নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্য সব সময় সুন্দর ■ www.facebook.com/niazuddin.sumon ■ [email protected]

নিয়াজ সুমন

ভালোলাগে ভ্রমন করতে। প্রকৃতির সাথে মিশে গিয়ে ছবির ফ্রেমে নিজেকে আবদ্ধ করতে। অবসর কাটে সাহিত্যের আঙিনায় পদচারনা করে। ব্যস্তময় যান্ত্রিক জীবনের মাঝেও চেষ্টা করি নিজের অব্যক্ত কথামালা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে।

নিয়াজ সুমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

⌂ বাংলা চলচ্চিত্র ■ ডুব » ডুব দেখে চুপ !!!

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০২


আজ থেকে প্রায় ১০ বছর আগে সিনেমা হলে গিয়ে শেষ ছবি দেখেছিলাম মনে হয় । ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সময় সুযোগের অভাব আর সিনেমা হলের দুষ্প্রার্প্রাতা ও সুন্দর পরিবেশের অভাবে হলে গিয়ে ছবি দেখা হয়ে উঠেনি। যাই হোক ‘ডুব’ ছবির কল্যানে ছবি মুক্তির দ্বিতীয় দিন সিনেমা হলে নতুন করে ডুব দেওয়া। নির্মাতা ফারুকী বিগত ছবি গুলো বেশ উপভোগ্য ছিল। যার ফলে প্রত্যাশার পাল্লাও ভারী ছিল এই ছবি নিয়ে ।

বহুল আলোচিত ও সমালোচিত ‘ডুব’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছে ( ২৭-১০-১৭) শুক্রবার। দেশের ৩৯টি সিনেমা হলে ছবিটি একযোগে চলছে। মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত এ ছবিটি মুক্তির আগে তর্ক - বিতর্ক বাধে। বিভিন্ন মিডিয়া ও মহল থেকে প্রকাশ হয় ‘ডুব’র গল্প নন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের জীবন থেকে নেওয়া। সেখানে হুমায়ূনের দ্বিতীয় বিয়ের কাহিনিটাই মুখ্য করে তুলে ধরা হয়েছে।

ডুব সিনেমাটি কারো বায়োপিক হলো কি হলো না আপাতত তা মাথায় রাখছি না। একজন নিরপেক্ষ দর্শক হিসেবে ডুব ছবি তে পুরাটা সময় কতটুকু ডুবে ছিলাম আর ডুবে ডুবে জল খেতে কেমন লেগেছিল তার অনুভুতিটুকেই ব্যাক্ত করবো আপনাদের সাথে। চলুন তাহলে এবার প্রবেশ করি প্রেমের ডুব সাগরে।

সিনেমায় চরিত্র ছিলো কম। যা ছিলো তা খুব গোছানো। অযাচিত সংলাপের ব্যবহার হয়নি। সংলাপের চেয়ে যে চিত্রভাষা অধিকতর শক্তিশালী তারই একটি অনন্য দৃষ্টান্ত ডুব সিনেমা। স্থির চিত্র ও প্রাকৃতিক আবহে যে নিরবতা বিদ্যমান তা যে কখনো কখনো শব্দের চাইতেও বেশি কথা বলে তা লক্ষনীয় ডুব ছবিতে। বাংলা ছবিতে ভাব প্রকাশের এই রকম দৃশ্যায়ন খুব একটা চোখে পড়ে না।

একজন সাধারন দর্শক হিসেবে আমাকে মুগ্ধ করেছে চিত্র গ্রহণের কৌশলটি। ক্যামেরা কম্পোজিশনের সিনেমাটোগ্রাফির শৈল্পিকতা নিঃসন্দেহে পুরো ছবিতে আপনাকে মুগ্ধ করবে। ন্যাচারাল যে ভিউ দেখানো হয়েছে তা বেশ দৃষ্টিনন্দন ছিল। কেমিস্ট্রি বিশেষত নিতু এবং জাবেদ হাসানের সিগারেট শেয়ারের সিনটি কিংবা ফ্লাইওভারের উপর বারবার গাড়ি থেকে নেমে যাওয়া দ্বিধাগ্রস্ত নিতু চরিত্রটিও অন্য রকম উপভোগ্য ছিল।

অন্যদিকে সাবেরি চরিত্রটি (তিশা) দায়িত্বশীলতা, বাবা মায়ের প্রতি আবেগ ভালবাসার প্রকাশ এবং বাস্তবতার বিচারে বাবার প্রতি সন্তানের চাপা ক্ষোভের বর্হিপ্রকাশের প্রতীক হিসেবে ধরা দেয় দর্শকদের কাছে। ছবির শুরুতে প্রথম স্ত্রীর বাবার অভিনয় চমৎকার হয়েছে। পুলিশ অফিসার ও সাথে বাড়ির কেয়ারটেকার যে কোন সংলাপ না বলেও চোখের দৃষ্টিতে যে অভিনয় দক্ষতা দেখিয়েছেন তা বেশ মুগ্ধ করার মতো। এই দিক দিয়ে পরিচালককের পরিচালনার দক্ষতার প্রমাণ পাওয়া যায়।

অসম বয়সের প্রেম, বিবাহবহির্ভুত প্রেম এ একটি পরিবার কিভবে অসহায় হয়ে পড়ে তার বাস্তব চিত্র ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন পরিচালক। যদিও যুগে যুগে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে এমন সর্ম্পক রচিত হয়েছেন।

ছবির ভাল দিকগুলি :
● জীবনধর্মী ও বাস্তবিক বিচারে মেকাপ এবং কস্টিউম ব্যবহার হয়েছে আহামরি রকমের অতিরঞ্জন নেই।
● প্রতিটি শটের ব্যাকগ্রাউণ্ড ভালোলেগেছে।
● আনকাটেড লংটাইম শটগুলো এই সিনেমায় যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা।
● এরিয়েল ভিউ থেকে নেয়া শটগুলোও দৃষ্টিনন্দন ছিল।
● আহারে জীবন গানটি ভালো হয়েছে পুরা ছবিতে গানটির আবহ সংগীত ও চমৎকার।

ছবির দুর্বল দিকসমূহ :

জাবেদে চরিত্রে (ইরফান খান) সংলাপে সাবলীল ভাবে বাংলা বলতে পারেনি। বাংলা বলতে গিয়ে মুখে জড়তা ছিল লক্ষনীয়। হয়তো তাই পরিচালক অনেক সংলাপ ইংরেজিতে বলিয়েছেন জাবেদের মুখ দিয়ে । সিনেমার শ্লথ প্রবাহ দর্শকদের মাঝে খানিকটা বিরক্তবোধ সৃষ্টি করেছে। স্বামী-স্ত্রীর ভুমিকায় ইরফান খান ও রোকেয়া প্রাচীর মধ্যে বেশ দুরত্বভাব দেখা গিয়েছে। তাদের দু’জনের কেউ-ই প্রানবন্তভাবে নিজেদের অভিনয় উপস্থাপন করতে পারেনি। এমন হতে পারে নামিদামী অভিনেতার হওয়ায় কারনে খাপ খাওয়াতে গিয়ে আসল অভিনয় বের করে আনা সম্ভব হয়ে উঠেনি।

জাবেদের মৃত্যু কি কারনে, কখন , কিভাবে হল সব রহস্যআবৃত থেকে গেল। মৃত্যুর পর দিত্বীয় স্ত্রীর একটা সন্তান দেখানো হয়েছে যার কোন লক্ষণ ছবিতে পূর্বে দেখানো হয়নি। মৃত্যু পরবর্তী সময়ে চাচা ( নাদের চৌ. ) কে প্রথম স্ত্রীর কন্যা ( তিশা) তার মায়ের (রোকেয়া প্রাচী) সাথে যে সৎ মায়ের (পার্ণো মিত্র) যে প্রতিদ্বন্ধিতার কথা বলে দোষারোপ করেছেন তার কোন বাস্তব চিত্র ছবিতে দেখানো হয়নি।
ছবিতে জাবেদ কে স্যার বলে ডাকতে দেখা যায় কিন্তু প্রশ্ন হল উনি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন বিষয়ে শিক্ষকতা করেন তা দেখানে হয়নি ছবিতে একবারও যা ধোয়াশায় রয়ে গেল।

পুরা ছবির দেশীয় লোকেশন ও আসবাবপত্র সাজ সজ্জা ও সাদামাটা ছবির উপস্থাপন দেখে মনে খটকা লাগলো এত বিশাল বাজেটের ছবিতে পরিচালক কোথায় খরচ করলো এত্তগুলো টাকা !!


ছবির প্রভাব:

মনোবল শক্ত করে যে কোন সমস্যা কাটিয়ে জীবনের মোর ঘুরিয়ে নেওয়া যায় যা প্রথম পক্ষের স্ত্রী করে দেখিয়েছেন যা সমাজের জন্য ইতিবাচক দিক।

আঠাঁর মতো লেগে থাকলে নিজের লক্ষ্য আর্জিত হয় যা দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর বেলায় প্রযোজ্য। মনে প্রেম থাকলে বয়স যেখানে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় না নিতু চরিত্রে তারই আভাস পাওয়া যায়। তবে এর প্রভাব সমাজে নেতিবাচক । কেননা এমন চাহিদা বৃদ্ধি পেলে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। কেননা এমন অযাচিত প্রেম সমাজ খারাপ দৃষ্টিতে দেখে।

পুরুষের সাথে সাথে মেয়েরাও ধুমপানে পারর্দশী । এমন দৃর্শ্য কি মেয়েদের ভবিষ্যৎ এ ধুমপানে আগ্রহ বৃদ্ধি করা নয় কি !! কিংবা হতে পারে সিগারেট কোম্পানীর নতুন ভোক্তা সৃষ্টি।

যোগাযোগ কমে গেলে ভালোবাসার মধ্যে শূর্ন্যতা যেমন সৃষ্টি হয় তেমনি দুরত্ব ও বাড়তে থাকে ধীরে ধীরে এই টা যেমন সত্য ঠিক তেমনি যতই চেষ্টা করুক নতুনের সাথে খাপ খাওয়াতে তবুও মানুষ তার অতীত স্মৃতি মুছে ফেলতে পারেনা কখনো। পারে না প্রিয়মুখ গুলো একদম ভুলে থাকতে।


সিনেমা- ডুব
পরিচালনা- মোস্তফা সরয়ার ফারুকি
অভিনয়- ইরফান খান, নুসরাত ইমরোজ তিশা, রোকেয়া প্রাচী এবং পার্নো মিত্র
গান- আহারে জীবন ( ব্যান্ড- চিরকুট)
ছবির দৈর্ঘ্য – ৮৫ মিনিট
ছবির ধরণ - ফিচার ফিল্ম
প্রযোজনা- জাজ মাল্টিমিডিয়া
সহ-প্রযোজক- ইরফান খান
র্নিমাণ ব্যয়- ১২ কোটি টাকা

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৪

নিরাপদ দেশ চাই বলেছেন: রিভিউ ভাল হয়েছে

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৭

নিয়াজ সুমন বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে উৎসাহিত করার জন্য । এই প্রথম কোন রিভিউ দিলাম।

২| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
রিভিউ ভালো হলেও
ছবি তেমন আহামরি কিছুনা।।

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৯

নিয়াজ সুমন বলেছেন: আপনার সাথে সহমত। ছবিটি খুব সাধারণ গল্প।

৩| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:৪৮

এখন আমি অনেক বড় বলেছেন: :| :||

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১০:৩৭

নিয়াজ সুমন বলেছেন: বড় সাহেব আপনাকে ধন্যবাদ।

৪| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪১

রানা আমান বলেছেন: রিভিউ ভাল হয়েছে , ছবি যেমনই হোক ।

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৩

নিয়াজ সুমন বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে সময় নিয়ে পড়ার জন্য। শুভেচছা রইলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.