মূক বধির প্রকৌশলবিদ্যা,অতিকথনপ্রিয় মানুষ এবং লঞ্চ দুর্ঘটনা.........

১০ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৭

যখন কোন লঞ্চ দুর্ঘটনা ঘটে তখন আমি টিভি এর দিকে খুব উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি...আগে তাকিয়ে থাকতাম এক দৃষ্টিকোণ থেকে আর এখন যন্ত্রকৌশলের একজন ছাত্র হিসেবে তাকিয়ে থাকি অন্য দৃষ্টিতে...আজকে যে বিষয় নিয়ে কথা বলব সেটার সাথে হয়তোবা আপনারা খুব বেশি পরিচিত নন...কিন্তু এটার গুরুত্ব অপরিসীম

লঞ্চ দুর্ঘটনার পর টিভিতে আমরা তথাকথিত বিশেষজ্ঞ আর মিডিয়ার জ্ঞানগর্ভ অতিকথন লক্ষ্য করি...

আমাদের কি বলা হয় কারন হিসেবে ?অধিকাংশ ক্ষেত্রে বলা হয় লোক বেশি তোলার জন্য অথবা যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য এই দুর্ঘটনা ঘটেছে...মেনে নিচ্ছি অতিরিক্ত যাত্রী তোলা একটি কারন কিন্তু এটাই কি মূল কারন?কখনো নয়...এই সেক্টরগুলোতে নিয়োজিত প্রকৌশলিদের অনেককে আমি জিজ্ঞেস করেছি যাচাই করার জন্য...যে জিনিস আমি আশা করেছিলাম তাদের কাছে তার ছিটেফোঁটাও তাদের মধ্যে পাইনি...আমরা বারবার বলি অবহেলা...অবহেলার সাথে সাথে এই ব্যাপারটা আমরা এড়িয়ে যাই...আর তা হল আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান এবং মানসিকতার অভাব...আসুন দেখা যাক আসল বেপারটা কোথায়



আধুনিক দেশগুলোতে একটি সাইকেল কোম্পানিতে উৎপাদনের ক্ষেত্রেও কিছু কিছু জিনিস লক্ষ্য করা হয়...

সেখানে যেমন সেগুলোর যথাযথ মেকানিকাল ডিজাইন করা হয় তেমনি একজন আরোহী কি পরিমান বাতাসের চাপ তাকে সহ্য করতে হবে সেটা যাচাই করা হয়...যাচাই করার এই আধুনিক এই পদ্ধতিকে বলা হয় COMPUTATIONAL FLUID DYNAMICS সংক্ষেপে CFD.এই পর্যবেক্ষণ অনেক নিখুঁত এবং নিরাপদ যানবাহন তৈরিতে সহায়তা করে...সেখানে অন্যান্য বড় বড় যানবাহন এর কথা তো বলাই বাহুল্য



COMPUTATIONAL FLUID DYNAMICS হচ্ছে COMPUTER এ ব্যাবহার করা সেই সকল প্রোগ্রাম যেগুলো যানবাহনের একই স্কেলিঙ্গের ডিজাইন বায়ূ এবং পানির ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ায় কতটুকু টিকে থাকতে পারে তা যাচাই করে দেখে

দুঃখজনক হলেও সত্যি এর ব্যাবহার এখন পর্যন্ত আমাদের দেশের ক্ষেত্রে নেই...তাই অনুমানের উপর ভিত্তি করে অবৈজ্ঞানিকভাবে তৈরি করা যানবাহনে দুর্ঘটনার বীজ শুরুতেই রোপণ করা হয়ে যায়



যদি এর পূর্ণমাত্রায় ব্যাবহার হয় তাহলে লঞ্চ দুর্ঘটনা বহুলাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব...শুধু পরিবর্তন দরকার মানসিকতার আর আধুনিক চিন্তাধারার...মনে রাখতে হবে প্রকৌশলীদের কাজ তথাকথিত MANAGEMENT নয়...

১ টি +১/-০