নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিন্তা প্রসবের বেদনা মগজব্যাপী স্থায়ী হওয়ার আগেই কলম ধরতে হতো। মাথার মধ্যে জমে থাকা ভয়ংকর সব চিন্তাগুলোকে পরিণতি দেয়া মত শব্দ কোনো কালেই ছিল না।তারপরও সেই সব গল্প লেখতেই হতো,যেগুলো লেখার পর শান্তিতে ঘুমানো যায়।

নির্বাক স্বপ্ন

নির্বাক স্বপ্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বীভৎস সম্ভোগ

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৮

সত্যি বলতে কি অনেক দিন পর তিথি কে দেখার পর খারাপও লাগছিল আবার ভালোও লাগছিল।দম আটকে আসছিল। ইচ্ছে করছিল নিজের মধ্যে বেঁচে যাওয়া ভালোবাসার সবটা দিয়ে ওকে নিয়ে বেঁচে থাকি।নানা জটিলতায় তিথির সাথে সম্পর্কটা এগুয়ো নি। ঘরে ঢুকে এক বিপত্তি তে পড়লাম।কোন মতে ই তিথি কে মাথা থেকে সরাতে পারছি না।রাতভর ওর বন্ধ নাম্বারে ফোন করে গেলাম।
আগামী দিন নানান কাজে দিনটা পার করে দিলেও রাত কাটানো দুষ্কর হয়ে পড়ল,তিথির কথা মনে পড়াতে।তিথির বন্ধ নাম্বারে কল ঢুকলো অনেকটা মিরাকেলের মত।এরপর যেন এক রূপকথার গল্প।তিথি আগের তুলনায় এখন অনেক ম্যাচুউর।কনফিডেন্ট।আমরা খুব সহজেই নতুন করে রিলেশনশীপে জড়িয়ে পড়লাম।অন্ধকারে থাকা মানুষ যেমন সামান্য আলোতেই চোখ ঝলসে ফেলে।আমার অবস্থাও ঠিক তাই হল।আমি ওর প্রতি খুব বেশী দুর্বল হয়ে পড়ালাম।আশ্চর্যজনক ভাবে আমি ওর সব কথা মেনে নিলাম।ওকে কথা দিলাম ভালো কোথাও থেকে এম বি এ করার,নিয়মিত সিভি ড্রপ করার।আমিও বিনিময়ে ওর সাথে দেখা করার জিদ করলাম।এই সমস্যা সেই সমস্যা বলে ও ব্যাপারটা এড়িয়ে গেল।আর কথা দিল খুব শীঘ্রই আমার সাথে দেখা করবে।চমৎকার একটা প্রেমের গল্পে বাস করছিলাম।

ভালো সময়ের খারাপ দিক টা হল এটি খুব তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে যায়।আমার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হল না।তিথি জানালো ওর আসল নাম তিতলি।ও এত দিন ধরে আমার সাথে মিথ্যা পরিচয়ে কথা বলছিল।ও কে যখন বললাম ''আমার ব্যাপারে এত কিছু কিভাবে জানলে?''সে বলল সে নাকি আমাকে অনেক দিন আগে থেকেই চিনতো।আর সীম কার্ডের ব্যাপার টা নাকি পুরোপুরি দৈব।যাই হোক মিষ্ট গলার স্পষ্ট যুক্তি কিংবা কাঁপা কন্ঠের শত অনুনয় যথেষ্ট ছিল না আমাকে কনভেন্স করার জন্য।তবে সত্যি বলতে কি এই ব্যাপার টা আমার কাছে ও খারাপ লাগছিল না।কোন মেয়ে আমাতে আকৃষ্ট হয়ে মিথ্যা পরিচয়ে কথা বলছে এই ব্যাপারটা উপভোগ করছিলাম।

চারদিন পর তিতলির ফোন ধরে এই শর্তে তিতলির সাথে কথা বলা যে শুরু করলাম যে তাকে অব্যশই আমার সাথে দেখা করতে হবে।''দেখা করার পর যদি আর যোগাযোগ না করো?''আমি উত্তরে বললাম দেখা না করে ও তো যোগাযোগ বন্ধ করা যেতে পারে।
সামনের সোম বার তিতলি ক্লাস শেষ করে আমার জন্য অপেক্ষা করছিল লক্ষীবাজারে এক ফাস্টফুডের দোকানে।।লক্ষী বাজার গিয়ে খাবারের দোকানের বাইরে থেকে তিতলি কে ফোন করলাম কনফার্ম করার জন্য,ও এসেছে কি না।দূর থেকে যতটুকু দেখা যাচ্ছে তা প্রথম টেবিলে র‍্যাপিং করা একটা প্যাকেট দেখা গেলেও বসে থাকা মেয়েটার চেহারা দেখা যাচ্ছে না।তার দুই সেকেন্ড পর যে চেহারা টা দেখলাম সেটা দেখার জন্য মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না।চেহারার বাম দিক ঝলসে যাওয়া একটা মুখ দেখে আমি পুরোপুরি ই হকচকিয়ে গেলাম।ভয় পেয়ে গেলাম।শিঊর হওয়ার জন্য তিতলি কে আবার ফোন করলাম।বুঝলাম এই মুখ ঝলসানো মেয়েটি হলো তিতলি।বড্ড রাগ হল নিজের ভাগ্যের উপর। তিতলির উপর। ফোনে বললাম ''একটা কাজে ব্যস্ত আছি।তাই আজ দেখা হচ্ছে না।''

রিক্সা নিয়ে বাড়ি ফেরলাম।কেমন যেন একটা অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছিল।মনে হচ্ছিল তিতলি তার ঝলসানো মুখ নিয়ে আমার পাশে রিক্সায় বসে আছে।আমার চুমু খেতে চাইছে।জোর করে জাপটে ধরতে চাইছে।আমার ঠোঁটে লালা ফেলতে চাইছে।আমার শরীর কেমন যেন রিরি করে উঠলো। বাড়িতে যাওয়ার পরও এই অস্বস্তি কাটিয়ে উঠতে পারলাম না।রাতে ঘুমের মধ্যে ভয়ঙ্কর স্বপ্ন দেখলাম।স্বপ্নে দেখলাম তিতলির সাথে যৌন সম্ভোগ করছি।আর আমার শরীরও ঝলসে যাচ্ছে।শরীর থেকে মাংস খসে পড়ছে।পুঁজ পড়ছে।আর আমি যন্ত্রনায় চিৎকার করছি।ঘুম ভেঙ্গে গেল।কেমন একটা বিকৃত চিন্তায় শরীর ঘিনঘিন করতে লাগলো।দুঃস্বপ্নের ভয়ে রাতে আর ঘুমাতে পারলাম না।সকাল বেলা ঠিক করলাম তিতলির সাথে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিবো।আমি সীমটা পাল্টে ফেললাম।আমার মত বেরোজগার মানুষের পক্ষে সীম পাল্টে ফেলা বড় কোন ব্যাপার না।

সাময়িক অপরাধবোধ আর ক্ষুদ্র মানসিকতা নিয়ে খুব একটা ভাবার সময় পাই নি।ভাবতে চাইও নি।বেশ কয়েক দিনের মধ্যেই আমি স্বাভাবিক হয়ে গেছি।খুব সহজেই ভুলে গেলাম তিতলি কে,তিতলির ভালোবাসাগুলো কে।তিথি কে নতুন করে ফিল করতে আরম্ভ করলাম।আগের চেয়ে অনেক বেশী আবেগ দিয়ে।ভালোবাসা দিয়ে।মায়া দিয়ে।

প্রায় তিন বছর পর তিথির সাথে দেখা করতে যাচ্ছি।কেমন যেন ভয় কাজ করছে, চাপা উত্তেজনা কাজ করছে।কি জানি কি বলে।ঠিকভাবে কথা বলবে তো? আমাকে চিনতে পারবে তো?কথা বলতে গেলে যদি ওর বয়ফ্রেন্ডের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়?নাকি আবার বন্ধুদের দিয়ে হেনস্তা করবে?নাম না জানা অস্বস্তি কাজ করছে।

ক্যাফেটেরিয়াতে বসে আছি।সে সময় তিতলি কে দেখে আঁতকে উঠলাম।ওকে দেখে আমার শরীর আবার রিরি করে উঠলো। বমি বমি চলে আসলো।এই মেয়ে কোথেকে এলো?তিথি আর আর তিতলি যে এক ভার্সিটি তে পড়তে পারে এই ব্যাপার টা আমার মাথাতেই খেলে নি।তিতলির উপর অনেক রাগ হলো। তিথির সাথে দেখা করার কথা মাথা থেকে সম্পূন ভাবে বেরিয়ে গেল।তিতলি আমাকে দেখার আগেই সটকে পড়ালাম।

ভালোবাসা দেখা যায় না।দেখা যায় একটা শরীর।একটা মুখ।ভালোবাসা ছোঁয়া যায় না।ছোঁয়া যায় একটা শরীর।একটা মুখ।
তাই আমার পূতিগন্ধে ভরা নোংরা মন আর ইতর চোখ না ছুঁতে পেরেছে তিতলির ভালোবাসা।না ছোঁয়ার সাহস পেয়েছে তিতলির ঝলসে যাওয়া মুখ।একটা পূতিগন্ধে ভরা নোংরা মন নিয়ে বাড়ি ফিরছি।নোংরা মন আর ইতর চোখের কাছে হেরে গিয়ে বাড়ি ফিরছি কিংবা অন্ধকারে।যেখানে একটি বীভৎস চেহারা অপেক্ষা করে আছে আমাকে কামড়ে ধরার।মুখ থেকে মাংস তুলে নিতে।অনন্ত কালের জন্যে।যেখানে বীভৎসতা অপেক্ষা করছে এক চিরকালীন যৌন সম্ভোগের জন্য।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.