নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

দেশ বরেণ্য সঙ্গীতশিল্পী প্রবাল চৌধুরীর ৭৩তম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা

২৪ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৩৬


সুরের আকাশে উজ্জ্বল নক্ষত্র ও এদেশের সঙ্গীতাঙ্গনের এক সফল ব্যক্তির নাম প্রবাল চৌধুরী। বাংলাদেশের গর্ব অমর কন্ঠসঙ্গীতশিল্পী প্রয়াত "প্রবাল চৌধুরী" র কন্ঠে গীত "আমি ধন্য হয়েছি আমি ধন্য" গানটি চির অমরত্ব লাভ করেছে নি:সন্দহে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। প্রবাল চৌধুরী বিশ শতকের ষাটের দশক থেকে তিনি বাংলা সিনেমায় প্লেব্যাক সিঙ্গার হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী, সংগীত পরিচালক ছিলেন প্রবাল চৌধুরী। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় গঠিত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের এ শিল্পী বাংলাদেশ টেলিভিশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও বিভিন্ন চলচ্চিত্রে গান গেয়েছেন তিনি । চট্টগ্রামসহ সারা দেশে আধুনিক গানের একজন গুণী শিল্পী হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। ১৯৬৬ সাল থেকে তিনি বাংলাদেশ বেতারে গান গাওয়া শুরু করেন। ক্লাসিক্যাল সঙ্গীত আর ভরাট কণ্ঠের অধিকারী এই শিল্পীকে আশির দশকে সঙ্গীতবোদ্ধারা অভিহিত করেছিলেন বাংলাদেশের হেমন্ত মুখোপাধ্যায় হিসেবে। কণ্ঠ দেওয়ার পাশাপাশি সঙ্গীত পরিচালনাও করতেন প্রবাল চৌধুরী। 'সোনা বউ' চলচ্চিত্রের 'আমি ধন্য হয়েছি ওগো ধন্য, তোমারি প্রেমেরই জন্য। এছাড়াও তার উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে আছে 'লোকে যদি মন্দ কয়, সেতো নহে পরাজয়', 'আরে ও প্রাণের রাজা, তুমি যে আমার' ইত্যাদি। জনপ্রিয় এই শিল্পীর আজ ৭৩তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৪৭ সালের আজকের দিনে তিনি চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী প্রবাল চৌধুরীর জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।

প্রবাল চৌধুরী ১৯৪৭ সালের ২৪ আগস্ট চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার বিনাজুরিত গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তবে শৈশব থেকেই তিনি বেড়ে ওঠেন এবং জীবন কাটান চট্টগ্রাম শহরের সাংস্কৃতিক এলাকা রহমতগঞ্জের ১৬ নং দেওয়ানজী পুকুরপাড়স্থ নিজ বাস ভবনে। যাঁর যাদুকরী কণ্ঠ শুনে অনেকে মনে করতেন এপার বাংলার হেমন্ত মুখার্জী। আর যখন তিনি তার প্রিয়শিল্পী হেমন্তের কোন গান গাইতেন, তখন তো তাঁকে প্রবাল বলার কোন অবকাশই পাওয়া যেত না। মা লীলাবতী চৌধুরী ছিলেন তাঁর গানের প্রধান অনুপ্রেরণা। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতারে প্রবাল চৌধুরীর কণ্ঠে মোস্তাফিজুর রহমান গামার লেখা ‘ভেবো না গো তোমার ছেলেরা হারিয়ে গিয়েছে কবে’ গানটি মুক্তি সেনাদের যারপরনাই প্রেরণা যুগিয়েছে। ‘লোকে যদি মন্দ কয় সে তো নহে পরাজয়’,‘ফুলের বাসর ভাঙলো যখন স্মৃতি কেন বেদনার বাসর সাজায়’ গানগুলো প্রবাল চৌধুরীকে বাঁচিয়ে রাখবে যুগ থেকে যুগান্তর। তার অন্যান্য ভাই বোন কল্যাণী ঘোষ, উমা খান ও শিল্পজগতে যথেষ্ট পরিচিত নাম। এ পর্যন্ত তিনি সাড়ে ৬ হাজার গানে কন্ঠ দিয়েছেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী হিসেবেও প্রবাল চৌধুরীর পরিচিতি ছিল সর্বাগ্রে। ১৯৭১ সালে দেশকে শত্রু মুক্ত করতে দেশ মাতৃকার টানে তিনি যোগ দিয়েছেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে। ওই সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে গান গেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অনেক বেশি অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন শিল্পী প্রবাল চৌধুরী। সোলো এবং ডুয়েট মিলে তার দশটির মতো গানের অ্যালবাম রয়েছে।
‘এই জীবন তো একদিন চলতে চলতে থেমে যাবে’, শিল্পী প্রবাল চৌধুরীর একটি জনপ্রিয় গান। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে বাংলাদেশের সঙ্গীতাঙ্গনের অন্যতম জনপ্রিয় এই শিল্পীর জীবনে গানের কথাটি সত্য হয়ে উঠেছিল। বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রে গানের অনুষ্ঠানে নিজের জীবনের শেষ গান পরিবেশন করে চলার পথের ইতি টানেন শিল্পী। ২০০৯ সালের ১৭ অক্টোবর চট্টগ্রামের জিইসি মোড়স্থ মেট্ট্রোপলিটন হাসপাতালে অসংখ্য ভক্ত-অনুরক্ত, শিষ্য ও শ্রোতাদের শোকের সাগরে ভাসিয়ে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন এই শিল্পী। ২০০৯ সালের ১৪ অক্টোবর বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রে গানের রেকর্ডিং শেষে আকষ্মিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রবাল চৌধুরী। সেখান থেকে তাকে ইউএসটিসি হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে মুর্মূর্ষ অবস্থায় শিল্পীকে মেট্টোপলিটন হাসপাতালে ইনটেনসিভ কেয়ারে ভর্তি করা হয়। চমেক হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধান নিউরোসার্জন প্রফেসর কামাল উদ্দিন ও নিউরো মেডিসিন খোকন কান্তি দাশের তত্বাবধানে নগরীর জি ই সি মোড়স্থ মেট্টোপলিটন হাসপাতালে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি মস্ত্বিকে রক্তক্ষরণ, ডায়াবেটিকস ও উচ্চরক্তচাপে ভূগছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ২ পুত্র-পুত্রবধু, ভাইবোন, নাতি-নাতনীসহ অসংখ্য আত্মীয় সজ্বন গুনগ্রাহী রেখে যান। প্রবাল চৌধুরীর বোন বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী উমা ইসলাম জনপ্রিয় শিল্পী। ভাইবোন মিলেও অনেক গান গেয়েছেন। প্রবাল চৌধুরীর স্ত্রী মীরা চৌধুরী একজন শিল্পী। তার বড় ছেলে মানস চৌধুরী একজন ডাক্তার এবং ছোট ছেলে রঞ্জন চৌধুরী জাতীয় টিটি খেলোয়াড় এবং চলচ্চিত্রে গান করেন যার মধ্যে হাসন রাজা অন্যতম। শিল্পী প্রবাল চৌধুরীর গাওয়া ‘এই জীবন তো একদিন চলতে চলতে থেমে যাবে’ গানের কথার মতোই তার জীবনটা হঠাৎ থেমে গেছে। কিন্তু তাঁর মতো কৃতীমানদের কখনও মৃত্যু হয় না। জীবিত অবস্থাতেও তার স্থানটি ছিল সুদৃঢ়। প্রয়াত হলেও প্রবাল চৌধুরী ক্ষণজন্মা কীর্তিমানদের সারিতেই রয়েছেন। যতদিন বাংলা গান থাকবে ততদিন শিল্পী প্রবাল চৌধুরীর নামটিও শ্রদ্ধা ভরে উচ্চারিত হবে।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রখ্যাত শব্দ সৈনিক, বাংলার সঙ্গীতাকাশের উজ্জ্বল নক্ষত্র, দেশ বরেণ্য কন্ঠশিল্পী প্রবাল চৌধুরীর ৭৩তম জন্মবার্ষিকী আজ। জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী প্রবাল চৌধুরীর জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক
[email protected]

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৩৯

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: লেখাটি ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ।

২৪ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:২৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ভালোলাগার জন্য ধন্যবাদ। তা
ভালো লাগার সাইন কই ?
লিখে দিলেই হবে নাকি
ওই বাটনে ক্লিক করতে হবে!!

২| ২৪ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৫৪

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: উনার কন্ঠ ভাল লাগত। বেশ কিছু ইনফো জানলাম, কিছু জানা ছিল, কিছু নুতন।

৩| ২৫ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:০৭

রাজীব নুর বলেছেন: দেশ বরেণ্য সঙ্গীতশিল্পী প্রবাল চৌধুরী কে আজই প্রথম চিনলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.