নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

নাট্যকার, ভ্রমণ কাহিনী লেখক ও তথ্যচিত্র নির্মাতা শাকুর মজিদের ৫৪তম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা

২২ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৩১


বাংলাদেশী স্থপতি, নাট্যকার, তথ্যচিত্র নির্মাতা ও চিত্রগ্রাহক শাকুর মজিদ। মূলত তিনি একজন নাট্যকার। কিন্তু এছাড়াও তার আরো একটি বড় পরিচয় ভ্রমণ কাহিনী রচয়িতা হিসেবে। ভ্রমণের ওপর টেলিভিশনের জন্যে তিনি বহু তথ্যচিত্রও বানিয়েছেন। কবিতা এবং গল্পও লিখেন তিনি। আর পেশায় একজন স্থপতি। সিলেট বেতারে রেডিও নাটক দিয়ে তার নাট্যকার জীবনের শুরু। মাত্র ১৯ বছর বয়সে সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় তিনি লিখেছিলেন ‘যে যাহা করোরে বান্দা আপনার লাগিয়া।’ তখন থেকেই তার নাম ডাকের শুরু। এরপর আর থেমে থাকতে হয়নি তাকে। টেলিভিশন নাটক বানিয়ে চলেছেন একের পর এক। টেলিফিল্মও বানিয়েছেন কয়েকটি। লন্ডনী কইন্যা নামে একটি টেলিভিশন নাটক লিখে তিনি সিলেটে ও লন্ডনে নন্দিত ও নিন্দিত দুটোই হয়েছেন। মঞ্চের জন্যে প্রথম নাটক লিখেছেন ‘মহাজনের নাও’। এছাড়া মঞ্চনাটকের আলোকচিত্র নিয়ে ২০০৩ সালে প্রকাশ হয়েছে ফটোগ্রাফি অ্যালবাম ‘রিদম অন দ্যা স্টেজ’। তাঁর অন্য দুটি প্রকাশিত গ্রন্থ ‘রীতা ও দুঃসময়ের গল্পগুলো’ এবং আত্মজৈবনিক উপাখ্যান ‘ক্লাস সেভেন ১৯৭৮’। গীতিকবি ও গায়ক শাহ আব্দুল করিমকে নিয়ে তার উল্লেখযোগ্য কাজ রয়েছে। তাকে নিয়ে লিখেছেন ‘ভাটির পুরুষ’। পরে একই নামের প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন। শাহ আব্দুল করিমের জীবনী অবলম্বনে লিখেছেন মঞ্চনাটক ‘মহাজনের নাও’। সুবচন নাট্য সংসদ নাটকটি মঞ্চায়িত করে। ঔপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে ছিল তার সখ্য। যা তার ও হুমায়ূনের বিভিন্ন লেখায় উঠে এসেছে। সে সব স্মৃতি নিয়ে লিখেছেন ‘নুহাশ পল্লীর এইসব দিনরাত্রি’ ও ‘হুমায়ূন আহমেদ : যে ছিল এক মুগ্ধকর’ নামের দুটি বই। ভ্রমণকাহিনী ও জীবনী সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি ২০১৮ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। আজ এই কৃতি নাট্যকারের ৫৪তম জন্মবার্ষিকী। তথ্যচিত্র নির্মাতা শাকুর মজিদের জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।

শাকুর মজিদ ১৯৬৫ সালের ২২ই নভেম্বর তৎকালীন সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আবদুল মজিদ ও মাতা ফরিদা খাতুন। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিনি সকলের বড়। তার ২০ বছর বয়সে তার পিতা মারা যান। শাকুর মজিদ মাথিউরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করেন। পরে তিনি ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ থেকে ১৯৮২ সালে মাধ্যমিক ও ১৯৮৪ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। ১৯৯৩ সালে তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থাপত্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ছাত্রজীবনে তিনি কয়েকটি সংবাদপত্রে সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন। শান্তনু আশকার ছদ্মনামে কবিতা লিখে সাহিত্য জগতে শাকুর মজিদের আত্মপ্রকাশ। ১৯৮৫ সালের ২০ ডিসেম্বর সিলেট বেতারে আঞ্চলিক ভাষায় রচিত নাটক ‘যে যাহা করো রে বান্দা আপনার লাগিয়া’ ও ১৯৮৬ সালের জুন মাসে ‘হিসাব বুঝে পেলাম’ প্রচারের মধ্য দিয়ে নাট্যকার হিসেবে শ্রোতার মনোযোগ আকর্ষণ করেন তিনি। টেলিভিশন নাটকের পাশাপাশি তিনি মঞ্চনাটকও লিখেছেন। ১৯৯২ সালে তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগ ফটোগ্রাফিক সোসাইটির সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯৩ সালে তিনি আরও দুজন স্থপতিকে নিয়ে ট্রায়াঙ্গেল কনসাল্ট্যান্ট নামে একটি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন। ফার্মটি এখনো বিদ্যমান রয়েছে। এছাড়া তিনি ট্রাই-স্পেস লিমিটেড, ব্রিটানিয়া প্রপার্টিজ লিমিটেড, ভিউ ফাইন্ডারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ২০০৪ সাল থেকে আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। শ্রেষ্ঠ নাট্যকার ও পরিচালক হিসেবে এ পর্যন্ত ২১টি পুরস্কার পেয়েছেন শাকুর মজিদ। যথাঃ
১৯৯০ সালে ইউনিসেফ আয়োজিত মেয়ে শিশু বিষয়ক আলোকচিত্র প্রতিযোগিতায় ও খেলাঘর আয়োজিত বাংলাদেশের শিশু বিষয়ক আলোকচিত্র পুরস্কার।
১৯৯১ সালে বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক সোসাইটির আলোকচিত্র পুরস্কার ও নিউইয়র্কের লেন্সভিউ ফটোগ্রাফিক সোসাইটির পুরস্কার।
২০০৬ সালে "পৃথিবীর পথে পথে"-এর জন্য কলকাতার রেনেসাঁ বাংলা পদক।
২০১৬ সালে ‘ফেরাউনের গ্রাম’ শীর্ষক ভ্রমণকাহিনীর জন্য আইএফআইসি ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার
২০১৭ সালে ভ্রমন সাহিত্যে সমরেশ বসু সাহিত্য স্মৃতি পদক ২০১৭
২০১ সালে সিলেট শিল্পকলা একাডেমি পদক (চলচ্চিত্র) ২০১৬
২০১৭ সালে ফেরাউনের গ্রাম বইয়ের জন্য "আইএফআইসি ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার ২০১৬"
২০১৮ সালে ভ্রমণকাহিনী ও জীবনী সাহিত্যের জন্য "বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০১৭" লাভ করেন।
এ পর্যন্ত প্রায় ত্রিশটি দেশ ভ্রমণ করেছেন। এসব ভ্রমণ- অভিজ্ঞতাকে প্রামাণ্যরূপ দিতে ‘পৃথিবীর পথে পথে’, ‘ভুবন ভ্রমিয়া শেষে’, ‘ইতিহাসের শহর’, ‘দূরদেশ’, ‘দূরে কোথাও’, ‘মসজিদের ইতিকথা’, ‘আমাদের এই বসুন্ধরা, প্রভৃতি শিরোনামে বিভিন্ন টেলিভিশন থেকে প্রায় দেড়শটির মতো প্রামাণ্যচিত্র প্রচার হয়েছে, প্রকাশ হয়েছে বারোটি ভ্রমণকাহিনী।

ব্যাক্তিগত জীবনে শাকুর মজিদ ডঃ হোসনে আরা জলির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন ১৯৯৩ সালে। তাদের দুই পুত্র, ইশমাম ইনতিসার মজিদ ও ইবন ইবতেশাম মজিদ। তারা ঢাকায় বসবাস করেন। নাট্যকার, ভ্রমণ কাহিনী লেখক ও তথ্যচিত্র নির্মাতা শাকুর মজিদের ৫৪তম জন্মবার্ষিকী আজ। বাংলাদেশী স্থপতি, নাট্যকার, তথ্যচিত্র নির্মাতা ও চিত্রগ্রাহক শাকুর মজিদের জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।

নুর মোহাম্মদ নুরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:০৪

শাইয়্যানের টিউশন (Shaiyan\'s Tuition) বলেছেন: নাট্যকার শাকুর মজিদের লেখা হাসন রাজা'র জীবনী ভিত্তিক নাটকটি দেখার পর থেকে আমি উনার ভক্ত। দারুণ একটি নাটক যা আমি সিলেট অডিটোরিয়ামে দেখেছিলাম। এখনো ভুলতে পারিনি।

২| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:১১

রাজীব নুর বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম।

৩| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৩১

খায়রুল আহসান বলেছেন: ওনার সাথে ব্যক্তিগত জানা পরিচয় আছে। তবুও আপনাও দেয়া তথ্যগুলো পড়ে ভাল লাগলো।
উনি নিঃসন্দেহে একজন মেধাবী লোক, বহুমুখী তার প্রতিভা। সৎসাহসী, উচিত কথা বলতে ভয় পান না। আচারে আচরণে অত্যন্ত সজ্জন।

৪| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ২:২৬

রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: লেখার সাথে আগেই পরিচিত। এখন দেখছি উনি একজন কর্মী মৌমাছিও বটে। খেটে খাওয়া মানুষ। আমাদেরই একজন। ঝোলা কাঁধে বেকার ঘুরে বেড়ানো আয়েশী সাহিত্যিক নন। বেশ লাগলো। দীর্ঘ জীবন কামনা করছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.