নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

হলিউড দেবী ডেইম এলিজাবেথ টেইলরের ৮৭তম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৯:১৪


হলিউডের সম্ভবত সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের অন্যতম হলিউড দেবী ডেইম এলিজাবেথ টেইলর। সংক্ষেপে লিজ টেইলর। ইংল্যান্ডে জন্ম নেয়া ব্রিটিশ-মার্কিন অভিনেত্রী টেইলরকে হলিউডের স্বর্ণযুগের অন্যতম অভিনত্রী হিসেবে ধরা হয়। তাঁকে তাই বলা হয় জীবনের থেকেও বড় তারকা। আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউট টেইলরকে তাঁদের নারী কিংবদন্তি তালিকায় ৭ম স্থানে রেখেছে। তিনি তাঁর অভিনয় প্রতিভা ও সৌন্দর্যের জন্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। যেমন তার সৌন্দর্য, তেমনি অভিনয় প্রতিভা, আবার তেমনই বিতর্কিত তার ব্যক্তিগত জীবন ও সম্পর্কগুলোও যেমন তার অনেকগুলো বিয়ে করা। টেইলরের জীবনে ব্যস্ততম বছরটি ছিল ১৯৫৪ সাল। সে বছর মুক্তি পায় তার চারটি ছবি। তখন ২২ বছর বয়সী এ অভিনেত্রী পৃথিবীর অন্যতম সুন্দরী হিসেবেও বিবেচিত হতেন। টানা চারবার মনোনয়ন পাওয়ার পর অবশেষে এলিজাবেথের ঘরে ঢুকে অস্কার। ‘বাটারফিল্ড’ ছবিতে তিনি অভিনয় করেন পতিতার চরিত্রে। বিপরীতে ছিলেন স্বামী এডি ফিশার। অস্কার এনে দিলেও টেইলর-ফিশার জুটির কাছে এটি ছিল অপছন্দের চলচ্চিত্র। ২০০৬ সালে ‘হাউস অব টেইলর’ নামে একটি গহনার কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি, যেখানে হীরা ও মূল্যবান পাথরের অলঙ্কার পাওয়া যায়। এসব গহনা ডিজাইন করা হয় টেইলরের সংগ্রহে থাকা অলঙ্কারের আদলে। এতে এতই আসক্ত ছিলেন যে জুয়েলারি নিয়ে বইও লিখেছেন তিনি। এছাড়া বাজারের সবচেয়ে দামি সুগন্ধিও টেইলরের নামে। আজ তার ৮৭তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৩২ সালের আজকের দিনে তিনি লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন। কিংবদন্তি অভিনেত্রী লিজ টেলরের জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা।

এলিজাবেথ ১৯৩২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি লন্ডনে উত্তর-পশ্চিম লন্ডনের অভিজাত এলাকায় হ্যাম্পস্টেডে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা ফ্রান্সিস লেন টেইলর (১৮৯৭-১৯৬৮) ও মা সারা ভায়োলা ওয়ার্মব্রড। টেইলরের বাবা পেশায় ছিলেন একজন ছবির ডিলার এবং মা ছিলেন মঞ্চ অভিনেত্রী, মঞ্চে যাঁর নাম ছিলো সারা সদার্ন। তার জন্মের সময় তার মার্কিন পিতা-মাতা লন্ডন প্রবাসী থাকলেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ফিরে আসেন আমেরিকায়। লস অ্যাঞ্জেলসে শুরু হয় তার নতুন জীবন। লিজ ছিলেন আজন্ম শিল্পী। মাত্র ৩ বছর বয়েসে নাচতে শুরু করেন অভিনেত্রী মায়ের কন্যা ছোট্ট লিজ। মাত্র ১০ বছর বয়েসে বড় পর্দায় অভিনয় শুরু করেন। ১২ বছর বয়েসে পর পর কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করে রীতিমতো তারকা বনে যান কিশোরী এলিজাবেথ। কিন্তু এতসব সাফল্যের পাশাপাশি ট্র্যাজেডি আর বড় বড় ধাক্কাও মোকাবেলা করেন বিশ্বখ্যাত এই অভিনেত্রী। প্রযোজক স্বামী মাইক টড মারা যান ১৯৫৮ সালে। স্বামীর মৃত্যুর পরপরই তিনি স্বামীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু এডি ফিশারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। সে সময় ইন্ডাস্ট্রিতে কানাকানি পড়ে যায় বেশ জোরেশোরেই। এরপা্র ‘ক্লিওপেট্রা’ ছবিতে অভিনয়ের সময় প্রেমে পড়েন অভিনেতা রিচারড বারটনের সঙ্গে, পরের বছর ১৯৬৪ সালেই বিয়ে করেন তাকে। তার প্রেম ও বিয়ে নিয়ে কানাকানি চলতেই থাকে চলচ্চিত্র জগতে। সঙ্গে চলতে থাকে লিজের সাফল্যের অপ্রতিরোধ্য গতি। পঞ্চাশের দশকে হলিউডে শাসন শুরু করেছিলেন লিজ টেলর। একাধিকবার অস্কার ছাড়াও অভিনয়ের জন্য পেয়েছেন অ্যামেরিকান ফিল্ম ইন্সটিটিউট এর লাইফ অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড বা আজীবন সম্মাননা। তার সর্বশেষ অভিনীত ছবি ‘দ্য ফ্লিন্টস্টোনস’। আশির দশকের প্রথম দিকে ধীরে ধীরে চলচ্চিত্র থেকে নিজেকে গুটিয়ে ঝুঁকে পড়েন টেলিভিশনের দিকে। ‘পোকার অ্যালিস’, ‘জেনারেল হসপিটাল’, ‘অল মাই চিলড্রেন’-এর মতো টিভি সিরিজে দেখা যায় এলিজাবেথকে। ‘দ্য লিটল ফক্সেস’, ‘প্রাইভেট লাইভস’ নামে মঞ্চ নাটকেও দেখিয়েছেন অভিনয়গুণ। বেগুনি চোখের চাউনিতে বশ করেছিলেন দর্শকদের আর জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নিজের সঙ্গে সেটি ধরে রেখেছিলেন।

(লিজ টেলর এবং কনরাড "নিকি" হিলটন)
মাত্র ১৮ বছর বয়সে খ্যাতির শিখরে ওঠেন এলিজাবেথ টেইলর। তিনি বরাবরই আলোচনায় এসেছেন সৌন্দর্য এবং একাধিক বিয়ের কারণে। রূপে-গুণে-ব্যক্তিত্বে শুধু দর্শক নয়, স্থান করে নেন বহু পুরুষের হৃদয়াসনে। সময়ের পরিক্রমায় তিনি সাতজন পুরুষের সঙ্গে আটবার বিয়ের বাঁধনে বাঁধা পড়েছিলেন। তারা হলেনঃ
১। কনরাড "নিকি" হিলটন (৬ মে, ১৯৫০ - ২৯ জানুয়ারি, ১৯৫১) (বিচ্ছেদকৃত)
২। মাইকেল ওয়াইল্ডিং (২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ - ২৬ জানুয়ারি, ১৯৫৭) (বিচ্ছেদকৃত)
৩। মাইকেল টড (২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৭ - ২২ মার্চ, ১৯৫৮) (বৈধব্যপ্রাপ্ত)
৪। এডি ফিশার (১২ মে, ১৯৫৯ - ৬ মার্চ, ১৯৬৪) (বিচ্ছেদকৃত)
৫। রিচার্ড বার্টন (১৫ মার্চ ১৯৬৪ - ২৬ জুন ১৯৭৪) (বিচ্ছেদকৃত)
৬। রিচার্ড বার্টন (পুনরায়) (১০ অক্টোবর, ১৯৭৫ - ২৯ জুলাই, ১৯৭৬) (বিচ্ছেদকৃত)
৭। জন ওয়ার্নার (৪ ডিসেম্বর, ১৯৭৬ - ৭ নভেম্বর, ১৯৮২) (বিচ্ছেদকৃত) এবং সর্বশেষ
৮। ল্যারি ফোর্টনেস্কি (৬ অক্টোবর, ১৯৯১ - ৩১ অক্টোবর, ১৯৯৬) (বিচ্ছেদকৃত)

অভিনয় ছাড়াও নানা সমাজ সচেতনতামূলক কাজেও অংশ নেন কিংবদন্তি এই অভিনেত্রী। তিনিই প্রথম হলিউড তারকা, যিনি এইডসের বিরুদ্ধে জনমত তৈরিতে এগিয়ে আসেন।এইডস সম্পর্কে প্রচারণা চালান এ রোগে ঘনিষ্ঠ বন্ধু রক হাডসনের মৃত্যুর পর। ‘লাভ লেটার’ নামে একটি মঞ্চ নাটকে অংশ নেন এইডস তহবিল গঠনের জন্য। ১৯৮৫ সালে গঠিত ‘আমেরিকান ফাউন্ডেশন ফর এইডস রিসার্চ’-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা। ‘এলিজাবেথ টেইলর এইডস ফাউন্ডেশন’-এর প্রতিষ্ঠাতা। এইডস প্রতিরোধে জনমত সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন সম্মাননাও লাভ করেন। অভিনয় প্রতিভা ও বেগুনি চোখের চাহনিতে লিজ টেলর বশ করেছিলেন দর্শককে কিন্তু সৃষ্টিকর্তার অমোঘ নিয়মে পরাজয় বরণ করতে হয় নিয়তির কাছে। কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন টেলর। নব্বইয়ের দশকটা প্রায় পুরোটাই ভোগেন নানারকম রোগে।২০০৪ সালে ঘোষণা করা হয় যে, তিনি হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছেন এবং ২০০৯ সালে তাঁকে কার্ডিয়াক সার্জারীর মাধ্যমে ভাল্ব প্রতিস্থাপন করা হয়। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে হৃদযন্ত্রের সমস্যার দরুণ উন্নত চিকিৎসার জন্য সিডারস-সিনাই মেডিক্যাল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। ২০১১ সালের ২৩ মার্চ চার সন্তানকে রেখে ক্যালিফোর্নিয়ার লস এঞ্জেলসের সিডারস-সিনাই মেডিক্যাল সেন্টারে প্রয়াত হন কিংবন্তি অভিনেত্রী লিজ টেলর। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭৯ বছর । আজ তার ৮৭তম জন্মবার্ষিকী।কিংবদন্তি অভিনেত্রী লিজ টেলরের জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: অনেক কিছু জানা হলো।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:০৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ রাজীব ভাই।
মন্তব্য করার জন্য যদি
পুরস্কার দেবার ব্যবস্থা
রাখা হতো তা হলে
১ম পুরস্কার যেতে
আপনার ঝোলায়।

২| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:২১

মিঃ আতিক বলেছেন: আজ মহানবী (সঃ) ওনার প্রথমা কন্যা হযরত যাইনাব (রাঃ) ওনার জন্মদিন। আফসোস মুসলমানরা নিজেদের ইতিহাসের খবর রাখেনা।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:০৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ আতিক সাহেব
আফসোস কি কারণে ?
কাজটিতো আপনিও করতে
পারতেন!
মহানবী (সঃ) এর প্রথমা কন্যা
হযরত যাইনাব (রাঃ) এর জন্মদিনে
তাকে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধায়।

৩| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৪

বাংলার মেলা বলেছেন: মহানবীর (স) এর কন্যা কেন, খোদ মহানবী (স) এর জন্মদিনও আমাদের কাছে কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয় - কারণ আমরা উনাকে সারা বছর ধরেই মনের মণি কোঠরে রাখি। তবে এলিজাবেথ টেলরের জন্মদিন মনে করিয়ে দেয়া দরকার আছে। তাহলে আমাদের মনে হয়, তাইতো, লিজ টেলর নামে একজন অভিনেত্রী তো ছিল!

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:১১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ বাংলার মেলা।
আশা করি মিঃ আতিক বুঝতে
পেরেছেন বিষয়টা। তিনি হয়তো
আবেগপ্রবণ হয়ে ছিলেন।

৪| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩৫

এস এম মামুন অর রশীদ বলেছেন: প্রতি বছর প্রতি দিন প্রচুর পরিশ্রম করে এত বড় পোস্ট না লিখে একটি করে নম্বর নির্ধারণ করে দিতে পারেন পোস্টের জন্য। যেমন, ৪২০ মানে এলিজাবেথ টেইলরের জন্মদিবস, ৪২১ মানে মৃত্যুদিবস।

একটু গাণিতিক মজা করলাম। :)

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:১৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
যেহেতু সামু ওয়াজ মাহফিলের ময়দান নয়
তাই একটু মজা করতেই পারেন। ধন্যবাদ
এস এম মামুন অর রশীদ ভাই।

৫| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৭:১০

জগতারন বলেছেন:
স্মপ্রতি আপনার পোষ্ট সকল পোস্ট;
"পঙ্কজ কুমার মল্লিক" -এ একটি মন্তব্য করেছিলাম বেশকিছুদিন আগে এখনও প্রতি মন্তব্য করেন নি !
সময় পেলে একটু দেখে আসবেন।

৬| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৭:১২

জগতারন বলেছেন:
আমার আগের মন্তব্যে 'সকল পোস্ট' ভুলভাবে এসেছে, দুঃখিত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.