নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতীয় মুসলিমদের আধুনিক শিক্ষার অগ্রদূত স্যার সৈয়দ আহমেদ খাঁনের ১২১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি

২৭ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩১


ভারতের একজন বিখ্যাত শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিবিদ স্যার সৈয়দ আহমদ খান বাহাদুর। যিনি ভারতের মুসলিমদের আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার ক্ষেত্রে অগ্রদূতের ভূমিকা পালন করেন। তার চিন্তাধারা ও কাজকর্ম সেখানকার মুসলিমদের মধ্যে একটি নতুন চেতনার জন্ম দেয়, তার প্রভাবে প্রভাবান্বিত এই মুসলিম বুদ্ধিজীবীরাই পরবর্তীতে আলিগড় আন্দোলনের সূচনা করেন যার উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় রাজনীতিতে মুসলিমদের অধিকার নিশ্চিত করা। তিনি এই কাজের জন্যই মোহামেডান অ্যাংলো-ওরিয়েন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন যা পরবর্তীতে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিতি। রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে আলিগড় আন্দোলনের প্রভাবে বলা যায় যে, আলিগড় আন্দোলন মুসলমানদের মধ্যে রাজনৈতিক চেতনার উন্মেষ ঘটাতে সাহায্য করে। মুসলমান সমাজের সংস্কার সাধনে স্যার সৈয়দ আহমদের অবদান স্মরনীয়। এক্ষেত্রে তিনি রাজা রামমোহন রায়ের সমগোত্রীয় ছিলেন। রাজা রামমোহন রায়ের মতো স্যার সৈয়দ আহমেদ খাঁও মুসলিম সমাজে বহু বিবাহ, বাল্যবিবাহ ইত্যাদি তুলে দেওয়ার পক্ষে মত প্রকাশ করেছিলেন। আলিগড় আন্দোলনের অবদান প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার মন্তব্য করে বলেছেন যে, ‘উনবিংশ শতাব্দীর নবজাগরণ ও জাতীয়তাবাদী আন্দোলন হিন্দুদের কাছে যা ছিল, আলিগড় আন্দোলনও ছিল মুসলিমদের কাছে ঠিক তাই।’আলিগড় আন্দোলনের প্রবর্তক স্যার সৈয়দ আহমেদ খাঁনের আজ ১২১তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৮৯৮ সালের আজকের দিনি তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ভারতীয় মুসলিমদের আধুনিক শিক্ষার অগ্রদূত স্যার সৈয়দ আহমেদ খাঁনের মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

স্যার সৈয়দ আহমদ খান ১৮১৭ সালের ১৭ অক্টোবর ভারতের দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্মনাম সৈয়দ আহমদ তাকভি তবে স্যার সৈয়দ আহমদ নামে সমধিক পরিচিত। তার চিন্তাধারা ও কাজকর্ম ভারতের মুসলিমদের মধ্যে একটি নতুন চেতনার জন্ম দিয়েছিল। ১৮৬৪ সালে গাজীপুরে একটি ইংরেজি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। ইংরেজি ভাষায় লেখা মূল্যবান কিছু কিছু বই উর্দু ভাষায় অনুবাদ করে তা মুসলমানদের মধ্যে বিতরণ করার উদ্দেশ্যে বিজ্ঞান সমিতি নামে একটি সংস্থার প্রতিষ্ঠা, মুসলমানদের মন থেকে পাশ্চাত্যের ভয় ভীতি দূর করার জন্য ও মুসলমানদের মধ্যে উদারনৈতিক ভাবধারা প্রচারের জন্য ‘তাহজিব-উল-আখলাক’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে কমিটি ফর অ্যাডভান্সমেন্ট অফ লার্নিং নামে একটি সংস্থারও তিনি প্রতিষ্ঠা করেন। অক্সফোর্ড ও ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুকরণে ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে মে মাসে আলিগড়ে তিনি মোহামেডান অ্যাংলো ওরিয়েন্টাল কলেজের প্রতিষ্ঠা করেন। এই কলেজটিই পরে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিত হয়। ইংরেজ শিক্ষাবিদদের তত্ত্বাবধানে এই কলেজে কলা ও বিজ্ঞান শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। মুসলমান ছাত্রদের মধ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ও প্রগতিমূলক মনোভাবের উন্মেষ ঘটানোর ক্ষেত্রে এই কলেজের অবদান অস্বীকার করা যায় না। আলিগড় আন্দোলন ভারতীয় মুসলমানদের মধ্যে যুক্তিবাদের প্রসার ঘটিয়ে তাদের ধর্মীয় ও সামাজিক গোঁড়ামি পরিত্যাগেও সাহায্য করেছিল। এই আন্দোলন মুসলিম সমাজে নারীদের মর্যাদা বৃদ্ধি, নারী শিক্ষা প্রসারের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেছিল। মুসলমান সমাজের সংস্কার সাধনে স্যার সৈয়দ আহমদের অবদান স্মরনীয়। এক্ষেত্রে তিনি রাজা রামমোহন রায়ের সমগোত্রীয় ছিলেন। রাজা রামমোহন রায়ের মতো স্যার সৈয়দ আহমেদ খান মুসলিম সমাজে বহু বিবাহ, বাল্যবিবাহ ইত্যাদি তুলে দেয়ার পক্ষে মত প্রকাশ করেছিলেন।

রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে আলিগড় আন্দোলনের প্রভাবে বলা যায় যে, আলিগড় আন্দোলন মুসলমানদের মধ্যে রাজনৈতিক চেতনার উন্মেষ ঘটাতে সাহায্য করে। মুসলমান সমাজের সংস্কার সাধনে স্যার সৈয়দ আহমদের অবদান স্মরনীয়। এক্ষেত্রে তিনি রাজা রামমোহন রায়ের সমগোত্রীয় ছিলেন। রাজা রামমোহন রায়ের মতো স্যার সৈয়দ আহমেদ খাঁও মুসলিম সমাজে বহু বিবাহ, বাল্যবিবাহ ইত্যাদি তুলে দেওয়ার পক্ষে মত প্রকাশ করেছিলেন। আলিগড় আন্দোলনের অবদান প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার মন্তব্য করে বলেছেন যে, ‘উনবিংশ শতাব্দীর নবজাগরণ ও জাতীয়তাবাদী আন্দোলন হিন্দুদের কাছে যা ছিল, আলিগড় আন্দোলনও ছিল মুসলিমদের কাছে ঠিক তাই।’উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পর সৈয়দ আহমদ খানের নেতৃত্বে আলীগড় আন্দোলনের মাধ্যমে উর্দু আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলনের মাধ্যমে ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক পরিচয় বহনকারী ভাষা হিসেবে উর্দুকে ব্যবহারের প্রস্তাব করা হয়। উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার প্রতিবাদে ১৯৫২ সালে পূর্ব বাংলায় বাংলা ভাষা আন্দোলন সংঘটিত হয়। উত্তর প্রদেশ ও বিহারের হিন্দু সম্প্রদায়ের দাবি এবং অনুরোধে হিন্দিকে দ্বিতীয় সরকারি ভাষা হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়। মুসলিম রাজনীতিবিদ স্যার সৈয়দ-এর বলিষ্ঠ প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠেন। তিনি মুসলমানদের জন্য উর্দুকে আন্তর্জাতিক মিশ্রিত ভাষা হিসেবে উল্লেখ করেন। স্যার সৈয়দ আহমদ খান হিন্দির জন্য হিন্দুদের এই দাবি, ভারতের দীর্ঘ সময়ের মুসলিম সংস্কৃতির ক্ষয় হিসেবে মনে করতেন। অপরদিকে হিন্দি ভাষার স্বীকৃতির দাবিতে সমগ্র অঞ্চলজুড়ে হিন্দু সম্প্রদায় একত্রিত হতে থাকে এবং তারা সফল হয়। ফলে স্যার সৈয়দ উর্দুকে মুসলিম ঐতিহ্য এবং মুসলমান বুদ্ধিজীবী এবং রাজনীতিকদের ভাষা হিসেবে প্রচার শুরু করেন। তাঁর রাজনৈতিক কর্মকা- এবং শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে সমস্ত পদক্ষেপ ছিল মুসলিম স্বার্থ কেন্দ্রীক। সর্বক্ষেত্রে স্যার সৈয়দের মুসলিম স্বার্থ রক্ষায় একাগ্রতার জন্য অনেকে মনে করতেন এটা স্যার সৈয়দ আহমদ কর্তৃক মুসলিম কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা।ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলমানদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় স্যার সৈয়দ আহমদ খানের কৃতিত্ব অসামান্য। মুসলমানদের স্বার্থরক্ষায় তিনি ছিলেন আপসহীন। ১৮৯৮ সালের ২৭মার্চ তিনি মৃত্যুবরণ করেন। আজ স্যার সৈয়দ আহমেদ খাঁনের আজ ১২১তম মৃত্যুবার্ষিকী। ভারতীয় মুসলিমদের আধুনিক শিক্ষার অগ্রদূত স্যার সৈয়দ আহমেদ খাঁনের মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫১

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় নুরু ভাই,

আমি যেটুকু জানি উনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে উত্তরপ্রদেশে আলীগড়কে কেন্দ্র করে মুসলিম সম্প্রদায়ের উন্নতির জন্য স্যার সৈয়দ আহমেদ খান যে প্রাগ্রসর আন্দোলন শুরু করেছিলেন তা আলীগড় আন্দোলন নামে খ্যাত। উপমহাদেশে রাজা রামমোহন রায় যে আধুনিকতার বার্তা প্রজ্বলিত করেছিলেন যার পরিপ্রেক্ষিতে রবীন্দ্রনাথের কথায় 'ভারত পথিক' আখ্যা পেয়েছিলেন ,সে দিক থেকে স্যার সৈয়দ আহমেদ ছিলেন উপমহাদেশের মুসলিমদের আধুনিক শিক্ষার পথ প্রদর্শক । দ্বিতীয়তঃ অনুভূতি শতকের দ্বিতীয়ার্ধে তখনো কিন্তু ব্রিটিশ শাসন বর্তমান ছিল। কাজেই স্যার সৈয়দ আহমেদ কে ভারতীয় মুসলিমদের আধুনিক শিক্ষার অগ্রদূত বলা টা বর্তমান ভৌগোলিক সীমার দাঁড়িয়ে খুব লোকালাইডজ বলে মনে হচ্ছে।
পাশাপাশি আপনি কি আমাকে ভুলে গেছেন? আজ হতে বহু বর্ষ আগে আপনার পদধূলি পেয়েছিলাম। এই বান্দা আপনাকে না পেয়ে যন্ত্রণাক্লিষ্ট হয়ে আছে।

শুভকামনা ও ভালোবাসা জানবেন।



২৭ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ৮:৫৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সময় স্বল্পতার কারনে আমি
আপনাদের মন্তব্যের যথার্থ
প্রতিউত্তর না করার জন্য
আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
আশ করি অদূর ভব্ষ্যিতে
আবার সময় দিতে পারবো।
ক্ষমা করবেন আমার অনিচ্ছাকৃত
ত্রুটির জন্য।

২| ২৭ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ৮:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: আলীগড়ে আমার পড়ার ইচ্ছা ছিল। হয়নি।

২৯ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১২:৩৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আশা থাকলে এখনো হতে পারে।

৩| ২৭ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ৮:২৪

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: স্যার সৈয়দ আহমেদ খাঁনের ১২১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাই।

২৯ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১২:৩৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ মাহমুদুর রহমান ভাই

৪| ২৭ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ৮:৫৫

পবন সরকার বলেছেন: নুরু ভাই কেমন আছেন?

২৭ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ৮:৫৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
খুব ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে
প্রবাহিত হচ্ছি উল্টা স্রোতে।

৫| ২৮ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১২:৪৯

তাজেরুল ইসলাম স্বাধীন বলেছেন: গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি এবং কৃতজ্ঞতা রইল স্যার সৈয়দ আহমেদ খাঁনের ১২১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে।

২৯ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১২:৩৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ স্বাধীন ভাই
ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.