নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাগ্যক্রমে আমি এই সুন্দর গ্রহের এক বাসিন্দা! তবে মাঝেমধ্যে নিজেকে এলিয়েন মনে হয়। তবে বুদ্ধিমান এলিয়েন না, কোন আজব গ্রহের বোকা এলিয়েন! [email protected]

নূর আলম হিরণ

ভাগ্যক্রমে আমি এই সুন্দর গ্রহের এক বাসিন্দা! তবে মাঝেমধ্যে নিজেকে এলিয়েন মনে হয়। তবে বুদ্ধিমান এলিয়েন না, কোন আজব গ্রহের বোকা এলিয়েন!

নূর আলম হিরণ › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি লাশ ও বেয়াড়া পুলিশ।

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৪২


আপন দুই বোনকে পাশবিক কায়দায় ধর্ষন। বড় বোন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিল ০৩দিন পর। ছোট বোন শোকে পাথর। লজ্জা, ঘৃণা, অভিমানে বাকরুদ্ধ। তার অবস্থাও ভালো নয়। ভাল হবেই বা কেমন করে? ১৬ বছরের কিশোরীর সামনে ঘটে যাওয়া এমন পাশবিক, নির্মম ঘটনার পর সে ঠিক থাকে কি করে?

হ্যা, ঠিক এমনই খবর এসেছিল চাঁদপুর জেলার হাজিগঞ্জ থানায়। তারিখটা বছর দুয়েক আগের কোন এক ১২ তারিখ। খবরটা শুনে ক্যামন জানি হকচকিয়ে গেলেন ওসি সাহেব। এত্ত বড় সংবাদ, অথচ তিনি কিছুই জানেন না! দ্রুত পুলিশ সুপার সাহেবকে জানালেন। পুলিশ সুপার সাহেব ঘটনাস্থলে সরেজমিনে যেতে বললেন। এক মুহূর্ত দেরী না করে পুর্ব হাটিলা গ্রামের আব্দুল করিমের বাড়িতে হাজির হল পুলিশ। তবে সরেজমিনে গিয়ে যা জানা গেল তা প্রাপ্ত সংবাদের সাথে একেবারেই মিলল না।

জানা গেল চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ থানার পুর্ব হাটিলা গ্রামের করিম সাহেব জীবন জীবিকার তাগিদে দীর্ঘ দিন ধরে দুবাই থাকেন। রিবা, রেখা সহ তিন মেয়ে নিয়ে তার সংসার। বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন বেশ কয়েক বছর আগে। মেঝ মেয়ে রিবার বিবাহ হয়েছে সে বছরেরই মার্চ মাসে। সুখের সংসার তার। হঠাৎই ঘটে গেছে এক দুর্ঘটনা।

০৯.১০.২০১৮ রাতে করিমের স্ত্রী ঢাকায় ছিলেন চিকিৎসার জন্য। শুধুমাত্র বাড়িতে ছিল তার মেঝ মেয়ে রিবা আর ছোট মেয়ে রেখা। রাত এগারটার দিকে একটা চিৎকারের শব্দ শোনে প্রতিবেশীরা। কিছুক্ষণ পর প্রতিবেশীরা এসে দেখে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছে রিবা আর বিধ্বস্ত ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে বসে আছে রেখা। দ্রুত হাজিগঞ্জ হাসপাতালে নেওয়া হয় রিবাকে। তারপর কুমিল্লা হাসপাতালে। শেষ রক্ষা হয়নি। অভিমানে পৃথিবী ছেড়েছে সে।

এদিকে করিম সাহেব শোকে দিশেহারা। দুবাই থেকে মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে চলে এসেছেন তিনি। এক মেয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেল, অন্য জনের (রেখার) অবস্থাও ভালো না। সে নির্বাক। প্রচন্ড জ্বর তার। শোকে পাথর হয়ে গেছে মেয়েটা। একটু সুস্থ হলে, ছোট মেয়ে রেখা জানালো আসলে ঐ দিন পাশের ঘরে পড়ছিল সে। হঠাৎ শব্দ শুনে ছুটে আসে বোনের ঘরে। দেখে যে, তার বোন মেঝেতে পড়ে আছে। কাউকে ঢুকতে বা বের হতে দেখেনি সে। হয়তো পিছলে পড়ে গিয়ে মাথায় বা নাজুক কোন স্থানে আঘাত পেয়ে ঘটেছে এই মর্মান্তিক ঘটনা। মায়ের মত বোনের মৃত্যুতে সে নিজেকে সামলাতে পারেনি। তাই সে নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়েছিল।

ঘটনা শুনে দুবাই থেকে ছুটে এসেছে রিবার স্বামী হযরত নিজেও। প্রিয়তমার এমন মৃত্যুতে সেও শোকে বিহব্বল। সবাই সান্তনা দিচ্ছে। শ্বশুর- শাশুড়ি জামাইকে ধৈর্য্য ধরার জন্য বলছেন। সে যাই হোক, রিবার পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ কোন মামলা করতে রাজি নন। আর মামলাইবা করবে কার বিরুদ্ধে। নিছক দুর্ঘটনা। এতো তোলপাড়ের তো কিছু নাই!

ঘটনার এখানেই সমাপ্তি হতে পারতো। কিন্তু সমস্যা বাধালো ওসি নিজে। ভালো, সহজ জিনিসকে জটিল করাই যেন এদের কাজ। সবাই যেখানে লাশ দাফন কাফনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, তিনি বললেন পোস্ট মর্টেম করতে হবে।সবাই বলল, “পয়সা খাওয়ার ধান্দা, এরা মরা মানুষও ছাড়ে না।” সে যে যাই বলুক, ওসি সাহেব গোঁ ধরে বসেই রইলেন। এসপি সাহেব বললেন, “সমস্যা কি ?”। ওসি সাহেব জানালেন লাশের গলায় আঁচড়ের মত দাগ আছে। কি আর করা, অতঃপর পরিবারের অমত সত্বেও জিডি মূলে পোস্ট মর্টেম করা হল। যদিও পরিবার নানা আপত্তি করেছিল, দুষ্ট পুলিশ তা শোনেনি।

পোস্ট মর্টেম কালেই জানা গেল, রিবার বুকের একটা হাড় ভেঙ্গে গেছে। গলায় আঁচড়ের দাগ আছে। এবার ঘটনা আর নিছক দুর্ঘটনা রইল না। ঘরের দরজাগুলি বন্ধ ছিল, চিৎকারের শব্দ ছিল, গলায় আঁচড় এসব আর যাই হোক স্বাভাবিক মৃত্যুর আলামত হতে পারে না। পুলিশ সুপার সাহেব ওসিকে রিবার লাইফ হিস্ট্রি ঘাটতে বললেন। পরিবার সম্পর্কে জানতে বললেন। সামান্য খুঁজতেই জানা গেল কিছু অস্বাভাবিক তথ্য। স্বামীর সাথে তার সম্পর্ক অতটা ভালো ছিল না। এরই ফাঁকে এক সোর্স জানালো, যদিও রিবার স্বামী হযরত বলেছে সে মৃত্যুর খবর পেয়ে দেশে এসেছে, কিন্তু কেউ কেউ ঘটনার দিন রাত্রেই হযরতকে হযরতের বোনের বাসায় যেতে দেখেছে। বিষয়টা দারুন সন্দেহজন!

খোঁজ শুরু হল হযরতের। সে লাপাত্তা। অনেক খোঁজার পর দু’দিন বাদে দেখা মিলল তার। পাসপোর্ট চেক করতেই ধরা পড়ে গেল সে। ঘটনার দিনই সকলের অগোচরে দেশে এসেছে সে। উদ্দেশ্য ছিল তার স্ত্রীর সাথে বোঝা-পড়া। অনেকদিন যাবৎই তার সাথে বনিবনা হচ্ছিল না। তাই চুপিসারে ঐদিন রাতের বেলা রিবার বাসায় আসে সে। রিবা দরজা খুলে ঘরে ঢুকতে দেয় তাকে। এরপর শুরু হয় কথাকাটি। এক পর্যায়ে সে রিবাকে ধাক্কা দিলে খাটের সাথে রিবা ধাক্কা খেয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। এরপর ভয়ে সে পালিয়ে যায়।

সুন্দর একটা গল্প। ঘটনা এখানেও শেষ হতে পারতো। আবারো সমস্যা করলো ওসি সাহেব। তার কৌতুহলী দুষ্ট মন তাকে নানা প্রশ্নের সন্মুখীন করছে। কেননা রিবা মারা যাওয়ার দুই দিন পার না হতেই রেখার সাথে হযরতের বিয়ের আয়োজন শুরু হচ্ছে। এই বিষয়টা খটকা লাগাচ্ছিল মনে। তাছাড়া, এমনকি ঘটনা ছিল যে, রেখা এই ক’দিন নির্বাক থাকলো?

এবার রেখাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হল। ষোড়শী তরুনী সে। প্রথম ক’দিন অসুস্থ থাকলেও এখন সে বেশ ফুরফুরে মেজাজেই আছে। ডাক্তারী রিপোর্টেও কোন অসুখ ধরা পড়েনি। তার বোন পাশের রুমে ঝগড়া করলো, হাতাহাতি করলো, সে কিছুই জানলো না, বিষয়টা খুবই অস্বাভাবিক। কিছু তো সে অবশ্যই জানে। তার এত ছল-চাতুরির কি দরকার ছিল? এবার কৌশল অবলম্বন করল তদন্তকারী দল। রেখাকে বলা হলো, দুলাভাই হযরত সব বলে দিয়েছে। এ কথা শোনার পর হঠাৎ বেলুনের মত চুপসে গেল সে। বলতে শুরু করলো সেই ভয়াল রাতের কথা।

বিয়ের পর থেকেই বোন-দুলাভাইয়ের মধ্যে সম্পর্ক ভালো ছিল না। এরই ফাঁকে দুলাভাইয়ের সাথে সম্পর্ক হয় তার। সম্পর্ক এতটাই গাঢ় হয় যে তা শারীরিক সম্পর্ক পর্যন্ত গড়ায়। বিষয়টা কেউই আঁচ করতে পারে নি।

দু মাস আগে হযরত দুবাই যাওয়ার পর থেকেই সে একাকিত্ব সহ্য করতে পারছিলো না। রেখা জানায়, তাকে বিয়ে করতে হবে। প্রয়োজনে রিবাকে সরিয়ে দিতে হবে। রেখা জানতো ঘটনার দিন বাড়িতে কেউ থাকবে না।

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, হযরতকে দুবাই থেকে ডেকে আনে সে। সঙ্গোপনে খুলে দেয় ঘরের দরজা। প্রথমে দু’জন প্রণয়ে লিপ্ত হয়। এরপর ঠান্ডা মাথায় এগিয়ে যায় রিবার ঘরে। অঘোরে ঘুমাচ্ছিল মেয়েটা। প্রথমেই ওড়না দিয়ে রেখা বেঁধে ফেলে রিবার পা। তারপর চেপে বসে রিবার উপর। আর হযরত রিবার মুখে বালিশ চাপা দেয়। এতেও কিছু না হলে গলা টিপে ধরে সে। ধস্তাধস্তির সময় ভেঙ্গে যায় বুকের হাড়। একবার একটা চিৎকার দিতে পেরেছিল সে। আর সুযোগ হয় নি তার। এর পরের ঘটনা সবার জানা।

বুক দিয়ে আগলে রেখেছিল যাকে, সেই ছোট বোনই যখন বুকে চেপে বসেছে, তখন হয়তো হতবাক হয়ে গেছে রিবা। যে স্বামীর পায়ের নিচে বেহেশত খুঁজেছে এত দিন, তারই পা যখন তার গলার উপর উঠেছে, অবাক বিস্ময় আর ক্ষোভে ডুকরে কেঁদে উঠেছে সে। শেষ বার হয়তো বিস্ময়ভরা কন্ঠে বলেছিল “তোরা!

ঘটনার পরও কটা দিন বেঁচে ছিল সে। কিছুই বলতে পারে নি। আমার মনে হয়, ইচ্ছে করেই কিছু বলে নি রিবা। এত ঘৃণা, এত লজ্জা, এত বিশ্বাসঘাতকতা, কিভাবে বলবে সে? পরপারে ভালো থাকুক রিবা। ফন্দিবাজ ওসি হয়ে উঠুক, আরো বড় ফন্দিবাজ!

লেখক- অজ্ঞাত পুলিশ

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৫০

আমি সাজিদ বলেছেন: ভয়াবহ!

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৫৭

নূর আলম হিরণ বলেছেন: আসলেই, মানুষের নৈতিক অবক্ষয় চরমে পৌঁছে গেসে।

২| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৫১

নেওয়াজ আলি বলেছেন: এই হারামি ওসি সব ওসি প্রদীপের সমগোত্রীয় । রক্ষক নয় হারামি ভক্ষক

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৫৮

নূর আলম হিরণ বলেছেন: ভাই মনে হয় পুরো লেখা পড়েননি!

৩| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৩১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হায় জীবন! হায় লোভ! হায় কামনা!!!

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৫৯

নূর আলম হিরণ বলেছেন: মানুষের নৈতিকতা অর্থনীতি, সুশিক্ষার সাথে জড়িত। এই দুইটি আমাদের সরকার গুলো নিশ্চিত করতে পারেনি।

৪| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৩৩

চাঁদগাজী বলেছেন:



ঘটনা সম্ভব; লেখার ষ্টাইলটা খুবই বিশ্রী ধরণের।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:০৫

নূর আলম হিরণ বলেছেন: লেখাটি এক পুলিশ অফিসারের লেখা। ঘটনাকে উনি ফিকশন আকারে লিখেছেন। কাঁচা হাতের লেখা তবে বাস্তব। উনার প্রোফাইল পেয়েছি।

৫| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৩০

চাঁদগাজী বলেছেন:


ব্লগার নেওয়াজ আলি সাহেব কি বর্ধিত কিছু পড়লেন আপনার পোষ্টে, যেটা আমার চোখে পড়েনি?

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:০৫

নূর আলম হিরণ বলেছেন: :(

৬| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: এরকম ঘটনা সহ্য করতে পারি না।
কষ্ট হয়।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:০৬

নূর আলম হিরণ বলেছেন: এমন অসংখ্য ঘটনা ঘটে যায় নীরবে।

৭| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ ভোর ৫:০৭

কবিতা ক্থ্য বলেছেন: নেও্য়াজ ভাই কি না পড়েই কমেন্ট করলেন কিনা বুঝলাম না।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:০৬

নূর আলম হিরণ বলেছেন: :( :(

৮| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৩৯

রায়হান চৌঃ বলেছেন: চরিত্রের কি ভয়াবহ রূপ !! ঘটনা টা যদি সত্যি হয়, তবে ভেবে দেখুন আমাদের নির্ণলজ্জতা কত নিচে নেমেছে :(

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:০৭

নূর আলম হিরণ বলেছেন: ঘটনা সত্যি, জাতীয় দৈনিকে এসেছিল এবং স্থানীয় সংবাদ পত্রিকায় এটি নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছিল।

৯| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৩৫

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
কোথায় নেমে গেছি আমরা। ভয়াবহ অবস্থা দেশের, সমাজের।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৩

নূর আলম হিরণ বলেছেন: মানুষকে সঠিক সময়ে সঠিক শিক্ষা না দিলে, নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হলে আর পারিবারিক মূল্যবোধের ঘাটতি থাকলে এমনি হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.