নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রঃ) ১৩৮১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর রুহের মাগফেরাত কামনায়

২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১০:৪৭


মুসলিম জাহানের প্রথম খলিফা এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী তৃতীয় ব্যক্তি হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রাঃ)। নবীদের পর উম্মতকুলে সাহাবায়ে কেরামের মর্যাদা সর্বোচ্চ বলেই বিবেচিত হয়। আর সেই সাহাবিদের মধ্যে যাঁর নাম অগ্রগণ্য, তিনি হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ)। তিনি ছিলেন একাধারে হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর শ্বশুর, তাঁর হিজরতের সংগী এবং তাঁর বয়োজোষ্ঠ্য সাহাবাদের মধ্যে অন্যতম। তাঁর বাল্য নাম আবদুল্লাহ ও ডাকনাম আবু বকর। সিদ্দিক হচ্ছে তাঁর উপাধি। মিরাজের ঘটনাকে সর্বপ্রথম মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেছিলেন বলেই রাসুল (সাঃ) তাঁকে এই উপাধিতে ভূষিত করেন। হযরত আবু বকর (রাঃ) ছিলেন রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর প্রত্যক্ষ সঙ্গী, রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ) ও উম্মতের মাঝে সেতুবন্ধ রচনাকারী, কোরআনের নির্দেশ পালনে তিনি ছিলেন উন্মুখ। হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর মৃত্যুর পর পর্যায়ক্রমে হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রাঃ) হযরত ওমর (রাঃ) হযরত ওসমান (রাঃ) ও হযরত আলী (রাঃ) পবিত্র কুরআন ও হাদিসের আলোকে মুসলিম বিশ্বের শাসনকার্য পরিচালনা করেন বলে মুসলিম ইতিহাসে তাদের বলা হয় খোলাফায়ে রাশেদিন। সুন্নী বিশ্বাসমতে হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রাঃ) ছিলেন খোলাফায়ে রাশীদুন (অর্থাৎ সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত) এর একজন খলীফা। ৬৩৪ খৃষ্টাব্দের ২৩ আগস্ট মোতাবেক ১৩ হিজরির ২২ জমাদিউস সানি মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ৬২ বছর বয়সে মহামান্য এই সাহাবি পরলোক গমন করেন। আজ তাঁর ১৩৮১তম মৃত্যুবার্ষিকী। ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রঃ) ওফাত দিবসে তার রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।

হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) ৫৭৩ খ্রিষ্টাব্দে মক্কার বিখ্যাত কোরাইশ বংশের বনু তাইম গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন। ইসলামের নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) জন্মের মাত্র দুই বছরের কিছু বেশী সময় পর হযরত আবু বকর জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পুর্ন নাম আবু বকর আস সিদ্দিক আব্দুল্লাহ ইবন আবী কুহাফা উছমান আত তাইমী আল কুরাইশী এবং ডাক নাম আবদুল্লাহ। তার বাবা উসমানের কুনিয়া ছিল আবু কুহাফা। এজন্য আবু বকরকে আবদুল্লাহ ইবন আবী কুহাফাও বলা হয়ে থাকে। ইসলামী জীবনচরিতে তার নাম আবু বকর সিদ্দিকী বলা হয়। মহানবী (সাঃ) -এর নবুয়্যত লাভের পর বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে আবু বকরই সর্বপ্রত্থম ইসলাম গ্রহন করেন। জীবনের প্রতিটি স্তরে তিনি ইসলামের বিধিবিধান অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতেন। ইসলামের সূচনা পর্ব থেকে আমৃত্যু তিনি মহানবী (সাঃ) কে ছায়ার মত অনুসরন করতেন এবং নবীজীও ইসলামের জন্য নিজের যথা সর্বস্ব কুরবানী দিয়েছেন। মহানবী (সাঃ) এর প্রতিটি বাণী তিনি বিনা যুক্তিতে সত্য বলে মেনে নিতেন তাই নবী মুহাম্মদ (সঃ) তাকে আস-সিদ্দীক উপাধিটি দিয়েছিলেন। তাঁর অন্য উপাধি ছিল আতিক বা আতিকুল্লাহ মিনান্‌ নার।

হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) ছিলেন অত্যন্ত দয়ালু ও সত্যনিষ্ঠ। সত্য ও ন্যায়ের ঝাণ্ডা পৃথিবীর জমিনে প্রতিষ্ঠা করার জন্য তাঁর যথাসর্বস্ব ত্যাগের মহিমা বিরল। প্রথম জীবনে কুরাইশদের মধ্যে তিনি অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি ছিলেন। তার জ্ঞান, মেধা, বুদ্ধি এবং সৎ চরিত্রের জন্য সবাই তাকে শ্রদ্ধা করত। তা ছাড়া মানুষের দুঃখ-দুর্দশায়, সহায়-সম্বলহীনতায় এবং দুস্থদের সাহায্যার্থে তিনি ছিলেন আত্মনিবেদিত। হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) সব সময়ই রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ) কে ছায়ার মতো অনুসরণ করতেন। বদরের যুদ্ধে আবুবকর (রাঃ) সরাসরি অংশ নেন এবং নবীজীর খেদমতে প্রতি মুহুর্তে নিজেকে নিয়োজিত করেন। হুজুর (সাঃ) এরশাদ করেন, 'আমার উম্মতের মাঝে আবু বকরই বেশি দয়ালু।' নবী করিম (সাঃ) আরো বলেন, 'বন্ধুত্ব ও সাহায্য আবু বকরই আমাকে বেশি করেছিলেন। ইহজগতে যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করতাম তাহলে আবু বকরকেই করতাম।' তিনি আরো বলেনঃ দুনিয়ায় এমন কোনো ব্যক্তির ওপর সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত হয়নি, যে পয়গম্বরদের পর হজরত আবু বকর থেকে উত্তম ও শ্রেষ্ঠ (রূহুল বয়ান)।

ইসলামের প্রচার ও প্রসারে আবুবকর (রাঃ)-এর অবদান মহাপ্রলয়ের আগ পর্যন্ত উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। ইসলামের প্রতি হযরত আবু বকরের (রাঃ) অপরিসীম অবদানের জন্য তাঁকে 'ইসলামের ত্রাণকর্তা' বলা হয়। এ অবদানের স্বীকৃতির ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেন, 'দুনিয়াতে আমি প্রত্যেক মানুষের এহসানের পরিপূর্ণ বদলা আদায় করেছি কিন্তু সিদ্দিকে আকবরের ত্যাগের প্রতিদান আদায় করতে পারিনি। হাশরের ময়দানে স্বয়ং রাব্বুল আলামিন তাঁকে ওই প্রতিদান দান করবেন।' খলিফা পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার পরই তিনি সমবেত জনতার উদ্দেশে বলেন, 'আমি যত দিন আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসুলের নির্দেশিত পথে চলি, তত দিন তোমরা আমাকে অনুসরণ করবে এবং আমাকে সাহায্য করবে। আর ভুল পথে চললে তোমরা আমাকে সঙ্গে সঙ্গে সংশোধন করে দেবে। তোমাদের মধ্যে যারা দুর্বল, তাদের হক আদায় না করা পর্যন্ত তারা আমার কাছে সবল ও শক্তিশালী। আর যারা সবল, তাদের কাছ থেকে হকদারের হক আদায় না করা পর্যন্ত তারা আমার কাছে দুর্বল।' সিদ্দিকে আকবর (রাঃ) প্রদত্ত এ ভাষণ দুনিয়ার সর্বকালের শাসকদের জন্য অনুপম আদর্শ। তাঁর জীবনের প্রতিটি ঘটনা, কাজ ও বাণী আমাদের ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় জীবন পর্যন্ত অনুকরণীয় ও অনুসরণীয়।

৬৩৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ আগস্ট মোতাবেক ১৩ হিজরির ২২ জমাদিউস সানি মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ৬২ বছর বয়সে মহামান্য এই সাহাবি ওফাত লাভ করেন। রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর রওজা মুবারকের পাশেই তাঁকে দাফন করা হয়। আজ মুসলিম জাহানের প্রথম খলিফা হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রাঃ) ১৩৮১তম ওফাত দিবস। মহান আল্লাহ্ পাক আমাদেরকে হুজুর (সাঃ) এর এই প্রিয় সাহাবির আদর্শ মেনে চলার তৌফিক দান করুন। আমিন। ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রঃ) ওফাত দিবসে মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে তার রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:০১

প্রামানিক বলেছেন: ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রঃ) ওফাত দিবসে মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে তার রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।

ধন্যবাদ নুরু ভাই।

২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:১৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই
সর্বদা পোস্টে মন্তব্য করার জন্য কৃতজ্ঞতা।
আপনার সাথে আমিও ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রঃ) এর
ওফাত দিবসে মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে তার রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।

২| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:২৬

ব্লগার আয়নাল ভাই ইতি বলেছেন: অনেক কিছু জানা হলো ইসলামের প্রথম খলিফা
হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রঃ)
ওফাত দিবসে মহান
সৃষ্টিকর্তার কাছে তার
রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। আমিও

২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:২০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ধন্যবাদ আয়লাল ভাই
সুন্দর মন্তব্যে ইসলামের প্রথম খলিফা
হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রঃ)
ওফাত দিবসে তাঁর রুহের মাগফেরাত
কাতনা করার জন্য।

৩| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:৩৩

ঘুড্ডির পাইলট বলেছেন: বেশ সুন্দর তথ্যবহুল পোস্ট !


হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর মৃত্যুর শব্দটির স্থলে ওফায়েত বা তিরোধান শব্দ ব্যবহার করলে মনে হয় মানানসই হবে ! যেহেতু তিনি আমাদের অপেক্ষা মানুষ হিসেবে অনেক উন্নত ! :) :)

২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:২৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ধন্যবাদ ঘু্ড্ডির পাইলট
ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর
পরলোকগমনে আপনার অনুভূতি প্রকাশের জন্য।

৪| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:৪০

কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: আবুবকর সিদ্দিক (রাঃ) ছিলেন সেই সমস্ত সৌভাগ্যবানদের একজন যার সম্পর্কে স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আ'লামিন একাধিকবার পবিত্র কোর'আনে উল্লেখ করেছেন।তাঁর পবিত্র ওফাত দিবসে মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে তার রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।
সুন্দর পোষ্টটির জন্য জানাই কৃতজ্ঞতা।এমন আরো আরো অনেক মূল্যবান পোষ্ট চাই।
ভালো থাকবেন

২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৪:০০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্য করে অনুপ্রাণিত করার জন্য।
সাথে থাকবেন আশা করি, চেষ্টা কররবো আপনার অনুরোধ রক্ষা করতে।

৫| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০১

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: জাজাকাল্লাহ খায়র আমাদের সাথে তথ্যগুলো শেয়ার করার জন্য।

২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ধন্যবাদ মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম
লেখাটি পড়ার জন্য আ্ল্লাহ আপনাকে
অফুরাণ নেকি দান করুন। আমিন-

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.