নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

চিরায়ত বাংলার প্রাতঃস্মররনীয় কয়েকজন নারী কিংবদন্তি (৩য় পর্ব)

২৫ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১১


আমি কিংবদন্তির কথা বলছি – শিরানমের ছবিটির উদ্ধৃতিটি কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ৯ই আগস্ট গান্ধির নেতৃত্বে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ডাক দেয়। এই আন্দোলনে সর্বস্তরের ভারতবাসীর সঙ্গে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের অসংখ্য নারীরাও সক্রিয়ভাবে শামিল হয়।জাতীয় স্তরে সুচেতা কৃপালনী, নন্দিতা কৃপালানি ও অরুণা আসফ আলির মতো ব্যক্তিত্ব নেতৃত্বে এগিয়ে এসে নারীদের সংগঠিত করে এই আন্দোলনে শামিল করেন। ৭৩ বছর বয়স্কা মাতঙ্গিনি হাজরা যিনি 'গান্ধিবুড়ি' নামে খ্যাত মেদিনীপুরের তমলুক থানা ঘেরাও অভিযানে নেতৃত্ব দিয়ে পুলিশের গুলিতে মৃত্যুবরণ করেন। শান্তিনিকেতনের নন্দিতা কৃপালানি, রানি চন্দ, এলা দত্ত, সুমিতা সেন, শান্তি দাশগুপ্ত প্রমূখ ছাত্রী বীরভূমে ভারতছাড়ো আন্দোলনের প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন ও কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন । আসামের গৃহবধূ ভোগেশ্বরী ফুকননী ভারত ছাড়ো আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। অসমিয়া তরুণী কনকলতা বড়ুয়া, করাচির কিশোরী হেমু কালানি ভারত ছাড়ো আন্দোলনে ব্রিটিশ পুলিশের গুলিতে প্রাণ দেন। ভারত ছাড়ো আন্দোলনে কিংবদন্তি এই সকল নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ভারতের ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনকে সমৃদ্ধ করেছে। আন্দোলনে নারীদের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গান্ধিজি মন্তব্য করেছেন যে,"ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস লেখার সময় নারীদের বীরত্বের কথা সর্বাধিক স্থান দখল করবে ।" তারা প্রতেকেই আমাদের অভিভক্ত বাংলার কিংবদন্তি। তারা আমাদের বাংলার গর্ব। তারা আজ আমাদের মধ্যে জীবিত না থাকলে রয়েছে আমাদের প্রত্যেকের মনের অন্তরে। তার সবাই চিরস্মরণীয়।। এরকমই কয়েকজন মহান নারী কিংবদন্তিদের নিয়ে আমার ৩য় পর্ব।
১ম পর্বের লিংক
২য় পর্বের লিংক

১। ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈঃ
ভারতবর্ষের ইতিহাসে এক উজ্বল নাম রানি লক্ষ্মীবাঈ (Laxmi Bai)। যাঁকে ‘ঝাঁসি কি রানি’ (Jhansi ki Rani) নামেও ডাকা হয়। ভারতীয় ইতিহাসে তাঁর অবদান তুলনাহীন। দেশের অন্যতম মহান মহিলা মুক্তিযোদ্ধা। রানি লক্ষ্মীবাঈ ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করেছিলেন বলে তাঁকে "জোয়ান অফ আর্ক"(Joan of Arc) নামের স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। ১৮২৮ সালের ১৯ নভেম্বর, বারাণসী-তে মারাঠী করাডে ব্রাহ্মণ পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। লক্ষ্মী বাঈ ভারতবর্ষের ইতিহাসে বিপ্লবী নেত্রী হিসেবে চিরস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব হয়ে রয়েছেন। ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৫৭ সালের ভারতীয় বিদ্রোহের অন্যতম প্রতিমূর্তি ও পথিকৃৎ হয়ে রয়েছেন তিনি।
১৮২৮ সালের১৯ নভেম্বর, বারাণসী-তে মারাঠী করাডে ব্রাহ্মণ পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর পিতার নাম মরুপান্ত তাম্বে এবং মাতা ভাগীরথী বাঈ। ছোটবেলায় তাঁর প্রকৃত নাম ছিল মণিকর্ণিকা তাম্বে। কিন্তু, তাঁকে সবাই ভালবেসে ডাকত 'মনু' বলে। তাঁর যখন মাত্র চার বছর বয়স, তখন তাঁর মা মারা যান। তারপর, তিনি বিথুরে চলে আসেন, সেখানে তাঁর পিতা দ্বিতীয় পেশোয়া বাজিরাওয়ের অধীনে কাজ করতেন। পেশোয়া মনু-কে বেশ পছন্দ করতেন এবং তিনি তাঁর ছেলে নানা সাহেবের সঙ্গে যেরকম ব্যবহার করতেন মনুর সাথেও সেরকমই আচরণ করতেন। মনু তাঁর বয়সী বাচ্চাদের থেকে বেশ আলাদা ছিলেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত স্বাধীন এবং ঘোড়া চালানো, মার্শাল আর্ট, তরোয়াল চালানো, বিভিন্ন খেলাধুলা এবং অ্যাডভেঞ্চারের সাথে যুক্ত থাকতেন। ১৮৪২ সালে তিনি ঝাঁসীর মহারাজা গঙ্গাধর রাও নিওয়াকরের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পরই তার নতুন নামকরণ হয় 'রানি লক্ষ্মীবাঈ', যা 'ঝাঁসীর রানি' হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ১৮৫১ সালে তাঁদের একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। নাম রাখা হয় দামোদর রাও। চার মাস পর সন্তানটি মারা যায়। পুত্র শোক ভুলতে রাজা এবং রাণী উভয়েই আনন্দ রাওকে দত্তক নেন। আনন্দ রাও ছিলেন গঙ্গাধর রাওয়ের জেঠতুতো ভাইয়ের ছেলে। তাঁর নাম রাখেন দামোদর রাও। বিবাহের পরেও, তিনি খেলাধূলার প্রতি তার আগ্রহ ত্যাগ করেননি। তিনি মেয়েদের নিয়ে একটি বাহিনী গড়ে তুলেছিলেন। তাদের ঘোড়া চালানো, তরোয়াল চালানো সহ যুদ্ধের সমস্ত রকম দক্ষতার প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। মন্দিরে যাওয়ার সময়, তিনি ঘোড়ায় চড়ে যেতেন। ঝাঁসীর মহারাজা গঙ্গাধর রাও ২১ নভেম্বর, ১৮৫৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর তাঁর দত্তক পুত্রকে তাঁর উত্তরাধিকারী হিসেবে মেনে নেয়নি। কোম্পানি জানিয়েছিল, ঝাঁসীর সিংহাসনে প্রকৃত উত্তরাধিকারী নেই, ঝাঁসীকে কোম্পানীর নিয়ন্ত্রণাধীনে নেওয়া হবে। এর উত্তরে রানী জানিয়েছিলেন, তিনি তাঁর ঝাঁসী কখনোই দিতে রাজি নন। ১৮৫৪ সালে ঝাঁসীর রানির নামে বার্ষিক ৬০,০০০ ভারতীয় রূপি ভাতা হিসেবে মঞ্জুর করা হয় এবং ঝাঁসীর কেল্লা পরিত্যাগ করার জন্য হুকুম জারি করা হয়। ১৮৫৮ সালে রানী লক্ষ্মী বাই তাঁর সশস্ত্র বাহিনীকে নিয়ে ব্রিটিশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।ব্রিটিশরা যেহেতু প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত ছিল, তাই রানী তাঁর দুর্গটি রক্ষা করতে পারেননি। ব্রিটিশ বাহিনী তাঁর শহরে প্রবেশ করে প্রাসাদের দিকে রওনা হয়। এক রাতে দুর্গের দেয়াল থেকে সন্তানসহ লাফ দিয়ে লক্ষ্মী বাঈ প্রাণরক্ষা করেন। আনন্দ রাওকে সাথে নিয়ে রানি তাঁর বাহিনী সহ কাল্পীতে যান। সেখানে তিনি অন্যান্য বিদ্রোহী বাহিনীর সাথে যোগ দেন। তাতিয়া তোপের নেতৃত্বেও একটি বিদ্রোহী দল ছিল।এরপর, রানী লক্ষ্মী বাঈ এবং তাঁতিয়া তোপি গোয়ালিয়রের দিকে রওনা দেন। গোয়ালিয়র কেল্লা দখল করেন রানী লক্ষ্মী বাঈ এবং তাঁতিয়া তোপি-র সম্মিলিত বাহিনী। রানী পুনরায় ব্রিটিশ আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নেতৃত্ব দেন। তবে, তাঁরা আবার ব্রিটিশ বাহিনীর কাছে হেরে যান। ১৮৫৮ সালের ১৭ জুন, ফুল বাগ এলাকার কাছাকাছি কোটাহ-কি সেরাইয়ে রাজকীয় বাহিনীর সাথে যুদ্ধ চালিয়ে শহীদ হন রানী।

২। মাতঙ্গিনী হাজরাঃ
মাতঙ্গিনী হাজরা ছিলেন মেদিনীপুরের এক মহীয়সী বীরাঙ্গনা৷ ১৮ বছর বয়সে বিধবা হলেও দেশের প্রতি তাঁর ছিল নিবিড় ভালোবাসা৷ কংগ্রেসের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে তাঁকে কয়েকবার কারাদণ্ডও ভোগ করতে হয়৷ ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে আগষ্ট আন্দোলনে মেদিনীপুরে এক বিরাট মিছিলের সর্বাগ্রে তিনি জাতীয় পতাকা হাতে নেতৃত্ব দেন৷ মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় পুলিশের গুলি লাগা সত্ত্বেও তিনি জাতীয় পতাকা ভূমিস্থ হতে দেননি৷ অবশেষে পুলিশের আরেকটি গুলির আঘাতে বন্দেমাতরম উচ্চারণের মাধ্যমে ভারতমাতার কোলে লুটিয়ে পড়েন এই বীরাঙ্গনা।

৩। লাবণ্যপ্রভা দত্তঃ
লাবণ্যপ্রভা দত্ত ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিকন্যা। জমিদার বাড়ির মেয়ে ছিলেন তিনি, তাই বিভিন্ন অন্যায় দেখে ছোট থেকে প্রতিবাদী হয়েছেন। অগ্রজ সুরেন্দ্রনাথ রায়ের কাছে রাজনৈতিক কর্মে অনুপ্রেরণা পান। ৯ বছর বয়সে খুলনার যতীন্দ্রনাথ দত্তের সঙ্গে বিবাহ হয়। ১৯০৬ খ্ৰী. স্বদেশী যুগে তিনি স্বদেশী দ্রব্য ব্যবহার করতেন এবং স্বদেশী ছেলেদের অর্থ দিয়ে সাহায্য করতেন। ২৩ বছর বয়সে বিধবা হয়ে বহুদিন পুরী ও নবদ্বীপে কাটান। ১৯২৯ খ্রী. লাহোর জেলে যতীন দাসের মৃত্যুর ঘটনায় আবার তিনি দেশসেবার কাজে এগিয়ে আসেন। ১৯৩০-১৯৩২ সালে লাবণ্যপ্রভা দেবী আইন অমান্য আন্দোলনে যোগদান করেন। আইন অমান্য আন্দোলনে তাঁর ১৮ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড হয়। প্রেসিডেন্সী জেলের ভিতর ফিমেল ওয়ার্ডে বিধবাদের নিজেদের রান্না করে খাবার অধিকার পাবার জন্য ঐ জেলে ১৪ দিন অনশন করে সফল হন। কন্যা বিপ্লবী শোভারানি দত্তের সহায়তায় ‘আনন্দমঠ’ সামাজিক প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেন। পাঁচবছর লাবণ্যপ্রভা দত্ত প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটির সভানেত্রী ছিলেন। ১৯৭১ সালে ৬ জুন তি্নি মারা যান।

৪। বীণা দাস ভৌমিকঃ
১৯৮৬ সালের ২৬ ডিসেম্বর। হরিদ্বারে গঙ্গার ঘাটে এক অজ্ঞাতপরিচয় বয়স্কা মহিলার দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। সংবাদপত্রেও খবরটি উঠেছিল। পরে অজ্ঞাতনামা নারীর পরিচয় জানা গিয়েছিল। সেই নারী ছিলেন বীণা দাস।
বীণা দাস ১৯১১ সালে ২৪ আগস্ট পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরে জন্মগ্রহণ করেন। তাদের আদি বাড়ি ছিল চট্টগ্রাম। তার পিতা ছিলেন ব্রাহ্মসমাজী পন্ডিত ও দেশপ্রেমিক বেণী মাধব দাস ও মাতার নাম সরলা দাস। তার দিদি ছিলেন বিপ্লবী কল্যাণী দাস। পিতার আদর্শে প্রভাবিত হয়ে রাজনীতিতে যোগ দেন।তিনি যে তার দেশপ্রেম, আদর্শবাদ, দৃঢ় সংকল্প, উদার চিন্তাভাবনা তার পরিবার থেকেই লাভ করেছিলেন-তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। ছোটবেলা থেকে তিনি ছিলেন শান্ত প্রকৃতির। কবি ও দার্শনিক মনের অধিকারী বীণা দাস সময়ের উত্তাল হাওয়ায় পরিণত হন অগ্নিকন্যায়।
তার পিতা বেণী মাধব দাসের কথা তার ছাত্র নেতাজী সুভাষ বোস তার ‘ভারত পথিক’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন এবং কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেছেন-বেণী মাধব দাসকে, যিনি কিশোর সুভাষের মনে একটি স্থায়ী আসন গড়ে নিতে পেরেছিলেন। এমনকী, স্বাধীনতা সংগ্রামকে আরও জোরদার করার লক্ষ্যে ভারত ত্যাগ করার পূর্বে নেতাজী সুভাষ বোস, বেণী মাধবের আশীর্বাদ নিতে তার সঙ্গে দেখা করেন। বেণীমাধব তাকে আশীর্বাদ করেন হৃদয়-উৎসারিত শুভকামনায়। বীণা দাসের স্বামী ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামে নিবেদিতপ্রাণ যতীশ ভৌমিক।‘ছাত্রী সংঘ’ ও সুভাষচন্দ্রের সাথে পরিচয় ছিল তাঁর৷ বি.এ ডিগ্রি নেবার সময় কনভেকশন হলে তিনি যে দুঃসাহসিক কাজ করেন, তার জন্য ৯ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করেন৷ ১৯৩২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েল সমাবর্তন অনুষ্ঠান। প্রধান অতিথি বাংলার গভর্ণর স্ট্যানলি জ্যাকসন। সমাবর্তন অনুষ্ঠান চলে। গভর্নর যখন সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তব্য শুরু করছেন তখন গাউনপরা বিশ-একুশ বছরের এক মেয়ে উঠে দাঁড়িয়ে মঞ্চের দিকে অগ্রসর হয়। গুলি চালায় জ্যাকসনকে লক্ষ্য করে। আত্মরক্ষার্থে স্টানলি জ্যাকসন মাটিতে পড়ে যান। অল্পের জন্য লক্ষ্য ভ্রষ্ট হয়। গভর্ণর ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা তৎক্ষণাৎ দৌড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যায়। সেসময় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দ্দীর পিতা কর্ণেল হাসান সোহরাওয়ার্দ্দী ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তিনি দ্রুত বীণা দাসের হাত থেকে রিভলবারটি কেড়ে নেন। ততক্ষণে বীণার রিভলবার থেকে ৫টি গুলি বেরিয়ে গেছে।
বীণা দাস গভর্নরকে গুলি করার পর আদালতে নির্ভীকচিত্তে জবানবন্দী দেন, ‘আমিই গভর্নরকে গুলি করেছি….আমার উদ্দেশ্য ছিল মৃত্যুবরণ করা, এবং যদি আমাকে মরতে হত, আমি চেয়েছিলাম মহান মৃত্যু.. এই ভারতবর্ষে এই পরিমাণ অন্যায়, অত্যাচার এবং বিদেশি শোষণের মধ্যে গুমরে কাঁদার চাইতে সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে প্রতিবাদ করে জীবন বিসর্জন দেওয়া কী অধিকতর ভাল নয়?’ ১৫ ফেব্রুয়ারি একতরফা বিচারে বীণা দাসের ৯ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। কারাভোগের সময়টুকুতে তাঁকে একেক সময় একেক কারাগারে, একেক স্থানে নিয়ে যাওয়া হত। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলে স্থানান্তরিত হয়ে থাকার পর গান্ধীজির প্রচেষ্টায় অন্যান্য রাজনৈতিক বন্দীর সঙ্গে বীণাও মুক্তি পান। সাত বছর জেলে কাটিয়ে ১৯৩৯-এ তিনি মুক্তি লাভ করেন। ইংরেজদের ত্রাস অগ্নিকন্যার প্রস্থাণ হল অজ্ঞাতে-নিভৃতে।

৫। অ্যানি বেসান্তঃ
অ্যানি বেসান্ত, বিবাহপূর্ব উড একজন প্রাক্তন ব্রিটিশ সমাজতান্ত্রিক, ব্রহ্মজ্ঞানী, নারী অধিকার আন্দোলনকারী, লেখক, বাগ্মী, এবং আইরিশ ও ভারতীয় স্বায়ত্ব শাসনের সমর্থক। তিনি কংগ্রেস যোগদান করে ‘হোমরুল আন্দোলন’ শুরু করেছিলেন। এই আন্দোলন দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে বিশাল জনপ্রিয়তা লাভ করে। ১৮৪৭ সালের ১ অক্টোবর জন্ম বেসান্তের। বুদ্ধধর্ম ও ব্রাহ্মণ্যধর্মের টানে ১৮৯৩ সালে ভারতে আসেন বেসান্ত। মাদ্রাজে থিওসফিজম সোসাইটির বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দেন। ৫ বছর পর প্রতিষ্ঠা করেন সেন্ট্রাল হিন্দু স্কুল। প্রতিষ্ঠা করে হোম রুল। ১৯১৭ সালে প্রতিনিধিত্ব করেন জাতীয় কংগ্রেসের কলকাতা সেশনে। ভারতে আসার আগে ব্রিটেনে মহিলাদের অধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করেছেন তিনি। ক্রিশ্চান ধর্মের সমালোচনা করায় তাকে ছেড়ে যান স্বামী ফ্রাঙ্ক বেসান্ত। এরপরই তিনি ব্রিটেনের সামাজিক পরিবর্তন ও জন্ম নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ন্যাশনাল রিফর্মার নামের একটি সংবাদপত্রের প্রতিষ্ঠা করেন। পরে থিওসফিজম গ্রহণ করেন বেসান্ত। ১৯৩৩ সালে মৃত্যু হয় তার। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এই ইংরেজ নারীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

৬। ভোগেশ্বরী ফুকানানিঃ
ভোগেশ্বরী ফুকানানী ব্রিটিশ রাজকালে ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের কর্মী ছিলেন এবং ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নিয়েছিলেন। তার জন্ম ১৮৮৫ সালে ভারতের নাগাঁওনে এবং মৃত্যু মৃত্যু: ২০ সেপ্টেম্বৰ, ১৯৪২; নগাঁও, অসমে। নগাঁও জিলার স্বাধীনতা সংগ্রামের এক বলিষ্ঠ সংগঠক ছিলেন ভোগেশ্বৰী ফুকননী। ব্রিটিশ খেদাও আন্দোলনে এবং ভারত স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃতে ছিলেন ভোগেশ্বৰী ফুকানানি। অসমে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে 'ভার্ভুজ' নামে বিপ্লবী গণ-কর্মসূচি চালু করেছিলেন ভোগেশ্বরী ফুকানানি। এর জন্য ব্রিটিশরা তাঁকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করেছিল।

৭। মাদাম ভিকাজী রোস্তম কামাঃ
মাদাম কামা ছিলেন একজন বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী, যিনি ভারতের বাইরে ভারতের স্বাধীনতা জন্য সক্রিয় ছিলেন। ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে বোম্বাইয়ের এক পার্সি পরিবারেজন্মগ্রহণ করা মাদাম কামা র প্রকৃত নাম ছিল ভিকাজি রুস্তম কামা। তার পিতার নাম ছিল ভিখাই সোরাব প্যাটেল। তিনি আলেকজান্দ্রা নেটিভ গার্লস ইনস্টিটিউশনে পড়াশোনা করেন। ১৮৮৫ সালে ভিখাজি কামা রুস্তম কামাকে বিবাহ করেছিলেন। তার স্বামী পেশায় আইনজীবী ও ইংরেজপন্থী ছিলেন। ভিখাজী কামা সামাজিক ও জনকল্যাণমূলক কাজে বেশিরভাগ সময় ব্যপ্ত থাকতেন। ভারতের প্রথম জাতীয় পতাকার ডিজাইন করেছিলেন তিনি। লাল, হলুদ, সবুজ এই ত্রিবর্নে রঞ্জিত পতাকার মধ্যে "বন্দেমাতরম" কথাটি লেখা ছিল এবং এই পতাকা ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে জার্মানির স্টুটগার্ট শহরে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সমাজবাদী কংগ্রেসে যোগদান করে উত্তোলন করেন। বিপ্লবী মতবাদ প্রচার এবং ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য অনেক ঐতিহাসিক তাকে "ভারতীয় বিপ্লববাদের জননী" হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি ছিলেন একমাত্র বিদেশে বিপ্লববাদী নায়িকা। ইংল্যান্ডে ‘বন্দেমাতরম’ পত্রিকা সম্পাদন করেন৷ প্রথমে লন্ডন এবং পরে প্যারিস ছিল তার কর্মক্ষেত্র। বিপ্লবী মতবাদ প্রচারের উদ্দেশ্যে প্যারিস থেকে তিনি "বন্দেমাতরম" পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। মাদাম কামা বা ভিকাজী রুস্তম কামা ছিলেন ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী ও বিপ্লবী আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তাকে ভারতীয় বিপ্লববাদের জননী বলা হয়।

(তার কোন ছবি খুঁজে পওয়া যায়নি)
৮। হেমপ্রভা মজুমদারঃ
নোয়াখালীর অগ্নিকন্যা হেমপ্রভা মজুমদার ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিকন্যা। প্রখ্যাত কংগ্রেস নেতা বসন্তকুমার মজুমদারের সহধর্মিনী এবং চিত্র পরিচালক ‍সুশীল মজুমদারের মাতা হেমপ্রভা মজুমদার ছিলেন কুমিল্লার রাজনৈতিক অঙ্গণের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। হেমপ্রভা মজুমদার ১৮৮৮ সালে নোয়াখালীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম গগনচন্দ্র চৌধুরী ও মাতার নাম দিগম্বরী দেবী। বসন্তকুমার মজুমদারের সাথে বিবাহ হয়। স্বামীর আদর্শে প্রভাবিত হয়ে রাজনীতিতে যোগ দেন। তার এক পুত্র তালবাজার কেস-এ পুলিশের গুলিতে মারা যায়। আরেক পুত্র সুশীল মজুমদার চলচ্চিত্রকার।
১৯২১ সালে অসহযোগ আন্দোলনের সময় তিনি কংগ্রেসের সাথে যুক্ত হন। ১৯২১ সালে 'নারী কর্মমন্দির' প্রতিষ্ঠা করেন। হেমপ্রভা মজুমদার ১৯২২ সালেই 'মহিলা কর্মী- সংসদ' নামে একটি কর্মী সংগঠন গঠন করেন। এর আগে তিনি ১৯২১ সালে চাঁদপুর ও গোয়ালন্দ স্টিমার ধর্মঘট চলার সময় স্বামী বসন্তকুমার মজুমদারের পাশে থেকে ধর্মঘটকারীদের এবং আসামের অসহায় চা-বাগান শ্রমিকদের সেবায় আত্মনিয়োগ করেন। এসব কাজ করার কারণে বহুবার তাকে কারাবরণ হয়েছে । ১৯৩০ সালে আইন অমান্য আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। এজন্য জেলে যেতে হয়। এক বছরের জন্য কারারুদ্ধ হন। ১৯৩৭ সালে হেমপ্রভা মজুমদার বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইন সভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৩৯ সালে নেতাজী 'ফরওয়ার্ড ব্লক' গঠন করেন। হেমপ্রভা মজুমদার সেসময় তাতে যুক্ত হন। ১৯৪৪ সালে কলকাতা কর্পোরেশনেরও অল্ডারম্যান নিযুক্ত হয়েছিলেন। হেমপ্রভা মজুমদার ১৯৪৬ সালের ৩১ জানুয়ারি মারা যান।স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি ব্রিটিশ সরকারের রোষানলে পড়ে দীর্ঘদিন কারাবাস করেন। ১৯২১ সালে তিনি কংগ্রেসে যোগদান করেন। তাঁর স্বামী বসন্তকুমার কুমিল্লা জেলার যুগান্তর পার্টি সংগঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।

৯। পার্বতী গিরিঃ
মাত্র ১৬ বছর বয়স থেকেই সক্রিয়ভাবে স্বাধীনতা আন্দোলনে, বিশেষত ভারত ছাড় আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েছিলেন পার্বতী গিরি। ২ বছর কারাবাসের সাজাও ভোগ করেন। স্বাধীনতার পর তিনি বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনের কাজে অংশ নেন। পশ্চিম ওড়িশায় তাঁকে মাদার টেরেসা বলে ডাকা হত।

১০। ভেলু নাচিয়রঃ
শিবগঙ্গা রাজ্যের রাণী ছিলেন, আনু. ১৭৮০–১৭৯০ পর্যন্ত। তিনি প্রথম রানী, যিনি ভারতে ব্রিটিশ উপনিবেশ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। ইংরেজদের হারিয়ে নিজের রাজ্যকে উদ্ধার করেছিলেন রানী ভেলু নাচিয়ার। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা প্রথম রাণী ছিলেন ভেলু নাচিয়র। তিনি তামিলদের কাছে বীরামঙ্গাই (সাহসী নারী) হিসাবে পরিচিত। ব্রিটিশদেরভালরকম নাকালি-চোবানি খাইয়েছিলেন তিনি। রামনাথপুরমের এই প্রাক্তন রাজকুমারী সিপাহী বিদ্রোহেরও আগে ব্রিটিশ শাসনের বিরোধিতা করেছিলেন। রানী ভেলু নাচিয়ার ভারতের ইতিহাসে প্রথম যোদ্ধা যিনি মানব বোমার ব্যাবহার করেছিলেন। ইংরেজদের সর্বনাশ করতে রানী ভেলু নাচিয়ার মানব বোমার ব্যাবহার করেছিলেন এবং ইংরেজ সেনাকে পরাস্ত করেছিলেন। রানী ভেলু নাচিয়ার একমাত্র যোদ্ধা ছিলেন যিনি ইংরেজদের থেকে নিজের রাজ্যকে ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিলেন। রানী ভেলু নাচিয়ারের এই মহান ইতিহাস তৈরির পেছনে যার সবথেকে বড়ো হাত ছিল তিনি হলেন কমান্ডার কুয়িলি (Kuyili)। বলা হয়, রানী ভেলু নাচিয়ার ও কুয়েলির মধ্যে সম্পর্ক ছিল মা ও মেয়ের মতো। রানীকে আক্রমন করার অর্থ ছিল কামান্ডোর কুয়েলির সাহসিকতাকে চ্যালেঞ্জ করা। নিজের বাহুবল ও যুদ্ধকলাকে কাজে লাগিয়ে কুয়িলি বহুবার রানির প্রাণ রক্ষা করেছিলেন এবং ভিরামাঙ্গাই উপাধি পেয়েছিলেন। যার অর্থ ছিল বীর নারী। শিবগঙ্গাই রাজ্যকে পুনরুদ্ধার করার জন্য রানী ভেলু নাচিয়ারের নেতৃত্বে তৈরি করা হয়েছিল সেনা যার সেনাপতি ছিলেন কুয়েলি। রাজ্যকে বর্বর অসভ্য ইংরেজদের গোলামী থেকে বের করতে কুয়েলি রানিমার নেতৃত্বে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা নেয়। বে ব্রিটিশদের হারানোর জন্য সবথেকে বড়ো কাজ ছিল তাদের অস্ত্রগার ধ্বংস করা। অস্ত্রগার করা হয়েছিল এক দুর্গকে, যেখানে পুরুষদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। কুয়েলি রাজ্যকে বাঁচানোর জন্য বিশেষ সেনার নির্মাণ করে। অন্যদিকে নিজেকে মানব বোমা করে ব্রিটিশদের অস্ত্রগার উড়িয়ে দেওয়ার সিধান্ত নেয়। যেমন সিধান্ত সেই মতো শুরু হয় কাজ। বিজয়া দশমীর দিন কুয়েলি নিজের শরীরে তেল ও ঘি মেখে নিয়ে প্রবেশ করে অস্ত্রগারে। সেখানেই নিজেকে মানব বোমা তৈরি করে তথা নিজের শাড়িতে আগুন লাগিয়ে ছাপিয়ে পরে গোলা বারুদের উপর। যার পরেই নিমেষের মধ্যে কুয়েলির বলিদানের মধ্যে দিয়ে ধ্বংস হয়ে যায় অস্ত্রগার। অন্যদিকে রানিমার সেনা ইংরেজদের উপর আক্রমন হেনে রাজ্যকে পুনরুদ্ধার করেন। লক্ষণীয় রানী ভেলু নাচিয়ার একমাত্র রানি ছিলেন যিনি নিজের রাজ্যকে ইংরেজদের থেকে ছিনিয়ে আনতে পেরেছিলেন। তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় এই যে, ভারতের ইতিহাসে এই মহান বীরাঙ্গনাদের কাহিনীকে লুপ্ত করে দেওয়া হয়েছে।
সূত্রঃ উইকিপিডিয়া

সম্পাদনাঃ নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
ব্রেকিং নিউজ২৪.কম :-& ফেসবুক-১ :-& ফেসবুক-২
[email protected]

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩৭

চাঁদগাজী বলেছেন:



ভারতীয়রা পেছনে ফিরে তাকায় না।

২৫ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১১:০৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আমরা কি তাকাই আমাদের পিছনের দিকে ?
সম্ভবত না ! আমরা পিছনের কথা মনেও রাখিনা।

২| ২৫ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৮

আল-ইকরাম বলেছেন: নূরু ভাই, আপনার তথ্য নির্ভর পোস্ট গুলো যে অনেক গবেষণার ফসল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ইতিহাস আর ঐতিহ্য থেকে আমরা অনেক বেশী জানতে ও শিখতে পারি। শুভ কামনা আপনার জন্য। আমার ব্লগে এসে একটি নতুন লেখা পড়ার নিমন্ত্রণ রইল। ভাল থাকুন।

২৫ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১১:১১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

অনেক তথ্য আমি বিভিন্ন যায়গা থেকে র্সংগ্রহ করে
সংযোজন করছি। সব সূত্র উল্লেখ করতে গেলে
তা মূল বিষয় থেকে দূরে নিয়ে যাবে। তাই যাদের
সূত্র আবশ্যক তারা উইকিপিডিয়া থেকে খুঁজে নিক।
আপনাকে ধন্যবাদ লেখাটি পাঠ করার জন্য।
আপনার আমন্ত্রণের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ২৫ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:০০

কামাল১৮ বলেছেন: ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ নিশ্চয় উইকিপিডিয়া থেকে নেন নাই।মনে করিয়ে দেয়ার পরেও কোথাথেকে নিয়েছেন স্বীকার করেন নাই।

২৫ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:১০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

হায়রে মহা পণ্ডিত !! আপনার চোখ ওখানেই আটকে থাকলো !
আমিতো কিংবদন্তিদের কথাই বলছি !! ওই লাইনটি কোথা থেকে
নেওয়া হয়েছে তা বোধ হয় সামু ব্লগের কারো অজানা নয়!
ছবিটিতে আমি কিছু সম্পাদনা করেছি দেখতে পাচ্ছেন বোধ হয়।
এটার কি কপি রাইট লাগবে আপনার ! হেডলাইনে না থেকে
বিষয়বস্তুর দিকে মনোনিবেশ করুন। ছিদ্র অন্বেষণ করে যাত্রা
নাস্তি করা কি খুবই আবশ্যক!!

৪| ২৫ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:২৬

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: ৯ ও ১০ নম্বর ব্যক্তি দুজন আমার কাছে নুতন লাগলো।

২৫ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১১:১২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আমিও খুবই কম জানতাম এদের সম্পর্কে
তবে ইতিহাস ঘাটতে গিয়ে এদের সন্ধান
পেয়েছি যা পাঠকের সামনে তুলে ধরলাম।
সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

৫| ২৫ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:৫৩

ঊণকৌটী বলেছেন: ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে ,আপনার এই সিরিজ লেখা শুরু করার জন্য নুতন করে স্মরণ করছি ইতিহাসের স্বাধীনতা সংগ্রামী দের, দেশের ওই স্বাধীনতার সংগ্রাম এর ইতিহাসের পাতায় যারা নেতৃত্বে ছিলেন তাদের কথায় বেশি আসে পুস্তকে বাঙালি মারাঠি,পাঞ্জাবী দের কিন্তু অন্যান্য অনামি সংগ্রামী সেই সময়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা আধুনিক না থাকায় বিশেষ করে দক্ষিণ ভারতের ভাষা প্রতিকূলতার জন্য অনেক কিছুই অজানা ছিলো, আপনি রানী নাচিয়ার কথা লিখেছেন সেটা তামিল সিনেমার মাধ্যমে জানতে পারি আসলে আস্তে আস্তে সবার কথাই উঠে আসবে গণ মাধ্যমে এর দ্বারা আজকের দিনে গণ মাধ্যম খুবই শক্তিশালী কোনো অনামি স্বাধীনতার যোদ্ধা বাধ পড়বেন না আশা রাখি, আপনার স্বাধীনতার যোদ্ধা দের নিয়ে লেখা চলুক আরেকটা কথা আজাদ হিন্দ বাহিনীতে একটা ব্রিগেড ছিলো নারী দের নিয়ে রাণী লক্ষ্মী Lakshmi বাই অনুকরণে jhanshi বাহিনী তখনকার সময়ে চিন্তায় করা যায় না এবং এই বাহিনী ইংরেজ দের সাথে যুদ্ধ করতে করতে rengun হয়ে মণিপুর এসে স্বাধীন ভারতের পতাকা উত্তোলন করেন

২৫ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১১:২১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ঊণকৌটী আপনাকে ধন্যবাদ চমৎকান মন্তব্যে
উৎসাহিত করার জন্য।
অসমীয় বীর ভোগেশ্বরী ফুকনানীর কথা
জানতামই না যে তিনি ব্রিটিশ খেদাও
আন্দোলনের বলিষ্ঠ সংগঠক ছিলেন।
বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যাওয়া
এসব বীর একসময় আলোয়
ফিরে আসবে অন্ধকারের
বুক চিরে।

৬| ২৫ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:০৫

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: ১ম জন ছাড়া সবগুলো আমার কাছে নতুন। তথ্যবহুল পোস্ট। বৃটিশ বিরুধী আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা আছে। আপনার পোস্ট তার প্রামান্য দলিল হয়ে থাকলো।

২৫ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৩০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনাকে ধন্যবাদ আনোয়ার ভাই।
অনেক নাম না জানা বীর শহীদেদের
রক্তের বিনিময়ে আজ আমরা স্বাধীন
দেশের নাগরিক। যাদের আত্মত্যাগে
আজ আমরা স্বাধীনতার স্বাদ পাচ্ছি
তাদের কৃতজ্ঞাতার সাথে স্মরণ করা
আমাদের পবিত্র দায়িত্ব।

৭| ২৬ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ৭:৩০

সোহানী বলেছেন: ঝাঁসির রানীর সাথে প্রীতিলতার অংশের কপি পেস্ট হয়ে আছে ঠিক করে দিবেন।

ভালো লাগলো এমন পরিচিতি।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৩৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

প্রীতিলতার কথা এখানে আলোচনায়
আসেনাই আপু !

৮| ২৬ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ৯:২৩

বিজন রয় বলেছেন: খুব ভাল পোস্ট।

আজকালকার ছেলেমেয়েরা এনাদের নামই জানেনা।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৩৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

কথা সত্য !!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.