নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
যদি প্রশ্ন করা হয় ,বাংলা চলচ্চিত্র জগতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ নায়ক কে? এককথায় এর উত্তর হবে ‘উত্তম কুমার’।
বাংলা চলচ্চিত্রের এক উজ্জল নক্ষত্রের নাম উত্তম কুমার। প্রকৃত নাম অরুণকুমার চট্টোপাধ্যায়। মায়াবি হাসির নায়ক, সদা রোমান্টিক আর কিংবদন্তি অভিনয় জাদুকর উত্তম কুমার কে বাংলা চলচ্চিত্র জগতে ’মহানায়ক’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসে চলচ্চিত্র জগতে প্রতিষ্ঠা পেতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে তাকে। ১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। কিংবদন্তি ভারতীয় বাঙালি এই চলচ্চিত্র অভিনেতার আজ ৩৮তম মৃত্যুদিন। মৃত্যুদিনে তাঁর জন্য আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
কিংবদন্তি মহানায়ক, বাংলা চলচ্চিত্রের একচ্ছত্র অধিপতি, চিত্রপ্রযোজক ও পরিচালক সঙ্গীত পরিচালক ও গায়ক উত্তম কুমার ১৯২৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর কলকাতার ৫১ নং আজিরী টোলা স্ট্রিটে জন্মগ্রহণ করেন। দাদু আদর করে তাকে ডাকতেন উত্তম। তবে আসল নাম ছিল অরুন কুমার চট্টোপাধ্যায়। তার বাবার নাম সাতকড়ি-চট্টোপাধ্যায়, মা চপলা দেবী। উত্তম কুমার কলকাতার সাউথ সাবারবান স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। ভর্তি হন গোয়েঙ্কা কলেজে। মধ্যবিত্ত পরিবারের হাল ধরার জন্য গ্র্যাজুয়েশন শেষ না করেই কলকাতা পোর্টে কেরানির চাকরি শুরু করেন।
অভাব-অনটনের মধ্যে দিয়ে কাটে উত্তমের ছেলেবেলা। কিন্তু যার জন্মই হয়েছে আকাশ ছোঁয়ার জন্য দারিদ্র্য পারেনি তাকে দমিয়ে রাখতে। অভিনয় জগতে আসার পেছনে তার পরিবারের প্রভাব ছিলো গুরুত্বপূণ। সংস্কৃতিমনা উত্তমের বাপ-চাচারা পাড়া-প্রতিবেশীর সহায়তায় গড়ে তুলেছিলেন ’ সুহৃদ সমাজ’।
বিভিন্ন উৎসবে সুহৃদ সমাজ থেকে যাত্রাপালার আয়োজন করা হত। বাপ-চাচাদের যাত্রাপালায় অভিনয় দেখে উত্তমের অভিনয়ের ইচ্ছা জাগে। আর তার জের ধরে স্কুলে থাকতেই উত্তম কুমার তার মহল্লায় নাট্যসংগঠন লুনার ক্লাব এর সদস্য হন। মঞ্চে কাজ করার সময়ই তিনি অভিনয়ের প্রেমে পড়েন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘মুকুট’ নাটিকায় অভিনয় দিয়ে শুরু হয় মহানায়কের অভিনয় জীবন। উত্তম কুমারের প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি দৃষ্টিদান। ১৯৪১ সালে উত্তম অভিনীত প্রথম ছবিটি মুক্তি পায়। পঞ্চাশের দশকে তিনি ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ ছবিতে অভিনয় করে সাড়া ফেলেন। এই ছবিতে প্রথমবারের মতো তার সঙ্গে জুটিবদ্ধ হয়েছিলেন কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেন। বাংলা চলচ্চিত্রে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও সফল জুটি উত্তম-সুচিত্রা।
হারানো সুর, সপ্তপদী, পথে হল দেরি, আনন্দ আশ্রম, নায়ক, চাওয়া পাওয়া, বিপাশা, সাগরিকা, খেলাঘর, ভ্রান্তিবিলাস, উত্তরায়ণ ইত্যাদি ছবিতে একের পর এক দর্শকদের মনে ঠাঁই করে নেন উত্তম কুমার। তিনি সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় দুটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন । প্রথমটি নায়ক এবং দ্বিতীয়টি চিড়িয়াখানা । চিড়িয়াখানা চলচ্চিত্রে তিনি শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় সৃষ্ট বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র ব্যোমকেশ বক্সীর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। সত্যজিতের ‘নায়ক’ ছবিতে অভিনয় করে তিনি ‘ভারত রত্ন’ পুরস্কার পান। চলচ্চিত্রে অভিনয় ছাড়াও তিনি সফলভাবে মঞ্চেও অভিনয় করেছিলেন । ১৯৫৬ সালে ’নবজন্ম’ ছবিতে নিজের কন্ঠে প্রথম গান গাইলেন। ১৯৫৭ সালে অজয় কর পরিচালিত ’হারানো সুর’ ছবিতে অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছিলেন সমগ্র ভারতজুড়ে। সেই বছর ’হারানো সুর’ পেয়েছিল রাষ্ট্রপতির সার্টিফিকেট অফ মেরিট। উত্তম কুমার বহু সফল বাংলা চলচ্চিত্রের পাশাপাশি কয়েকটি হিন্দি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছিলেন এবং বহু পুরস্কারে সম্মানিত হন। তাঁর অভিনীত হিন্দি চলচ্চিত্রের মধ্যে ’ছোটিসি মুলাকাত’, অমানুষ এবং আনন্দ আশ্রম প্রধান ।
নিজের অভিনয়, মেধা ও যোগ্যতাবলে জীবদ্দশায় উত্তম কুমার নিজেকে অন্যরকম এক উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। তার অভিনীত ছবির বেশির ভাগই ছিল দর্শকনন্দিত। উত্তম কুমারের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বঙ্গবিভূষণ সম্মানের পর এবার উত্তম কুমারের নামে মহানায়ক পুরস্কার চালু করছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। ২০১১ সালে উত্তম মঞ্চে তাঁর একত্রিশতম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষ্যে একটি অনুষ্ঠানে একথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তম মঞ্চে শিল্পী সংসদ আয়োজিত উত্তম স্মরণ অনুষ্ঠানে এই পুরস্কারের কথা ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়. মুখ্যমন্ত্রী জানান, আগামী বছর থেকে সরকার চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে যুক্ত কলাকুশলীদের মহানায়ক পুরস্কার দেওয়া হবে। মহানায়ক উত্তম কুমারের মৃত্যুদিনে পাঁচ শিল্পীকে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে মাসে ৫ হাজার টাকা পেনশন দেওয়ার ঘোষণা করা হয়৷ এবছরের জন্য মনোনীত করা হয়েছে অরোরা ফিল্ম, শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস, নিউ থিয়েটার্স ও আর পি বনশন এন্ড কোংকে। সারা জীবনের স্বীকৃতি দেয়া হবে মাধবী মুখোপাধ্যায়, সন্ধ্যা রায়, দীপঙ্কর দে, রঞ্জিৎ মল্লিক ও পরিচালক গৌতম ঘোষকে। মহানায়ক পুরস্কার পাচ্ছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, তাপস পাল প্রমুখ। আর চলচ্চিত্র পুরস্কার পাবেন দেব, জিৎ, কোয়েল, শ্রাবন্তী, শুভশ্রী, রাইমা, স্বস্তিকা থেকে পরম, শ্বস্তত, মমতাশঙ্কর, রচনাসহ প্রায় সবাই।
আজ বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা উত্তম কুমারের ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই ওগো বধূ সুন্দরী ছবির শুটিং চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে বাংলার সর্বজনপ্রিয় মহানায়ক, কিংবদন্তি অভিনেতা উত্তম কুমার মহাপ্রয়াণে মহাপ্রস্থান করেন । উত্তমকুমারের পার্থিব মৃত্যু হয়েছে. কিন্তু তাঁর সৃষ্টি চিরকাল অমর হয়ে থাকবে আমাদের মাঝে। কিংবদন্তি ভারতীয় বাঙালি এই চলচ্চিত্র অভিনেতার আজ ৩৮তম মৃত্যুদিন। মৃত্যুদিনে তাঁর জন্য আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]
২৪ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
দারুনভাবে অনুপ্রাণিত হলাম আপনার মন্তব্যে।
ভালো থাকবেন জনাব।
২| ২৪ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৯
স্বরচিতা স্বপ্নচারিণী বলেছেন: অনেক তথ্যবহুল একটি লেখা ছিল। এমনিতে পুরানো বাংলা চলচ্চিত্রের ভক্ত আমি। ভালো লাগলো লেখাটি পড়ে।
২৪ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৭
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ স্বরচিতা স্বপ্নচারিণী
ঙালি কিংবদন্তী উত্তম কুমারের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা
জানানোর জন্য।
৩| ২৪ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:০৪
রাজীব নুর বলেছেন: সময় পেলেই উত্তর কুমারের মুভি গুলো দেখি।
২৪ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৮
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ই্উ আর অলওয়েজ গুড বয় !!
ভালো লাগলো সাথে থাকার জন্য।
৪| ২৪ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:০৩
কাইকর বলেছেন: আপনার প্রত্যেকটি পোস্ট তথ্যবহুল। উত্তম কুমার খুবই গুণী একজন মানুষ।
২৪ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৮
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ কাইকর
কিংবদন্তী চিত্রনায়ক উত্তম কুমারের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা
জানানোর জন্য।
৫| ২৪ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩১
জগতারন বলেছেন: হারানো সুর,
সপ্তপদী,
পথে হল দেরি,
আনন্দ আশ্রম,
নায়ক,
চাওয়া পাওয়া,
বিপাশা,
সাগরিকা,
খেলাঘর,
ভ্রান্তিবিলাস,
উত্তরায়ণ।
ইত্যাদি ছায়া ছবি বাংলা ভাষায় একের পর এক সাহিত্য সম্পদ।
অভিনয় করে বাংলা দর্শকদের মনে আজীবন ঠাঁই করে নেন উত্তম কুমার ও সুচত্রা সেন।
তাদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জ্ঞাপন করি।
২৫ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ জগতারণ
চমৎকার মন্তব্য করে
মহানায়ককে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য
৬| ২৫ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ৯:৫৩
সোহানী বলেছেন: মোটামুটি আমার পার্টনারের যন্ত্রনায় সব ছবিই দেখতে হয়েছে। সে মোটামুটি উত্তম সূচিত্রা বলতে অজ্ঞান.........
ভালোলাগলো স্মরণিকা যদিও আমার সব মুখস্থ আমার পার্টনারের যন্ত্রনায়.........
২৫ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
দারুন এক পার্টনার পেয়েছেন,
সবার ভাগ্যে এমন পার্টনার জোটেনা
আপনি ভাগ্যবতী।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:১০
ইব্রাহীম আই কে বলেছেন: সুচিত্রা সেন এর ব্যপারে অনেক পড়েছি, কিন্তু তার সাথে যে উত্তম কুমার এর জুটি ছিল বা দুইজন একসাথে কাজ করত সে ব্যপারে আজকে জানলাম। আরকে বাঙালি কিংবদন্তী উত্তম কুমার, কালের মহানায়ক।