নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভীষণ কঠিন পোড়ামাটিকে আবার সেই কাদামাটিতে ফিরিয়ে আনা,ভীষণ কঠিন আঘাত দেয়া শব্দমালা গুলো ফিরিয়ে নেয়া।ভীষণ কঠিন নিজের সম্পর্কে কিছু বলা।যে চোখ দেখিনি সে চোখ কেমন করে বিশ্বাস করবে জানি না।যে কখনো রাখিনি হৃদয়ের উপর হৃদয়;সে কেমন করে বুঝবে আমায়!

নীল মনি

শিশুর মত চোখ দিয়ে দেখি আমার এই বিশ্ব।মানুষ স্বপ্নের কাছে হেরে যায় না, হেরে যায় নিজের প্রত্যাশার কাছে। প্রত্যাশা থাকে আকাশচুম্বী অথচ প্রচেষ্টায় থাকে শুধুই স্বপ্ন।

নীল মনি › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার ফেসবুক

২৩ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:১৫

(কোন লাইক দিতে হবে না পড়ে,পড়বেন-আর বুঝলেই যথেষ্ট)


তখন পাখি ডাকছিল ভোর হয়ে গিয়েছিল বলে।সেটা ভোর ছিল না,ভোরের একটু আগে চাঁদের আলোয় পাখিরা ভুল করেছিল একটি ভোরের স্বপ্নে।পাখিদের ও ভুল হয় বুঝি!!নাকি মানুষই শুধু ভুল করে?

পাতা কুড়ানো সকালের আগেই ঘুম ভেঙে গেল প্রান্তিকের।বিছানায় আড়ামোড়া ভেঙে চোখ খুলে তাকিয়ে আছে সামিয়ার দিকে।মাথার চুল গুলো দিয়ে এক চোখ ঢেকে গেছি।ঘুমিয়ে থাকলে মানুষকে এত পবিত্র লাগে।কেন লাগে এই উত্তর টা খোঁজে প্রান্তিক।
সামিয়ার পাশে শুয়ে আছে ওদের সংসারের নতুন অতিথি -ওদের আদরের কন্যা নিতা।

সকালে অফিসে যাবার আগে নিতার সাথে খেলা করে তবেই যায়।আজ অনেক দেরি তে উঠেছে ঘুম থেকে
।একটু হাসি নেই ওই ছোট্ট মুখে, শুধু কাঁদছে কারণ নিতার জ্বর এসেছে।এ সময়ে হঠাৎ জ্বর। প্রান্তিক মেয়ের গালে একটা আদর দেয়।জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে।এই জ্বর টা আমার হতে পারল না, মনে মনে বলে প্রান্তিক।
অফিসের পথে রওয়ানা হয়.খুব ছোট্ট একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি তে চাকরি।আহামরি চাকরি নয়, বেতন যা দেয় তাতে টেনে টুনে চলে কোনমতে।অফিসে এসেই কম্পিউটার অন করে দুটো কাজ করে আগে,মেইল চেক ও ফেসবুকের নোটিফিকেশন চেক।পনের থেকে বিশ মিনিট সার্ফিং করার পর নিজের কাজে হাত দেয় প্রান্তিক।

ফেসবুকের ভাবনার দেয়াল জুড়ে কত মানুষের স্ট্যাটাস।একটা স্ট্যাটাস দিতে মন চায়।অনেক দিন কোন স্ট্যাটাস দেয় না। নিরবে আসে নিরবে চলে যায়।সবার পোস্ট দেখে, কিন্তু কোন লাইক কমেন্ট করেনা।সময় কই আসলে,সময়ের অভাবে পোস্ট করতে পারে না। তবুও আজ...

"ওর গাল স্পর্শ করে লাফিয়ে উঠেছি।জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে আমার মেয়ে নিতার।তোমরা সবাই একটু দোয়া কর বাবুটার জন্য"

স্ট্যাটাস টা পোস্ট করে কাজে নামে প্রান্তিক।সব হিসাব মিলিয়ে বাসায় ফিরতে বেশ দেরি হয়ে যায়। নিতা জেগে আছে। জ্বর টা কমেছে।হাত ধুয়ে এসে মেয়েকে কোলে নিয়ে আদর করে প্রান্তিক।নিতা একটু হাসছে, ও র হাসি দেখে প্রান্তিক ও হাসে।সন্তান হবার আগে প্রান্তিক বুঝত না, বাবা হওয়ার কত আনন্দ! দিন শেষে ওকে দেখলে সারাদিনের ক্লান্তি আর থাকে না।

সময় গড়িয়ে যায়।মাস শেষ হতে এখনো সাত দিন বাকি।ফেসবুক এ ঘুরতে ঘুরতে প্রান্তিকের চোখ আটকে যায় তার বন্ধু অনিলের স্ট্যাটাসে।

"মেয়ের প্রথম জন্মদিন উদযাপন, মেয়েকে এটা কিনে দিলাম,বন্ধুরা এটা কেমন হয়েছে বলুন তো?"

প্রান্তিক দেখছে ডিজাইন টা খুব সুন্দর,মেয়েদের হাতের চুঁড়ি।আসলেই সুন্দর।প্রান্তিকের চোখের সামনে তার মেয়ের হাসিটা মনে আসে।আগামী ২৭ তারিখে নিতার প্রথম জন্মদিন।প্রান্তিক ঠিক করে নেয় ওর মেয়েকে এমন না হোক স্বর্ণের একটা জিনিস কিনে দিবে। কিন্তু স্বর্ণের যে বেশ দাম।হোক দাম,মেয়ে আমার একটাই,মনে মনে ভাবে প্রান্তিক,যে ভাবে হোক...

আজ ২৭ তারিখ। নিতার জন্মদিন।নিতার জন্মদিন উপলক্ষে আজ সামিয়া শাড়ি পরেছে।গোলাপি'র উপর গোলাপি হাতের কাজ। সামিয়া'র কোলে নিতা।সাদা রঙের জামা পরেছে মেয়ে আমার।পরীর কোলে ছোট্ট পরী।ঘর ভরে গেছে মানুষে।অনেক ছবি তোলা হয়েছে।নিতা'র ছোট্ট হাতে সোনার চুড়িঁ, খুব মানিয়েছে মেয়েকে।প্রান্তিকের চোখ জলে ভরে উঠেছে।কাল সকালে অফিসে গিয়ে ছবি গুলো ফেসবুকে আপলোড করবে।সবাই'কে জানিয়ে দিবে সেও তার মেয়ের জন্মদিন উদযাপন করেছে।সবাইকে সেও বলবে কেমন হয়েছে মেয়ের চুড়িঁ দেখতে।

প্রান্তিক অন্যদিনের তুলনায় আজ একটু আগেই অফিসে চলে যায়।

একে একে সব ছবি আপলোড করে ক্যাপশনে লিখে সেই কথা "আমার মেয়ের প্রথম জন্মদিনে তাকে উপহার দিয়েছি এই টা, কেমন হল বন্ধুরা?"পোস্টটি পাবলিক করা ছিল।হঠাৎ এক মিনিটের মাথায় প্রান্তিক পোস্টটি অনলি মি করে দেয়।

একটা অপরাধবোধ জেগে উঠে মনে।কেউ জানেনা কেমন করে এই স্বর্ণের টাকা সে জোগাড় করেছে!বিবেক যেন জেগে উঠে, মনে হয় -

তার এই পোস্টটি দেখে হয়ত অন্য কেউ তার মেয়েকে এমনি করে উপহার দিতে চাইবে,সাধ্য না থাকলে কেউ হয়ত আফসোস করে বসবে,হয়ত কেউ তার মত করে অন্যায় করে শখ মিটাবে! প্রান্তিক সিদ্ধান্ত নেয় -অন্যেরা দেখে আফসোস করে এমন কোন পোস্ট সে জীবনে দেবে না।যে ভুল সে করেছে জীবনে -সে ভুল আর নয়।
প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে।

নিতার জ্বর এসেছে আজ আবার।প্রান্তিক বসে আছে হাসপাতালে।
নিতা কাঁদছে, ওর ইঞ্জেকশন দেয়া হচ্ছে।প্রান্তিকও কাঁদছে মেয়ের ব্যথায় কিংবা পাপে।ভুল কখনও কখনও মানুষও করে পাখিদের মত!

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:২৪

মো: হাসানূর রহমান রিজভী বলেছেন: আমার বাড়ির বাগানের কিছু পাখি তো প্রায় সারা রাতই ডাকাডাকি করে।

৩১ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:১৮

নীল মনি বলেছেন: সরি, উত্তর দিতে দেরি হল,পাখিদের বড় একটা বকা :)

৩১ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:১৮

নীল মনি বলেছেন: সরি, উত্তর দিতে দেরি হল,পাখিদের বড় একটা বকা :)

২| ২৩ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:৪৫

সুব্রত দত্ত বলেছেন: বেশ ভালো লাগল গল্প। ভালো হয়েছে। কিছু কথা ছিল। এই লিখিত ভাষায় কেন যেন ব্যক্ত হচ্ছে না। তাই আর না বললাম। লিখতে থাকেন। ভালো থাকবেন।

৩১ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:২০

নীল মনি বলেছেন: শুকরিয়া, কেউ মন্তব্য করলে খুব ভালো লাগে। স্রষ্টা আপনায় ভালো রাখুন

৩| ২৩ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:৫৬

হাঁফীজ আনোয়ার হোসাইন বলেছেন: ভাল লাগলো,পড়তে পড়তে একটা সময় নিজেকে প্রান্তিকের জায়গায় বসিয়ে দিয়েছিলাম।কেন যানি মনে হল আমিও একজন বাবা আর নিতার মত একটা ছোট্র বাবু আমারও আছে

৪| ৩১ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:২৫

নীল মনি বলেছেন: অনেক অনেক কৃতজ্ঞ হইলুম। দোয়া করবেন লেখার চেষ্টা আরো যেন ভালো হয়। ক্ষমা করবেন দেরিতে উত্তর দেবার জন্য।

৫| ৩১ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:২৫

নীল মনি বলেছেন: অনেক অনেক কৃতজ্ঞ হইলুম। দোয়া করবেন লেখার চেষ্টা আরো যেন ভালো হয়। ক্ষমা করবেন দেরিতে উত্তর দেবার জন্য।

৬| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:২৬

হাতুড়ে লেখক বলেছেন: গল্পের নামটি যথার্থ মনে হয়নি আমার কাছে। মোটামুটি লেগেছে। আরেকটু গোছালো হতে পারতো। শুভ কামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.