![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সততি লিখলেই মাইনাছ আর বেশী সততি লিখলে মডু স্ট্যাটাস নাবায়া দেয়!
মূল লেখাঃ Click This Link
যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল মঙ্গলবার কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে রায় দিলে মঙ্গলবারের হরতাল লাগাতার হরতালে পরিণত হবে বলেও জানিয়েছে জামায়াত। বিষয়টিতে অবাক হবার কিছু নেই। যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত কাদের মোল্লার পক্ষে রায় দিতে হবে – এমন দাবি করবে যুদ্ধাপরাধী সাম্প্রদায়িক শক্তি জামায়াত-শিবির – এ তো সবারই জানা।
সোমবার সকালে জামায়াত সমাবেশ এবং বিক্ষোভ মিছিল করে ট্রাইব্যুনাল এবং প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অশ্লীল স্লোগান –বক্তৃতা দিয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে জামায়াত যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে প্রকাশ্য জেহাদ ঘোষণা করলো। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার মুহূর্তে জামায়াতের তাণ্ডব বেড়েছে। জামায়াত-শিবিরের এই সন্ত্রাসীদের হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ব্যাপকভাবে এবং প্রকাশ্যে শুরু হয় গত নভেম্বরে।
মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ বিচারের লক্ষ্যে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন আসামিদের পক্ষে কাজ করছে চিহ্নিত কিছু গণমাধ্যম।একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী শক্তি জামায়াতের পক্ষে কোনো গণমাধ্যমের এমন প্রকাশ্য অবস্থান দুর্ভাগ্যজনক।
মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত আসামিদের তথাকথিত ‘সুষ্ঠু বিচার’-এর পক্ষে পশ্চিমা দেশগুলোর সুস্পষ্ট সমর্থন জানিয়ে প্রকাশ্য অবস্থান জামায়াতকে যেন আরো মরিয়া করে তুলেছে।
জামায়াত নেতারা ভালোই জানেন, মধ্যপ্রাচ্যের আর্থিক সহায়তা পেলেও মধ্যপ্রাচ্য এবং অন্যান্য মুসলিম প্রধান দেশেও প্রকাশ্যে ধর্মপ্রচার , যা বাণিজ্যের পর্যায়ে পড়ে, বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যদিও এসব দেশে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে সাম্প্রদায়িক প্রচার প্রচারণা এক ধরণের বাণিজ্যেরই নামান্তর বটে ।
যে মিসর নামের দেশটিতে জামায়াতে ইসলামের মতো রাজনৈতিক দলগুলোর জনক ‘মুসলিম ব্রাদারহুড’ (ইখওয়ানুল মুসলিমুন)-এর জন্ম সেই মিসরে এখন কি হচ্ছে?
মিসরের বর্তমান প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি মুসলিম ব্রাদারহুডের একজন সক্রিয় নেতা থাকলেও এই পার্টির নমিনেশনে তিনি প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করতে পারেন নি গত বছর, কারণ ‘মুসলিম ব্রাদারহুড’ নিষিদ্ধ ছিল তখন। তাই নতুন এক রাজনৈতিক দল “ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস” নামের রাজনৈতিক দলের আড়ালে মোহাম্মদ মুরসিকে প্রার্থী হতে হয়।
১৯২৮ সালে হাসান আল বান্না নামের এক মিসরীয় ইসমাইলিয়া শহরে “মুসলিম ব্রাদারহুড” নামের সাম্প্রদায়িক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। এই “মুসলিম ব্রাদারহুড” এর আদর্শে দুনিয়ার বিভিন্ন, মূলত মুসলমান প্রধান দেশে প্রতিষ্ঠিত হয় বিভিন্ন নামে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন।
১৯৪১ সালে ‘মুসলিম ব্রাদারহুড’ এর অনুকরণে মাওলানা আবুল আ’লা মওদুদী লাহোরে প্রতিষ্ঠা করেন জামাত-ই-ইসলামী। বাহরাইনে এর নাম ‘আল মেনবার ইসলামিক সোসাইটি’, জর্দানে ‘ইসলামিক অ্যাকশন পার্টি’। এককালে কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনাল যেমন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কমিউনিস্ট পার্টিগুলো এবং সোশ্যালিস্ট ইন্টারন্যাশনাল যেমন দুনিয়ার সোশ্যালিস্ট পার্টিগুলোর কার্যকলাপ, প্রোগ্রাম সমন্বয়, তদারকি করতো- মুসলিম ব্রাদারহুড ও বিশ্বজুড়ে মুসলিম সাম্প্রদায়িকতার বিস্তৃতিতে সেই ধরণের তদারকি করে।
ঘোরতর সাম্প্রদায়িক এই ‘মুসলিম ব্রাদারহুড’ পছন্দ করে না ফিলিস্তিনি ফাতাহ সংগঠন বা “প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন” পিএলওকে। এ কারণে জামায়াত কখনো ইয়াসির আরাফাত এর নেতৃত্ব অথবা প্যালেস্টাইনের জনগণের অধিকার রক্ষার আন্দোলনে সমর্থন দেয় নি।
কারণ, ফাতাহ এবং পিএলও সেক্যুলার, অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাস করে।
মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রতিষ্ঠার পর কয়েক বছরের মধ্যে এই সংগঠনটির সন্ত্রাসী চরিত্র প্রকাশিত হতে থাকে। ১৯৪৮ সালে মিসরের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ আননকশি পাশাকে হত্যার অভিযোগে দলটিকে নিষিদ্ধ করা হয়। প্রতিশোধে ১৯৪৯ সালে হত্যা করা হয় ‘মুসলিম ব্রাদারহুড’-এর প্রতিষ্ঠাতা হাসান আল বান্নাকেও ।
১৯৫৪ সালে মিসরের প্রেসিডেন্ট এবং আরব জাতীয়তাবাদের জনক জামাল (সতান্তরে ‘গামাল’)আব্দেল নাসেরকেও হত্যার ষড়যন্ত্র করে এই দলটি। নাসেরের বিরুদ্ধে এমন আর এক ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বিচার হয় ‘মুসলিম ব্রাদারহুড’-এর আর এক শীর্ষ নেতা এবং চিন্তাবিদ সাঈয়েদ কুতুবের। বিচারে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তার ফাঁসি হয় ১৯৬৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর।
এই প্রসঙ্গে পাঠকদের মনে করিয়ে দিতে হয়, অবিভক্ত ভারতে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা মওদুদীকেও ফাঁসির আদেশ দিয়েছিল লাহোরের একটি আদালত, ১৯৫৩ সালে। আহমদীয়াদের বিরুদ্ধে দাঙ্গার উস্কানি দেয়ার অপরাধে মওদুদীর ফাঁসির আদেশ দেয় আদালত।। কিন্তু পরে পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নর জেনারেল খাজা নাজিমউদ্দিন মওদুদীকে ক্ষমা করে দেন, ক্ষমা করেননি জামাল নাসের সাঈয়েদ কুতুবকে।
‘মুসলিম ব্রাদারহুড’ এবং বিভিন্ন দেশে তাদের ছায়াদলগুলো মানুষকে সম্মান দিতে জানে না।তারা সংখ্যালঘুদের সমানাধিকারেও বিশ্বাস করে না; মহিলাদের শ্রদ্ধা জানানোতেও বিশ্বাস করে না । মুসলিম ব্রাদারহুড তথা বাংলাদেশের জামায়াত-শিবির একই, শুধু ‘সেক্স অবজেক্ট’ বা পুরুষের ‘ভোগের বস্তু’ হিসেবেই তারা মহিলাদের দেখে থাকে।
সৌদি আরবের দীর্ঘ তিরিশ বছরের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মরহুম প্রিন্স নায়েফ এই মুসলিম ব্রাদারহুড সম্পর্কে বলেছেন, ইসলামী দুনিয়ার সকল সমস্যার উৎস হচ্ছে এই মুসলিম ব্রাদারহুড। এই মুসলিম ব্রাদারহুড সম্পর্কে তার আরও কিছু কঠোর কথাবার্তা আছে। কঠোর কথাবার্তা আছে ওমানের শাসক সুলতান কাবুসেরও। বস্তুত যেখানেই মুসলিম ব্রাদারহুডের ছায়া গিয়েছে সেখানেই ষড়যন্ত্র, সন্ত্রাস হয়েছে। বাংলাদেশেও তা এখন নোংরাভাবেই আমরা দেখছি।
আমাদের মহানবী (স.) সত্যবাদী ছিলেন বলে তাঁকে ‘আল-আমিন’ উপাধি দেয়া হয়েছিল। আর তাঁর তথাকথিত এই অনুসারীরা ইসলাম এবং সুন্নাহকে কেমন অপবিত্র করে চলেছে, কোনো অপরাধবোধ ছাড়া!
©somewhere in net ltd.