নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্বনন্দিত গাণিতিক,পদার্থবিজ্ঞানী, জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলামের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

১৬ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ৭:২১


বিশিষ্ট পদার্থবিজ্ঞানী, গণিতবিদ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, বিশ্বতত্ত্ববিদ ও অর্থনীতিবিদ জামাল নজরুল ইসলাম। তিনি মহাবিশ্বের উদ্ভব ও পরিণতি বিষয়ে মৌলিক গবেষণার জন্য বিশেষভাবে খ্যাত। ড. ইসলাম মৃত্যুর আগ পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ সেন্টার ফর ম্যাথমেটিকাল এন্ড ফিজিকাল সায়েন্সের এর গবেষক এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর একজন সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন। ড: ইসলাম ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এমেরিটাস। তা ছাড়া ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ সেন্টার ফর ম্যাথমেটিকাল এন্ড ফিজিকাল সায়েন্সেসেও তিনি আমৃত্যু গবেষণা করে গেছেন। ২০০১ সালে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বলে একটি গুজব রটেছিল। বাংলাদেশেও এই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় জামাল নজরুল ইসলাম গণিতের হিসাব কষে দেখান যে, সে রকম সম্ভাবনা নেই। কারণ, প্রাকৃতিক নিয়মে সৌরজগতের সবগুলো গ্রহ এক সরলরেখা বরাবর চলে এলেও তার প্রভাবে পৃথিবীর কোন ক্ষতি হবে না। জামাল নজরুল ইসলাম ২০১৩ সালের আজকের দিনে চট্টগ্রামে মৃত্যুবরণ করেন। আজ তার ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী। বরেণ্য শিক্ষাবিদ ও খ্যাতিমান ভৌতবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. জামাল নজরুল ইসলামকে ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

জামাল নজরুল ইসলাম ১৯৩৯ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা তখন এই শহরের মুন্সেফ (বর্তমানে সহকারী জজের সমতুল্য) ছিলেন। তার বয়স যখন মাত্র ১ বছর তখনই তার বাবা কলকাতায় বদলি হন। জামাল নজরুল প্রথমে ভর্তি হন কলকাতার মডেল স্কুলে। এই স্কুল থেকে পরবর্তীতে শিশু বিদ্যাপীঠে। চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত এই বিদ্যাপীঠেই পড়েন। পরবর্তীতে আবার মডেল স্কুলে ফিরে যান। কলকাতায় মডেল স্কুলের পর চট্টগ্রামে চলে আসেন। এখানে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হওয়ার জন্য পরীক্ষা দেন। এই ভর্তি পরীক্ষায় বিশেষ কৃতিত্বের জন্য তাকে "ডাবল প্রমোশন" দিয়ে সরাসরি ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি করে নেয়া হয়। নবম শ্রেণী পর্যন্ত এই স্কুলে পড়াশোনা করেন। এখানে পড়ার সময়ই গণিতের প্রতি তার অন্যরকম ভালবাসার সৃষ্টি হয়। অনেক অতিরিক্ত জ্যামিতি সমাধান করতে থাকেন। নবম শ্রেণীতে উঠার পর পূর্ব পাকিস্তান ছেড়ে পশ্চিম পাকিস্তানে চলে যান। সেখানে গিয়ে ভর্তি হন লরেন্স কলেজে। এই কলেজ থেকেই তিনি সিনিয়র কেমব্রিজ ও হায়ার সিনিয়র কেমব্রিজ পাশ করেন। সে সময় সিনিয়র কেমব্রিজ বলতে বর্তমানের ও লেভেল এবং হায়ার সিনিয়র কেমব্রিজ বলতে বর্তমানের এ লেভেল বোঝাতো। এ সময় নিজে নিজে অনেক অংক কষতেন। বিভিন্ন বই থেকে সমস্যা নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করতেন যা পরবর্তীতে তার অনেক কাজে আসে। উল্লেখ্য, হায়ার সিনিয়র কেমব্রিজে তিনি একাই কেবল গণিত পড়েছিলেন। এটা বেশ উচ্চ পর্যায়ের গণিত হওয়ায় সবাই নিতে চাইতো না। এ সময়ই গণিতের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েন। লরেন্স কলেজের পাঠ শেষে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়তে যান। এখান থেকে বিএসসি অনার্স করেন। বিএসসি শেষে ১৯৫৭ সালে ইসলাম কেমব্রিজে পড়তে যান। কেমব্রিজের প্রায়োগিক গণিত ও তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান থেকে আবারও স্নাতক ডিগ্রি (১৯৫৯) অর্জন করেন। তারপর এখান থেকেই মাস্টার্স (১৯৬০) ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৪ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই প্রায়োগিক গণিত ও তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮২ সালে এসসিডি (ডক্টর অফ সায়েন্স) ডিগ্রি অর্জন করেন।

কর্মজীবনে জামাল নজরুল ইসলাম ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত ইসলাম যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ডে ডক্টরাল-উত্তর ফেলো হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ইসলাম কেমব্রিজের ইনস্টিটিউট অফ থিওরেটিক্যাল অ্যাস্ট্রোনমি-তে (বর্তমানে ইনস্টিটিউট অফ অ্যাস্ট্রোনমি)কাজ করেন ১৯৬৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত। ১৯৭১ থেকে ১৯৭২ পর্যন্ত ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে ভিজিটিং সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত তিনি লন্ডনের কিংস কলেজে ফলিত গণিতের প্রভাষক ছিলেন। ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত ইউনিভার্সিটি কলেজ, কার্ডিফ (বর্তমানে কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়) এর সায়েন্স রিসার্চ কাউন্সিলে ফেলো ছিলেন। ১৯৭৮ সালে তিনি লন্ডনের সিটি ইউনিভার্সিটিতে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন এবং পরে রিডার পদে উন্নেএত হন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটনে অবস্থিত ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিতে ১৯৬৮, ১৯৭৩ ও ১৯৮৪ সালে ভিজিটিং সদস্য হিসেবে কাজ করেন। ১৯৮৪ সালে ইসলাম বাংলাদেশে ফিরে এসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন।
জামাল নজরুল ইসলাম মানুষ হিসাবে ছিলেন প্রায় দেবতুল্য, অবিশ্বাস্য রকমের সজ্জন ও উপকারী স্বভাবের। তিনি পারতপক্ষে কোনো অনুরোধ, উপরোধ বা প্রস্তাবে “না” বলতেন না। আর এই ভালোমানুষির মাশুলও তাঁকে দিতে হয়েছে প্রবলভাবে। পঠন-পাঠন, লেখালেখি আর গবেষণার কাজ ফেলে প্রায়শই নিজের মহামূল্যবান সময়ের অপচয় করতে হয়েছে তাঁকে—ছড়া পাঠের আসরের প্রধান অতিথি হয়ে, কি পোশাক-প্রদর্শনীর ফিতে কেটে, কি সুফি সম্মেলনের উদ্বোধন করে, কিংবা একেবারেই অনুল্লেখ্য কোনো গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করে। ব্যাক্তিগত জীবনে জামাল নজরুল ইসলাম বই পড়তে ভালবাসেন। তবে তিনি শখ হিসেবে গান শোনা ও ছবি আঁকার কথা বলেছেন। রবীন্দ্র সঙ্গীত সবচেয়ে প্রিয়। কম্পিউটার ও ইন্টারনেট এর প্রতি তার কোন আগ্রহ নেই। ছোটবেলা থেকেই ক্যালকুলেটর ব্যবহারে তার অনীহা ছিল। গাণিতিক হিসাব মাথা খাটিয়ে করতে পছন্দ করেন। তাই কম্পিউটারের ব্যবহারও তার কাছে ভাল লাগে না। এই অপছন্দের মূল কারণ অবশ্য অপ্রয়োজনীয়তা। তিনি বলেন, কম্পিউটার তার কাজে লাগে না। তার চিন্তার অনেকখানি জুড়ে থাকে দেশ ও সমাজের উন্নতি এবং দারিদ্র্য দূরীকরণ। নিজের আয় থেকে কিছু অর্থ জমিয়ে দরিদ্র ছাত্রদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করেন। তাছাড়া ১৯৭১ সালে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে বাংলাদেশে পাকিস্তানী বাহিনীর আক্রমণ বন্ধের উদ্যোগ নিতে বলেছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তার এই পরোক্ষ অবদান ও পরবর্তীতে দেশে ফিরে আসা থেকে তার দেশপ্রেমের প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়া তিনি বিদেশে পড়াশোনা করছে এমন সব শিক্ষার্থীকেই পড়াশোনা শেষে দেশে ফিরে আসতে উৎসাহিত করেন। মাতৃভাষায় বিজ্ঞানচর্চায় উৎসাহ দিতে বাংলা ভাষায় বেশ কয়েকটি বিজ্ঞানগ্রন্থও লিখেছিলেন জামাল নজরুল ইসলাম। তার উল্লেখ যোগ্য প্রকাশনাঃ
১। দি আল্টিমেট ফেইট অফ দি ইউনিভার্স (১৯৮৩) - কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত হয়। প্রকাশের পর বিজ্ঞানী মহলে বিশেষ সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়। জাপানি, ফরাসি, পর্তুগিজ ও যুগোশ্লাভ ভাষায় অনুদিত হয়।
২। ক্লাসিক্যাল জেনারেল রিলেটিভিটি (১৯৮৪) - ডব্লিউ বি বনোর এর সাথে যৌথ সম্পাদনা।
৩। রোটেটিং ফিল্ড্‌স ইন জেনারেল রিলেটিভিটি (১৯৮৫) - কেমব্রিজ থেকে প্রকাশিত।
৪। অ্যান ইন্ট্রোডাকশন টু ম্যাথমেটিক্যাল কসমোলজি (১৯৯২)
৫। কৃষ্ণ বিবর - বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত।
৬। মাতৃভাষা ও বিজ্ঞান চর্চা এবং অন্যান্য প্রবন্ধ - রাহাত-সিরাজ প্রকাশনা
৭। শিল্প সাহিত্য ও সমাজ - রাহাত-সিরাজ প্রকাশনা
৮। স্কাই অ্যান্ড টেলিস্কোপ - কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। স্প্যানিশ ভাষায় অনুদিত
৯। দ্য ফার ফিউচার অফ দি ইউনিভার্স - এনডেভারে প্রকাশিত

অর্থনীতি ও বিজ্ঞানে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য বহু পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হন। তার প্রাপ্ত উল্লেখযোগ্য পুরস্কারঃ
১। বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমী ১৯৮৫ সালে তাঁকে স্বর্ণপদকে ভূষিত করে।
২। ১৯৯৪ সালে তিনি ন্যাশনাল সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি মেডেল পান।
৩। ১৯৯৮ সালে ইতালির আবদুস সালাম সেন্টার ফর থিওরিটিকাল ফিজিক্সে থার্ড ওয়ার্ল্ড একাডেমী অফ সায়েন্স অনুষ্ঠানে তাঁকে মেডাল লেকচার পদক দেয়া হয় ।
৪। তিনি ২০০০ সালে কাজী মাহবুবুল্লাহ এন্ড জেবুন্নেছা পদক পান।
৫। ২০০১ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেন।
৬। ২০১১ সালে পদার্থবিজ্ঞানে বিশেষ অবদান রাখার জন্য তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর রাজ্জাক-শামসুন আজীবন সম্মাননা পদক লাভ করেন। জামাল নজরুল ইসলাম ফুসফুসের সংক্রমণ ও হূদরোগের কারণে মেডিকেলে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৩ সালের ১৬ মার্চ ৭৪ বছর বয়সে চট্টগ্রামে মারা যান। আজ অধ্যাপক ড. জামাল নজরুল ইসলামের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী। প্রখ্যাত বাঙালি পদার্থবিদ ড. জামাল নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ১১:৩৫

আকতার আর হোসাইন বলেছেন: মৃত্যুবার্ষিকীততে আর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রইল।

২| ১৬ ই মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১৪

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: শ্রদ্ধাঞ্জলি রইলো।

কেমন আছেন নুরু ভাই?

৩| ১৬ ই মার্চ, ২০১৯ রাত ৮:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: উনাকে আজই প্রথম চিনলাম, জানলাম।

৪| ১৭ ই মার্চ, ২০১৯ রাত ১:২১

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: বস.......প্রকৃত দেশপ্রেমিক

শ্রদ্ধা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.