নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Zia Chy is a Journalist, Online Activist & Land Law Consultant. Working to rebuild a welfare State.

জিয়া চৌধুরী

আমি বাংলাকে ভালবাসি

জিয়া চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মিয়া তানসেন, যার গানে আগুন জ্বলে, বৃষ্টি নামে

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:৪৪

আসুন, আজকে আপনাদের এক অদ্ভুত জাদুকরের সাথে পরিচয় করিয়ে দিই। তিনি সাধারণ কোন জাদুকর নন। তিনি ছিলেন সুরের জাদুকর।

সুরের জাদুকর? হ্যা তাকে আমার কোন বিশিষ্ঠ সঙ্গীতজ্ঞ বা সঙ্গীত সম্রাটই মনে হয়নি। তাকে আমার তাক লাগানো কোনো যাদুকরই মনে হয়েছিলো, যেদিন প্রথম শুনি তার কথা।

খুব ছোটবেলায় বাবার মুখেই প্রথম তাঁর কথা শুনি। তিনি বলেছিলেন এমন এক যাদুকরের কথা – যিনি নাকি চাইলেই গান গেয়েই আগুন জ্বালিয়ে দিতে পারতেন। আবার চাইলেই তিনি নামাতে পারতেন আকাশ থেকে অঝোর ধারার বৃষ্টি, সেও ঐ গান গেয়েই


এমনও কি কখনো হয়? আমি অবাক হয়ে যাই। শুধু আমি নই, যারা এ কাহিনী পড়বেন তারাও অবাক হয়ে যাবেন সুরের এমন জাদুকরী শক্তির গল্প শুনে।

হ্যা, আমি সর্বকালের সর্বযুগের সঙ্গীতের বিস্ময়, সঙ্গীতশ্রেষ্ঠ মিয়া তানসেনের কথাই বলছি। #তানসেন কথার অর্থ যিনি সঙ্গীত দিয়ে হৃদয় দ্রবীভুত করেন।

তানসেন এক কিংবদন্তীর নাম। সত্যিকারের ঐতিহাসিক তানসেনকে নানারকম কিংবদন্তী থেকে বের করে আনা খুবই কঠিন এক ব্যাপার। তার জন্মসাল, মৃত্যু এসব সম্পর্কে নানা বিভ্রান্তি রয়েছে।

তানসেনের বাবার নাম ছিল মুকুন্দরাম পাড়ে। তিনি ছিলেন বারাণসীর বাসিন্দা। তার কোনো সন্তানই বেঁচে থাকতো না। শোনা যায় মৃতবৎসা স্ত্রীকে তিনি গোয়ালিয়রের মুহাম্মাদ গওস এর মাদুলী পরান। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আলৌকিক ক্ষমতাধর, সঙ্গীতের যাদুকর তানসেনের জন্ম আনুমানিক ১৫০৫ সালে। তার নাম রাখা হয় রামতনু।

কথিত আছে, ১০ বছর বয়সে সঙ্গীতাচার্য্য স্বামী হরিদাসকে দেখে রামতনু গাছের আড়াল হতে বাঘের ডাক নকল করে দুষ্টুমীচ্ছলে ভয় দেখাতে চেষ্টা করে। সন্যাসী তা দেখে মুগ্ধ হয়ে তাকে শিষ্য হিসেবে গ্রহন করে। সেখানেই রামতনু সঙ্গীতের তালিম নেন বেশ কয়েক বছর। পিতার মৃত্যুর পর রামতনু গওসের কাছে যান আর তার সাথেই বসবাস শুরু করেন। এই সময় গওসের সহায়তায় রাজা মানসিংহের বিধবা স্ত্রীর সভায় যোগ দেন রামতনু। তিনি এসময় ধর্মান্তরীত মুসলমান রমনী প্রেমকুমারী, পরে যার নাম হয় হোসেনী তাকে বিয়ে করেন ও মুসলিম ধর্ম গ্রহন করেন। তার নাম হয় আতা আলি খাঁ। এই আতা আলী খাঁ, সঙ্গীত সম্রাট তানসেন পরবর্তীতে সুরত সেন, শরৎ সেন ও তরঙ্গ সেন ও বিলাস খাঁ ৪ ছেলে ও স্বরস্বতী নামে এক মেয়ের জন্ম দেন।

দিল্লীর সম্রাট আকবার সিংহাসনে বসার সাত বছর পর ১৫৬২ খ্রীস্টাব্দে আতা আলী খাঁ এর কথা জানতে পান ও তাকে দিল্লীর দরবারে অধিষ্ঠিত করেন। সে সময় তিনি রেওয়ার মহারাজা রাজারাম( রামচাঁদ) এর সভা গায়ক ছিলেন।

সম্রাট আকবার একদিন আতা আলী খাঁ এর গান শুনে এতই বিমোহিত হয়ে পড়েন যে তার গলা থেকে কন্ঠহার খুলে তাকে পরিয়ে দেন ও তার নাম দেন তানসেন। আকবরের সভায় নবরত্নের এক রত্ন ছিলেন মিয়া তানসেন।

তানসেন এর এমন সব সৌভাগ্যে তৎকালীন সমসাময়িক সঙ্গীতজ্ঞরা হিংসায় জ্বলে পুড়ে মরে আর এক কুটকৌশলের আশ্রয় নেয়। তারা বলেন তানসেন যদি সত্যিকারের শিল্পী হয়ে থাকেন তবে যেন দীপক রাগ গেয়ে শুনান। দীপক রাগ এমনি এক শক্তিশালী রাগ যা গাইলে গান থেকে সৃষ্ট আগুনে তানসেনের শরীর ঝলসে যাবার সম্ভাবনা ছিলো। তানসেন তা জানতেন। তাই তিনি প্রথমে রাজী হননি। তিনি জানতেন, দীপক রাগ গাওয়ার পর যখন আগুন জ্বলবে তাকে নেভানোর জন্য প্রয়োজন হবে মেঘমল্লার রাগ। কিন্তু একার পক্ষে তো একসাথে দুটো রাগ গাওয়া সম্ভব নয়। তিনি ষড়যন্ত্রকারীদের মোকাবেলা করার জন্য নিজের মেয়ে ও তার গুরু কন্যাকে মেঘমল্লার গানে তালিম দিতে লাগলেন।

রাজসভায় নির্দিষ্ট দিনে লোকে লোকারণ্য। মাঝখানে বসে আছেন স্বয়ং সম্রাট আকবর যথাসময়ে বসল গানের আসর। শত্রু পক্ষের ধারণা, কিছুক্ষণের মধ্যে তানসেনের ভবলীলা সাঙ্গ হয়ে যাবে। তানসেন শুরু করলেন দীপক রাগ। শুরু হওয়ার পর এক সময় সভাগৃহের সমস্ত মোমবাতিতে আগুন ধরে গেল। অবস্থা দেখে সবাই দিগ্বিদিক ছুটতে লাগলেন। তানসেনের নিজের শরীরেও আগুন জ্বলতে শুরু করলো। তিনি ছুটলেন বাড়ির দিকে। সেখানে নিজ কন্যা ও গুরুকন্যা সমস্বরে মেঘমল্লার গাইছে। আকাশ থেকে নামতে শুরু করেছে বৃষ্টিধারা। সেই বৃষ্টিজল নিভিয়ে দিলো তানসেনের শরীরের জলন্ত আগুন। শোনা যায় এই ঘটনার পর অসুস্থবস্থায় ছয়মাস তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন।

তানসেনকে নিয়ে এমন সব কিংবদন্তী, ভেবেছিলাম অ্যালেক্স রাদারফোর্ড এর অ্যাম্পেয়ার অব মুঘলে তার সম্পর্কে কিছু পাবো। কিন্তু দুর্ভাগ্য মোঘল সম্রাটদের নিজস্ব জীবনিগ্রন্থ থেকে সংকলিত এই সিরিজের কোন বইয়ে তানসেনকে নিয়ে একটা শব্দও পাইনি।

তানসেনের পুরো কাহিনী একটা মিথের মত। এর সত্যাসত্য যাচাইয়ের ভার পাঠকের উপর রইল।

সংগৃহীত ও পরিমার্জিত।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:৫১

চাঁদগাজী বলেছেন:


উনার আগামী কনসার্ট কোথায়, টিকিটের দাম কেমন?

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:৫৫

জিয়া চৌধুরী বলেছেন: নেক্সট কনসার্ট মহল হাবিয়া অথবা মহল ফেরদাউসে হইতে পারে। অগ্রিম টিকিট কিনে রাক্তারেন।

২| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৪৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

সঙ্গীত জগতের প্রবাদ পুরুষ, সুর সম্রাট মিয়াঁ তানসেন

৩| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৭:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: গান বাজনা ইসলাম পছন্দ করে না।

৪| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১০:৩৮

আরাফআহনাফ বলেছেন: আকাশ থেকে বৃস্টিধারা নামার পর তানসেনের গায়ের আগুন নিভলো - আমার প্রশ্ন আগুন লাগলে তো সাথে সাথে পানি দিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলা যেত - প্রাসাদের বাইরে/ভিতরেই - নিজ বাড়িতে এসে বৃস্টি ধারায় ভিজতে হবে কেন ?? আসার পথে কোন পুকুরও কী ছিলো না ? ----অবিশ্বাস্য !!!!

আপনার কথাই ঠিক - তানসেনের পুরো কাহিনীই মিথের মতো।
সত্যাসত্য যাচাই করার আগেই এ কাহিনী মিথ্যে বলেই যৌক্তিক মনে হলো।

ধন্যবাদ।

৫| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:২৯

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: Mythology....

৬| ০৫ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ১১:৪৫

জিয়া চৌধুরী বলেছেন: মন্তব্যর জন্য সবাইকে ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.