নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলা সাহিত্যে চলিত ভাষার প্রবর্তক ও বিদ্রুপাত্মক প্রাবন্ধিক প্রমথ চৌধুরীর ৭৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:০৩


আমরা অনেক প্রাতঃস্মরণীয় ব্যক্তিত্বের জন্ম-মৃত্যুকাল স্মরণ রাখি না; তাঁদেরকে বিশেষ বিশেষ দিনে স্মরণও করি না। বাংলা সাহিত্যে তেমনই একজন বিস্মৃত প্রায় গুণী ব্যক্তিত্ব চলিত ভাষার প্রবর্তক ও বিদ্রুপাত্মক প্রাবন্ধিক প্রমথ চৌধুরী। পাবনার চাটমোহর সহ বাংলাদেশের গর্ব প্রমথ চৌধুরী। তাঁর সম সাময়িক সময়ে তার মত প্রখর রুচীশীল লেখক খুব একটা ছিল না। তিনি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে যে অবদান রেখে গেছেন তা সত্যিই অতুলনীয়। তাঁরই নেতৃত্বেই বাংলা সাহিত্যে নতুন গদ্যধারা সূচিত হয়। প্রমথ চৌধুরী ফরাসী ও ইংরেজী ভাষা-সাহিত্যেও সুপণ্ডিত ছিলেন। সমকালীন পত্র-পত্রিকায় তিনি ‘বীরবল’ ছদ্মনামে সাহিত্য রচনা করতেন। প্রমথ চৌধুরী রবীন্দ্র যুগে আবির্ভূত হলেও তাঁর সাহিত্য আপন বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল। প্রমথ চৌধুরী একাধারে কবি, গল্পকার, প্রবন্ধকার এবং বাংলা সাহিত্যে উচ্চাঙ্গের চলিতভাষার প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর সর্বপেক্ষা উল্লেখযোগ্য কীর্তি হলো বাংলা সাহিত্যে চলিত ভাষার পূর্ণ প্রতিষ্ঠা। তাঁর সম্পাদিত সবুজপত্র বাংলা সাহিত্যে চলতি ভাষারীতি প্রবর্তনে আগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ১৯১৪ সালে তিনি যখন "সবুজ পত্র" সাহিত্য পত্রটি প্রকাশ করেন তখন থেকেই চলিত ভাষা সাহিত্যক্ষেত্রে এক বিদ্রোহী এবং আধুনিক মাধ্যম হিসেবে আত্মঘোষণা করে। সেই কারণেই প্রকৃতপক্ষে আধুনিক বাংলা সাহিত্যের তিনি একজন প্রধান স্থপতি। আজ তাঁর ৭৪তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৪৬ সালের আজকের দিনে ভারতের শান্তিনিকেতনে মৃত্যুবরণ করেন প্রমথ চৌধুরী। গুণী এই ব্যক্তিত্বের মৃত্যুদিনে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

প্রমথ চৌধুরী ১৮৬৮ সালের ৭ আগস্ট যশোর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈত্রিক নিবাস ছিল বাংলাদেশের পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার হরিপুর গ্রামে। পরিতাপের বিষয় আজ প্রমথ চৌধুরীর বাড়ির কোন অস্তিত্ব নেই। কোন মতে দাড়িয়ে আছে একটি মন্দিরের ভগ্নাবশেষ। পাবনার হরিপুরে তার যে বসত বাড়ি ছিল অবৈধ দখলদাররা তা দখল করে সাজিয়ে নিচ্ছে নিজের মতো করে। খোঁজ নিয়ে জানা যায় প্রমথ চৌধুরীর ৩ টি ভিটে রয়েছে এখানে। একটি ১ একর ১০ শতাংশ, একটি ১৯ শতাংশ এবং একটি ২৭ শতাংশ। এ জায়গা গুলো দখলে নিয়ে সেখানে কেউ তুলেছেন পাকা বাড়ি, দালান কোঠা। জায়গার মাঝখান দিয়ে যাতায়াতের জন্য নিজেরা তৈরী করে নিয়েছে রাস্তা। তবে কোন রকম কাগজ পত্র নেই দখলকারীদের। পাবনার বিখ্যাত চৌধুরী বংশের সন্তান প্রমথ চৌধুরী কেবল কুলে-মানে অভিজাত ছিলেন তা নয়, মনের দিক থেকেও ছিলেন অভিজাত। তার পূর্বপুরুষগন ছিলেন বরেন্দ্র এলাকার ব্রাক্ষণ জমিদার। নদীয়ার কৃষ্ণনগরে তার শৈশব ও কৈশর কাটলেও তিনি মাঝে মাঝে আসতেন হরিপুরে। তাঁর বাল্যকাল কেটেছে পাবনায়, কৈশোর কৃষ্ণনগরে, যৌবনে বিলেত আর কলকাতায়, বার্ধক্য কলকাতায় এবং শান্তিনিকেতনে। তাঁর শিক্ষাজীবন ছিল অসাধারণ কৃতিত্বপূর্ণ। তিনি ১৮৯০সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে বি.এ. অনার্স এবং ইংরেজি সাহিত্যে এমএ ডিগ্রী লাভ করেন। উভয় পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন এবং পরে ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য বিলাত যান। বিলাত থেকে দেশে ফিরে তিনি কিছুদিন কলকাতা হাইকোর্টে আইন ব্যবসা করেন। এর পর কিছুকাল ইংরেজি সাহিত্যে অধ্যাপনা করেন এবং পরে সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করেন। তাঁর প্রথম প্রবন্ধ "জয়দেব" প্রকাশিত হয় "সাধনা" (১৮৯৩) পত্রিকায়। ১৮৯০-৯৯ এর মধ্যে তিনি সাধুভাষায় কয়েকটি গল্প লেখেন।

তাঁর প্রবর্তিত গদ্যরীতিতে “সবুজপত্র” নামে বিখ্যাত সাহিত্যপত্র ইতিহাসে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। স্বল্পায়ু সত্বেও সবুজপত্র প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তর প্রজন্মের বাংলা ভাষা এবং সাহিত্য রীতি গঠনে একটি প্রধান শক্তি হিসেবে কাজ করে। এ সাময়িকীতে শুধু সবুজ রং-ই ব্যবহার করা হতো। নন্দনাল বসু অঙ্কিত একটি সবুজ তালপাতা এর প্রচ্ছদে ব্যবহার করা হতো। সবুজপত্রে কখনো কোনো বিজ্ঞাপন এবং ছবি প্রকাশিত হয় নি।প্রমথ চৌধুরী সাময়িকীটিকে বাণিজ্যিকভাবে আকর্ষনীয় রূপ প্রদানের জন্যে কোনো চেষ্টা করেননি। বরং তিনি এর মান এবং আদর্শ সমুন্নত রাখার প্রতি অত্যন্ত সতর্ক ছিলেন। তাই সবুজপত্র সাধারণ পাঠক ও লেখকদের কাছে জনপ্রিয় হতে পারেনি। প্রথম পর্যায়ে এটি ১৩২৯ বঙ্গাব্দ(১৯২২ সাল)পর্যন্ত প্রকাশিত হয়।দ্বিদীয় পর্যায়ে সবুজপত্রের প্রকাশনা শুরু হয় ১৩৩২ বঙ্গাব্দ থেকে।সাময়িকীটি শেষে পর্যন্ত ১৩৩৪ বঙ্গাব্দে (১৯২৭)সালে বন্ধ হয়ে যায়। এই “সবুজপত্র” কেন্দ্রিক ভাষা ও সাহিত্যাদর্শ আন্দোলনে তিনি রবীন্দ্রনাথের বলিষ্ঠ সমর্থন পান। রবীন্দ্রনাথের কথ্য ভাষায় লেখা উপন্যাস “শেষের কবিতা” সবুজপত্রে প্রকাশিত হলে প্রমথ চৌধুরীর এই আন্দোলন ব্যাপক সফলতা লাভ করে। প্রমথ চৌধুরী বিশ্বভারতী পত্রিকার সম্পাদনাও করেছেন ।

বীরবল ছিলো প্রমথ চৌধুরীর ছদ্মনাম। দিল্লীপতি সম্রাট আকবরের সভাসদ বীরবলের ছিল প্রখর পরিহাসপ্রবণতা এবং যুক্তিধর্মিতা । যা প্রমথ চৌধুরীকে আকৃষ্ট করেছিল। ' সাহিত্যে হাস্যরসের বিশেষ প্রয়োজন । এ বিষয়ে তাঁর অভিমত 'করুণরসে ভারতবর্ষ স্যাঁতসেঁতে হয়ে উঠেছে ।' তাই 'বাংলা সাহিত্যের স্বাস্থ্যরক্ষার জন্যই হাসির চর্চা প্রয়োজন' । তিনি 'হাসি ও কান্না' সনেটে বলেছেন,
সত্য কথা বলি, আমি ভাল নাহি বাসি,
দিবানিশি যে নয়ন করে ছলছল,
কথায় কথায় যাহে ভরে আসে জল,
আমি খুঁজি চোখে চোখে আনন্দের হাসি।'


সদালাপী এই মানুষটি সবাইকে আপনার করে নিতে পারতেন । নানা শ্রেণির মানুষের সাথে অনায়াসে মিশে যেতে পারতেন তিনি। সহাস্য রসিকতা তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট । এক অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে উপস্থিত ছিলেন তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্রী সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কন্যা ইন্দিরা দেবী । প্রমথ চৌধুরীর বন্ধু সে অনুষ্ঠানে যেতে অনুরোধ করলেন এবং রসিকতা করে ইন্দিরা দেবীর প্রসঙ্গটি তুলে ধরলেন । উত্তরে প্রমথ চৌধুরী বলেছিলেনঃরের বাড়ির খুকি দেখবার লোভ আমার নেই। ভাগ্যক্রমে ইন্দিরা দেবীই হন তাঁর সহধর্মিনী (১৮৯৯) । পিতৃপুরুষের বাসভূমি পাবনা জেলার হরিপুর গ্রামের প্রতি আজীবন আকর্ষণ অনুভব করেছেন । তিনি 'আত্মকথায়' বলেছেনঃ 'আমি ছেলেবেলায় কৃষ্ণনগরেই বাস করতুম সাড়ে এগারো মাস ও হরিপুরে পনেরো দিন । কিন্তু হরিপুর আমরা সঙ্গেই এনেছিলুম, তার মানসিক আবহাওয়াও।'

'সবুজপত্রের' সম্পাদক প্রমথ চৌধুরী বাংলা সাহিত্যে চলিত ভাষার প্রবর্তক এবং বাকচাতুর্য সমৃদ্ধ প্রাবন্ধিক। কবিতা রবীন্দ্রানুরাগী হয়েও তিনি ছিলেন স্বতন্ত্র। তাঁর বাকরীতিতে আছে লঘুপক্ষ, ভারহীন দ্রুতগতি, ভাবালুতাশূণ্য বুদ্ধির দীপ্তি, বাঙালী জীবনের জড়ত্ব ও স্থবীরতার বিরুদ্ধে তীব্র আঘাত। তাঁর প্রতিভার চরম প্রকাশ প্রবন্ধ রচনায় । তাঁর ভাষা শাণিত ও দীপ্ত, তাঁর রচনাশৈলীর প্রধান ধর্ম বাক্চাতুর্য । বিরোধাভাসপূর্ণ বাক্যরচনায় তিনি সিদ্ধ। অনেকে মনে করেন তাঁর ফরাসি সাহিত্যে অধিকার তাঁর ভাষার এক বিচিত্র ক্ষিপ্রগতি ও তীক্ষ্ণতার সঞ্চার করেছিল।

প্রমথ চৌধুরী রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলির মধ্যেঃ তেল-নুন-লাকড়ি (১৯০৬), বীরবলের হালখাতা (১৯১৭) , রায়তের কথা (১৯১৯), নানা চর্চা (১৯২৩), চার-ইয়ারী কথা, আমাদের শিক্ষা, প্রাচীন বঙ্গ সাহিত্যে হিন্দু ও মুসলমান (১৯৫৩), প্রবন্ধ সংগ্রহ ইত্যাদি গদ্যগ্রন্থ বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ। চার ইয়ারী কথা, আহুতি, নীল লোহিত ও গল্প সংগ্রহ তাঁর গল্পগ্রন্থ। বাংলা কবিতা ও ছোট গল্পের রচয়িতা হিসেবেও তিনি বিখ্যাত। বাংলা কাব্য সাহিত্যে তিনিই ইতালীয় সনেটের প্রবর্তক। ‘সনেট পঞ্চাশৎ’ ও পদ্য রচনা তাঁর কাব্যগ্রন্থ। প্রমথ চৌধুরী তাঁর কর্ম ও কীর্তির জন্য বেশকিছু পুরস্কার লাভ করেছিলেন। তার মধ্যে ১৯৩৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ‘জগত্তারিণী স্বর্ণপদক’ অন্যতম।

১৯৪৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর ভারতের শান্তিনিকেতনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন বাংলা সাহিত্যে চলিত ভাষার প্রবর্তক প্রমথ চৌধুরী। আজ তার ৭৪তম মৃত্যুবার্ষিকী। তাঁর অবদান ও সৃষ্টিকর্মের জন্য বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন প্রমথ চৌধুরী। গুণী এ্ই ব্যক্তিত্বের মৃত্যদিন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের দাবী অনতিবিলম্বে প্রমথ চৌধুরীর বাড়ি অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে মুক্ত করে তাঁর স্মৃতি রক্ষার্থে তার সম্পত্তিতে সরকার একটা কিছু করুক। বাংলা সাহিত্যে চলিতভাষার প্রতিষ্ঠাতা ও বিদ্রুপাত্মক প্রাবন্ধিক প্রমথ চৌধুরীর ৭৪তম মৃত্যুদিনে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক
[email protected]

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:১৫

তারেক ফাহিম বলেছেন: বাংলা সাহিত্যে চলিতভাষার প্রতিষ্ঠাতা ও বিদ্রুপাত্মক প্রাবন্ধিক প্রমথ চৌধুরীর ৭৪তম মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:২৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনাকে ধন্যবাদ ফাহিম ভাই,
প্রাবন্ধিক প্রমথ চৌধুরীর মৃত্যুদিনে
শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।

২| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:২৯

শায়মা বলেছেন: বীরবল কি সত্যিই ছিলো নাকি শুধুই গল্প ভাইয়া?

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৪৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

শায়মা আপু, বাংলা শিশুতোষ সাহিত্যে অনেক পরিচিত নাম বীরবল।
মুঘল সম্রাট আকবরের দরবারে গুণী ব্যক্তিদের যে বিশাল সমারোহ ছিলো,
এর মধ্যে নয়জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে বলা হতো ‘নবরত্ন’। এই নবরত্নের
সবচেয়ে ‘উজ্জ্বল রত্নটি’ ছিলেন বীরবল। বীরবলের বাস্তব জীবনের অনেক
কিছুই পরিবর্তিত হয়ে লোকসাহিত্যের সাথে মিশে গেছে। বীরবলের আসল নাম
ছিলো মহেশ দাস ভট্ট। ১৫২৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের কল্পি গ্রামের নিকট
এক সম্ভ্রান্ত ব্রাহ্মণ পরিবারে তার জন্ম। তার বাবার নাম ছিলো গঙ্গা দাস আর মায়ের
নাম ছিলো অনভা দেবী। ১৫৫৬ সালে আকবরের রাজসভায় অন্তর্ভুক্ত হবার পর প্রায় ৩০
বছর ধরে বীরবল একনিষ্ঠভাবে তার বিশ্বস্ততা পালন করে যান। বীরবল আজীবন নিগুঢ়
বিশ্বস্ততার সাথে সম্রাট আকবরকে সঙ্গ দিয়ে গেছেন। হিন্দুধর্ম ও ইসলাম এক করে আকবর
কর্তৃক প্রবর্তিত দীন-ই-ইলাহী ধর্মের যে কয়েকজন অনুসারী ছিলেন, তাদের মধ্যে অন্যতম ও
একমাত্র হিন্দু অনুসারী ছিলেন বীরবল।
এত কথা বলার অর্থ বীরবল নিছক গল্প নয়, এ থেকে বুঝা যায় বাস্তবেই বীরবল ছিলেন।

৩| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৪৭

শায়মা বলেছেন: থ্যাংক ইউ সো মাচ ভাইয়ামনি!!


আমার মাঝেমাঝে মনে হত এই বীরবল কি সত্যি ছিলো? যেমন গোপালভাঁড়কেও মনে হয়। সে কি সত্যি ছিলো?

ইতিহাস যাই বলুক। বিশ্বাসই হতে চায় না আমার!

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:০৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ আপু, গোপাল ভাঁড় চরিত্রটি ঐতিহাসিক, গবেষক ও ভাষাবিদদের কাছে
বিতর্কের বিষয় বহুকাল থেকে। গোপালের গল্পগুলি সমাজে চুড়ান্ত জনপ্রিয় ও বহুল
প্রচলিত হলেও গোপাল ভাঁড় বাস্তবে ছিলেন কিনা সে নিয়ে মতভেদ আছে। অনেকেই
মনে করেন গোপাল ভাঁড় নামে কেউ নির্দিষ্ট করে ছিলেননা। তবে কোনো না কোনো
বিদূষক রাজার প্রিয়পাত্র হন। সেরকম গোপাল নাম্নী নাপিত বংশীয় কোনো ব্যক্তি ছিলেন।
গোপালের জন্ম কত বঙ্গাব্দে তা কোথাও লেখা নেই। তার জন্মস্থানের পক্ষেও কোনো নথি
নেই, কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা হিসেবে তার সম্পত্তির কিংবা জায়গা-জমির কোনো প্রমাণ
পাওয়া যায় না। গোপালের বাবার নাম জানা গেলেও তার মা ও স্ত্রী সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।

তবে নগেন্দ্রনাথ দাস নামের এক ব্যাক্তি নিজেকে গোপাল ভাঁড়ের বংশধর বলে দাবি করেন।
'নবদ্বীপ-কাহিনী বা মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র ও গোপাল ভাঁড়’ নামে একটি বইও লিখেন তিনি।
এই বইয়ে নগেন্দ্রনাথ দাস দাবি করেন, ‘ভাঁড়’ নয়, গোপালের পদবি ছিল ‘নাই’। তাঁর দাদা
ছিলেন ‘আনন্দরাম নাই নামে এক পরম তান্ত্রিক সাধক।’ আর গোপালের বাবা দুলালচন্দ্র নাই,
পেশায় ছিলেন নাপিত। তবে, গোপালের বুদ্ধিতে মুগ্ধ হয়েই নদিয়ারাজ তাঁকে সভার অন্যতম রত্ন
হিসেবে স্থান দেন। তখন গোপালের উপাধি হয় ‘ভাণ্ডারী’। ‘ভাণ্ডারী’ থেকে অপভ্রংশেই ‘ভাঁড়’
গোপাল ভাঁড়! সে আরও দাবি করেন, কোনও পুত্রসন্তান না থাকলেও গোপাল ভাঁড়ের একটি
মেয়ে ছিল। তাঁর নাম ‘রাধারাণী’। নগেন্দ্রনাথের বক্তব্য, তিনি গোপালের ভাই কল্যাণের উত্তরসূরি।
সেই অর্থে গোপালের একমাত্র বংশধর। তবে এই মত যে সব ঐতিহাসিক সন্দেহাতীত ভাবে মেনে
নিচ্ছেন, তা বলা যায় না।

৪| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৩০

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: প্রমথ চেৌধুরীর যতটা অবদান ততটা মূল্যায়ন নেই। অথচ বাংলাসাহিত্যে তাঁর কীর্তি অবিস্মরণীয়। আপনাকে ধন্যবাদ জানাতেই হবে তাঁর বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরার কারণে।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:০৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনাকেও ধন্যবাদ বরকতউল্লাহ ভাই
লেখাটি গুরুত্বসহকারে পাঠঅন্তে সুন্দর
মন্তব্য প্রকাশের জন্য।

৫| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: প্রমথ চৌধুরী জ্ঞানী লোক। সজ্জন ব্যাক্তি।

শ্রদ্ধা জানাই।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৫৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনাকে ধন্যবাদ খানসাব

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.