নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

কবি, সাংবাদিক, গল্পকার, ঔপন্যাসিক ও গদ্যকার্টুনিষ্ট আনিসুল হকের ৫০তম জন্মবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:০৭


বর্তমান সময়ে ছোটপর্দার আলোচিত লেখক ও নাট্যকারদের অন্যতম কথাশিল্পী আনিসুল হক। যদিও কথাশিল্পী হিসেবেই তিনি সমাধিক পরিচিত। তবে এক দশকের বেশী সময় ধরে শুধু নাট্যকার হিসাবেই না বরং একাধারে কবি, সাংবাদিক, গল্পকার, ঔপন্যাসিক, গদ্যর্কাটুনিষ্ট হিসেবেও আলোচিত হয়েছেন আনিসুল হক। তাঁর মূল ঝোঁক লেখালেখিতে। পত্রিকায় তিনি নিয়মিত কলাম লেখেন। বুয়েটে পড়ার সময় কবিতার দিকে বেশি ঝোঁক ছিল। পরবর্তীতে এর পাশাপাশি কথাসাহিত্যেও মনোযোগী হন। উপন্যাস, বিদ্রুপ রচনা, নাটক রচনায় প্রতিভার সাক্ষর রেখেছেন। জনপ্রিয় এই লেখক বর্তমানে বাংলাদেশের দৈনিক প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক পদে কর্মরত আছেন। সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় সদর্পে বিচরণকারী এই কথা সাহিত্যকের আজ ৫০তম জন্মবার্ষিকী। জন্মদিনে কথাশিল্পী আনিসুল হককে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

আনিসুল হক ১৯৬৫ সালের ৪ মার্চ রংপুরের নীলফামারীতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মো. মোফাজ্জল হক এবং মায়ের নাম মোসাম্মৎ আনোয়ারা বেগম। তাঁর স্ত্রীর নাম মেরিনা ইয়াসমিন। আনিসুল হক রংপুর জিলা স্কুল থেকে ১৯৮১ সালে এস.এস.সি. এবং রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে ১৯৮৩ সালে এইচ.এস.সি. পাস করেন। উভয় পরীক্ষাতেই সম্মিলিত মেধাতালিকায় স্থান পান। এরপর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের(বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগ থেকে স্নাতক পাস করেন। ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা উত্তীর্ণ হয়ে বাংলাদেশ সরকারের রেলওয়ে বিভাগে যোগদান করেন আনিসুল হক। অল্প কিছুদিন চাকরির পরই তা ছেড়ে দিয়ে সাংবাদিকতায় চলে আসেন। তিনি ১৯৮৭ সালে সাপ্তাহিক দেশবন্ধু পত্রিকার সহসম্পাদক, ১৯৮৯ সালে সাপ্তাহিক পূর্বাভাস পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক, ১৯৯১ সালে সাপ্তাহিক খবরের কাগজের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক হন। ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত দৈনিক ভোরের কাগজের সহকারী সম্পাদক দায়িত্ব পালন করেন। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত দৈনিক প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক পদে কর্মরত আছেন। পত্রিকায় গদ্যকার্টুন নামে নিয়মিত ব্যঙ্গাত্মক রচনা লেখেন। এসব লেখা নিয়ে প্রকাশিত বইগুলির মধ্যে কথাকার্টুন, গণতান্ত্রিক ফ্যান্টাসি, রাজা যায় রানি আসে, ছাগলতন্ত্র, অশ্বডিম্ব, সেই গাধা সেই পানি উল্লেখযোগ্য।

লেখক, নাট্যকার ও সাংবাদিক আনিসুল হকের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের সত্য ঘটনা নিয়ে লেখা সবচেয়ে বিখ্যাত ও জনপ্রিয় উপন্যাস মা (২০০৩ সালে প্রকাশিত)। বাংলা ভাষার পাশাপাশি বইটি দিল্লী থেকে ইংরেজি ভাষায় এবং ভুবনেশ্বর থেকে উড়ে ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে । এছাড়া বীর প্রতীকের খোঁজে, নিধুয়া পাথার, আয়েশামঙ্গল, খেয়া, ফাঁদ, অন্ধকারের একশ বছর, বেকারত্বের দিনগুলিতে প্রেম, ভালোবাসা আমি তোমার জন্য কাঁদছি, ফাল্গুন রাতের আঁধারে, আমার একটা দুঃখ আছে, যারা ভোর এনেছিল, তৃতীয় জীবন, ক্ষুধা এবং ভালোবাসার গল্প, হৃদিতা, সেঁজুতি, তোমার জন্য, আবার তোরা কিপ্টা হ,আলো-অন্ধকারে যাই,আমার একটা দু:খ আছে, আয়েশামঙ্গল, বারোটা বাজার আগে এবং ছোটদের জন্য গুড্ডু বুড়ার মজার গল্প প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

নাট্যকার হিসেবে আনিসুল হক ভিন্ন ধাঁচের নাটক উপহার দিয়েছেন। তাঁর রচিত দর্শকনন্দিত টেলিভিশন কাহিনীচিত্রের মাঝে রয়েছেঃ নাল পিরান, করিমন বেওয়া, প্রত্যাবর্তন, সাঁকো, প্রতি চুনিয়া, চড়ুইভাতি, আয়না মহল, কানামাছি ,দৈনিকতোলপাড় ,স্পার্টাকাস'৭১, মেগা সিরিয়াল ৫১বর্তী প্রভৃতি। তাঁর বেশ কয়েকটি কাব্য গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে যথাঃ ১। খোলা চিঠি সুন্দরের কাছে (১৯৮৯), ২। আমি আছি আমার অনলে (১৯৯১), ৩। আসলে আয়ুর চেয়ে বড় সাধ তার আকাশ দেখার (১৯৯৫), ৪। জলরংপদ্য (২০০২), ৫। তোমাকে ভাবনা করি। গল্প, কবিতা, উপন্যাসের পাশাপাশি তিনি মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ব্যাচেল'রএবং মেড ইন বাংলাদেশ সিনেমার স্ক্রিপ্ট লিখেছেন। এছাড়া তিনি থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার এবং টেলিভিশন সিনেমারও স্ক্রিপ্ট লিখেছেন।

২০১০ সালে তিনি আমেরিকার ইন্টারন্যাশনাল রাইটিং প্রোগ্রাম (আইডব্লিউপি) কর্মশালায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লেখকদের সাথে যোগ দেন। তিনি ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৩৭ জন লেখক আইডব্লিউপির কর্মশালায় যোগ দেন। ১৯৬৭ সাল থেকে শুরু হওয়া এ আয়োজনে ২০১০ সাল পর্যন্ত ১৩০টি দেশের এক হাজার ২০০ লেখক অংশ নেন। কথাসাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য আনিসুল হক ২০১২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও শ্রেষ্ঠ টিভি নাট্যকার হিসেবে পুরস্কার, টেনাশিনাস পদকসহ বেশ কয়েকটা পুরস্কার পেয়েছেন। সাহিত্যের জন্য পেয়েছেন খুলনা রাইটার্স ক্লাব পদক, কবি মোজাম্মেল হক ফাউন্ডেশন পুরস্কার।

কবি, সাংবাদিক, গল্পকার, ঔপন্যাসিক, ও গদ্যর্কাটুনিষ্ট আনিসুল হকের আজ ৫০তম জন্মবার্ষিকী। কথাসাহিত্যিক আনিসুল হকের জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.