রাতে জঙ্গলে ভয়ের সময়

০৮ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:৫৯

মাঝে মাঝে ইচ্ছে করেই বিপদের সাথে চ্যালেজ্ঞ নিই। গত মাসের ১১ তারিখের কথাটা,
ইচ্ছে করেই জঙ্গলের ভিতরের রাঙ্গামাটি রাস্তায় ঢুকে পড়লাম, তাও আবার সন্ধার মুখে আছরের নামাজের পর পরই।
শীতকালে বন্য হাতির একটা ভয় থাকে জঙ্গলের মধ্যে, কিন্তু সেদিন কেন জানি ভয় থাকা সত্তেও যেতে ইচ্ছে করছিল ।
হাটঁতে হাটঁতে প্রায় সাত কিলো চলে আসার পর হটাৎ দূর থেকে আজানের ধ্বনি শোনা যাচ্ছিল,
হটাৎ করে সব কোন কিছুই আর পরিস্কার দেখছি না, আমাদের মধ্যে একজন বলে উঠলো "আর হাটঁতে পারছি না, অন্ধকারও হয়ে আসছে, ফেরত যাই গা"।

অন্ধকারও নামে নি তখনো, কিন্তু যখন আবার ফেরত যাচ্ছিলাম, দশ মিটারের পর আর কোন কিছুই পরিস্কার দেখছিলাম না,
আর আমরাও আস্তে আস্তে যিরিয়ে হাটঁছি।
অল্প একটু আসার পরই কোত্থেকে একটা বুড়ো পাহাড়ি আদিবাসি এসে আমাদের সাথে হাটঁতে হাটঁতে বলে উঠলো, "এই সময়ে এখানে কেন আসছিলা? বনে হাতি-শিয়াল আছে যে জান না? তাড়াতাড়ি না পৌছালে সমস্যা হবে, তাড়াতাড়ি আলো থাকতে থাকতে যাও "

কথাটা শুনার পর সব কিছু অারো অন্ধকার হতে থাকলো, এবার সত্যিই মনে হচ্ছিল যে খুব বড় বিপদে পড়ছি, আমাদের মধ্যে একজনে হটাৎ করে হাটাঁ বন্ধ করে দিল হাতির
ভয়ে, আমারও একটু মনে হচ্ছিল যে দূর থেকে ঐটা হাতি দেখছি কিন্তু টর্চ না থাকায় কিছুই বুঝতেছিলাম না। আর ভয়ে সামনেও যেতে পারছিলাম না ভয়ে।
চরম বিভীষিকার মধ্যে হটাৎ করে পিছন থেকে একটা ছোট্ট পিকআপ আমাদের সামনে দিয়ে গেলে সেটার হেডলাইটের আলো দেখে নিশ্চিত হলাম যে ঐটা আসলে কিছুই ছিল না।
তারপর আবার হাটঁতে লাগলাম, কিন্তু রাস্তাই শেষ হয় না।
তারপর লোকালয়ের সামনে আসতেই সবার বুকে একটু সাহস আসলো,
সেই মূহুত্বটা অনেক দারুন যখন ভয় কাটিয়ে মনে হচ্ছিল নতুন জীবন প্রবেশ করেছি।
ক্লান্ত হয়ে রাস্তায় শুয়ে পড়লাম।
শীতকাল থাকা সত্বেও গায়ে থেকে নোনা ঘাম ঝড়ছে অবিরত।
তারপর হোস্টেলে আসতে আসতে রাত নয়টা, কিন্তু তখনো এক কাপ খাই নি।

৪ টি +১/-০