নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রথাবিরোধী লেখক, দার্শনিক ও চিন্তাবিদ আরজ আলী মাতুব্বরের ১১৮তম জন্মবার্ষিকী আজ

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩১


প্রথাবিরোধী ধর্মদর্শনের প্রাচীন ধারাবাহিকতার বাংলাদেশী রূপকার হলেন আরজ আলি মাতুব্বর। তিনি মনে করতেন পশু যেমন সামান্য জ্ঞান নিয়েই সন্তুষ্ট থাকে ধর্মবাদী ব্যক্তিগণও তেমনি সামান্য জ্ঞান নিয়েই জীবন কাটিয়ে দেয়। নিজের প্রান্তিক জীবনের সাধারণ কয়েকটি ঘটনাতেই তিনি বুঝে নিয়েছেন তার ও তার সমাজের আচরিত ধর্মের স্বরূপ। ক্রমাগত গ্রন্থ পাঠে বুঝে নিয়েছেন এর কারণাবলী। এই অন্ধকারাচ্ছন্নতার বিরুদ্ধে তার অবস্থান ছিল সুস্পষ্ট। তাই তিনি অনবরত প্রশ্নবাণে দগ্ধ করেছেন তথাকথিত সমাজপিতা ও তাদের আচরিত-প্রচারিত ধর্ম ও দর্শনকে। স্ব-শিক্ষিত দার্শনিক, চিন্তাবিদ এবং বিজ্ঞানমনস্ক লেখক আরজ আলী মাতুব্বরের লেখায় জগত ও জীবন সম্পর্কে নানামুখী জিজ্ঞাসা উঠে এসেছে যা থেকে তার প্রজ্ঞা, মুক্তচিন্তা ও মুক্তবুদ্ধির পরিচয় পাওয়া যায়। তবে শহুরে মধ্যবিত্ত কিংবা গ্রামীণ ক্ষমতাবান কারও কাছেই আরজ আলী মাতুব্বর গ্রহণযোগ্যতা পাননি। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ঘাটতি সত্ত্বেও সাহসীকতার সাথে তিনি কতিপয় বই লেখেন। বিশ্ব ও জীবন সম্পর্কে তাঁর দার্শনিক লেখা বিতর্কিত হয়ে পড়ে এবং তিনি ইসলাম-বিরোধী কর্মী হিসেবে সমালোচিত হন। তাঁর বইগুলো প্রকাশে অনেক বাধা পেরোতে হয়েছিলো কারণ তাঁর বইগুলো সর্বদাই সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধের হুমকিতে থাকত, কারণ তাঁর লেখনী রাষ্ট্রের সংখ্যাগুরু লোকদের মতের বিরুদ্ধাচারিত নির্দিষ্ট দাবিকৃত ধর্মীয় মত বা ভাবাদর্শ ধারণ করত। মাতুব্বরকে তাঁর বই - “সত্যের সন্ধানে”র (Sotyer Shondhaney") জন্য বন্দী করা হয় এবং পুলিশ হাজতে নেয়া হয়। দার্শনিক, চিন্তাবিদ ও লেখক আরজ আলি মাতুব্বরের ১১৮তম জন্ম দিন আজ। ১৯০০ সালের আজকের দিনে তিনি বরিশালো জন্মগ্রহণ করেন। দার্শনিক, চিন্তাবিদ ও প্রথাবিরোধী লেখক আরজ আলী মাতুব্বরের জন্মবার্ষিকীতে আমাদের গভীর শ্রদ্ধা ও ফুলেল শুভেচ্ছা।

আরজ আলী মাতুব্বর ১৯০০ ইংরেজী সালের ১৭ই ডিসেম্বর মোতাবেক বাংলা ১৩০৭ সালের ৩রা পৌষ বরিশাল শহর থেকে ১১ কিলোমিটার দূরে চরবাড়িয়া ইউনিয়নের অন্তর্গত লামছড়ি গ্রামে এক গরীব কৃষক পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। স্ব-শিক্ষিত, দার্শনিক এই লেখকের প্রকৃত নাম ছিলো “আরজ আলী”। আঞ্চলিক ভূস্বামী হওয়ার সুবাধে তিনি “মাতুব্বর” নাম ধারণ করেন। তাঁর পিতার নাম এন্তাজ আলী মাতুব্বর। ১২বছর বয়সে তিনি তাঁর বাবাকে হারান। এর পরে দুই একরের (৮১০০ মিটার২) বসতবাড়িটি নিলামে উঠে। জমিজমাহীন বালক আরজ আলী স্থানীয় সুদখোরদের কাছে তখন তাঁদের পরিবারটি দেনার দায়ে পূর্বপুরুষের ভিটামাটি হারিয়ে সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় পড়ে যায়। অন্যের দয়া দাক্ষিণ্যে বহু কষ্টে খেত খামারে কাজ করার কারণে আর দরিদ্র আরজ আলী আর স্কুলে পড়ার সুযোগ পান নি। আরজ আলী নিজ গ্রামের মুন্সি আবদুল করিমের মসজিদ দ্বারা পরিচালিত মক্তবে সীতানাথ বসাকের কাছে 'আদর্শলিপি' পড়তেন। দরিদ্রতার কারণে নিয়মানুবর্তিতার অভাবে তাঁকে মক্তব ছাড়তে হয়। এরপর তিনি কৃষিকাজে নিয়োজিত হন। পরে এক সহৃদয় ব্যক্তির সহায়তায় তিনি প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন। সাথে সাথে তিনি নিজের ঐকান্তিক চেষ্টায় লেখাপড়া শিখতে থাকেন। নিজের জ্ঞানের পিপাসা মেটাতে তিনি বরিশাল লাইব্রেরীর সমস্ত বাংলা বই একজন মনোযোগী ছাত্রের ন্যায় পড়েন। দর্শন ছিলো তাঁর প্রিয় বিষয়। কিন্তু পাঠাগারে পর্যাপ্ত বই ছিলো না। পরে বিএম মহাবিদ্যালয়ের দর্শনের এক শিক্ষক – কাজী গোলাম কাদির তাঁর জ্ঞানগর্ভ বিচার দেখে মোহিত হন এবং তিনি মহাবিদ্যালয়ের পাঠাগার থেকে বই ধার দেয়ার ব্যবস্থা করে দেন। এভাবেই তাঁর মানসিক আকৃতি গঠিত হয়। তিনি নিজ চেষ্টায় বিজ্ঞান ও দর্শনসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর জ্ঞান অর্জন করেন। জগত ও জীবন সম্পর্কে নানামুখী জিজ্ঞাসা তাঁর লেখায় উঠে এসেছে যা থেকে তাঁর প্রজ্ঞা, মুক্তচিন্তা ও মুক্তবুদ্ধির পরিচয় পাওয়া যায়। আর্থিক সঙ্কটের কারণে, মাতুব্বর কোনো প্রাতিষ্ঠানিক কোর্স বা ডিগ্রী লাভ করতে পারেন নি। কৃষিকাজের ফাঁকে ফাঁকে তিনি জমি জরিপ বা আমিনের কাজ শিখে নেন। এরপর জমি জরিপের কাজকেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। কৃষি ক্ষেতের জন্য এভাবে কিছু পুঁজি জমা করেন। একসময় মানুষ ও জীবন সম্পর্কে তাঁর মনে প্রশ্ন জাগলে তিনি এ বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে নিজস্ব ধরনের চিন্তাভাবনা শুরু করেন। আরজ আলী মাতুব্বর সাম্যবাদী ঢঙের, অনেক অজ্ঞতা, কুসংস্কার ও ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে লেখালেখি করেন। তাঁর লেখার জন্য তাঁকে ধর্মীয় ভাবমূর্তির প্রতিমাধ্বংসকারী হিসেবে বিবেচিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, তিনি ইসলামের বংশগতির ধারা সম্পর্কে প্রশ্ন তুলেন এবং স্বকীয় মত-বৈশিষ্ট্য একমতে আনতে ব্যর্থ হন।

লেখনীর কারণে আরজ আলী মাতুব্বর যতবার ধর্মীয় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ততবারই তাঁকে হুমকি ও হয়রানির সম্মুখীন হতে হয়। বাংলাদেশে, তাঁর লেখা যে সব বইয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ (সেন্সর) করা হয় সেগুলো হলঃ
১। সত্যের সন্ধানে, (The Quest for Truth) (১৯৭৩), ২। সৃষ্টির রহস্য, (The Mystery of Creation) (1১৯৭৭), ৩। অনুমান, (Estimation) (১৯৮৩), ৪। মুক্তমন (Free Mind) (১৯৮৮)
১৩৯২ সালে বাংলা একাডেমী আরজ আলী মাতুব্বরকে আজীবন সদস্য পদ প্রদান এবং বাংলা ১৩৯২ সালের ১লা বৈশাখ নববর্ষ সংবর্ধনা জ্ঞাপন করে। ১৩৮৫ বঙ্গাব্দে হুমায়ুন কবির স্মৃতি পুরস্কার লাভ করেন, ১৩৯২ বঙ্গাব্দে উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী কর্তৃক বরণীয় মনীষী হিসেবে সম্মাননা লাভ করেন। এছাড়াও বিজ্ঞানচেতনা পরিষদ প্রতি বছর তার স্মরনে আরজ আলী মাতুব্বর স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করে থাকে। মৃত্যুর পরে তাঁর কিছু অপ্রকাশিত পান্ডুলিপি আরজ আলী মাতুব্বরের রচনাবলী শিরোনামে প্রকাশিত হয়। তাঁর কিছু লেখা ইংরেজীতে ভাষান্তর করা হয় এবং পাঠক সমাবেশ কর্তৃক সেগুলো খন্ডাকারে আবদ্ধ করা হয়। এছাড়া তার আরো কতিপয় প্রকাশিত গ্রন্থ রয়েছে। সেগুলো হচ্ছেঃ ১। ম্যাকগ্লেসান চুলা (১৯৫০), ২। স্মরণিকা (১৯৮২)

১৯৮৫ সালের ১৫ মার্চ মোতাবেক বাংলা ১৩৯২ সালের ১লা চৈত্র বরিশাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পরলোকগমন করেন দার্শনিক আরজ আলী মাতুব্বর। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৫ বছর। তিনি তার ৮৫ বছরের জীবনকালে ৭০ বছরই লাইব্রেরিতে কাটিয়েছেন পড়াশোনা করে। জ্ঞান বিতরণের জন্য তিনি তার অর্জিত সম্পদ দিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ‘আরজ মঞ্জিল পাবলিক লাইব্রেরি’। মানবতার সেবায় মরণোত্তর চক্ষুদান এবং মেডিকেলের ছাত্রদের শিক্ষার উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য বরিশালের শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ-এর এনাটমি বিভাগে মরণোত্তর দেহদান করেন আরজ আলি মাতুব্বর। দার্শনিক, চিন্তাবিদ ও লেখক আরজ আলি মাতুব্বরের ১১৮তম জন্ম দিন আজ। প্রথাবিরোধী লেখক আরজ আলী মাতুব্বরের জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৮

নজসু বলেছেন:




শুভেচ্ছা জানাই লেখককে।

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:০১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ সুজন ভাই
লেখককে শুভেচ্ছা
জানানোর জন্য।

২| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩০

কানিজ রিনা বলেছেন: আরজআলি মাতব্বরের বই সরকার কতৃক
ওপেন নিশিদ্ধ হয়েছিল কারন সহজ সরল
ধর্ম প্রান যুবকেরা নাস্তিক হওয়ার সম্ভাবনা
বেশী ছিল। তার মা অত্যান্ত ধর্মপ্রান মুসলিম
ছিলেন। মাতার দাফনের সময় ছবি তোলাকে
কেন্দ্র করে কিছু অশিক্ষিত মোল্লারা দাফন
করতে বাধা দেওয়া বা দাফন না করার
কারনে আরজআলি মাতব্বর দুঃখিত হয়ে
ইসলাম বিরোধী হয়ে উঠে এবং নাস্তিকতার
কয়েক পর্ব বই লিখে তিনি নাস্তিকতার
প্রশার বৃদ্ধি ও প্রতিষ্ঠিত করে যান।
যদিও বিজ্ঞানের অনেক জ্ঞান দিয়ে তিনি
ধর্মের জ্ঞান গর্ব মুছে দিতে চেয়েছেন
তথাপি শুধু মাত্র যাদের কোরআনের জ্ঞান
পরিধি কম তারাই আরজআলির পড়ে
অজ্ঞান হয়ে যায় আর নিত্যনতুন নাস্তিক
বেড় হয়। তবুও আপনার লেখাকে প্রশংসা
করতেই হয়। কারন আরজআলি জ্ঞানী
হিসাবে প্রতিষ্ঠা পেলেও আরজআলির বই
সমাজে অনেক যুক্তি তর্কের আধারও বটে।
তার মাকে আল্লাহ্ বেহেস্তের উচ্চ স্তর দান
করুন।
ইচ্ছা করলে আরজআলি অশিক্ষিত মৌলভী
দের কোরআনের জ্ঞানে আলো দিয়ে শিখাতে
পারতেন অশিক্ষিত মোল্লাদের চোখে আঙুল
দিয়ে দেখাতে পারতেন কত জ্ঞানের অন্ধকারে
মোল্লারা বাস করে। আসলে তিনি ইসলামকে
ঘৃনা করেই কোরআনের জ্ঞান থেকে বিরত
থেকেছেন। আপনার কাছে একটা প্রশ্ন
করে গেলাম আরজআলির সমাহিত করা
হয়েছিল কোন ধর্মের অনুকরনে?
ধন্যবাদ আপনাকে।

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:০০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
যিনি জীবিত অবস্থায় নিজের একটি দাঁত, চুল ও নখ বয়ামে ভরে কবর দেন এবং নিজ মৃতদেহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের গবেষণার উদ্দেশ্যে দান করে যান। তিনি কোন বিজ্ঞানী কিংবা বিজ্ঞান আন্দোলনের নেতাকর্মী নন, এমনকি চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাথে তার সরাসরি কোন সম্পর্কও নেই। তিনি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পড়া একজন অসাধারণ কৃষক।

মেডিকেলে তার দেহদানের কারণ তার মায়ের বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং তার মরদেহটির দ্বারা মানব কল্যাণের সম্ভাবনা বিধানে আমার সজীব মনের পরিতোষ ও আনন্দ লাভের প্রয়াস। তার মরদেহটির সাহায্যে মেডিকেল কলেজের শল্যবিদ্যা শিক্ষার্থীগণ শল্যবিদ্যা আয়ত্ত করবে, আবার তাদের সাহায্যে রুগ্ন মানুষ রোগমুক্ত হয়ে শান্তিলাভ করবে। আর এসব প্রত্যক্ষ অনুভূতিই তাকে দিয়েছে মেডিকেলে মরদেহ দানের মাধ্যমে মানব কল্যাণের আনন্দলাভের প্রেরণা। এই যার আকুতি তাকে কি করে দোষীর কাঠগড়ায় দাড়া করাই?

আরজ আলী যেদিন থেকে জমি জরিপ শুরু করেন, এলাকায় জমির ভোগদখল সংক্রান্ত বিষয়ে বিবাদের হার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমতে থাকে। এই কাজে আরজ আলী ছিলেন গ্রামের মানুষের জন্য বিশেষ নির্ভরতা।
তিনি ছিলেন শান্ত। সহজে রাগ করতেন না। প্রতিশোধ পরায়ণ ছিলেন হয়তো, কিন্তু তা অহিংস। তিনি জেদি ছিলেন এবং অপরের যাত্রা ভঙ্গ না করে নিজ পরিশ্রমে জেদ উদ্ধার করতেন। ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে তাকে দুনিয়ার মন্দ কথা বললেও তিনি শান্ত থাকতেন এবং যুক্তি সহকারে কথা বলতেন। এসব গুণের কারণে গ্রামের মানুষ তাকে বিশেষ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতো।

আরজ আলী মাতুব্বর গভীর জীবনবোধ সম্পন্ন মানুষ। তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ষাট বছর বয়সের পর সংসারের দায়িত্ব থেকে অবসর নিবেন। ষাট বছর বয়সের পর তার উপার্জনের টাকা সংসার খরচে ব্যয় করবেন না। এই টাকা দিয়ে লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা করবেন, গ্রামের মানুষের শিক্ষার প্রসারে কাজ করবেন, পল্লী উন্নয়নে ব্যয় করবেন। সত্যি সত্যি তাই করেছেন। তিনি কাজ কমিয়ে দিয়েছেন কিন্তু বন্ধ করেননি। জীবনের শেষ পঁচিশ বছরের সমস্ত উপার্জন মানব সেবায় ব্যয় করেছেন।

সৃষ্টিকর্তা তার কি বিচার করবেন জানিনা, তবে আমি তার পাপ মোচনের প্রার্থনা জানাবো।
ধন্যবাদ কানিজ রিনা আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।

৩| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:০৯

ভিন্নচিন্তা ভিন্নমত ভিন্নপথ বলেছেন: @ নূর মোহাম্মদ নুরু - জনাব, নাস্তিক চিন্তাবিদ আরজ আলীকে নিয়ে পোস্ট দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ভবিষ্যতে আরেক আলোচিত নাস্তিক অধ্যাপক আহমদ শরীফকে নিয়ে আশা করি কিছু লিখবেন।

৪| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: উনি একজন ওস্তাদ লোক।
উনার বই আমি পড়েছি।

৫| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:২৬

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আরজ আলী মাতুব্বর সম্পর্কে যে যাই ভাবুন না কেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে তাঁকে শ্রদ্ধা ও সম্মান করি। তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার অভাব এবং কঠোর জীবন সংগ্রামের কথা বিবেচনায় নিলে তাঁর মতো একজন দার্শনিক আর কোনদিন এ দেশে জন্মাবেন বলে মনে হয় না।

আরজ আলী মাতুব্বরের ১২০ তম জন্মবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

ধন্যবাদ নূর মোহাম্মদ ভাই।

৬| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:১৯

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: পৃথিবীতে কাউকে সম্মান করার প্রধান কারন, সে আমার মতো একজন মানুষ-

৭| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:২০

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: তবে ওনার সম্পর্কে আমি ব্যক্তিগত ভাবে আগ্রহী নই!

৮| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:২৪

ক্ষুদ্রমানব বলেছেন: আমার প্রিয় লেখক । উনার লেখা ঈমান টিকিয়ে রাখার চ্যালেঞ্জ। আরজ আলী নাস্তিকতার জোয়ার তুলে গেছেন যে জোয়ারে এখনো ভাসছে দেশের লক্ষ লক্ষ মুক্তচিন্তার মানুষ ।

৯| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৪২

ডার্ক ম্যান বলেছেন: আমি উনার বই পড়ে নি । উনার বই পড়লে কি ধরনের চিন্তার উদ্রেক হয় বলে আপনি মনে করেন ?

১০| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:১৮

অগ্নি সারথি বলেছেন: শ্রদ্ধাঞ্জলী!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.