নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গত মার্চে রবিশংকর বলের বঙ্কিম পুরস্কার প্রাপ্ত উপন্যাস - দোজখনামা পড়েছিলাম।বইটা লাইব্রেরি থেকে ইস্যু করা।ক্যাটালগ বলছে গত বছর একত্রিশে ডিসেম্বর ইস্যু করিয়েছিলাম।আমার নিজে তারিখটা মনে করতে পারছি না।আমার ডায়েরি বলছে,আর যাই হোক একত্রিশে ডিসেম্বর বইটা নেই নি।সে যাক গে।
জানুয়ারির এক তারিখ সকাল থেকে ফিল্ড ভিজিটে গিয়েছিলাম।জামালপুর হয়ে নেত্রকোনা।বছরের প্রথম হপ্তা কেটেছে আগুণের মত।পরের সপ্তাহেই ঢাকায় স্থিত হয়ে এই বিখ্যাত উপন্যাস পড়া শুরু করি।একেবারে নন- লিনিয়ার ন্যারেশন।প্রথম চার পাঁচ দিন খুব আগ্রহ নিয়ে পড়লেও পরে কেন জানি ফেলে রাখি।তবে টুকরো টুকরো দাস্তানে ভরা এই উপন্যাসের একটা বড়ো সুবিধে হলো যেকোনো পরিচ্ছেদ থেকেই শুরু করা যায়।তাই গ্যাপ দিয়ে পড়া শুরু করলেও আগের আবহে ফিরে যেতে তেমন বেগ পেতে হয় নি।
এই উপন্যাসের ন্যারেটিভ স্টাইলটা আমার দারুণ লেগেছে।খুব পরিশ্রম করে লেখা।প্রতি পরিচ্ছেদে গালিবের শায়ের দেয়া।বইয়ের অনেকটা জুড়েই মদ আর মাগি।এটা ভালো না খারাপ এই মন্তব্যে আমি নাস্তি।উপন্যাসিক কে আমার অনেস্ট মনে হয়েছে,এটাই বড়ো কথা।তবে সুযোগ পেলেই কমিউনিস্টদের কে আক্রমণ করেছে অপ্রাসঙ্গিক ভাবে যেটা বিরক্তিকর। শেষের দিকে গালিবের বয়ানে সিপাহী বিদ্রোহের বর্ননা আর মান্টোর মুখে দেশ ভাগের গল্পগুলো এই বইয়ের বেস্ট পার্ট।একেবারে নিন্মবর্গের মানুষের ইতিহাস যেন (ইদানীং সাবঅল্টার্ন স্টাডিজের ভূত মাথায় চেপেছে তাই সবার সব লেখাতেই রণজিৎ গুহ, পার্থ চ্যার্টাজী,গৌতম ভদ্র, দীপেশ চক্রবর্তীদের খুঁজি)
রবিশংকর বলের এই উপন্যাস কে তার ভাষাতেই কনক্লিউ করতে হয় - ''তবসুম,মান্টোর এই উপন্যাস যেন মিঞা তানসেনের গাওয়া দীপক রাগ।একের পর এক অগ্নিচক্র পেরিয়ে এলাম আমরা।''
আড়াইশো বছরের ল্যান্ডস্কেপ জুড়ে কবরের তলা থেকে গালিব আর মান্টোর গল্প বলে যাওয়া- ভোগান্তি গল্প। দূর্দশার গল্প।ব্যর্থতার গল্প।হেরে যাওয়ার গল্প।কিন্ত কেন জানি আমি তাদের এসব গল্পে তাদের জন্যে সমব্যথী নই।হয়তো রবিশংকর বল ও এটাই চেয়েছিলেন।
©somewhere in net ltd.