নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজ ১ জুনঃ বিশ্ব দুগ্ধ দিবস

০১ লা জুন, ২০২১ দুপুর ২:০৭


আজ বিশ্ব দুগ্ধ দিবস। দুধ প্রতিটি ব্যক্তির জন্য স্বাস্থ্যকর, সুষম ডায়েটের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। জাতিসংঘের ‘স্টেট অব ফুড সিকিউরিটি অ্যান্ড নিউট্রিশন ইন দ্য ওয়ার্ল্ড-২০১৯’ শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের প্রতি ৬ জন মানুষের মধ্যে একজন অপুষ্টির শিকার। অপুষ্টির কারণে ৫ বছরের কম বয়সী ৩৬ শতাংশ শিশু খর্বকায় (উচ্চতা কম) ও ৩৩ শতাংশ কৃশকায় (ওজন কম)। তাই সব মানুষের পুষ্টি ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সব সময়ই দুধ পান করার পরামর্শ দেন পুষ্টবিদরা। বৈশ্বিক খাদ্য হিসেবে দুধের গুরুত্ব তুলে ধরার লক্ষ্যে জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন খাদ্য ও কৃষি সংস্থা ঘোষিত একটি আন্তর্জাতিক দিবস। ২০০১ সালের, ১ জুন বিশ্ব খাদ্য হিসাবে দুধের গুরুত্বকে বোঝাতে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (Food and Agriculture Organisation/ FAO) বিশ্ব দুগ্ধ দিবস চালু করে। ডেইরি খাতের কার্যক্রম বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি করার লক্ষ্য নিয়ে ঐ বছর থেকে বৈশ্বিক খাদ্য হিসেবে দুধের গুরুত্ব তুলে ধরা এবং দৈনন্দিন খাদ্য গ্রহণে দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্য অন্তর্ভুক্ত করাকে উৎসাহিত করতে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী এ দিবসটি উদযাপন হচ্ছে। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই দিবসটি পালনে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। যেমন ১১ জানুয়ারী। দিনটির বিশেষত্ব হচ্ছে, ১৮৭৮ সালের এই দিনেই ওয়ারেন গ্লাস কোম্পানি প্রথম দুধ বোতলজাত করে বিপণন শুরু করে। সাধারণ দুধের চেয়ে বোতলজাত দুধ যে অপেক্ষাকৃত বিশুদ্ধ, তাও এ দিন থেকেই প্রচার করা শুরু হয়। আর এ কারণে দিনটিকে বিশেষভাবে স্মরণ রাখার জন্য সারাবিশ্বে পালিত হয় ‘দুগ্ধ দিবস’ হিসেবে। অবশ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল অর্গানাইজেন’ ২০০১ সাল থেকে জুনের ১ তারিখ দিনটি পালন করে আসছে। ২০০০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটি পালন করে ‘বিশ্ব স্কুল দুগ্ধ দিবস’ হিসেবে। যুক্তরাজ্যে দিবসটি পালন করা হয় প্রতি বছর অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহের যে কোনো দিনে। জুনে ‘দুগ্ধ সপ্তাহ’ পালন অবশ্য প্রথম শুরু হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়ের হার্ভার্ডে, ১৯৪২ সালে। পাকিস্তানের উত্তরে কৈলাস পার্বত্য অঞ্চলের বাসিন্দারাও ‘দুগ্ধ দিবস’ পালন করে থাকে। বসন্তকালে পালিত সে উৎসবটি ‘জোসি’ নামে পরিচিত। এবার জেনে নেয়া যাক দুধ বিষয়ক কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ

পুষ্টিবিদেরা বলছেন, করোনাভাইরাসের এই প্রাদুর্ভাবকালে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিত দুধের মতো পুষ্টিকর খাবার খাওয়া দরকার। অথচ দুগ্ধপণ্য বিপণনকারী কোম্পানিগুলো বলছে, দেশে এখন দুধের চাহিদা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বরং কম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) পরামর্শ অনুযায়ী একজন মানুষের দৈনিক গড়ে ২৫০ মিলিলিটার দুধ পান করা উচিত। কিন্তু তার চেয়ে অনেক কম দুধ পান করে বাংলাদেশের মানুষ। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ দেশের মানুষ প্রয়োজনের তুলনায় তিন ভাগের এক ভাগ দুধ পান করে। দেশে দুধ পান নিয়ে বিভিন্ন ধরনের পরিসংখ্যান রয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাবে, দেশে দৈনিক মাথাপিছু দুধ গ্রহণের পরিমাণ ১৬৫ মিলিলিটার। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১৬ সালের খানা আয়-ব্যয় জরিপ অনুযায়ী, মাথাপিছু দৈনিক দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য গ্রহণের পরিমাণ ২৭ গ্রামের কিছু বেশি। এটা আবার ২০১০ সালের তুলনায় কম। ওই বছর মাথাপিছু দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য গ্রহণের পরিমাণ ছিল ৩৪ গ্রামের কাছাকাছি। এর মানে হলো, আগে মানুষ গড়ে যে পরিমাণ দুধ গ্রহণ করত, সেটা কমেছে। ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের হিসাবে, দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকারী কোম্পানিগুলো প্রতিদিন দেশের মোট উৎপাদিত দুধের মাত্র ৫ শতাংশ সংগ্রহ করে। এর পরিমাণ সাড়ে ১৩ লাখ লিটারের মতো। দেশে মান নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনে (বিএসটিআই) নিবন্ধিত ১৪টি দুগ্ধ প্রক্রিয়াকরণ কোম্পানি রয়েছে। এর মধ্যে মিল্কভিটা নামে পরিচিত বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেড বাজার হিস্যায় সবচেয়ে বড়। এ ছাড়া প্রাণ ডেইরি, ব্র্যাক ডেইরি অ্যান্ড ফুড ও আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ বাজার হিস্যায় সামনের সারিতে রয়েছে। বিশ্বজুড়ে দুধ একটি স্বীকৃত পুষ্টিকর খাবার। এ কারণেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) মানুষকে নিয়মিত দুধ পান করার পরামর্শ দেয়। দুধে আছে ক্যালসিয়াম, যা হাড় ও দাঁতের গঠনের জন্য জরুরি। দুধের আমিষ শরীরে শক্তি জোগায়। দুধ মানুষের শরীরে পটাশিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি১২, ভিটামিন এ, জিংকসহ নানা ধরনের পুষ্টি উপাদানের জোগান দেয়। করোনাভাইরাস সংক্রমণকালে শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে পুষ্টিবিদেরা দুধের মতো পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।
দুধ পানের গুরুত্বঃ
আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিটি পুষ্টি উপাদান একমাত্র দুধেই রয়েছে। যার ফলে দুধ শুধু পানীয়ই নয়, খাদ্য তালিকায় এটি একটি পূর্ণাঙ্গ খাবার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কসহ আরও ১৪টি রাজ্যে দুধকে করেছে রাষ্ট্রীয় পানীয়। দুধই একমাত্র প্রাকৃতিক এনার্জি ড্রিংক, যা রোগ প্রতিরোধ করে আর তাৎক্ষণিকভাবে শরীরে শক্তিও জোগায়। এক গবেষণায় দেখা গেছে আগের দিনে মানুষ দীর্ঘজীবী ও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়ার গোপন রহস্য ছিলো তখনকার মানুষ নিয়মিত টাটকা দুধ পান করতো। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও দিনে অন্তত: দুবার স্বাস্থ্যকর দুধ পান করার পরামর্শ দেন।
দুধ সংরক্ষণ পদ্ধতিঃ
ফুটানো দুধ; সাধারণ তাপমাত্রায় তরল দুধ ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে নষ্ট হয়। তাই দুধ পান করার আগে ১০-১৫ মিনিট ফুটিয়ে নেওয়া হয়। দুধ সংরক্ষণের এটিই ঘরোয়া এবং প্রচলিত পদ্ধতি যা আমরা সচরাচর দেখতে পাই। এতে দুধের পুষ্টিগুণের একটা বড় অংশ নষ্ট হয়ে যায়।
পাস্তুরিত দুধ: ১৫ সেকেন্ড সময় ধরে ৭২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড – এ দুধ ফুটানো হয়। এতে ব্যাকটেরিয়া সম্পূর্ণ নির্মূল হয় না বলে পান করার আগে আবার ফুটাতে হয়। এতেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে দুধের পুষ্টিগুণ হারিয়ে যায়।
ইউএইচটি (UHT) দুধ: ইউএইচটি (UHT) প্রক্রিয়া বিশ শতকে দুধ সংরক্ষণের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও নির্ভরযোগ্য প্রক্রিয়া, যা দুধের প্রাকৃতিক পুষ্টিগুণ অক্ষুন্ন রেখেই দুধকে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু হতে মুক্ত করে। ইউএইচটি (UHT) প্রক্রিয়াটি সাধারণত বাণিজ্যিকভাবে করা হয়ে থাকে।

দুধ পানের উপকারিতাঃ
দাঁতের ক্ষয়রোধ:
দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারে থাকা ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস দাঁতের গঠন ও বিকাশে উপকারী। দুধে প্রচুর পরিমাণে থাকা আমিষ ‘ক্যাসিন’ দাঁতের এনামেলের উপর প্রতিরোধী পাতলা স্তর গড়ে তোলে। মুখের ভেতর দাঁত এসিডের সংস্পর্শে আসলে এটি তখন দাঁত থেকে ক্যালসিয়াম ও ফসফেটের ক্ষয় রোধ করে। দন্তবিশেষজ্ঞরা বলেন যে, প্রতি বেলা আহারের মধ্যবর্তী সময়ে পানি বাদে দুধই হচ্ছে আরেকটি নিরাপদ পানীয়। কারণ দেখা গিয়েছে দুধ দাঁত ক্ষয়ের সবচে’ নাজুক অবস্থাতেও দাঁতের ক্ষয়সাধন করে না।
হাড়ের স্বাস্থ্য:
দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারে থাকা ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের গঠন ও বিকাশে দরকারি। ছোটবেলা থেকে শুরু করে সারা জীবন দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ হাড়কে করে মজবুত আর রক্ষা করে ‘ওসটিওপোরোসিস’ নামের হাড়ক্ষয়কারী রোগ থেকে। যদি দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার প্রতিদিনের আহারে না থাকে, তবে ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দিতে পারে যা বিশেষ করে মহিলাদের আর বয়স্কদের চিন্তার বিষয়। ক্যালসিয়ামের অভাবের কারণে ‘ওসটিও আর্থাইটিস’ নামক হাড়ক্ষয়কারী রোগ হতে পারে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ:
শুধু ফল ও সবজি খেলে যে উপকার হয়, তারচেয়ে ফল, সবজি আর স্বল্প চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার নিয়মিত পরিমাণে গ্রহণ করলে তা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে অধিক কার্যকরী- এমনটিই ফুটে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের এক গবেষণায়। দুগ্ধজাত খাবারে রয়েছে ‘উচ্চমানসম্পন্ন আমিষ’ যা মানবদেহের জন্য দরকারি। দুগ্ধজাত আমিষ শরীরে অ্যামাইনো অ্যাসিড সরবরাহের মাধ্যমে অ্যামাইনো অ্যাসিডের কমতি থাকা ‘সেরিল’ ও সবজিজাত সাধারণ মানের আমিষের পুষ্টিমান বাড়িয়ে তোলে।
হৃদরোগ প্রতিরোধ:
বেশকিছু গবেষণায় দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণের সাথে হৃদরোগের লক্ষণসমূহ হ্রাসের একটি যোগসূত্র পাওয়া গেছে। দেখা গেছে যারা স্বল্প পরিমাণে দুধ পান করেছিলেন তাদের চাইতে যারা বেশি পরিমাণে দুধ (বিশেষত সর বাদ দিয়ে) পান করেছিলেন তাদের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা কম। এক্ষেত্রে আরো অন্যান্য নিয়ামক থাকতে পারে, তবে স্বাস্থ্য ও অসুস্থতা সংক্রান্ত এক গবেষণায় দেখা গেছে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম গ্রহণের সাথে হৃদরোগের ঝুঁকিহ্রাসের একটা সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম গ্রহণ রক্তে বাজে কোলেস্টরেলের পরিমাণ কমিয়ে আনতে পারে আর ভালো কোলেস্টরেলের পরিমাণ বাড়াতে পারে। অধিকতর বাজে কোলেস্টরেল আর কম পরিমাণ ভালো কোলেস্টরেল দুটোই হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
স্থূলতা রোধ:
প্রচলিত ধারণার বিপরীতে জানা গেছে যারা দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ করেন না তাদের চাইতে যারা দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ করেন তারা তুলনামূলক ঝরঝরে শরীরের অধিকারী হয়ে থাকেন। পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে ক্যালরি নিয়ন্ত্রিত সুষম খাবারের অংশ হিসেবে দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ করলে ওজন হ্রাস ত্বরান্বিত হয়ে থাকে, বিশেষ করে তলপেট থেকে, যেখানটায় বেশি চর্বি থাকাটা স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি।
টাইপ-২ ডায়াবেটিস:
নিয়মিত কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার খেলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস পায়। কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবারের এই উপকারিতার পেছনে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামসহ অন্যান্য দরকারি পুষ্টিগুণের সমন্বিত অবদান আছে নয়তো এতে থাকা স্বল্প গ্লাইসেমিক সূচক রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। টাইপ-২ ডায়াবেটিস এখন শুধু বয়স্ক নয়, শিশু-কিশোরদেরও সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ৩৭,০০০ মধ্যবয়সী মহিলার মধ্যে জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে যারা পর্যাপ্ত দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ করেছিলেন তাদের মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কম ছিল। ৩,০০০ অতিরিক্ত ওজনের বয়স্কদের মাঝে গবেষণায় দেখা গেছে পরিশোধিত চিনি ও শর্করা গ্রহণ না করে দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ করলে অতিরিক্ত ওজনের বয়স্কদের শরীরে টাইপ-২ ডায়াবেটিস জেঁকে বসাটা প্রতিরোধ করতে পারে।
ডিহাইড্রেশন রোধ:
শরীরে জলশূন্যতা হলে দুর্বল মনোযোগ, স্মরণশক্তির এলোমেলো ভাব, অনুভূতির অবসাদগ্রস্ততা আর ভালো না লাগার বোধ হতে পারে। তরল খাবার হিসেবে পানির পাশাপাশি দুধ সত্যিই দারুণ, যা শুধু শরীরের জলীয় মাত্রার পূরণ করে না, সেইসাথে প্রচুর পুষ্টিমান দিয়ে থাকে। আসলে দুধ শুধু প্রয়োজনীয় তরল খাদ্যই নয় সুস্বাদু ও মজাদারও বটে। পারিবারিকভাবে দুধ আমাদের নিত্যসঙ্গী। দুধ ছাড়া আমাদের একমুহূর্ত চলে না। প্রতিটি সময়ে চা, কফি, মিস্টান্ন তৈরিতে প্রথমেই দরকার হয় দুধ। আমাদের দেশে বহুল জনশ্র“তি আছে, দুধে ভাতে বাঙালি তাই এই দুধ ছাড়া কি আমাদের চলে।
জটিল রোগ প্রতিরোধ:
বেশ কিছু ক্ষেত্রে প্রমাণিত হয়েছে যে, পর্যাপ্ত দুধ পান মলাশয় ও ব্রেস্ট ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক কাজ করে। ৪৫ হাজার সুইডেনবাসীর মধ্যে এক গবেষণায় দেখা গেছে পুরুষদের মধ্যে যারা দেড় বা তার বেশি গ্লাস দুধ পান করেছিলেন; তাদের রোগ-শোক হবার ঝুঁকি, যারা সপ্তাহে দুই বা তার কম গ্লাস দুধ পান করেছিলেন তাদের চাইতে ৩৫% কম। পাশাপাশি ৪০ হাজার সুইডিশ মহিলার মধ্যে এক জরিপে দেখা গেছে যারা ছোটবেলা থেকে বয়স্ক হওয়া পর্যন্ত নিয়মিত দুধ পান করে আসছেন তাদের ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কম। মলাশয়ের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে ক্যালসিয়াম ও দুধে স্বাভাবিকভাবে সৃষ্ট কনজুগেটিভ লিনোলিক এসিড (সি এল সি) প্রতিরোধমূলক কাজ করে থাকে বলে বিবেচিত হয়। যারা নিয়মিত দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ করেন, তাদের মধ্যে মলাশয়ের ক্যান্সার হবার হার কম।

বৈশ্বিক খাদ্য হিসেবে দুধের গুরুত্ব তুলে ধরার লক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এ বছর দেশব্যাপী দিবসটি পালন করছে। এর অংশ হিসেবে ১ জুন থেকে ৭ জুন পর্যন্ত দুগ্ধ সপ্তাহ পালিত হবে। বিশ্ব দুগ্ধ দিবস ২০২১ এর প্রতিপাদ্য হচ্ছে, ‘সাসটেইনেবিলিটি ইন দ্য ডেইরী সেক্টর উইথ মেসেজ অ্যারাউন্ড দ্য এনভায়রমেন্ট নিউট্রেশন অ্যান্ড সোসিও ইকোনোমিকস’। যার অর্থ,  পরিবেশ, পুষ্টি এবং আর্থ-সামাজিক ক্ষমতায়নের পাশাপাশি দুগ্ধ খাতে টেকসই হওয়ার বিষয়ে আলোকপাত করা হবে। দুগ্ধের স্বল্প-কার্বন ভবিষ্যত তৈরিতে সহায়তা করে বিশ্বের কাছে দুগ্ধ খামারকে নতুন করে পরিচয় করানোও লক্ষ্যও রয়েছে এই বছর। এই থিমটির মূল লক্ষ্য হল নিয়মিত ডায়েটে দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্য অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আরও বেশি করে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া। দুগ্ধ সপ্তাহের কর্মসূচির অংশ হিসেবে সরকারি শিশু পরিবার ও নির্দিষ্ট সংখ্যক দরিদ্র মানুষকে বিনামূল্যে দুধ পান করানো, জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের মাধ্যমে দুগ্ধ পণ্য বহুমুখীকরণে পরামর্শ ক্যাম্পেইন পরিচালনা, প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীর আয়োজন, বিনামূল্যে প্রাণিসম্পদ চিকিৎসা ক্যাম্পেইন পরিচালনা, বিনামূল্যে প্রাণিসম্পদের জন্য কৃমিনাশক ঔষধ বিতরণ ও টিকা প্রদান ক্যাম্পেইন পরিচালনা এবং মিডিয়া ডায়ালগ আয়োজনসহ জনসচেতনতামূলক অন্যান্য প্রচার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। বিশ্ব দুগ্ধ দিবস ও দুগ্ধ সপ্তাহ ২০২১ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। এদিন সকালে সুসজ্জিত পরিবহণের মাধ্যমে রাজধানীর খামারবাড়ি মোড়সহ অন্যান্য স্থানে জনসচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম, টি-শার্ট বিতরণ ও দুধ খাওয়ানো কর্মসূচি পালন করা হবে। একইদিন বিশ্ব দুগ্ধ দিবস ২০২১ উপলক্ষে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার যৌথ আয়োজনে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।
সূত্রঃ world milkday

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
ব্রেকিং নিউজ২৪.কম :-& ফেসবুক-১ :-& ফেসবুক-২
[email protected]

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জুন, ২০২১ দুপুর ২:২৯

জটিল ভাই বলেছেন:
তাই বলুন। আমি আরো শিরোনাম পড়ছিলাম বিশ্ব যুদ্ধ দিবস =p~

০১ লা জুন, ২০২১ বিকাল ৩:৪৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনি সবার সাথে বিনা কারণে যুদ্ধ বাধিয়ে বসেন!!
যুদ্ধ ছাড়া আপনার মাথায় আর কিছুই আসেনা !!
আমাদের ব্লগের বট বৃক্ষ গাজীসাবকে আপনি
গৃহবন্ধী করে রেখেছেন এটা ঠিক নয়।
অতি দ্রুত তাকে মুক্ত করে দিন,
বেচারা সবার কাছে অনুরোধ
করছেন। আমাকেও বলেছেন
তাকে মুক্ত করে দেবার জন্য্
যেন আমি আপনাকে বলি!
বললাম, এবারকার মতো
ছেড়ে দিন!!

২| ০১ লা জুন, ২০২১ বিকাল ৩:১৪

রাজীব নুর বলেছেন: এবার বলুন খাটি দুধ ঢাকায় কোথায় কোথায় পাওয়া যায়?

০১ লা জুন, ২০২১ বিকাল ৩:৪৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

কিসের খাটি দুধ !! =p~
সেটা না জানলে আপনাকে
সঠিক দুধের সন্ধান কি করে দিবো!!

৩| ০১ লা জুন, ২০২১ বিকাল ৩:৪৭

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: মিল্ক ভিটা পান করে নেবো ক্ষণ ।

০১ লা জুন, ২০২১ বিকাল ৩:৪৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

মিল্ক ভিটা পূর্ণ ননীযুক্ত দুধ নয়!
গরুর খাটি দুধ পেতে হলে গাভী
পালনের বিকল্প নাই সেলিম ভাই!

৪| ০১ লা জুন, ২০২১ বিকাল ৪:১২

সিগনেচার নসিব বলেছেন: ফেইসবুকে সিনিয়র বড় ভাই দুগ্ধ দিবস নিয়ে পোস্ট দিয়েছে।
মন্তব্য’র ঘরে পোলাপানের নানামুখী কথাবার্তায় পুরাই চমৎকৃত। ;)

পেশি নির্মানে দুধ বেশ সহায়তা প্রদান করে।
আপনার পোস্টের তথ্যগুলো মোটামুটি জানা ছিলো।
তারপরও আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

০১ লা জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ সিগনেচার নসিব
জানা থাকা ভালো। ফেসবুক আর ব্লগের কথাবার্তার
ধরণ আলাদা হবে এটাই স্বাভাবিক। ভালো থাকবেন।

৫| ০১ লা জুন, ২০২১ বিকাল ৪:৩৬

জটিল ভাই বলেছেন:
আপনি সবার সাথে বিনা কারণে যুদ্ধ বাধিয়ে বসেন!!
যুদ্ধ ছাড়া আপনার মাথায় আর কিছুই আসেনা !!


আপনার প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে উপর্যুক্ত কথার তেব্র পরতিবাদ জানাচ্চি! আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে পশ্চিমারা তাকে যুদ্ধ বলে ট্যাগ দেয়। হলুদ সাংবাদিকরাও এমন করে। কিন্তু আপনি তাদের হতে আলাদা।

আর আপনার বটবৃক্ষকে ব্লগের মডারেটরসহ সবাই যে আগ্রাসী আচরণের জন্য প্রমাণ দিতে নয়তো ক্ষমা চাইতে বলেছে সেটার আপডেটতো এখনো পেলামনা! আশা করি অচিরেই এটা নিয়ে একটা নিউজ করেবেন যেমনটি এর আগে এখানে করেছেন। =p~

০১ লা জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

যেতেতু তিনি আপনাকে ব্যান তুলে দিতে
অনুরোধ জানিয়েছেন তার মানে তিনি অনুতপ্ত !
সুতরাং ক্ষমা চাওয়ার আবশ্য্কতা আছে কি?
মানি মানুষের মান রক্ষা করা সবার কর্তব্য।

৬| ০১ লা জুন, ২০২১ বিকাল ৪:৫৭

স্প্যানকড বলেছেন: দুগ্ধে বল
দুগ্ধে বাড়ে মনোবল
গাজী সাহেব কে
বলে দিন
দুগ্ধ পানে
সমস্ত কষ্ট হবে মলিন ।

০১ লা জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আসবে শক্তি আসবে বল
দুধ হলে নির্ভেজাল।

৭| ০১ লা জুন, ২০২১ বিকাল ৫:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: খাটি গরুর দুধ।

০১ লা জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

ওহ তাই বলেন !
আমি আবা্র অন্য কিছু
মনে করছিলাম।
খাটি গরুর দুধ সব যায়গাতে
পাবেন তবে্ গরুর খাটি দুধ পেতে হলে
আপনাকে গাভী লালন পালন করতে হবে।

৮| ০১ লা জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১১

চাঁদগাজী বলেছেন:



আমি আপনাকে বলেছিলাম আমার কমেন্ট ব্যান তুলে নিতে উনাকে বলার জন্য, আপনি সময় মতো বলেননি; আমার ইচ্ছা ছিলো উনার সর্বশেষ পোষ্টে কমেন্ট করার। উনি উনার শেষ পোষ্টে এমন কিছু বলছিলেন, যেগুলো উনার আচরণের সাথে মিলে না; সেটা উনাকে বলার জন্য।

আপনি সাঁকো ধরায়ে দিয়েছেন ঠিক মতো।

০১ লা জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

ধীরে বৎস ধীরে !!
এত উতলা হলে কি চলে?
সাঁকো যখন ধরায়ে দিছি
তখন তা দুলবেই।
আপনিও ধরে রাখুন
শক্ত করে না হলে
পড়ে যাবার সম্ভবনা
আছে শতভাগ।

৯| ০১ লা জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৭

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আজিকে মিলক ভিটার দুগ্ধ পান করিতে হইবে।

০১ লা জুন, ২০২১ রাত ১১:৩৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

শুধু আজিকের দিনে নয়
সারা বছরই পান করুন
গরুর কিংবা ছাগীর দুগ্ধ!

১০| ০১ লা জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১১

জটিল ভাই বলেছেন:

০১ লা জুন, ২০২১ রাত ১১:৪৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আমি মনে করেছিলাম
দুষ্ট ছাগল !!

১১| ০১ লা জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৮

চাঁদগাজী বলেছেন:




আপনি যে, সাঁকো ধরায়ে দিচ্ছেন, শেষে আপনি পার হবেন কি করে?

০১ লা জুন, ২০২১ রাত ১১:৪৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনি সাথে থাকলে সাঁকো পার হওয়া
মোটেই কষ্টসাধ্য হবেনা।

১২| ০২ রা জুন, ২০২১ রাত ১:০২

রাজীব নুর বলেছেন: মিরপুর, বনশ্রী খাটি দুধ পাওয়া যায়।

০২ রা জুন, ২০২১ বিকাল ৪:৩৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আমি আপনাকে যা বোঝাতে চেয়েছি
তা বুঝতে পারেননি হয়ত। খাটি গরুর
দুধ পাবেন তবে গরুর খাটি দুধ পাওয়া
খুবই কষ্টকর হবে।

১৩| ০২ রা জুন, ২০২১ রাত ১:২৬

কামাল১৮ বলেছেন: আমাকে ডাক্তার বলেছে পূর্ণ ননীযুক্ত দুধ খাবেন না।

০২ রা জুন, ২০২১ বিকাল ৪:৪০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

এ কথা সবার বেলায় প্রযোজ্য নয়।
বয়সের সাথে অনেক পরিবর্তন
করতে হয় হিসেব নিকেশে।
একসময় লোহাও হজম করতে পারতাম
এখন পূর্ণ ননীযুক্ত দুধ হজম হয়না।
দুধের সরও দূরে সরিয়ে রাখি!

১৪| ০২ রা জুন, ২০২১ সকাল ৯:৫৬

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: আপনি কি খাঁটি দুধ হজম করতে পারেন?

০২ রা জুন, ২০২১ বিকাল ৪:৪২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

খাটি দুধ হজম করতে পারি কোন সমস্যা নাই।
ভেজাল দুধ হলেই সমস্যা দেখা দেয়।
তবে খাটি দুধ ননী ছাড়া কিংবা পাতলা করে
নিলে সমস্যা হয়না। সর উঠিয়ে পান করি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.