নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্বের সেরা সাঁতারু ও টারজান চরিত্রাভিনেতা জনি ওয়াইজমুলারের ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৫৭


বিখ্যাত জার্মান-আমেরিকান সাঁতারু ও অভিনেতা জনি ওয়াইজমুলার ( Johnny Weissmuller)। কোন নামে পরিচিত হবেন জনি ওয়াইজমুলার? যে জায়গাতেই হাত দিয়েছেন সোনা ফলিয়েছেন সেখানেই। ১৯২০-এর দশকে বিশ্বের সেরা সাঁতারু হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এক অলিম্পিকেই তাঁর যে কীর্তি, সেটিই তাঁকে ইতিহাসে অমর করে রাখার জন্য যথেষ্ট ছিল। তিনি কখনও প্রতিযোগিতায় পরাজিত হননি এবং সৌখিন ক্রীড়াবিদ হিসেবে অপরাজিত থেকেই অবসর নেন। তিনি অলিম্পিক ক্রীড়ায় ৫টি স্বর্ণ ও ১টি ব্রোঞ্জসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় চ্যাম্পিয়নশীপে ৫২ বার এবং ৬৯ বার বিশ্বরেকর্ড করেন তিনি। বার্তা সংস্থা এপি (অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস) ওয়াইজমুলারকে বিংশ শতব্দীর প্রথম ভাগের সেরা সাঁতারু হিসেবেও স্বীকৃতি দিয়েছিল। কিন্তু ওয়াইজমুলারে তাতেই সন্তুষ্ট হননি। তিনি অভিনেতা হিসেবে নাম করতে চাইলেন। সাঁতার-ক্যারিয়ার শেষ করার পর নামলেন অভিনয়ে। ১৯৩০-এর দশকে তিনি জনপ্রিয় টারজান চলচ্চিত্রে ধারাবাহিকভাবে অংশগ্রহণ করে অসম্ভব জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। বিশ্বের অন্যতম সেরা কালজয়ী ফ্যান্টাসি চরিত্র টারজানের নাম ভূমিকায় অভিনয় করে বিশ্ব চলচ্চিত্রের ইতিহাসেও নিজেকে রাখলেন অমর করে। ১৯৩২ সালে বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মেট্রো গোল্ডউইন মায়ারের (এমজিএম) সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। সে বছরই এমজিএম প্রযোজিত চলচ্চিত্র টারজান: দ্য এপ ম্যানে নাম ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। এই ছবি দিয়েই তিনি নিজেকে নিয়ে যান অনন্য উচ্চতায়। টারজানের ভূমিকায় বহু অভিনেতা অভিনয় করলেও ওয়েসমুলার চরিত্রটিকে করে তোলেন আরও জনপ্রিয়। টারজানের সেই বিখ্যাত চিৎকারটি ওয়েসমুলারের মাধ্যমেই প্রথম চিত্রায়িত হয় এবং তাঁর মাধ্যমেই জনপ্রিয়তা অর্জন করে। তিনি এই চিৎকারের মতোই একজন অভিনেতা হিসেবে টারজান চরিত্রে এমন অনেক খুঁটিনাটি যোগ করেন, যা টারজান চরিত্রকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে যায়। তিনি টারজানের মোট ১২টি ছবিতে অভিনয় করেন। প্রতিটি ছবিই বক্স অফিসে ঝড় তুলে অভিনেতা হিসেবে তাঁকে নিয়ে যায় খ্যাতির শীর্ষে। আজ এই নন্দিত সাঁতারু ও চরিত্রাভিনেতা জনি ওয়াইজমুলারের ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৮৪ সালের আজকের দিনে তিনি মেক্সিকোর আকাপাল্কোতে মৃত্যুবরণ করেন। বিশ্বের সেরা সাঁতারু ও টারজান চরিত্রাভিনেতা জনি ওয়াইজমুলারের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

১৯০৪ সালের ২ জুন জনি ওয়াইজমুলার অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরীর ফ্রেইডর্ফ, টেমেস কাউন্টিতে (বর্তমান রোমানিয়া) জন্মগ্রহণ করেন। তিনি অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরীর টিমিসোয়ারা এলাকার জার্মান বংশোদ্ভূত বাবা-মায়ের সন্তান। তার পিতা পিটার ওয়াইজমুলার এবং মাতা এলিজাবেথ কার্স। শৈশবে তার পরিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী আবাস গড়ার উদ্দেশ্যে অভিবাসিত হয়ে এস.এস. রটেরড্যাম জাহাজে চড়েন। এরপর তারা ১৪ জানুয়ারি, ১৯০৫ সালে রটেরড্যাম ত্যাগ করে পরিবারসহ তারা এলিস দ্বীপে বার দিন অবস্থান করেন যা বর্তমানে সার্বিয়ার মেদা গ্রাম। এ গ্রামটি রোমানিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে বেশী দূরে নয়। যাত্রীদের তালিকায় তাদেরকে জার্মান বংশোদ্ভূত এবং অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরীর নাগরিক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে শিকাগোতে আত্মীয়দের সাথে সাক্ষাৎ শেষে পেনসিলভানিয়ার কয়লা খনির শহর হিসেবে পরিচিত উইন্ডবারে আবাস গড়েন। নয় বছর বয়সে ওয়াইজমুলার পোলিও রোগে আক্রান্ত হন। ডাক্তার নিয়মিতভাবে সাঁতার কাটার পরামর্শ দেন যা তাকে এ রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করতে সাহায্য করবে। তার পরিবার পশ্চিম পেনসিলভানিয়া থেকে শিকাগোতে স্থানান্তরিত হলেও ওয়াইজমুলার সাঁতার অব্যাহত রাখেন। ঘটনাক্রমে তিনি ওয়াইএমসিএ সাঁতার দলের নজরে পড়েন। ইলিনয়িস এথলেটিক ক্লাবে বেলবয়ের কাজ নেন তিনি। সাঁতার প্রশিক্ষক উইলিয়াম ব্যাকরেচের সুনজরে পড়েন ওয়াইজমুলার। আগস্ট, ১৯২১ সালে ৫০ গজ এবং ২২০ গজ দূরত্বের সাঁতার প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। বিদেশী বংশোদ্ভূত হয়েও তিনি পেনসিলভানিয়ার টেনারিভিলে এলাকায় তাঁর জন্মস্থান উল্লেখ করেন। ফলে আমেরিকার পাসপোর্টধারী ব্যক্তি হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অলিম্পিক দলে অংশ নেয়ার বিষয়টি ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হয়।

১৯২২ সালের ৯ জুলাই, জনি ওয়াইজমুলার ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইলে ডিউক কাহানামকু'র বিশ্বরেকর্ডটি ৫৮.৬ সেকেন্ড সময়ে অতিক্রমণ করে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়েন। ১৯২৪ সালের অলিম্পিক আসরে তিনি পুণরায় তাঁকে পরাভূত করে স্বর্ণপদক জয় করেন। এছাড়াও ৪০০ মিটার ফ্রিস্টাইল এবং ৪ গুণীতক ২০০ মিটার রীলেও জয় করেছিলেন তিনি। আমেরিকার ওয়াটার পোলো দলের অন্যতম সদস্যরূপে ব্রোঞ্জপদকও লাভ করেন। আমস্টারডামে অনুষ্ঠিত ১৯২৪ সালের অলিম্পিকেও তিনি আরো দু'টি স্বর্ণপদক লাভ করে অলিম্পিক শিরোপা অক্ষুণ্ন রাখেন। অলিম্পিকে ৫ স্বর্ণ ও ১ ব্রোঞ্জসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় চ্যাম্পিয়নশীপে ৫২ বার এবং ৬৯ বার বিশ্বরেকর্ড করেন তিনি। তিনি কখনও প্রতিযোগিতায় পরাজিত হননি এবং সৌখিন ক্রীড়াবিদ হিসেবে অপরাজিত থেকেই অবসর নেন। ১৯৫০ এসোসিয়েটেড প্রেস বা এপি তাঁকে বিংশ শতকের প্রথমার্ধের সর্বশ্রেষ্ঠ সাঁতারু হিসেবে মনোনীত করে। বিশ শতকের সেরা সাঁতারুদের একজন জনি ওয়েসমুলার। তবে অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান এই ব্যক্তি বিশ্বব্যাপী বেশি পরিচিতি পেয়েছেন টারজান করে। ১৯২৯ সালে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো। এরপর টারজান সিরিজ দিয়ে সারা বিশ্বের মানুষের মন জয় করেন। এ নিয়ে এক ঘটনাও আছে। একবার কিউবায় ঘুরতে গিয়েছিলেন তিনি। বন্ধুদের সঙ্গে গলফ খেলছিলেন। তখন দেশটিতে আবার বিপ্লব চলছিল। হঠাৎ টের পেলেন ফিদেল কাস্ত্রোর সৈন্যরা ঘিরে ফেলেছে। বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে টারজানের মতো হাঁক ছাড়লেন। এরপর সৈন্যদের তাঁকে চিনতে মোটেও সমস্যা হয়নি। ১৯৮৪ সালের ২০ জানুয়ারি মেক্সিকোর আকাপাল্কোতে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭৯ বছর। আজ এই নন্দিত সাঁতারু ও চরিত্রাভিনেতা জনি ওয়াইজমুলারের ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। বিশ্বের সেরা সাঁতারু ও টারজান চরিত্রাভিনেতা জনি ওয়াইজমুলারের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:০৮

রাজীব নুর বলেছেন: সাতার টা আজও শেখা হলো না।

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:২৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
খুব একটা দেরী হয়নি!
শিখে নিতে পারেন একনো।
শেখার কোন বয়স নাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.