নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ সত্যিকে পছন্দ করলেও সত্যকে মেনে নিতে চায় না।

নয়ন01

বন্ধুত্ব করতে ভালবাসি সবার সাথে ...

নয়ন01 › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্যাপ্টেন ভাসিলি জেইতসিভ স্নাইপার

১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৩৬

ক্যাপ্টেন ভাসিলি জেইতসিভ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের একজন স্নাইপার ছিলেন। তাঁর পুরো নাম ভাসিলি গ্রিগোরাইভিচ জেইতসিভ। বিশ্বযুদ্ধে তাঁর কৃতিত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমেই তিনি মানব ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন। বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ১০ নভেম্বর থেকে ১৭ ডিসেম্বর, ১৯৪২ সালের মধ্যে স্তালিনগ্রাদের যুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। এ সময়ে তিনি নাৎসী জার্মানীর একীভূত সামরিক বাহিনী ওয়েহমাস এবং অক্ষশক্তির ২২৫জন সাধারণ সৈনিককেহত্যা করেছিলেন। তাঁর এ সফলতায় শত্রুপক্ষের ১১জন গুপ্তঘাতকও অন্তর্ভূক্ত ছিল। ১০ নভেম্বরের পূর্বেই তিনি ৩২ জন অক্ষশক্তি দলের সৈনিককে তাঁর সাধারণ মানের মোসিন-নাগান্ত রাইফেল দিয়ে প্রারম্ভিক সফলতা দেখিয়েছেন। অক্টোবর ১৯৪২ থেকে জানুয়ারি, ১৯৪৩-এর মধ্যকার সময়কালে ২৪২ জনকে হত্যাকরেন। কিন্তু প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশী বলে ধারনা করা হয়। কেউ কেউ ধারনা করেন যে এ সংখ্যা পাঁচশয়েরও বেশী হতে পারে।
নাৎসি হিটলারের আক্রমণের মুখে স্তালিনগ্রাদ রক্ষায় অন্য সবার মত ভাসিলিকেও ছুটে যেতে হয়। কিন্তু সবাইকে রাইফেল দেয়া যায় নি। এত বেশী সংখ্যক কমরেড সে তুলনায় রাইফেল অপ্রতুল। কাউকে শুধু রাইফেল, কাউকে কাউকে শুধু গুলি নিয়ে যুদ্ধের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়। কমরেড ভাসিলিকেও রাইফেল ছাড়াই খালি হাতে শত্রুর দিকে ছুটে যেতে হয়। রাইফেলধারী কমরেড মারা পড়লে, সেই রাইফেল আরেকজন তুলে নিচ্ছে। এভাবেই রেড আর্মির বীর সৈনিকেরা নাৎসি শত্রুর দিকে এগিয়ে যায়। অসংখ্য হতাহত হয়। শহর জুড়ে লাশের স্তূপ! লাশের স্তূপে পড়ে থাকে কমরেড ভাসিলি। নাৎসি জার্মানরা যখন রিলাসক্সড মুডে ঠিক সেই সময়েই কমরেড ভাসিলি সহযোদ্ধার রাইফেল দিয়ে একে একে ঘায়েল করে পাঁচজন শত্রুকে।

ভাসিলির এই সাহসিকতার খবর ছড়িয়ে পড়ে। তার সাহসিকতার উপর নির্ভর করে গঠন করা হয় স্নাইপার ব্রিগেড, ব্রিগেডের অন্যতম প্রধান করা হয় ভাসিলিকে। প্রচলিত আরবান যুদ্ধের বাইরে, রেড আর্মির এই স্নাইপারদের মোকাবিলায় জার্মান বাহিনী নাস্তানুবাদ হতে থাকে। ফলে জার্মান বাহিনীও অনুরূপ স্নাইপার বাহিনী গড়ে তুলে। ভাসিলিকে মারার বিশেষ মিশন দেয়া হয় একজনকে। শুরু হয় খোলা ময়দানের লাশের স্তূপে, ইট সুরকির ধ্বংস স্তূপে বা ভাঙ্গা ধ্বসে পড়া ইমারতের মধ্যে লুকিয়ে থেকে, টম এন্ড জেরি কার্টুনের মত কে কাকে মারতে পারে
২২ সেপ্টেম্বর, ১৯৪২ সালে তিনি ভলগা নদী অতিক্রম করেন ও ১০৪৭তম রাইফেল রেজিমেন্টে যোগ দেন। রেজিমেন্টটি ছিল ৬২তম সেনাবাহিনীর ২৮৪তম রাইফেল ডিভিশনের অধীনে এবং এর নেতৃত্বে ছিলেন জেনারেল নিকোলাই বেতিয়ুক নামীয় একজন সেনা কর্মকর্তা। একদিন কমান্ডিং অফিসার তাঁকে জানালা দিয়ে ৮০০ মিটার দূরবর্তী এক শত্রু সেনাকে গুলি করার নির্দেশ দেন। জেইতসেভ নির্দেশ প্রতিপালনে সাধারণমানের মোসিন-নাগান্ত রাইফেল তাক করেন। একটিমাত্র গুলিতেই ঐ সৈনিক মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। অল্প কিছুক্ষণ পর আরো দু'জন জার্মান সৈনিককে জানালা দিয়ে দেখা গেল। তারা তাদের সেনা কর্মকর্তার মাটিতে লুটিয়ে পড়ার কারণ অনুসন্ধান করতে লাগলেন। ভাসিলি আরো দু'টো গুলি খরচ করলেন। বলাবাহুল্য ঐ দুই গুলিতে তারা নিহত হলেন। এ কারণে তিনি বীরত্বে সাহসিকতাপূর্ণ পদক লাভের পাশাপাশি স্নাইপার রাইফেলও পুরস্কার হিসেবে লাভ করেন।
সফলভাবে বিশ্বযুদ্ধ সমাপনের পর জেইতসেভ কিয়েভে বসবাস করতে থাকে। ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত হবার পূর্বে এখানেই তিনি টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। পরবর্তীকালে টেক্সটাইল কারখানার পরিচালকরূপে নিযুক্ত হন। ৭৬ বছর বয়সে মৃত্যুর পূর্বে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত এ শহরেই অবস্থান করেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর মাত্র ১০দিন পরেই সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে। কিয়েভে তাঁকে সমাহিত করা হয়; যদিও তাঁর ইচ্ছে ছিল স্তালিনগ্রাদে সমাহিত হবার।
রাষ্ট্রীয় বীরের মর্যাদা দেয়া তাকে। ভাসিলির বীরত্বের প্রতীক স্বরূপ তার রাইফেলটি এখনও রাখা আছে স্টালিনগ্রাদের ঐতিহাসিক জাদুঘরে।
তথ্য সুত্রঃ উকিপিডিয়া, মুভি Enemy At The Gate

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৮

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: পড়তে ভালোলাগছিলো। ++

১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৪

নয়ন01 বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.