![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কোন এক অজানার পথে চলেছি ভেলায় চড়ে । যেদিন ভেলা ছিন্ন হয়ে যাবে, বুকে টেনে নেব স্বচ্ছ সলিল ধারা । যতদিন ভেসে আছি, উপভোগ করে যাবো দুকূলের সৌন্দর্য ।
তখন আমি নতুন নতুন ফেসবুক চালানো শুরু করেছিলাম।
সে সময়ে ফেসবুকে যতগুলো ফিমেইল আইডি দেখা যেত এর সত্তর ভাগই ছিল ভুয়া। চালাক ছেলেরা মেয়ের নাম দিয়ে আইডি খুলে ফেসবুকিং করতো। আর বেকুব ছেলেরা এসব ভুয়া আইডিতে এড হয়ে তাদের সাথে প্রেম করার ব্যর্থ চেষ্টা করতো।
সেই সময়টিতে আমার ফ্রেন্ডলিস্টে পরিচিত কোন মেয়ে ছাড়া অপরিচিত কোন মেয়ে আইডিকে মোটেও এড করতাম না। কিন্তু যে কোন ভাবেই হোক, পুরো অচেনা একটা লোককে আমি এড করেছিলাম। তার আইডি নাম ছিল এঞ্জেল সোনিয়া, প্রোফাইলে বোরকা পরা এক মেয়ের ছবি। বোরকার মাঝে দুটো সুন্দর চোখ যেন আমার দিকে তাকিয়ে থাকতো। প্রথম প্রথম তার লিঙ্গ নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ থাকলেও পরে শিউর হয়েছিলাম এইটা অরিজিনাল মহিলা।
সে সময় মোবাইল ফোনে ফেসবুক চ্যাটিং এখনকার সময়ের মতো এতো আরামদায়ক ছিল না। একটা মেসেজ সেন্ট করলে সেটার রিপ্লাই এর জন্য কমপক্ষে দুই মিনিট বসে থাকতে হতো।
এমন কষ্টকর চ্যাটিং এর যুগে মেয়েটার সাথে আমার মোটামুটি খাতির জমে গেল। প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে মেয়েটার সাথে কিছু মেসেজ চালাচালি হতো।
একদিন রাতের বেলা হঠাত বোরকা পরা মেয়েটি স্ট্যাটাস দিল, "বিদায় ফেসবুক। আর কখনো ফেসবুক চালাবো না, আজই হয়ত ফেসবুকে আমার শেষ দিন।"
এই স্ট্যাটাস দেখে আমি হতবাক হয়ে গেলাম। আহা, মেয়েটা কেন এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে? আমি মেসেজ দিলাম, কেন চলে যাচ্ছেন ফেসবুক ছেড়ে? ফেসবুকের অনেক উপকারিতা আছে, এখানে ভালো টাইম পাস করা যায়।
মেয়েটি ডিরেক্ট বলে দিল, দুঃখিত, আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছি। আর আসবো না।
আমি মেয়েটার সাথে প্রেম ট্রেম না করেও কেমন যেন বিরহের ব্যথা অনুভব করে উঠলাম। ইস, কেন মেয়েটা এমন সিদ্ধান্ত নিল। প্রতিদিন আমি ঘুমানোর আগে তার সাথে কি সুন্দর সময় কাটাতাম, এখন আমার কি হবে? তাকে ছাড়া আমার ঘুম আসবে? মেয়েটার প্রতি যে আমার এতো টান ছিল, মেয়েটা ফেসবুক না ছাড়ার ঘোষণা না দিলে কখনো জানতেই পারতাম না। আহা, মেয়েটা না থাকলে আমার ফেসবুকিং করে কি লাভ! আমিও হয়তো আর ফেসবুকে আসবো না।
পরদিন বিকেলে ফেসবুকে ঢুকে দেখি চ্যাটলিস্টে তার নাম জ্বলজ্বল করে শোভা পাচ্ছে। কিরে, এই মেয়ে তো আর কখনো ফেসবুকে আসবে না, এখন তার নাম দেখা যায় কেমনে?
আমি মেসেজ দিলাম, মনে করেছিলাম সত্যিই আর ফেসবুকে আসবেন না।
অনতিবিলম্বে সে রিপ্লাই দিল, আসবো না তো। আমার দুলাভাই বিদেশ থেকে বললেন ফেসবুকে আমি যেন উনাকে আমার ভাগিনার একটা ছবি দিই, সেই ছবিটা সেন্ড করার জন্যই ফেসবুকে ঢুকেছি। ছবি সেন্ড হওয়া কমপ্লিট হওয়া মাত্র বের হয়ে যাবো।
তারপর তার সাথে আমার আবার চ্যাটিং চলতে থাকে। দিন যায়, সপ্তাহ যায়, মাস যায়।
প্রায় মাসখানেক পর বোরকা পরা মেয়েটি আবার স্ট্যাটাস দিল, "অনেক ভাবনা চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমি আসলে ফেসবুকের যোগ্য নই। বেহায়ার মতো ফেসবুক চালানো উচিৎ নয়। আর কখনো ফেসবুকে আসবো না।"
আমি সেদিনও খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। কিন্তু মনে মনে কেন যেন বিশ্বাস হচ্ছিল না। আমার মনে হচ্ছিল মেয়েটা ফেসবুক ছেড়ে থাকতে পারবে না, সে অবশ্যই আবার ফিরে আসবে।
চব্বিশ ঘন্টা যাবার আগেই আমার ধারণা সত্য প্রমাণ হলো। পরদিন বিকেলেই মেয়েটা আবার অনলাইনে এসে গেলো।
এবার আর জিজ্ঞেস করলাম না, কেন সে চলে গিয়েছিল, কেনই বা ফিরে এলো। সে ফিরে আসায় আমি বরং খুশি, অন্তত ওর সাথে দিনের শেষ আলাপটা সারা যায়।
প্রতিদিন একটু একটু আলাপ করতে করতে মেয়েটার সাথে আমার বেশ ভালো সম্পর্ক হয়ে গেলো। ততদিনে আমি ওর আসল নাম ঠিকানা ইত্যাদি জেনে গেলাম।
একদিন কোন এক কারণে আমার মন মেজাজ ভালো ছিল না। ফেসবুকে ঢুকে দেখি মেয়েটা স্ট্যাটাস দিল, kal amar vaginar cool kamea our deka takea obak holam, ou ato cute (কাল আমার ভাগিনার চুল কামিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে অবাক হলাম, ও এতো কিউট!)
সে যুগে সবাই ইংরেজি বর্ণ দিয়ে এরকম পোস্ট দিত। পোস্টগুলোর ভাবার্থ হাস্যকর হয়ে গেলেও সবাই এগুলোকে ইউজুয়াল ব্যপার হিসেবেই নিত। কাজেই মেয়েটার ভাগিনার এই পোস্ট ছিল স্বাভাবিক একটা ব্যপার। কিন্তু আমার খুব রাগ লাগলো। মেসেজ দিলাম, এই বেকুব মহিলা, ফেসবুকে এসব কি লিখেছেন?
সে রিপ্লাই দিল, আপনি আমাকে এভাবে কথা বললেন কেন?
আমার রাগ কমলো না, পালটা মেসেজ দিলাম- আপনি না কি কলেজে পড়েন, আপনি এটাও জানেন না vagina অর্থ কি! ডিকশনারি খুলে দেখেন। তারপর বুঝবেন।
কিছুক্ষণ পর ভাগিনার স্ট্যাটাস ডিলিট করে মেয়েটা নতুন স্ট্যাটাস দিল- "বিদায় ফেসবুক। এখানে কেউ আমাকে বুঝে না। আর কোনদিন ফেসবুকে আসবো না। কোনদিনও না। ভালো থাকবেন সবাই।"
আমি ভাবছিলাম কমেন্ট করবো, আপনি ফেসবুকে আর আসবেন না এটা আমি তো দূরে থাক আমার বাপেও বিশ্বাস করবে না। এমনকি আমার কবরবাসি দাদাও এতোদিনে বুঝে গেছে আপনি আগামীকাল সন্ধ্যার আগেই আবার ফিরে আসবেন।
২৯ শে মার্চ, ২০২২ রাত ৮:৪৪
নাজিম সৌরভ বলেছেন: কোনক্রমে যদি তার ভাগিনার সাথে আমার ছবি ভাইরাল হয়ে পড়তো, আমি লজ্জায় আর ফেসবুকে আসতাম না।
ভালোই হত, আমার প্রচুর টাইম বাঁচত।
২| ২৯ শে মার্চ, ২০২২ রাত ৮:৪১
সোনাগাজী বলেছেন:
বাংগালী তরুণ-তরুণরা যেইহারে মিথ্যুক, ইহা ভয়ংকর ব্যাপার!
২৯ শে মার্চ, ২০২২ রাত ৮:৪৮
নাজিম সৌরভ বলেছেন: মোবাইল ফোন, ফেসবুক, টিকটক ইত্যাদি প্রযুক্তি এইসব তরুণদের আরও বেশি বেশি ছ্যাঁচড়ামি এবং মিথ্যাবাদীতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
৩| ২৯ শে মার্চ, ২০২২ রাত ৮:৫২
সোনাগাজী বলেছেন:
টেকনোলোজী হচ্ছে মানুষের কল্যাণে আমাদের জাতির মানুষ ইহাকে অসৎভাবে ব্যবহার করছে।
২৯ শে মার্চ, ২০২২ রাত ৯:৩৭
নাজিম সৌরভ বলেছেন: শিক্ষার দ্বারা জাতির উন্নতি হবার কথা, উচ্চ শিক্ষা পেয়ে এই জাতির একটি অংশ দুর্নীতিবাজ হয়ে গেলো।
টেকনোলজি দ্বারা জাতি উপকৃত হবার কথা, উপকৃত হবার সাথে সমানে অপকারও পাচ্ছে।
ভালো জিনিস ভালো ফল আনছে না, যাবো কোথায়?
৪| ২৯ শে মার্চ, ২০২২ রাত ১০:১৩
রাজীব নুর বলেছেন: ফেসবুক বাঙ্গালীদের মুখোশ খুলে ইচ্ছে।
৩০ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ৯:৪৬
নাজিম সৌরভ বলেছেন: সুন্দর মুখোশের আড়ালে কত যে অসুন্দর অবয়ব।
৫| ২৯ শে মার্চ, ২০২২ রাত ১০:৩৬
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: 'ভাগিনা'র স্টেটাস নিয়ে বেশকিছু ভালগার জোক হয়েছিল ফেইসবুকের আদিম যুগে, যার কিছু জোক এই ব্লগেও পড়েছিলুম।
যাই হোক, যে চলে যাবার হে গেছে, তারে নিয়া কান্নাকাটি কইরা আপনি নিজে আবার ব্লগ ছাইড়া দিয়েন না। এ জীবনে এরকম ঘডনা আমার জীবনেও যে ঘডে নাই তা জোর দিয়া বলিলাম না
তবে আপনার লেখাটা বিরহবেদনায় ভরপুর একটা সার্থক ট্রাজেডি নাটক হইছে
৩০ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ৯:৫৭
নাজিম সৌরভ বলেছেন: এই রকম অল্প স্বল্প ট্রাজেডি ফেসবুকে প্রচুর ঘটেছে! শুরুর দিকে লোকজন এসব নিয়া বিরহে কাতর হয়ে যাইতো, এখন ফেসবুক এতো বেশি ডাইনামিক হয়ে গেছে, ফেসবুকিং করতে করতে কুল পায় না, বিরহ অনুভব করার টাইম কই?
৬| ৩০ শে মার্চ, ২০২২ ভোর ৫:২৪
নেওয়াজ আলি বলেছেন: ছবির মেয়েটা হলে ফেসবুক ছেড়ে ভালো করেছে
৩০ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ১০:০৬
নাজিম সৌরভ বলেছেন: ছবির মেয়ে ফেসবুক ছাড়ে নাই, এখন সে মোবাইলের পাশাপাশি ল্যাপটপেও ফেসবুক চালানোর চেষ্টা করছে।
৭| ৩০ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ১০:৩০
অধীতি বলেছেন: হা হা হা। ওই সময় বলতাম, এখন নাকি টাকলা মুরাদ/ মুরাদ টাকলীয় ভাষা নামে ডাকে।
৩০ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ১:৩২
নাজিম সৌরভ বলেছেন: অভ্র এর কল্যাণে মুরাদ টাকলা হারিয়ে যাচ্ছে। আগে যারা টাকলা ভাষা লিখতো তারা এখন অভ্র দিয়ে প্রচুর ভুল বানান সহকারে সোন্দর সোন্দর লেখা লিখে ফেসবুক ফাটিয়ে দেয়।
৮| ৩০ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ১০:৪৪
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: মেয়ে আইডি দেখলেই প্রেম উথলে উঠে কেন?
৩০ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ১:৩৬
নাজিম সৌরভ বলেছেন: যে যুবক সমকামী নয়, যে যুবকের পুরুষত্ব আছে, সে নারী দেখলেই আকৃষ্ট হবে। নারীর চুল, নারীর হাত, নারীর ফেসবুক আইডি যাই দেখুক ওর প্রেম উঠলে উঠাই স্বাভাবিক। আর যার মাঝে নারীর কোন জিনিস দেখেও প্রেম জাগবে না সে তো একটা নপুংসক!
৯| ৩০ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:৩৯
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: আপনারো চিন্তার সমস্যা আছে; মেয়ে দেখলে পুরুষ জেগে উঠবে সেটাই স্বাভাবিক কিন্তু সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করাই হেলো একজন সত্যিকারের পুরুষের কাজ।
৩০ শে মার্চ, ২০২২ রাত ৮:০২
নাজিম সৌরভ বলেছেন: চমৎকার চিন্তা আপনার। আপনার থেকে আসল পুরুষের সংজ্ঞা জানতে পারলেন।
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে মার্চ, ২০২২ রাত ৮:২৯
জটিল ভাই বলেছেন:
আপনি ফেইক আইডির পাল্লায় পরিয়াছিলেন। ভাগ্যিস তাবিজে কাজ হইছে। নয়তো সেই আইডি'র স্ট্যাটাসগুলো আপনাকে দিতে হতো