নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দূরে থাকুন; ভালো থাকুন।

ঋণাত্মক শূণ্য

নেগেটিভিটিতে বিশ্বাস করি না; তাই এমন নাম বেছে নিলাম, যা বাস্তব নয়!

ঋণাত্মক শূণ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাজের জন্য ভ্রমণ; ভ্রমণের জন্য কাজ!

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১:৪৯

সেপ্টেম্বর মাসে একটা প্রমোশন হয়েছে। প্রমোশন পাওয়া এই পোষ্টে আমার প্রচুর ঘোরাঘুরি করা লাগে। রিয়াদ শহরের ভিতরে যেমন ঘোরা লাগে, তেমনি যাওয়া লাগে আরও বহু বহু শহরে। গত চারমাস ১২দিনে আমি ৯টা শহরে প্রায় ১৪বার গিয়েছি।



আমাদের প্রতিষ্ঠানে আগে শহরের বাইরে গেলে একটা বিশাল ইনকামের সুযোগ ছিলো, লিগ্যাল সুযোগ। সকালের খাওয়া বাবদ প্রায় ১২০ রিয়াল, দুপুরের খাওয়া বাবদ প্রায় ১৪০ এবং রাতেরর প্রায় ১৯০। তাছাড়া প্রতি রাত, দিনের কর্মঘন্টা ও কত কিলোমিটার ভ্রমণ করা লাগলো তার উপরেও টাকা ছিলো। আর শুক্র-শনিবার একটা ডিউটি করা লাগতো, সেটা ঐ আগের বলা কর্ম ঘন্টা বাদেও ঘন্টা প্রতি প্রায় ৬৫-৭৫ রিয়াল ইনকাম হতো।

অর্থাৎ শুধু ২৪ ঘন্টার জন্য আমি কোথাও গেলে ৭০০-৯০০ রিয়াল অটোমেটিক ইনকাম হয়ে যেতো। এজন্য আগে সিরিয়াল পাওয়া যেতো না।

কিন্তু গত বছরের জুলাইতে হঠাৎই নিয়ম পরিবর্তন হয়ে গেছে। এখন কোথাও গেলে যা খাওয়া হবে, সেই বিল জমা দিলে সেই টাকাই পাওয়া যাবে; আর শুক্রশনিবার বাড়তি কাজ করলে ঘন্টা হিসাবে ৫০-৭৫ রিয়াল আসবে। ব্যাস। তাই অনেকেই আর বাইরে তেমন যেতে চান না। রিয়াদেই শুক্র-শনিবার বাড়তি কাজ করলে যা পাওয়া যাবে, রিয়াদের বাইরে গেলেও তাই। শুধু খাওয়াটা ফ্রি। আর রাত পেরোলে ৩০ রিয়াল। এতটুকুর জন্য কেউই বাইরে যেতে চায় না।

এখানেই আমার এন্ট্রি। আমি আগে ২/৩মাস পরে একবার বাইরে যাবার সুযোগ পেতাম। এখন মাসে ২/৩বার যাওয়ার সুযোগ মেলে। এ মাসের শুরুতেই দুটা শহর যাওয়া হয়েছে; আর মাসের শেষ দিকে একবার যাওয়া হবে।

অধিকাংশ মানুষ বিমান বন্দরেরের ওয়েটিংকে অপছন্দ করেন; আমি উল্টা। বিমান বন্দর আমার ভালো লাগে, ভালো লাগে হাসপাতেলের ওয়েটিং রুমও। প্রচন্ড ধৈর্য্য নিয়ে বসে থাকতে পারি।

এইতো, গত শুক্রবারেই যখন একটা শহরে যাচ্ছিলাম, ফ্লাইট ছিলো সকাল ১১টায়। আমি ৯:৩০ এ হাজির। ১০:৪৫ এ জানানো হলো ফ্লাইট ক্যান্সেল। আমাদের সবাইকে দুপুর ১টার একটা ফ্লাইটে দেওয়া হলো। মাত্র ২ঘন্টার ব্যবধান। তাই আর কাইকুই করলাম না। আমরা ৪জন অপেক্ষায় থাকলাম।

দুপুর ২:৩০ এ জানানো হলো যে এটাও ক্যান্সেল। সন্ধ্যা ৬টার একটা ফ্লাইটে আমাদের তুলে দেওয়া হবে। পরদিন ভোর ৬টায় আমাদের একটা জায়গায় থাকতে হবে কাজের জন্য। সেই হিসাবে ৬টায় বিমানে উঠে ৮টায় নেমে ১০টার মধ্যে ঘুম দিতে হবে।

যাই হোক, ৫:৩০ এ জানানো হলো যে আর মাত্র ২টা সীট আছে! আমরা ৪জন চাইলেই এক সাথে এটায় উঠতে পারবো না। এক কলিগ মাথা গরম করে বাসার দিকে রওনা হলো। বাকি দুই জন আমার দিকে করুণ দৃষ্টিতে চেয়ে থাকলো। আমি তাদের উঠে যেতে বললাম।

ভাগ্য ভালোই বলতে হয়। কারণ আমাকে টিকিট কাউন্টার থেকে জানানো হলো যে অন্য একটি বিমানে তারা আমাকে তুলে দিবে, সেটার সময় সন্ধ্যা ৭টায়। বোর্ডিং পাস হাতে পেয়ে দেখলাম সেটা একদম সামনের সারির সীট গুলার একটা; অর্থাৎ বিজনেস ক্লাস!

লোকাল ফ্লাইটে বিজনেস ক্লাস বলতে প্রতি পাশে ২টা করে সীট, যেখানে ইকোনমিতে ৩টা করে। আর একটা পর্দা দিয়ে ইকোনমি থেকে আলাদা করা। ৮জনের জন্য মাত্র একটি টয়লেট, যেখানে ইকোনমির ১০০+ জনের জন্য ২টা টয়লেট।

অফিসের কাজে ঘোরাঘুরির ফাঁকে আমি নিজের ঘোরাঘুরি একটু চালু রাখার চেষ্টা করি। চেষ্টা করি এখানে যা ইনকাম হবে সেটার ৩০-৪০% খরচ করে যতটুকু ঘোরা যায়, সেটুকুই ঘুরতে।

গতকাল আমাকে জবাবদিহি করতে হয়েছে অফিসে, কেন এত অল্প সময়ে এতবার বাইরে গিয়েছি। উত্তরও দিয়েছি। বস হাসতে হাসতে জানতে চাইলেন, তুমি কি কাজের জন্য ভ্রমণ করো, নাকি ভ্রমণের জন্য কাজ করো?

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:৩০

স্প্যানকড বলেছেন: ঘুরতে পারার মতন আনন্দ আর নাই ! ভালো থাকবেন।

১৪ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১:৫০

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: ধন্যবাদ।

অবশ্যই, ঘুরতেপারা এক বিশাল আনন্দের কাজ। আর এর জন্য আমি সকল প্যারা নিতেও রাজি!

২| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:৪৩

মনিরা সুলতানা বলেছেন: আমি ও এমন একটা জব করতাম, যখন ভ্রমণের জন্য কাজ করতাম :)

১৪ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১:৫০

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: ছাড়লেন কেন?

৩| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:৫৪

মনিরা সুলতানা বলেছেন: প্রথমত মেয়ে কে নিয়ে ট্র্যাভেল যন্ত্রণা , আবার মেয়ে কে রেখে ট্র্যাভেল আরও বড় যন্ত্রণা। এরপর তো শুরু হয়ে গেলো প্রবাস জীবন আর সে চেষ্টাই করা হয়ে উঠে নি।

২৭ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৭:৪৩

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: মা হওয়া বেশ কষ্টের কাজ। তবে আনন্দেরও।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.