নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
মুসলিম জাহানের প্রথম খলিফা এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী তৃতীয় ব্যক্তি হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রাঃ)। নবীদের পর উম্মতকুলে সাহাবায়ে কেরামের মর্যাদা সর্বোচ্চ বলেই বিবেচিত হয়। আর সেই সাহাবিদের মধ্যে যাঁর নাম অগ্রগণ্য, তিনি হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ)। তিনি ছিলেন একাধারে হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর শ্বশুর, তাঁর হিজরতের সংগী এবং তাঁর বয়োজোষ্ঠ্য সাহাবাদের মধ্যে অন্যতম। তাঁর বাল্য নাম আবদুল্লাহ ও ডাকনাম আবু বকর। সিদ্দিক হচ্ছে তাঁর উপাধি। মিরাজের ঘটনাকে সর্বপ্রথম মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেছিলেন বলেই রাসুল (সাঃ) তাঁকে এই উপাধিতে ভূষিত করেন। হযরত আবু বকর (রাঃ) ছিলেন রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর প্রত্যক্ষ সঙ্গী, রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ) ও উম্মতের মাঝে সেতুবন্ধ রচনাকারী, কোরআনের নির্দেশ পালনে তিনি ছিলেন উন্মুখ। হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর মৃত্যুর পর পর্যায়ক্রমে হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রাঃ) হযরত ওমর (রাঃ) হযরত ওসমান (রাঃ) ও হযরত আলী (রাঃ) পবিত্র কুরআন ও হাদিসের আলোকে মুসলিম বিশ্বের শাসনকার্য পরিচালনা করেন বলে মুসলিম ইতিহাসে তাদের বলা হয় খোলাফায়ে রাশেদিন। সুন্নী বিশ্বাসমতে হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রাঃ) ছিলেন খোলাফায়ে রাশীদুন (অর্থাৎ সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত) এর একজন খলীফা। ৬৩৪ খৃষ্টাব্দের ২৩ আগস্ট মোতাবেক ১৩ হিজরির ২২ জমাদিউস সানি মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ৬২ বছর বয়সে মহামান্য এই সাহাবি পরলোক গমন করেন। আজ তাঁর ১৩৮৪তম মৃত্যুবার্ষিকী। ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রঃ) ওফাত দিবসে তার রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।
হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) ৫৭৩ খ্রিষ্টাব্দে মক্কার বিখ্যাত কোরাইশ বংশের বনু তাইম গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন। ইসলামের নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) জন্মের মাত্র দুই বছরের কিছু বেশী সময় পর হযরত আবু বকর জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পুর্ন নাম আবু বকর আস সিদ্দিক আব্দুল্লাহ ইবন আবী কুহাফা উছমান আত তাইমী আল কুরাইশী এবং ডাক নাম আবদুল্লাহ। তার বাবা উসমানের কুনিয়া ছিল আবু কুহাফা। এজন্য আবু বকরকে আবদুল্লাহ ইবন আবী কুহাফাও বলা হয়ে থাকে। ইসলামী জীবনচরিতে তার নাম আবু বকর সিদ্দিকী বলা হয়। মহানবী (সাঃ) -এর নবুয়্যত লাভের পর বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে আবু বকরই সর্বপ্রত্থম ইসলাম গ্রহন করেন। জীবনের প্রতিটি স্তরে তিনি ইসলামের বিধিবিধান অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতেন। ইসলামের সূচনা পর্ব থেকে আমৃত্যু তিনি মহানবী (সাঃ) কে ছায়ার মত অনুসরন করতেন এবং নবীজীও ইসলামের জন্য নিজের যথা সর্বস্ব কুরবানী দিয়েছেন। মহানবী (সাঃ) এর প্রতিটি বাণী তিনি বিনা যুক্তিতে সত্য বলে মেনে নিতেন তাই নবী মুহাম্মদ (সঃ) তাকে আস-সিদ্দীক উপাধিটি দিয়েছিলেন। তাঁর অন্য উপাধি ছিল আতিক বা আতিকুল্লাহ মিনান্ নার।
হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) ছিলেন অত্যন্ত দয়ালু ও সত্যনিষ্ঠ। সত্য ও ন্যায়ের ঝাণ্ডা পৃথিবীর জমিনে প্রতিষ্ঠা করার জন্য তাঁর যথাসর্বস্ব ত্যাগের মহিমা বিরল। প্রথম জীবনে কুরাইশদের মধ্যে তিনি অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি ছিলেন। তার জ্ঞান, মেধা, বুদ্ধি এবং সৎ চরিত্রের জন্য সবাই তাকে শ্রদ্ধা করত। তা ছাড়া মানুষের দুঃখ-দুর্দশায়, সহায়-সম্বলহীনতায় এবং দুস্থদের সাহায্যার্থে তিনি ছিলেন আত্মনিবেদিত। হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) সব সময়ই রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ) কে ছায়ার মতো অনুসরণ করতেন। বদরের যুদ্ধে আবুবকর (রাঃ) সরাসরি অংশ নেন এবং নবীজীর খেদমতে প্রতি মুহুর্তে নিজেকে নিয়োজিত করেন। হুজুর (সাঃ) এরশাদ করেন, 'আমার উম্মতের মাঝে আবু বকরই বেশি দয়ালু।' নবী করিম (সাঃ) আরো বলেন, 'বন্ধুত্ব ও সাহায্য আবু বকরই আমাকে বেশি করেছিলেন। ইহজগতে যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করতাম তাহলে আবু বকরকেই করতাম।' তিনি আরো বলেনঃ দুনিয়ায় এমন কোনো ব্যক্তির ওপর সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত হয়নি, যে পয়গম্বরদের পর হজরত আবু বকর থেকে উত্তম ও শ্রেষ্ঠ (রূহুল বয়ান)।
ইসলামের প্রচার ও প্রসারে আবুবকর (রাঃ)-এর অবদান মহাপ্রলয়ের আগ পর্যন্ত উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। ইসলামের প্রতি হযরত আবু বকরের (রাঃ) অপরিসীম অবদানের জন্য তাঁকে 'ইসলামের ত্রাণকর্তা' বলা হয়। এ অবদানের স্বীকৃতির ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেন, 'দুনিয়াতে আমি প্রত্যেক মানুষের এহসানের পরিপূর্ণ বদলা আদায় করেছি কিন্তু সিদ্দিকে আকবরের ত্যাগের প্রতিদান আদায় করতে পারিনি। হাশরের ময়দানে স্বয়ং রাব্বুল আলামিন তাঁকে ওই প্রতিদান দান করবেন।' খলিফা পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার পরই তিনি সমবেত জনতার উদ্দেশে বলেন, 'আমি যত দিন আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসুলের নির্দেশিত পথে চলি, তত দিন তোমরা আমাকে অনুসরণ করবে এবং আমাকে সাহায্য করবে। আর ভুল পথে চললে তোমরা আমাকে সঙ্গে সঙ্গে সংশোধন করে দেবে। তোমাদের মধ্যে যারা দুর্বল, তাদের হক আদায় না করা পর্যন্ত তারা আমার কাছে সবল ও শক্তিশালী। আর যারা সবল, তাদের কাছ থেকে হকদারের হক আদায় না করা পর্যন্ত তারা আমার কাছে দুর্বল।' সিদ্দিকে আকবর (রাঃ) প্রদত্ত এ ভাষণ দুনিয়ার সর্বকালের শাসকদের জন্য অনুপম আদর্শ। তাঁর জীবনের প্রতিটি ঘটনা, কাজ ও বাণী আমাদের ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় জীবন পর্যন্ত অনুকরণীয় ও অনুসরণীয়।
৬৩৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ আগস্ট মোতাবেক ১৩ হিজরির ২২ জমাদিউস সানি মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ৬২ বছর বয়সে মহামান্য এই সাহাবি ওফাত লাভ করেন। রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর রওজা মুবারকের পাশেই তাঁকে দাফন করা হয়। আজ মুসলিম জাহানের প্রথম খলিফা হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রাঃ) ১৩৮৪তম ওফাত দিবস। মহান আল্লাহ্ পাক আমাদেরকে হুজুর (সাঃ) এর এই প্রিয় সাহাবির আদর্শ মেনে চলার তৌফিক দান করুন। আমিন। ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রঃ) ওফাত দিবসে মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে তার রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
২৩ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:১৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ফরিদ ভাই
শুভাকাংখি হিসেবে আমার মঙ্গল কামনা
করার জন্য। ঈদের শুভেচ্ছা রইলো।
২| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৩০
সনেট কবি বলেছেন:
নূর মোহাম্মদ নূরু
নূর মোহাম্মদ নূরু আলোর ভূবনে
বিচরণ করে নিত্য আলোকিত জনে
ধরে এনে পরিচয়ে সকলের সনে
অনেক খাটেন সদা থেকে আনমনে।
মনেতে সবার চিন্তা শয়নে স্বপনে
নিরিক্ষা করেন সব নির্ভার নয়নে
বর্ণনায় পরিপাটি শব্দের চয়নে
গড়েন সুন্দর পোষ্ট ভাষার বুননে।
কলমের এ সৈনিক উত্তম লিখনে
লড়াই করেন খুব লেখালেখি রনে
পাঠক স্থবির হয় ভাবের ওজনে।
ব্লগে তাঁর কতশত পোষ্ট সম্মিলনে
হাজার অধিক পোষ্ট আছে নিরজনে
যেথায় পেয়েছে স্থান সকল সুজনে।
বিঃদ্রঃ কবিতাটি তাৎক্ষনিক লেখা।
২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৮
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনার তাৎক্ষনিকের লেখা নূর বন্দনা দারুন হয়েছে।
পুলকিত হয়েছি, চমৎকৃত হয়েছি!!
কিন্তু এই বন্দনা্ আসলেই কি
সুপাত্রে না অপাত্রে খুব
জানতে ইচ্ছে করে!!
৩| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৫২
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: নবীদের পর তিনি ই শ্রেষ্ঠ মানুষ। সবচেয়ে বেশি শ্রদ্ধা ও সম্মানের দাবিদার। আল্লাহ তায়ালা তার আমলের বরকতে আমদের ক্ষমা করুন। আমিন।
২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৪০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
অসংখ্য ধন্যবাদ আনোয়ার ভাই
অসাধারণ মন্তব্যে আপ্লুত হয়েছি
আল্লাহ তার আমলের বরকতে
আমাদের ক্ষমা কর দিন। আমিন
৪| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৯
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট।
২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৪০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ
৫| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৩
স্ফিঙ্গেল বলেছেন: চমৎকার।
২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৪০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা
৬| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৪
ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: খালু, দারুন।
আপনি এগুলো কিভাবে করেন? এত সময় কই পান?
২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৪২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সময় করে নিতে জানতে হয়!
অপটপিকঃ
এই বয়সে অপাত্রে সময় দেবার
ইচ্ছা নাই তাই সময়ের অভাব নাই।
৭| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:৪৫
মিঃ আতিক বলেছেন: আল্লাহ কবুল করুন, আমিন।
২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৪২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ মিঃ আতিক।
৮| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:৩৫
কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: গতানুগতিকতার বাহিরে গিয়ে একজন মহান ব্যাক্তি সম্পর্কে যে তথ্য উপস্থাপন করলেন যা সত্যিই প্রসংসনী। অনেক ধন্যবা।
২৪ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:০৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
রিফাত বাই আমি আমার গণ্ডির বাইরে যাইনি।
মহৎ ব্যক্তিত্ব, গুণীজন, প্রাতঃস্মরণীয়দের নিয়েই
আমার লেখা। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:০০
সনেট কবি বলেছেন: আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন-আমিন।