঝুন,

ভালো থাকুন

৬| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:২১

মোগল সম্রাট বলেছেন: বলেছেন: ভাইরে সিগারেট যে খারাপ সেটা বুঝতে বুঝাতে কোরানের আয়াতের মত এত বিশাল বিষয় টানতে হয়না, এটা একজন ধুমপায়ী মানুষ সহজে বুঝতে পারে।[/sb

সহমত

৭| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:২৮

টেকনিসিয়ান বলেছেন: সবাই কি জন্য খায় আমি জানিনা বলতে গেলে আমি এমনি এমনি খাই, আর বিয়ের কথা বলছেন? সেটার আগুন সিগারেটের আগুনের চেয়ে মারাত্বক,সিগারেট মাকরুহ হলে বিয়ে তাহলে হারাম :) ------------- সহমত :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.