নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাগ্যক্রমে আমি এই সুন্দর গ্রহের এক বাসিন্দা! তবে মাঝেমধ্যে নিজেকে এলিয়েন মনে হয়। তবে বুদ্ধিমান এলিয়েন না, কোন আজব গ্রহের বোকা এলিয়েন! [email protected]

নূর আলম হিরণ

ভাগ্যক্রমে আমি এই সুন্দর গ্রহের এক বাসিন্দা! তবে মাঝেমধ্যে নিজেকে এলিয়েন মনে হয়। তবে বুদ্ধিমান এলিয়েন না, কোন আজব গ্রহের বোকা এলিয়েন!

নূর আলম হিরণ › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুর্নীতির সামাজিক স্বীকৃতি: আমাদের নৈতিক অবক্ষয়ের দলিল।

০৩ রা জুন, ২০২৫ বিকাল ৩:১৪


এক সময় দুর্নীতি ছিল নিন্দিত, ঘৃণিত—একটি লজ্জাজনক কাজ। সমাজে কেউ যদি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হতো, তাহলে সে মাথা নিচু করে চলতো। সামাজিক অনুষ্ঠান থেকে তাকে দূরে রাখা হতো, তার পাশে বসা যেত না, এমনকি অনেক সময় আত্মীয়তা করতেও কেউ রাজি হতো না। কিন্তু আজ? দৃশ্যপট বদলে গেছে। দুর্নীতি যেন এখন একধরনের অধিকার হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুর্নীতিবাজরা আর সমাজচ্যুত নন, বরং তারা এখন সমাজের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছেন।

আজকাল দুর্নীতি করা এতটাই সহজ আর স্বাভাবিক হয়ে গেছে যে, শত কোটি টাকার নিচে কেউ যেন দুর্নীতিকে ‘সার্থক’ বলে ভাবতেই চায় না। দুর্নীতি এখন আর চুপিসারে, গোপনে হয় না। বরং প্রকাশ্যে, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে, সামাজিক ব্যবসা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে!

এক সময় দুর্নীতিবাজদের ঘৃণা করা হতো, আজ তাদের জন্য সমাজের মাঝখানের চেয়ারে সংরক্ষিত আসন রাখা হয়। আগে দুর্নীতিবাজদের বাড়িতে দাওয়াত খেতে যাওয়া ছিল বিব্রতকর, এখন সেই বাড়িতেই সমাজের ইমাম সাহেবেরা উপস্থিত হয়ে দুই হাত তুলে তাদের জন্য কাঁদেন, আল্লাহর কাছে দোয়া করেন! এর চেয়ে বড় নৈতিক বিপর্যয় আর কী হতে পারে?

এক সময় সমাজের সচেতন মানুষ দুর্নীতিবাজ ও সুদখোরদের চিনিয়ে দিতেন, দূরে রাখতেন। এখন মানুষ আত্মীয়তা গড়ার আগে দেখে নেয়—লোকটা কত টাকা রোজগার করে, সে কতটা ‘পাওয়ারফুল’, এবং দুর্নীতির টাকায় গড়া প্রাসাদে বাস করে কিনা। দুর্নীতিই যেন এখন সামাজিক গ্রহণযোগ্যতার একটি সূচক হয়ে গেছে!

দুর্নীতি নতুন কিছু নয়—পৃথিবীর সব সমাজেই দুর্নীতি কমবেশি ছিল, থাকবে। তবে পার্থক্য এই যে, আগে দুর্নীতি ছিল গোপন, সংকুচিত এবং লজ্জাজনক; এখন তা হয়েছে দম্ভিত, গর্বিত এবং উৎসবমুখর। দুর্নীতির ‘পরিমাণ’ নয়, বরং ‘পদ্ধতি’ এবং ‘প্রভাব’ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এখন দুর্নীতি কেবল ব্যক্তি নয়, পুরো প্রজন্মকে কলুষিত করছে।

আসলে এই সামাজিক অবক্ষয়ের জন্য আমরাই দায়ী। দুর্নীতিবাজকে সম্মান দিলে সে সাহস পায়। সামাজিকভাবে যাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়, তাকে দমানো যায় না। আমাদের নীরবতা, আমাদের মেনে নেওয়া, আমাদের দাওয়াতে আমন্ত্রণ জানানো—সবই দুর্নীতির পক্ষে একেকটি স্বীকৃতি।

আমরা যদি সত্যিকার অর্থে দুর্নীতিকে প্রতিরোধ করতে চাই, তাহলে আমাদের আগে সামাজিক ও নৈতিক অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে।

দুর্নীতিবাজকে ঘৃণা করা, সামাজিকভাবে একঘরে করা, তার ওপর সামাজিক চাপ তৈরি করা—এটাই হতে পারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রথম পদক্ষেপ। রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা হয়তো জটিল, কিন্তু সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা আমাদের হাতেই।

দুর্নীতিকে ‘সামাজিক স্বীকৃতি’ না দিয়ে, তাকে আবারও ‘সামাজিক ঘৃণার প্রতীক’ বানাতে হবে। আমাদের বেঁচে থাকার স্বার্থেই।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জুন, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: আমাদের সমাজ দুর্নীতিকে উৎসাহিত করে এবং দুর্নীতি করাকে একটা যোগ্যতা মনে করে।

চাকরিজীবি ছেলের কাছে মেয়ে বিয়ে দেওয়ার আগে খোঁজ নেয় তার উপ্রি ইনকাম কত।

০৩ রা জুন, ২০২৫ বিকাল ৩:৪০

নূর আলম হিরণ বলেছেন: যেদিন থেকে আমাদের সমাজে মসজিদ মাদ্রাসা গুলি দুর্নীতিবাজদের টাকা নেওয়া শুরু করেছে সেদিন থেকে তারা সামাজিক স্বীকৃতির কঠিন ধাপ পার করে ফেলেছে। এরপর যা হয়েছে সেগুলি সবগুলি লজিক্যাল সিকোয়েন্স।

২| ০৩ রা জুন, ২০২৫ বিকাল ৪:১৯

রাসেল বলেছেন: এখন চোরের মার বড় গলা। চোর বাটপারেরা এমন সব যুক্তি তর্ক দেখাবে, যাতে সে প্রমান করবে সে ই ঠিক। এই ব্লগেও তা দেখতে পাবেন।

০৩ রা জুন, ২০২৫ বিকাল ৫:৪১

নূর আলম হিরণ বলেছেন: চোর বাটপাররা যতই যুক্তি দেখাক, সেগুলি কখনোই শক্তিশালী যুক্তি হয়না।

৩| ০৩ রা জুন, ২০২৫ বিকাল ৪:৪৩

আধুনিক চিন্তাবিদ বলেছেন: আপনার বক্তব্যের সাথে দ্বিমত করার সুযোগ নেই।

০৩ রা জুন, ২০২৫ বিকাল ৫:৪১

নূর আলম হিরণ বলেছেন: ধন্যবাদ।

৪| ০৪ ঠা জুন, ২০২৫ সকাল ৯:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: দূর্নীতিই আমাদের দেশটারে খাইলো।

০৪ ঠা জুন, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৩

নূর আলম হিরণ বলেছেন: দুর্নীতিবাজদের সামাজিক স্বীকৃতি আমাদের সমাজকে বিপথে নিয়ে যাচ্ছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.