নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Fake world, fake life

ত্রিকোণমিতি

পাপিষ্ঠের দলে প্রথম সারির একটি মেরুদণ্ডী প্রাণী

ত্রিকোণমিতি › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুসলিমদের অধঃপতনের কারণ- একটি উদাহরণই যথেষ্ট

০৮ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:০৭


১৩ই ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে এক ইমামসহ মসজিদ কমিটির সদস্যদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি- ঐ ইমাম ফতওয়া দিয়েছিলো- নারীদের মাঠে কাজ করার বিরুদ্ধে। (http://bit.ly/2o86Hpg)

এ ঘটনাটিকে অনেকে ছোট হিসেবে নিলেও আমি ছোট হিসেবে নেইনি, কারণ আমি দেখেছি, যারা আন্তর্জাতিক ইসলামবিরোধী শক্তি হিসেবে কাজ করে, তারা প্রত্যেকেই এ ঘটনাটিতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। বিশেষ করে বিবিসি (http://bbc.in/2AYQ8i0) এবং ডয়েচে ভেলে (http://bit.ly/2jSJCSI) ঘটনা ঘটার সাথে সাথে ফিল্ডে সাংবাদিক পাঠিয়ে নিউজ করেছে।

আমি দেখেছি, কিছু কিছু ইস্যুতে ইসলামবিদ্বেষীরা খুব বেশি রিয়্যাক্ট করে। যেমন ধরুন- পাঠ্যবইয়ে ওড়নার বিষয়টি। তারা এই ওড়না নিয়ে ব্যাপক আন্দোলন নেমে যায়, যদিও অনেকের কাছে বিষয়টি অত বড় বলে মনে হয়নি। এর কারণ অনুসন্ধানে আমি দেখেছি, মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কোরআনের সূরা আহযাবের ৫৯ নম্বর আয়াতে সম্ভবত ওড়না (অথবা চাদর বা লম্বা কাপড়) এর কথা এসেছে। যেহেতু মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থের বিষয়টি পাঠ্যপুস্তকে ব্যবহারিক পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে, তাই সেটার বিরোধীতা করতে আন্তর্জাতিক ইসলামবিদ্বেষী গোষ্ঠী একযোগে নেমে গেছে। মুসলমানরা তাদের ধর্মীয় গ্রন্থে কি আছে, সেটা না জানলেও ইসলামবিদ্বেষীরা সেটা খুব ভালোভাবেই জানে।

একই ঘটনা ঘটেছে কুষ্টিয়ার কুমারখালিতে। ইমাম সাহেব যে ইস্যুতেই ফতওয়া দিক, তার ফতওয়াটি মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ সূরা আহযাবের ৩৩ নম্বর আয়াতের সাথে মিলে গেছে। আয়াতটি এরকম- “'তোমরা (নারীরা) তোমাদের ঘরের ভেতর অবস্থান করো এবং বাইরে বের হয়ো না- যেমন ইসলামপূর্ব জাহেলি যুগের মেয়েরা বের হতো।”

আমি এনটিভির যে ছবিটি দিয়েছি, সেখানেও দেখুন, ক্যাপশনে কিন্তু ঐ অংশটি উল্লেখ আছে।

ঐ ইমামের ফতওয়া শুদ্ধ হোক আর আলোচনা সাপেক্ষ হোক, সেটা আমার আলোচনার বিষয় নয়। আমি চিন্তিত হয়েছি এ বিষয়টি নিয়ে ইসলামবিদ্বেষী গ্রুপটি এত সক্রিয় হোল কেন ?

খুব সম্ভবত- মসজিদের ইমাম সাহেবরা যেন ধর্মগ্রন্থ থেকে কোন কিছু উল্লেখ করে সমাজে সেটার বাস্তবায়ন না করতে পারে, সে জন্য শক্ত আইনী পদক্ষেপ নিলো ইসলামবিদ্বেষী মহল। আরো সহজভাষায় বলতে- সমাজে মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থের বাস্তবায়ন বন্ধ করতে করতেই এ গ্রেফতার। শুধু গ্রেফতার নয়, গ্রেফতারের পরে প্রত্যেকে রিমান্ডেও নেয়া হয়েছে।

একটু চিন্তা করে দেখুন-

সংবিধানে পতিতাবৃত্তি নিষিদ্ধ, তারপরও সারা দেশে অবাধে পতিতাবৃত্তি চলছে, কোথায় কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না।

সংবিধানে জুয়া নিষিদ্ধ, তারপরও সারা দেশে অবাধে চলছে জুয়া খেলা। কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না।

সংবিধানে মদ নিষিদ্ধ, তারপরও দেশে অবাধে মদের বারগুলো চলছে, মানুষ মদ খাচ্ছে। কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না।

সে হিসেবে কি ইমাম সাহেব এত বড় অন্যায় করে ফেললো, তাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিতে হবে ??

বুঝলাম

ইমাম সাহেব ফতওয়া দিয়েছে, প্রশাসন সেটা ফিল্ড পর্যায়ে জারি না করতে দিলেই হয়, তাকে গ্রেফতার করতে হবে কেন ? রিমান্ডে নিতে হবে কেন ?? তার অপরাধ কি এতই বড় ??

ইমাম সাহেব ফতওয়া দিয়েছিলো- মাঠের ফসল রক্ষা করতে। তার উদ্দেশ্য ভালো। ফসল রক্ষা করা দৃশ্যত তার উদ্দেশ্য। অথচ তার নামে মামলা হয়েছে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩) ধারায়। এই আইনে বলা হচ্ছে- ‘এমন কোন বাধা যার মাধ্যমে কৃষি উন্নয়ন হ্রাস পাবে।’

অথচ ঐ ইমাম কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়ন-ই চেয়েছিলো এবং ধর্মীয় বিশ্বাসের সমাধান দিয়েছিলো। সারা বিশ্বে অন্যান্য ধর্মগুরুরাও ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে বিভিন্ন সমাধান দেয়, তাই বলে তাদের কেউ গ্রেফতার করে না।

যাই হোক,

ইসলামবিদ্বেষীরা যখন খুবই সক্রিয়, তখন এ ইস্যুতে ইসলামী নেতাদের কি করা উচিত ছিলো ?

অবশ্যই উচিত ছিলো দলমত নির্বিশেষ গ্রেফতারের প্রতিবাদ করা।

কিন্তু আমি অবাক হলাম- কোন ইসলামী নেতা এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন প্রতিবাদ করেনি।

উপরন্তু ইমামের ফতওয়ার শুদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুললো হেফাজতে ইসলামের নেতা মুফতি ফয়জুল্লাহ !

(http://bit.ly/2AYXTES)

আমার কথা হলো- ফতওয়া শুদ্ধ না অশুদ্ধ সেটা নিয়ে আলোচনা করার দরকার আছে। কিন্তু তার আগে মুসলমান হিসেবে প্রত্যেক মুসলমানের বিপদে এগিয়ে আসা বেশি জরুরী ছিলো। আজকে হেফজতে ইসলামকে অনেকেই ইসলামী দল হিসেবে শ্রদ্ধা করে। কিন্তু একজন ইমামকে গ্রেফতার করা হলো, রিমান্ডে নেয়া হলো, হেফাজতে ইসলামের তো উচিত ছিলো সেটা নিয়ে প্রতিবাদ করা, কিন্তু সেটা ভুলে ফতওয়ার শুদ্ধতা-বিশুদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা নয়।

ইসলামবিদ্বেষীরা কিন্তু একজোট হয়েছে মুসলমানদের বিরুদ্ধে,

কিন্তু মুসলমানরা এখনও একজোট হতে পারেনি নিজেদের রক্ষায়।

আর এ কারণেই মুসলমানদের এখন পতন হচ্ছে, মার খাচ্ছে বার বার।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.