![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এমন ছেলে কোথায় পাবে যেমনটা এই আমি হীরার টুকরা ছেলে তো নই হীরার চেয়েও দামী
১
সবার চোখেমুখে চাপা আতংক । এই পরিস্থিতে মানুষ যা করে তা হলো মাথা নিচু করে এরিস্টটলের মত চেহারা করে ভাবতে থাকে । যারা একটু বেশী নার্ভাস হয় তারা হাতের কাছে যা পায় তাতেই কনসেনট্রেট করে । যেমন বই হাতে নিয়ে পাতা উল্টাতে থাকেন , মাঝে মাঝে খেয়ালও করেন না যে তিনি পাত্রপাত্রী চাই পাতাতে বসে আছেন । সেন্টার টেবিলে বসে ভাইস প্রিন্সিপাল সাহেব গভীর মনযোগ দিয়ে প্রকৃতি পর্যবেক্ষণে ব্যস্ত । ঠিক তার উল্টাদিকে বসা মনসুর সাহেব ঘাম দিয়ে গোসল করছেন।উনি নিঃশ্বাস নিচ্ছেন বেশ মেপে মেপে ।অর্ধেক নিচ্ছেন আর বাকিটা কোত করে গিলে ফেলছেন ।ফিলোসফি ম্যাডাম নিজের ব্যাগ থেকে একটা বাক্স বের করে খাওয়া শুরু করলেন , কি আর আছে জীবনে । রাসেল সাহেব করিডোরে দাঁড়িয়ে খানিক পায়চারি করার ব্যর্থ চেষ্টা নিয়েছিলেন । তিনি বেশীক্ষন দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন না । হাফিয়ে উঠে তিনিও মাথা নিচু করে শিক্ষক মিলনায়তনের বিশাল টেবিলে মাথা নিচু করে বসে পড়েন । বারান্দায় বিশাল ভুড়ি বের করে দেলোয়ার সাহেব বিড়ি ফুকছেন । মাঝে মাঝে তিনি রুমের দিকে তাকান আবার মনের সুখে বিড়িতে কনসেনট্রেট করেন । মারুফ সাহেব টেবিল ছেড়ে উঠে দেলোয়ার সাহেবের পাশে দাড়ালেন । মারুফ সাহেবকে দেখে দেলোয়ার সাহেব বললেন ''কোন সমস্যা নাই । আমি দ্যাকবো '' । এই লোকের এই এক সমস্যা । যাই ঘটুক , উনার এক কথা ''ব্যাপার না, আমি দ্যাকবো ''।মারুফ সাহেব খানিক রসিকতা করে বললেন '' স্যার , একটু চোখ বন্ধ করেন তো ।'' দেলোয়ার সাহেব চোখ বন্ধ করলেন । '' স্যার , কি দেখলেন ? । বললাম তো '' ব্যাপার না , আমি দ্যাকবো '' । মেজাজ খারাপ করে মারুফ সাহেব করিডর থকে রুমে ডুকলেন আর মেজাজ যেমন ছিলো তেমন রেখে ভাইস প্রিন্সিপাল সাহেব রুমের বাইরে চলে গেলেন ।স্যার বাইরে যাওয়া মাত্রই সাজ্জাদ সাহেব অনেকটা মাইক লাগিয়ে দেলোয়ার সাহেবকে ঝাড়ি দিতে লাগলেন । দেলোয়ার সাহেব রুমে ঢুকে বললেন '' ব্যাপার না , আমি দ্যাকবো '' ।
২
রাতে ভালো ঘুম হয়নি আনোয়ার সাহেবের । উনি কলেজের ভাইস প্রেসিডেন্ট । খুব ভোরে উনি মোবাইলটা নিয়ে খানিকটা স্নেক গেম খেললেন । ভাবতেছিলেন ব্যাপারটা নিয়ে কি প্রিন্সিপাল স্যারের সাথে কথা বলবেন কিনা ।তারচে বরং নিজে আগে কনফার্ম হয়ে নেয়া দরকার ।ফোন হাতে নিয়ে দায়াল করলেন '' হ্যালো , দেলোয়ার সাহেব । '' অপর প্রান্ত থেকে ভেসে এলো ''হ্যালো , হ্যা বলছি । আপনি কে ? '' । আনোয়ার সাহেব ফোনটা কেটে দিলেন ।এখন উনার রাগের মাত্রা একশো ছয় ডিগ্রী । তবে রেগে গেলে উনি তোতলান না ।অন্য সব শিক্ষকের মত বাংলা ভাষা ভুলে যান । গডগড করে ইংরেজিতে গালি দিতে থাকেন ।এক্ষেত্রেও তাই ব্যতিক্রম হলো না ।
ফোনটা রেখেই দেলোয়ার সাহেব মহা সমস্যায় পড়ে গেলেন । প্রথমত উনি ভাইস প্রিন্সিপাল স্যারের গলা ধরতে পারেন নী । তারচে বড় কথা এত সকালে উনি ঘুম থেকে উঠেন না আর ঘুমানোর আগে ফোন সাইলেন্ট করে রাখেন । আজ দুটোই ঘটে নাই । মেজাজটা খারাপ হয়ে গেলো ।উনার শংকা আর আতংক আরো বেড়ে গেলো ।
কলেজে গিয়েই মারুফ সাহেবকে সকালের ঘটনা অবহিত করলেন । শুনে মারুফ সাহেবের চোখ কপালে । ''এখন কি হবে , দেলোয়ার ভাই'' । নির্বিকার দেলোয়ার সাহেবের উত্তর ''ব্যাপার না । আমি দ্যাকবো '' ।
৩
প্রিন্সিপাল স্যারের পাশে ভাইস প্রিন্সিপাল মুখ গোমড়া করে বসে আছেন । প্রিন্সিপাল স্যারকে দেখে মনে হচ্ছে উনি সবাইকে কান ধরে উঠবস করাবেন । উনি হুমকার ছেড়ে বললেন '' আই উইল নট টলারেট দিস ননসেন্স ।ডু নট রিপিট ......... '' স্যারের বাক্য শেষ করার আগেই দেলোয়ার সাহেব বলে বসলেন ''স্যার , প্রস্তাবটা কি খারাপ ছিলো ? '' শোনামাত্রই মারুফ সাহেবের মাথায় হাত । কি বলে এই লোক ।প্রিন্সিপাল স্যার অনেকটা ভেবাচ্যাকা খেয়ে গেলেন ।তিনি হো হো করে হেসে উঠলেন । বসের জোকস আর হাসি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সংক্রামক রোগ । এতে সবাইকে হাসতেই হবে ।তবে এই বিব্রতকর পরিস্থিতিতেও সবাই হাসলেন । শুধু ভাইস প্রিন্সিপাল আর মনসুর সাহেব ছাড়া ।হাসতে হাসতে প্রিন্সিপাল সাহেব বললেন '' দেলোয়ার সাহেব , এটা তাইলে আপনার কাজ ''
- স্যার , না মানে ......
- রাসেল সাহেব , বলেন তো কি হয়েছিলো সেদিন ।
রাসেল সাহেব বলতে শুরু করলেন ''স্যার , ফ্যামিলি ডেতে আমাদের সবার ফ্যামিলি এলো ।বেচারা মনসুর সাহেব এখনো ব্যাচেলর ।একা একা ছিলেন আমরা তেমন খেয়াল করিনী । সন্ধ্যায় উনি আক্ষেপ করে আমাদের সেটাই বলছিলেন ।আমরাও দুষ্টামির ছলে উনাকে নানা কথা বলছিলাম ।হঠাত কে জানি মুখ ফসকে বলে বসলো '' ভাইস প্রিন্সিপাল স্যার তো আপনাকে ভালোই পছন্দ করেন । তা ছাড়া আপনি দেখতে শুনতেও বেশ ভালো । ভালো পদে চাকরী পেয়েছেন । কি দেব নাকি প্রস্তাব '' । পুরো ব্যাপারটাই দুষ্টামির ছলে । কিন্তু এই ফাকে দেলোয়ার স্যার উনার ফোনে টাইপ করে বসেন '' প্রিয় স্যার , আপনার প্রিয় সহকর্মী মনসুর সাহেব আপনার অত্যন্ত আদরের কন্যাকে বিবাহ করার ইচ্ছা পোষন করেছেন ।'' টাইপ করেই বললেন , দেব আকি পাঠিয়ে । মারুফ সাহেবও দুষ্টামি করে বলছিলেন '' আপনার সেই সাহস আছে !!!!!!!! '' সাজ্জাদ সাহেব এবার উনার হাত থেকে মোবাইলটা নিতে গিয়ে চাপাচাপিতে সেন্ড বাটনে চাপ পড়ে যায় । স্যার আসলে ব্যাপারটা স্রেফ মজা ছাড়া কিছুই না । তবে এটা একদমই ঠিক হয় নি । স্যার আমরা সরি ।
সবাই মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলো । একদম পিনপতন নিরবতা । হঠাত দরজায় শিউলি এসে বললো '' বাবা ,এই যে তোমার নাস্তা । সকালে নাস্তা না করে তড়িঘড়ি করে চলে এলে কেন ? ''
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:০৫
নগর বালক বলেছেন:
২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৫
সপ্নাতুর আহসান বলেছেন: বেশ মজার। কাহিনী বর্ননা সুন্দর। শেষ পর্যন্ত পড়তে বাধ্য করল।
১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৫৭
নগর বালক বলেছেন: ভালো লাগলো জেনে খুব ভালো লাগলো
৩| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:২৭
মায়াবী রূপকথা বলেছেন: সুন্দর গল্প। ভালোলাগা রইলো।
১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৫৮
নগর বালক বলেছেন: থ্যাংকু
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:০১
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: চমৎকার লেগেছে।!! পারফেক্ট অনুগল্প!!