নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

আধুনিক মালয়েশিয়ার প্রধান রূপকার ডাঃ মাহাথির মোহাম্মদের ৯৫তম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা

১০ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:১৬


মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আধুনিক মালয়েশিয়ার স্থপতি মাহাথির বিন মোহাম্মদ। ১৯৮১ সালে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন ডাঃ মাহাথির মোহাম্মদে। তার নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন দল পর পর পাঁচবার সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। তিনি এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ২০০৩ সালের ৩০শে অক্টোবর তিনি স্বেচ্ছায় প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেন। অবসর গ্রহণের দীর্ঘ পনের বছর পর ৯২ বছর বয়েসে প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের ব্যাপক দুর্নীতি সংশ্লিষ্টতার কারণে মাহাথির মোহাম্মদ আবারও আসেন রাজনীতিতে। ২০১৮ সালের ৯ মে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনে জয়ের পরদিন ১০ মে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তিনি। মাহাথিরের বয়স যখন কুড়ি বছরের একটু বেশি তখন তিনি রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। সহপাঠীদের একত্র করে তিনি গোপনে 'মালয়ান ইউনিয়ন' প্রস্তাবের বিরুদ্ধচারণ শুরু করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত জাপানীরা চলে যাবার পূর্বে তৎকালীন মালয়েশিয়াকে তারা থাই সরকারের শাসনাধীনে হস্তান্তর করে। পরবর্তীতে ব্রিটিশরা আবার ফিরে আসে এবং 'মালয়ান ইউনিয়ন' প্রতিষ্ঠা করে। মালয়ান ইউনিয়ন সত্যিকার অর্থে সম্পূর্ণ উপনিবেশ ছিল। মাহাথির ও তার বন্ধুরা তখন রাতের অন্ধকারে সারা শহরে রাজনৈতিক বাণী সম্বলিত পোষ্টার লাগাতেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল সীমিত, 'মালয়ান ইউনিয়ন' প্রস্তাবের সমাপ্তি এবং প্রজাতন্ত্রের মর্যাদা ফিরে পাওয়া। সাইকেল চালিয়ে তারা সমগ্র প্রদেশ ঘুরে ঘুরে জনগনকে ব্রিটিশ বিরোধী হিসেবে সংঘটিত ও সক্রিয় করার কাজে ব্যস্ত থাকতেন। সংগঠনে মাহাথির সাধারণত সম্পাদক বা দ্বিতীয় অবস্থানটা বেছে নিতেন, কারণ দ্বিতীয় ব্যক্তিকেই বেশি সাংগঠনিক কাজ করতে হয় ও অন্য দলগুলোর সাথে যোগাযোগ রাখতে হয়। মাহাথির প্রথম কেদাহ মালয় যুব ইউনিয়ন এবং পরে কেদাহ মালয় ইউনিয়ন নামে রাজনৈতিক দল সংগঠিত করেন যা পরবর্তিতে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল ইউনাইটেড মালয় ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন বা ইউএমএনও (UMNO) হিসেবে পরিচিত হয়। ইসলাম ধর্মের প্রতি বিশ্বাস মাহাথিরের ভিতর আসে তার পরিবার থেকে। তার পরিবার তাকে ইসলামের উপর পূর্ণ বিশ্বাস রাখতে শিক্ষা দেয়, কিন্তু তাদের কোন রূপ গোঁড়ামি ছিল না। ইসলাম সম্পর্কে "এ নিউ ডিল ফর এশিয়া" গ্রন্থে মাহাথির বলেন, " ইসলাম ধর্ম আমাদের জীবনের অংশ। একে পরিত্যাগ করার কোন কারণ নেই। সঠিক ভাবে ব্যাখ্যা করা হলে ধর্ম কখনই অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য বাধা হতে পারে না। ইসলামের শিক্ষা সমসাময়িক সময়ের দৃষ্টিভঙ্গিতে নিতে হবে। ইসলাম শুধু মাত্র সপ্তম শতাব্দীর ধর্ম নয়। ইসলাম অবশ্যই সর্বকালের ধর্ম।" বিশ্বময় আধুনিক মালয়েশিয়ার প্রধান রূপকার হিসেবে পরিচিত ডাঃ মাহাথির মোহাম্মদের আজ ৯৫তম জন্মবার্ষিকী। ১৯২৫ সালের আজকের দিনে তিনি মালয়েশিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর এ্যালোর সেটর-এ জন্মগ্রহণ করেন। আধুনিক মালয়েশিয়ার প্রধান রূপকার ডাঃ মাহাথির মোহাম্মদের জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা

১৯২৫ সালের ১০ জুলাই ব্রিটিশ অধ্যুষিত মালয়ের কেদাহ অঞ্চলের অ্যালোর সেতার নামক স্থানে এক সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে মাহাথির মুহম্মদ জন্মগ্রহণ করেন। চট্টগ্রামের কাপ্তাই রাঙ্গুনিয়ার উপজেলাধীন চন্দ্রঘোনা ও কাপ্তাইগামী সড়কের পূর্বে কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত মরিয়মনগর গ্রামে ছিলো তার দাদার বাড়ি। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে এ গ্রামের এক যুবক মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। তিনি ছিলেন জাহাজের নাবিক। মালয়েশিয়ায় এ্যালোর সেটর গিয়ে এক মালয় রমণীর সঙ্গে সম্পর্কে আবদ্ধ হন। তাদের ঘরেই জন্ম নেন মুহম্মদ ইস্কান্দার। আর এই মুহম্মদ ইস্কান্দারের ছেলে মাহাথির মুহম্মদ। সে হিসেবে চট্টগ্রাম হচ্ছে মাহাথির মুহম্মদ এর পূর্বপুরুষের দেশ এবং সে অনুযায়ী বাংলাদেশী রক্ত তার শরিরে বহমান। মাহাথিরে পিতা মুহম্মদ বিন ইস্কান্দার ছিলেন মালয়ের একটি ইংলিশ স্কুলের ইংরেজির শিক্ষক। মাহাথির শৈশবে প্রথমে মালয় ও পরে শহরের একমাত্র ইংরেজি স্কুলে শিক্ষা লাভ করেন। বাসায় তাদের একজন ধর্ম শিক্ষক ছিলেন যিনি প্রতিদিন বাড়িতে এসে পবিত্র কুরআন শরীফ, ইসলাম ধর্মের উপর বিশ্বাস এবং ধর্মীয় বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান শেখাতেন। তার মা ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত ছিলেন এবং মাহাথিরকে বাসায় পবিত্র কোরআন শিক্ষা দিতেন। তার পরিবার তাকে ইসলামের উপর পূর্ণ বিশ্বাস রাখতে শিক্ষা দেয়, কিন্তু তাদের কোন রূপ গোঁড়ামি ছিল না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪১ সালে জাপান মালয়েশিয়া আক্রমণ করে। তারা ইংরেজি মাধ্যম স্কুল বন্ধ করে দেয় এবং একটি জাপানি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে। মাহাথিরের বয়স তখন ষোল। প্রথমে তিনি জাপানি স্কুলে যেতে চান নি। ঐ সময় মাহাথির একটি স্থানীয় ছোট বাজারে কলা বিক্রি শুরু করেন। কিন্তু পিতার চাপে তিনি পরবর্তীতে ঐ জাপানি স্কুলে ভর্তি হন। মালয়েশিয়ায় জাপানি শাসন প্রায় তিন বছর স্থায়ী ছিল। ১৯৪৭ সালে তিনি সিঙ্গাপুরের কিং এডয়ার্ড মেডিসিন কলেজে ভর্তি হন এবং চিকিৎসা শাস্ত্রে অধ্যয়ন সমাপ্ত করেন। সিঙ্গাপুরে সিথি হাসমার সাথে সাক্ষাত হয়। সিথি হাসমা তখন দ্বিতীয় মালয় মহিলা হিসেবে সিঙ্গাপুরে বৃত্তি নিয়ে একই কলেজে চিকিৎসাশাস্ত্র পড়ছিলেন। পরবর্তীতে মাহাথির ও সিথি হাসমা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

১৯৫৩ সালে তিনি সিঙ্গাপুর থেকে মালয়েশিয়া ফিরে এসে মাহাথির একজন চিকিৎসক হিসেবে চাকুরীতে যোগ দেন। মালয়েশিয়ার স্বাধীনতার ঠিক পূর্বে তিনি সরকারি চাকুরী ছেড়ে নিজ শহর এ্যালোর সেটরে মাহা-ক্লিনিক নামে একটি প্রাইভেট ক্লিনিক শুরু করেন। মাহাথির ধীরে ধীরে ‘ডক্টর এম’ নামে জনপ্রিয়তা লাভ করেন। মাহাথিরের রক্তে মিশে ছিল দেশাত্মবোধ আর রাজনীতি। সাধারণ মানুষের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠা মাহাথির একসময় নিজেকে পুরোপুরি রাজনীতিতে জড়িয়ে ফেলেন। ৩৯ বছর বয়সে ১৯৬৪ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিপুল ভোটে তিনি প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ সালে তিনি দ্বিতীয়বার নির্বাচনে প্রার্থী হন। এরপরও এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সাহায্যে তিনি ডাক্তারি প্রাকটিস অব্যাহত রাখেন। ১৯৭৪ সাল নাগাদ তিনি এই পেশা ধরে রেখেছিলেন। ১৯৭৪ সালে দল নির্বাচনে জয়ী হবার পর তাকে শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়। মাত্র দুই বছর পর মাহাথির ১৯৭৬ এ উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বায়িত্ব গ্রহণ করেন। এতে তিনি সফল হন। উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশের জন্য অনেক কিছু করার পরিকল্পনা থাকলেও মাহাথির স্বাধীনভাবে সেগুলো বাস্তবায়ন করতে সক্ষম ছিলেন না। ১৯৮১ সালের ১৬ জুলাই ৫৫ বছর বয়সে মালয়েশিয়ার ৪র্থ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহন করেন মাহাথির মুহম্মদ। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ‘ডক্টর এম’ তার সকল পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সম্পূর্ণ মুক্ত হন এবং দেশ নিয়ে তাঁর চিন্তাগুলোর বাস্তবে রূপ দেওয়ার কাজ শুরু করেন। জাপানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে তিনি মালয়েশিয়াকে ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি, স্টিল ও গাড়ির উৎপাদক দেশে পরিণত করেন। অথচ এর আগে মালয়েশিয়া শুধু রাবার ও টিন রপ্তানি করত। সেই থেকে টানা ২২ বছর মাহাথির মোহাম্মদ মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এর মধ্যে প্রতিবার তিনি ও তার দল নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করেন। মাহাথির মোহাম্মদ এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘ সময় যাবৎ নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৩ সালের ওআইসি সম্মেলনের সফল সমাপ্তির পর ৩০শে অক্টোবর তিনি স্বেচ্ছায় দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। এবছর ৯ মে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনে জয়ের পরদিন ১০ মে ফের মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন মাহাথির বিন মোহাম্মদ। একইসঙ্গে ৯২ বছর বয়সে বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ইতিহাস গড়লেন মাহাথির। এই নির্বাচনে বেসরকারি ফল অনুযায়ী, ২২২ আসনের মধ্যে মাহাথিরের জোট ১২৬ আসনে এবং দেশটির ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী তারই এক সময়ের অনুসারী নাজিব রাজাকের জোট বারিসান ন্যাশনাল পেয়েছিলো মাত্র ৮৮টি আসন। ৬১ বছর আগে পিতার হাতে যে রাজনৈতিক জোটের উত্থান, পুত্রের হাতে তার সমাপ্তি ঘটল। প্রধানমন্ত্রী হবার পর তিনি সকল বিষয় পুনঃপরীক্ষা করেন। সকল নীতি, পদ্ধতি, সরকার চালাতে প্রাত্যহিক সকল কাজ, আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করা হয়। তার সরকার সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ওয়ার্ক-ফ্লো চার্ট আর অফিস ম্যানুয়েল প্রবর্তন করেন। দেশব্যাপী সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অফিসে উপস্থিতির সময় রেকর্ড করার জন্যে তিনি পাঞ্চকার্ডের প্রচলন করেন। ৯০ এর দশকে যখন বিশ্ব পাঞ্চকার্ডের ব্যবহার নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে ঠিক তখন মালয়েশিয়া তার সফল প্রয়োগকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযের ৪২ তম সমাবর্তনে মাহাথির মোহাম্মদকে সম্মানসূচক ডক্টর অব ল'স ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এছাড়াও বাংলাদেশের আরো একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাহাথির স্কলারশিপও রয়েছে।

(২০০৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর ঢাবির তৎকালীন ভিসি অধ্যাপক এস এম ফায়েজের হাত থেকে ডিগ্রি গ্রহণ করেন ড. মাহাথির মোহাম্মদ)
ব্যক্তিগত জীবনে মাহাথির অত্যন্ত পরিশ্রমী ও শৃঙ্খলাপরায়ণ। তার আমলেই দেশটি অর্থনৈতিক উন্নয়নের শীর্ষে পৌঁছে। ৯২বছর বয়সী জীবন্ত কিংবদন্তি এই মানুষটি শুধু দরিদ্র মালয়েশিয়াকে বিশ্বের ১৪তম অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত করেনি, তৃতীয় বিশ্বের মানুষকে আশার আলো দেখিয়ে আত্মনির্ভরশীল জাতীয় চেতনায় উজ্জীবিত করেছেন। তিনি বলেন, জনগণ আমাকে ভুলে গেলেও আমার কোনো দুঃখ থাকবে না। শেক্সপিয়ারের জুলিয়াস সিজার নাটকের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, মন্দটাই মনে রাখে মানুষ। ভালোটা হাড়গোড়ের সঙ্গে মাটিতে মিশে যায়। জনগণ আমাকে মনে রাখল কি রাখল না তাতে আমার কিছুই যায় আসে না। আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ার অনুকরণীয় রাজনৈতিক নেতায় পরিণত হয়েছেন মাহাথির বিন মোহাম্মদ। দুর্নীতিতে নিমজ্জিত নাজিব রাজাক সরকারের জোটকে ভোটে হারিয়ে তিনি এই গৌরব অর্জন করেন। পশ্চিমা দেশগুলো নিয়ে তার সমালোচনা বহির্বিশ্বেও তাকে আলোচিত করে তোলে। বিশ্ব রাজনীতিতে তাকে কট্টর ইহুদী বিদ্বেষী বলা হয়। বহু সাক্ষাৎকারে মাহাথির বলেছেন আমি গর্বিত যে আমাকে তারা ইহুদী বিদ্বেষী বলেছে। ফিলিস্তিনদের হত্যা দমন পীড়ন আমাকে ইহুদী বিদ্বেষী করেছে। আমি এ নিয়ে গর্ববোধ করি। রাজনীতিতে কদাচিত বিজলি চমকের মতো দেশপ্রেমের বিদ্যুৎ ঝলক দেখা যায়। মাহাথির মোহাম্মদ তেমনি এক বিদ্যুৎ ঝলক।

একজন শক্তিশালী জাতীয়তাবাদী নেতা হিসেবে মালয়বাসীর কাছে মাহাথির শ্রদ্ধার পাত্র। মাহাথির মোহাম্মদ বিশ্বজুড়ে ট্রাম্পিজমের পাগলানাচ আর পুতিনবাদের দম্ভের সামনে একটি গণতান্ত্রিক দৃষ্টান্তই রাখলেন। কোনো এশীয় মুসলিম দেশের নেতা হিসেবে এটা এক বিরাট অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে সব দেশের গণতন্ত্রীদের জন্য। চিকিৎসক থেকে সবচেয়ে বেশি বয়সী প্রধানমন্ত্রী মাহাথির বিন মোহাম্মদের আজ ৯৫তম জন্মবার্ষিকী। আধুনিক মালয়েশিয়ার স্বপ্নদ্রষ্টা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্ষীয়ান বিশ্বনেতা মাহাথির বিন মোহাম্মদের জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক
[email protected]

মন্তব্য ১৯ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৪১

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ওনার পূর্বপুরুষদের সাথে বাংলাদেশের যোগ সূত্রের কথা শোনা যায় (সত্যি কি না জানি না )। কথাটা কি সত্যি?

১০ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৪৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
জ্বি আপনি ঠিক শুনেছেন।
আমার লেখাতেও তার জন্মপরিচয় অংশে তা উল্লেখ আছে।
মাহাথির মোহাম্মদের পূর্বপুরুষরা ছিলেন বাংলাদেশের বাসিন্দা।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তীরে মরিয়মনগরে তার দাদার বাড়ি ছিলো।
চট্টগ্রাম জেলার উত্তরাংশে রাঙ্গুনিয়া উপজেলাধীন চন্দ্রঘোনা ও কাপ্তাইগামী
সড়কের সামান্য পূর্বে অবস্থিত প্রসিদ্ধ গ্রাম মরিয়মনগর ।

২| ১০ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: মাহাথির একজন ভালো মানুষ। উনি মালোশিয়ার জন্য অনেক করেছেন। নিজের জন্য কিছু করেন নি। উনি সৎ মানুষ। উনার মতো লোক আমাদের দেশে একজনও নেই।

১০ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১০:২৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আমাদের দেশেও অনেক ভালো মানুষ আছেন
যারা লোকচক্ষুর অগোচরে ভালো কাজ করে যাচ্ছেন।
নিজের দেশের মানুষ সম্পর্কে খারাপ ধারণা পোষণ করা
ঠিক না।

৩| ১০ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৩

কৃষিজীবী বলেছেন: ডাঃ মাহাথির মোহাম্মদের ৯৫তম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা। মালয়েশিয়ানরা ভাগ্যবান, উনার মতো একজন নেতা পেয়েছে।

১০ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১০:২৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:


ধন্যবাদ আপনাকে কৃষিজীবী
ডাঃ মাহাথির মোহাম্মদের জন্মবার্ষিকীতে
শুভেচ্ছা জানা।

৪| ১০ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


মালয়েশিয়ার লৌহমানব।

১০ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১০:২৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আমার মনে হয় মানবিক মানুষ
লৌহের মতো কঠিন নয় বরং
হৃদয়বান মানুস।

৫| ১০ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৩৫

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আরো অনেকের মতই তুন ডাক্তার মাহাথির মোহামাদ এর দুইটি জন্ম দিন রয়েছে । একটি হচ্ছে ২০ ই জুলাই। আরেকটি হচ্ছে ২০ ডিসেম্বর।

১০ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৩০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

বেখাজির মতো তারও কয়েকটি জন্মদিন আছে জানতাম না।
আর তাই খুঁজতেও যাইনা। যেটা সবাই জানে সেটাই আমি জানি।

৬| ১০ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৩৯

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
উনার পূর্বপুরুষরা ভারতের কেরালা রাজ্য থেকে মালয়েশিয়াতে এসেছিলেন।

তিনি তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ Doctor in the House: The Memoirs of Tun Dr Mahathir Mohamad তে এই কথা উল্লেখ করেছেন।

১০ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৪১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
২০১৪ সালে ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেসের (ইউআইটিএস)
এক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মাহাথির বলেছিলেন তার পূর্বপুরুষরা ছিলেন বাংলাদেশের বাসিন্দা।
ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে এ গ্রামের এক যুবক ব্রিটিশ শাসিত মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান।
তিনি ছিলেন জাহাজের নাবিক। মালয়েশিয়ায় এ্যালোর সেটর গিয়ে এক মালয় রমণীর সঙ্গে
সম্পর্কে আবদ্ধ হন। তাদের ঘরেই জন্ম নেন মুহম্মদ ইস্কান্দার। আর এই মুহম্মদ ইস্কান্দারের
ছেলে সন্তান হিসেবে জন্ম নেন মাহাথির মুহম্মদ। সে হিসেবে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম হচ্ছে
মাহাথির মুহম্মদ এর পূর্বপুরুষের দেশ।

৭| ১০ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৯:৫১

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: ডাক্তার মাহাথির মোহাম্মদের​ জন্মদিনে জানাই শুভেচ্ছা। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
শুভেচ্ছা আপনাকেও।

১০ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৩৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনাকে ধন্যবাদ পদাতিক দাদা
ডাক্তার মাহাথির মোহাম্মদের​ জন্মদিনে
শুভেচ্ছা জানানোর জন্য।

৮| ১০ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১০:১৪

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

তুন ডাঃ মাহাথির মোহামাদ মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নাম তান শ্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিন।
ডাঃ মাহাথির এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে পদত্যাগ করেন।

১০ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৩৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনাকে ধন্যবাদ
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন
অনেকগুলো মন্তব্য করার জন্য।

৯| ১০ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:১০

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: উইকিপিডিইয়া অনুসারে ওনার পূর্ব পুরুষ কেরলার। উদ্ধৃতি দিলাম;

His father, Mohamad Iskandar, was a Penang Malay of partly Indian ancestry. Mahathir's paternal grandfather had come from Kerala and married a Malay woman.

আন্তর্জাতিক এবং মালায়েশিয়ার সব সূত্রেই এরকম পাবেন। বাংলাদেশের পত্রিকা গুলিতে যে খবর এসেছে তা মনে হয় ঠিক না।

১০| ১০ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:২৩

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ Doctor in the House: The Memoirs of Tun Dr Mahathir Mohamad পড়ুন। এই বইটির বাংলা অনুবাদও ঢাকায় পেতে পারেন।

দো্কানে না পেলেও বড় কোন লাইব্রেরীতে পাবেন। তা না হলে সৌখিন পাঠকরা অবশ্যই সংগ্রহ করেন। তাদের কাছ থেকে নিয়ে পড়ুন।

আর ইংরেজী বইটি অনলাইনে পিডিএফ আকারে পাবেন।

পড়ুন। সঠিত তথ্য জানুন। বইটি তুন মাহাথির নিজ হাতে লিখেছেন।



১১| ১৭ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৮

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: Waiting for you reply. Regards

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.