নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

হলিউডের স্বর্ণযুগের অন্যতম অভিনেত্রী রূপালী জড়গের রাণী লিজ টেইলরের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

২৩ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ৭:০৭


অভিনয় প্রতিভা ও সৌন্দর্যের জন্য বিশ্ব বিখ্যাত ব্রিটিশ-মার্কিন অভিনেত্রী ডেম এলিজাবেথ রোজমন্ড টেইলর। যিনি লিজ টেইলর নামেই সমধিক পরিচিত। দু'বার অস্কার পুরস্কায় জয়ী এলিজাবেথ টেইলর অভিনয় করেছেন ৫০টিরও বেশি ছবিতে৷ ‘বাটার ফিল্ড এইট' এবং ‘হুইজ অ্যাফরেইড অব ভার্জিনিয়া উলফ' ছবিতে অনবদ্য অভিনয় করে তিনি জিতে নিয়েছিলেন অস্কার পুরস্কার৷ ১৯৬৩ সালে ক্লিওপেট্রা'র চরিত্রে অভিনয় করে পেয়েছিলেন ব্যাপক জনপ্রিয়তা৷ শিশু বয়সেই পরিচয় ঘটেছিল চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে৷ ১৯৪৪ সালে মাত্র বারো বছর বয়সেই অর্জন করেছিলেন তারকা খ্যাতি৷ তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এলিজাকে৷ সপ্রতিভ অভিনয় আর সৌন্দর্য্যে তাঁকে করে তোলে অনন্য৷ কালজয়ী এই অভিনেত্রী একের পর এক ছবিতে অভিনয় করে জয় করতে থাকেন দর্শকদের হৃদয়৷ অন্যদিকে অনেকবার বিয়ে করে ঝড় তোলেন উদারনীতির মার্কিন সমাজেও৷ তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের নানা ঘটনা বারবারই পত্রিকার পাতায় গরম খবর হয়েছে৷মারা যাওয়ার সময় তাঁর সন্তানরা মায়ের পাশেই ছিলেন৷বিশ্ববিখ্যাত এই তারকা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে দু'মাস লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি হাসপাতালে ছিলেন৷। আজ অভিনেত্রীর ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১১ সালের ২৩ মার্চ আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার লস এঞ্জেলসের সিডারস-সিনাই মেডিক্যাল সেন্টারে হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগে মৃত্যুবরণ করেন। ভূবন বিখ্যাত এই সৌন্দর্যের অধিকারী অভিনেত্রী লিজ টেইলরের মৃত্যুদিনে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

ডেম এলিজাবেথ রোজমন্ড টেইলর ১৯৩২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি উত্তর-পশ্চিম লন্ডনের একটি অভিজাত এলাকা- হ্যাম্পস্টেডে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন তাঁর বাবা ফ্রান্সিস লেন টেইলর ও মা সারা ভায়োলা ওয়ার্মব্রডের ছোট মেয়ে। তাঁরা জন্মসূত্রে মার্কিনী হলেও বাস করতেন ইংল্যান্ডে। তাঁদের আমেরিকান মা-বাবা এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের আরাকানস সিটি থেকে। টেইলরের বাবা পেশায় ছিলেন একজন ছবির ডিলার এবং মা ছিলেন মঞ্চ অভিনেত্রী, মঞ্চে যাঁর নাম ছিলো সারা সদার্ন। ১৯২৬ সালে যখন ফ্রান্সিস টেইলরের সাথে নিউ ইয়র্ক সিটিতে সারার বিয়ে হয়, তারপর সারা মঞ্চকে বিদায় জানান। অভিনেত্রী মায়ের মেয়ে হিসেবে অভিনয়ের গুণ জন্মগতভাবেই পেয়েছিলেন লিজ। সেই সঙ্গে ছিলো তার পরিবার, বিশেষ করে মায়ের অকুণ্ঠ সমর্থন। নিজের মেয়ের অভিনয়ক্ষমতা নিয়ে বরাবরই নিঃসন্দেহ ছিলেন সারা। মঞ্চে এককালে নিজের অভিনীত চরিত্রে লিজকে দেখে সারা বলেছিলেন, ‘ঐ যে আমার ছোট্ট মেয়ে, কী অসাধারণভাবেই না চরিত্রটিতে অভিনয় করছে! ওর চেয়ে অনেক বেশি বয়সেও আমি যা করতে পারিনি। ওকে দেখে মনে হচ্ছে, আমি যতদিন অভিনয় করেছি ও আমার ভেতরে থেকেই আমার সমস্ত কিছু রপ্ত করেছে।’ সেই শিশু বয়স থেকেই এমজিএম এবং ইউনিভার্সালের মতো বড় প্রতিষ্ঠানের নজরে এসেছিলেন লিজ। গাঢ় বেগুনী চোখের ঘন কালো চুলের মেয়েটি মাত্র নয় বছর বয়সেই রূপালি পর্দায় তার যাত্রা শুরু করেন ‘দেয়ার’স ওয়ান বর্ন এভরি মিনিট’ ছবির মাধ্যমে। প্রথম ছবি থেকেই নির্মাতাদের নজর কাড়তে শুরু করেন তিনি। মাত্র বারো বছর বয়সেই অর্জন করেছিলেন তারকা খ্যাতি৷ ১৯৪৪ সালে ১২ বছর বয়সেই তিনি ‘ন্যাশনাল ভেলভেট’ ছবির মাধ্যমে প্রথম তারকাখ্যাতি পেয়ে যান। তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এলিজাকে৷ তবে অন্যান্য শিশু তারকাদের মতো বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যাননি তিনি। বরং নিজেকে মেলে ধরেছেন পূর্ণভাবে। সপ্রতিভ অভিনয় আর সৌন্দর্য্যে তাঁকে করে তোলে অনন্য৷ কালজয়ী এই অভিনেত্রী একের পর এক ছবিতে অভিনয় করে জয় করতে থাকেন দর্শকদের হৃদয়৷ বড়দের ছবিতে নিজের প্রথম সাফল্য তার কাছে আসে মাত্র ১৬ বছর বয়সেই। তখনকার তুমুল জনপ্রিয় অভিনেতা মন্টগোমারি ক্লিফের বিপরীতে ‘এ প্লেস ইন দ্য সান’ ছবিতে অল্প বয়সেই বিগড়ে যাওয়া এক তরুণী অ্যাঞ্জেলা ভিকারসের চরিত্রটি সেসময় তাকে কেবল জনপ্রিয়তাই এনে দেয়নি, সমালোচকদের প্রশংসাও পাইয়ে দেয়। নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং বক্স অফিসের মতো বড় বড় পত্রিকায় সমালোচকেরা রায় দেন, ‘এই ছবির জন্য মিস টেইলর অস্কার দাবি করতেই পারেন।’

‘আ প্লেস ইন দ্য সান’-এর জন্য না হলেও, সেরা অভিনেত্রীর অস্কার তার হাতে ধরা দিয়েছে দুই দুইবার। আর নিজের অতলান্তিক নীল চোখ আর অস্বাভাবিক রূপের জাদুতে তো তিনি সাধারণ মানুষের হৃদয় জয় করেছেন বহু আগেই। ‘দ্য গার্ল হু হ্যাড এভরিথিং, রেইনট্রি কাউন্টি, ক্যাট অন হট টিন রুফ, সাডেনলি লাস্ট সামার, বাটারফ্লাইড ৮, হুজ এ্যাফরেইড অফ ভার্জিনিয়া উলফ, ক্লিওপেট্রা, দ্য ভিআইপিজ, রিফ্লেকশনস ইন আ গোল্ডেন আই, সিক্রেট সেরিমনি’-এর মতো একইসঙ্গে সমালোচক এবং দর্শকনন্দিত বহু ছবিতে অভিনয় করে হলিউডের আকাশে মহাতারকার জায়গা করে নেন লিজ। ‘ক্যাট অন হট টিন রুফ’ (১৯৫৮), ‘সাডেনলি লাস্ট সামার’ (১৯৫৯) এবং ‘বাটারফ্লাইড ৮’ (১৯৬০) ছবিগুলোর জন্য পরপর তিন বছর অস্কার মনোনয়নের রেকর্ড গড়েন লিজ। অবশেষে সেরা অভিনেত্রী হিসেবে অস্কার তিনি ঝুলিতে ভরেন ‘বাটারফা¬ইড ৮’ ছবিতে তার তখনকার স্বামী এডি ফিশারের বিপরীতে দুর্দান্ত অভিনয় করে। ১৯৬৭ সালে ‘হুজ অ্যাফরেইড অফ ভার্জিনিয়া উলফ’ ছবিতে মাদকাসক্ত জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণ এক গৃহবধুর চরিত্রে অভিনয় করেও অস্কার জিতেছিলেন তিনি। আর সম্মানসূচক ৩য় অস্কার তিনি জিতেছিলেন ১৯৯৩ সালে। জনহিতকর কাজে বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবেই তাকে এই বিশেষ পুরস্কার দেয়া হয়েছিলো। এভাবেই লিজ তার অভিনয় জীবনের দীর্ঘ ৬৫ বছর এভাবেই চলচ্চিত্র জগতকে মাতিয়ে গেছেন। ইংল্যান্ডে জন্ম নেয়া ব্রিটিশ-মার্কিন এই অভিনেত্রী তাঁর অভিনয় প্রতিভা ও সৌন্দর্যের জন্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তাঁকে বলা হয় জীবনের থেকেও বড় তারকা। অ্যামেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউট টেইলরকে তাঁদের নারী কিংবদন্তি তালিকায় ৭ম স্থানে রেখেছে। দু'বার অস্কার পুরস্কায় জয়ী এলিজাবেথ টেইলর অভিনয় করেছেন ৫০টিরও বেশি ছবিতে৷ ‘বাটার ফিল্ড এইট' এবং ‘হুইজ অ্যাফরেইড অব ভার্জিনিয়া উলফ' ছবিতে অনবদ্য অভিনয় করে তিনি জিতে নিয়েছিলেন অস্কার পুরস্কার৷ ১৯৬৩ সালে ক্লিওপেট্রা'র চরিত্রে অভিনয় করে পেয়েছিলেন ব্যাপক জনপ্রিয়তা৷ লিজ টেইলর অভিনীত ১০টি উল্লেখযোগ্য জনপ্রিয় ছবিঃ

১। কিওপেট্রা (১৯৬৩)
ইয়োসেফ এল মানকিয়েভিচ পরিচালিত ইতিহাসভিত্তিক এ ছবিতে অভিনয় করেন এলিজাবেথ এক মিলিয়ন ডলার পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন। রেকর্ড করেছিলেন হলিউডের ইতিহাসে।
বিখ্যাত ফারাও রানী ‘কিওপেট্রা’র চরিত্রে অভিনয় করে তিনি মূর্ত করেছিলেন কয়েক হাজার বছরের পুরোনো এ রানীর অপরূপ রূপ।
এলিজাবেথের জীবনে ছবিটির আরেকটি গুরুত্ব আছে। এ ছবিতে অভিনয় করতে গিয়ে রিচার্ড বাটনের সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে উঠে।
২। ন্যাশনাল ভেলভেট (১৯৪৪)
কারেন্স ব্রাউন পরিচালিত এ ছবিতে ভেলভেট ব্রাউনের চরিত্রে অভিনয় করে এলিজাবেথ মাত্র ১২ বছর বয়সে চিত্রজগতে সুদৃঢ় করেন নিজের নাম। মিকি রুনি ও ডোনাল্ড ক্রিসপের সঙ্গে অভিনয় করে তরুণ এ অভিনেত্রী মুগ্ধ করেন দর্শকদের। ছবিটি বাণিজ্যিকভাবে সাফল হয়। এ সঙ্গে এলিজাবেথ পেয়ে যান তারকাখ্যাতি।
৩। দ্য লাস্ট টাইম আই স প্যারিস (১৯৫৪)
রির্চাড ব্রুকস পরিচালিত এ রোমান্টিক ছবিটির প্রেক্ষাপট ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী ইউরোপ। এ ছবিতে ফন জনসনের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন এলিজাবেথ টেইলর। তখন হলিউডজুড়ে চলছিল এ নায়িকার জয়জয়কার।
৪। জায়েন্ট (১৯৫৬)
এ ছবিটি তৈরি হয়েছে টেক্সাসের রেঞ্চারদের বর্ণাঢ্য জীবনকাহিনী নিয়ে। প্রযোজনা ও পরিচালনা করেন জর্জ স্টিভেন্স। এ ছবিতে এলিজাবেথ অভিনয় করেছেন রক হাডসন ও জেমস ডিন। এ ছবি থেকে স্টিভেন্স আয় করেছিলেন ছবির খরচের প্রায় পাঁচগুণ।
৫। রেইটট্রি কান্ট্রি (১৯৫৭)
১৮৬০ দশকে আমেরিকার গৃহযুদ্ধের ওপর নির্মিত এ ছবিটি টেইলরের জীবনে এনে দেয় প্রথম অস্কার মনোনয়নের স্বাদ। এদুয়ার্দ দিমিত্রিক পরিচালিত এ ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন মন্টগোমারি কিফট, ইভা মারি সেন্ট এবং লি মারভিন।
৬। ক্যাট অন অ্যা হট টিন রুফ (১৯৫৮)
হাইস্কুলের সোনালি দিনগুলো ফিরে পেতে চায় মাতাল ব্রিক পলিট। তার জীবনের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে রির্চাড ব্রুকস তৈরি করেছেন এ ছবিটি।
যদিও নাট্যকার টেনেসি উইলিয়ামস তার পুলিৎজার বিজয়ী নাটকটির বড় পর্দার সংস্করণটি পছন্দ করেননি তবুও এ ছবিতে অভিনয়ের জন্য এলিজাবেথ টেইলর ও পল নিউম্যান অস্কার মনোনয়ন পেয়েছিলেন।
৭। সাডেনলি, লাস্ট সামার (১৯৫৯)
টেনেসি উইলিয়ামসের এ নাটকের বড় পর্দার সংস্করণও টেইলরকে এনে দেয় অস্কারে সেরা অভিনেত্রীর মনোনয়ন। ১৯৩৭ সালের একটি কাহিনীর ওপর ভিত্তি করে ছবিটি তৈরি করেন ইয়োসেফ এল মানকিয়েভিচ।
উল্লেখ্য, টেইলরে বহুল আলোচিত সাত স্বামীর অন্যতম ইডি ফিশার ও অভিনয় করেছিলেন এ ছবিতে।
৮। বাটারফিল্ড এইট (১৯৬০)
এ ছবির গল্পে আছে নিউইয়র্কের এক যৌনকর্মী প্রেমে পড়েন বিবাহিত এক পুরুষের। ফলে দুঃখ নেমে আসে মেয়েটির জীবনে। জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠে তার দৈনন্দি জীবন।
দানিয়েল মান পরিচালিত এ ছবিতে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেত্রী হিসেবে এলিজাবেথ অস্কার পান ১৯৬১ সালে। এ ছবিতেও টেইলরের স্বামী ইডি ফিশার অভিনয় করেছিলেন। তবে এলিজাবেথ ও ইডি দু’জনেই নাকি ছবিটি অপছন্দ করেছিলেন।
৯। দেয়ারস ওয়ান বর্ন এভরি মিনিট (১৯৪২)
বহুল আলোচিত এ ছবির মাধ্যমে অভিনয় শুরু করেন এলিজাবেথ টেইলর। ডেভিন গ্র্যাডি পরিচালিত এ হাস্যরসাত্মক ছবিতে এলিজাবেথ যে অভিনয় করেছিলেন তাতে খুশি হতে পারেননি ছবিটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সাল পিকচারস। তারা বলেছিল, মেয়েটি গাইতে পারে না, নাচতেও পারে না, এমনকি অভিনয়ও করতে পারে না। এ পরিবারের সঙ্গে পরিচিত হয়ে ভুলই হয়েছে।
তবে এলিজাবেথের জীবনের প্রথম ছবি হিসেবে ইতিহাসে সোনার হরফে লেখা হয়ে গেছে ‘দেয়ারস ওয়ান বর্ন এভরি মিনিট’ এর নাম।
১০। হুজ অ্যাফ্রেড অব ভার্জিনিয়া ওলফ? (১৯৬৬)
নিউ ইংল্যান্ডের একটি ছোট কলেজের প্রেক্ষাপট নিয়ে নির্মিত হয় এ ছবি। ইতিহাসের এক অধ্যাপক জর্জ ও কলেজ প্রেসিডেন্টের কন্যা মার্থার সম্পর্কই হচ্ছে এ ছবির মূল দৃশ্যপট।
মাইক নিকোলস পরিচালিত এ ছবিতে অভিনয়ের জন্য এলিজাবেথ দ্বিতীয়বার সেরা অভিনেত্রী হিসেবে ১৯৬৭ সালে অস্কারে ভূষিত হন। এ ছবিতে এলিজাবেথের অন্যতম স্বামী রিচার্ড বার্টন জর্জের চরিত্রে অভিনয় করেন। এলিজাবেথ করেন মার্থার চরিত্রে অভিনয়।


সৌন্দর্য ও অভিনয়ের পাশাপাশি লিজ টেলর তাঁর হলিউড জীবনপদ্ধতির জন্যও বিখ্যাত। টেইলর তাঁর জীবনে সাতজন পুরুষকে মোট আট বার বিয়ে করেছিলেন। তারা হলেনঃ
১। কনরাড "নিকি" হিলটন (৬ মে, ১৯৫০ - ২৯ জানুয়ারি, ১৯৫১) (বিচ্ছেদকৃত)
২। মাইকেল ওয়াইল্ডিং (২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ - ২৬ জানুয়ারি, ১৯৫৭) (বিচ্ছেদকৃত)
৩। মাইকেল টড (২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৭ - ২২ মার্চ, ১৯৫৮) (বৈধব্যপ্রাপ্ত)
৪। এডি ফিশার (১২ মে, ১৯৫৯ - ৬ মার্চ, ১৯৬৪) (বিচ্ছেদকৃত)

(রিচার্ড বার্টন ও লিজ টেইলর)
৫। (১৫ মার্চ ১৯৬৪ - ২৬ জুন ১৯৭৪) (বিচ্ছেদকৃত)
৬। রিচার্ড বার্টন (পুনরায়) (১০ অক্টোবর, ১৯৭৫ - ২৯ জুলাই, ১৯৭৬) (বিচ্ছেদকৃত)
৭। জন ওয়ার্নার (৪ ডিসেম্বর, ১৯৭৬ - ৭ নভেম্বর, ১৯৮২) (বিচ্ছেদকৃত)
৮। ল্যারি ফোর্টনেস্কি (৬ অক্টোবর, ১৯৯১ - ৩১ অক্টোবর, ১৯৯৬) (বিচ্ছেদকৃত)

টেইলর কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। ২০০৪ সালে ঘোষণা করা হয় যে, তিনি হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছেন এবং ২০০৯ সালে তাঁকে কার্ডিয়াক সার্জারীর মাধ্যমে ভাল্ব প্রতিস্থাপন করা হয়। ফেব্রুয়ারী, ২০১১ সালে হৃদযন্ত্রের সমস্যার দরুণ উন্নত চিকিৎসার জন্য সিডারস-সিনাই মেডিক্যাল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। মার্চ ২৩, ২০১১ সালে টেলর চার সন্তানকে রেখে ক্যালিফোর্নিয়ার লস এঞ্জেলসের সিডারস-সিনাই মেডিক্যাল সেন্টারে ৭৯ বছর বয়সে প্রয়াত হন। ৩ বারের অস্কার জয়ী, ভুবনভোলানো রূপের অধিকারিণী, ব্যক্তিজীবনের রোমান্সকে কিংবদন্তীতুল্য করে তোলা এই আমৃত্যু মানবসেবী হলিউডি তারকা অনন্তকাল ধরে বেঁচে থাকবেন তাঁর ভক্তের মনে। লিজ টেইলর তাই এমনই এক অমর নক্ষত্রের নাম যার দ্যুতি কখনোই ম্লান হবে না। সৌন্দর্য, অভিনয় আর বিয়ের জন্য স্মরণীয় থাকবেন লিজ টেইলর। অস্কার জয়ী, ভুবনভোলানো রূপের অধিকারিণী কিংবদন্তি হলিউড তারাকা লিজ টেইলরের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ৭:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: খুব সুন্দরো মহিলা ছিলেন।

২৯ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
জি এককালের সুন্দরী নায়িকা
অভিনয় প্রতিভা ও সৌন্দর্যের জন্য
তিনি বিশ্ব বিখ্যাত ছিলেন।

২| ২৩ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ৮:৪৬

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: মানুষের সৌন্দর্য চিরস্থায়ী নয়। জীবনের শেষ পর্যায়ে অহংকারীরা খুব ভালোভাবেই বুঝতে আরে।

২৯ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ আপনাকে
সত্য কথনের জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.