নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশিষ্ট ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী মওলানা আবুল কালাম আজাদের ৫৭তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:৪৯



উপমহাদেশের প্রখ্যাত সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ এবং ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা মওলানা আবুল কালাম আজাদ। তরুণ বয়সে তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। হিন্দু-মুসলিম সহাবস্থানে তার বিরোধিতা ছিল না। তিনি হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির প্রবক্তা ছিলেন এবং দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত বিভাগের বিরোধিতা করেছিলেন। এমনকি নবগঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রে সামরিক শাসন ও পাকিস্তান ভাগ সম্পর্কেও তিনি ভবিষ্যৎবাণী করে গিয়েছিলেন। তিনি স্বাধীন ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী। স্বাধীন ভারতে শিক্ষাবিস্তারে তাঁর উজ্জ্বল ভূমিকার কথা স্মরণে রেখে তাঁর জন্মদিনটি সারা দেশে "জাতীয় শিক্ষা দিবস" হিসেবে পালন করা হয়। বিশিষ্ট ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী ও স্বাধীন ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী মওলানা আবুল কালাম আজদের আজ ৫৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৫৮ সালের আজকের দিনে তিনি দিল্লিতে ইন্তেকাল করেন। ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা মওলানা আবুল কালাম আজাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা



মওলানা আবুল কালাম আজাদ ১৮৮৮ সালের ১১ নভেম্বর সৌদি আরবের মক্কায় জন্ম গ্রহন করেন। তার প্রকৃত নাম আবুল কালাম মহিউদ্দিন আহমেদ। তরুণ বয়সে তিনি ছদ্মনাম ‘আজাদ’ ধারণ করেন। এর অর্থ হলো মুক্ত। এ জন্য তিনি মওলানা আবুল কালাম আজাদ নামেই সমধিক পরিচিত ছিলেন। তার পিতার নাম মওলানা খায়রুদ্দিন এবং মাতা ছিলেন সম্ভ্রান্ত আরব বংশোদ্ভূত। আজাদের পূর্বপুরুষরা সম্রাট আকবরের আমলে আফগানিস্তান ছেড়ে ভারতে চলে আসেন। রক্ষণশীল পরিবারের সদস্য হওয়ায় মৌলানা আজাদকে বাড়িতে বসেই সাবেকি পদ্ধিতে শিক্ষাগ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়। মাত্র পনের বছর বয়সেই তিনি আরবী ও ফার্সী ভাষায় বিশেষ দখল অর্জন করেন। অল্প বয়সেই তিনি ধর্ম ও দর্শনের ওপর উর্দুতে কবিতা লিখতেন। তার এসব লেখালেখি ছিল মূলত ব্রিটিশ রাজত্ব ও ভারতীয় জাতীয়তাবাদ সম্পর্কিত। মৌলানা আজাদ ইসলামি ধর্মশাস্ত্রে সুপণ্ডিত ছিলেন। তিঁনি আরবীতে দর্শন, জ্যামিতি, গনিত ও বীজগনিতের উপর শিক্ষালাভ করে সাবেকি পদ্ধতিতে শিক্ষা-অর্জনের সমস্ত ধাপ সমাপ্ত করেন এবং শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন।



(মহাত্মা গান্ধীর সাথে মওলানা আবুল কালাম আজাদ)

একাধিক ভাষায় দখল ছিল মওলানা আজাদের।তরুণ বয়স থেকে তিনি উর্দু ভাষায় কবিতা এবং ধর্ম ও দর্শন-সংক্রান্ত নিবন্ধ রচনা করতে শুরু করেন। কর্মজীবনে মওলানা আজাদ সাংবাদিকতার পেশা গ্রহণ করে বৃটিশ শাসনের সমালোচনা করেন এবং ভারতীয় জাতীয়তাবাদকে সমর্থন জানান। পরে আজাদ খেলাফত আন্দোলনের নেতৃত্ব দান করেন। খেলাফত আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সময় থেকেই মওলানা আজাদ মহাত্মা গান্ধীর সংস্পর্শে আসেন। আজাদ ১৯১৯ সালের রাওলাট আইনের বিরুদ্ধে গান্ধীজির অহিংস অসহযোগের ধারণায় অনুপ্রেরিত হয়ে অসহযোগ আন্দোলন সংগঠনে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। ১৯২৩ সালে তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনিই ছিলেন কংগ্রেসের সর্বকনিষ্ঠ সভাপতি। তিনি গান্ধীর অহিংস আন্দোলনকে সমর্থন করতেন। বিদেশি পণ্য বর্জন করতে তিনি মানুষকে আহ্বান করতেন। ১৯৪০ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত তিনি কংগ্রেসের সভাপতির পদ অলঙ্কৃত করেন। এসময় ‘ভারত ছাড়’ আন্দোলনের অংশ হিসেবে মওলানা আজাদ গ্রেফতার হন।



ভারতের অন্তর্বর্তী সরকারেও মন্ত্রীত্ব করেন মওলানা আজাদ। দেশভাগের অব্যবহিত আগে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় তিনি হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতির প্রচেষ্টা চালান। স্বাধীন ভারতের শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে তিনি বিনামূল্যে প্রাথমিক শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষার জন্য আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি চালু করেন। তিনিই ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন স্থাপন করেন। তার আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ “ইন্ডিয়া উইনস ফ্রিডম”। বইটি মৌলানা আবুল কালাম আজাদের আত্নজীবনীমূলক রচনা হলেও, ভারতীয় ইতিহাসের পাতায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। ব্রিটিশদের হাত থেকে ভারতীয়দের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের ক্ষেত্রে মৌলানা আজাদের অন্যতম প্রধাণ ভূমিকা ছিল। এই গ্রন্থে তিনি ভারত-ভাগের পটভূমিসহ ১৯৩৫-৪৮ সাল পর্যন্ত ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনাবলীর অত্যন্ত নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ বর্ণনা দিয়েছেন। অনেক ইতিহাসবিদের কাছেই বইটি ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি নির্ভরযোগ্য দলিল হিসেবে অনন্য স্থান করে নিয়েছে।



প্রখ্যাত সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ এবং ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা মওলানা আবুল কালাম আজাদ ১৯৫৮ সালের ২২ ফে্ব্রুয়ারি ভারতের দিল্লীতে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৬৯ বছর। আজ তার ৫৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা মওলানা আবুল কালাম আজাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৪১

এম এ কাশেম বলেছেন: ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা মওলানা আবুল কালাম আজাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

শুভেচ্ছা সতত।

২| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:০২

এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন:
ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা মওলানা আবুল কালাম আজাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা ।

৩| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪০

দিল মোহাম্মদ মামুন বলেছেন: মানুষের মাঝে মতভেদ থাকতেই পারে, হয়তো উনি অবিভক্ত ভারতকে সাপোরট দেওয়ার কারনে অনেক মুসলিম তার বিরোধীতাও করতে পারে। তবুও মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।
ধন্যবাদ আপনাকে

৪| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৪৩

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.