নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিমূর্ত!

অন্ধকার; মৃত নাসপাতিটির মতন নীরব'

ফাহাদ চৌধুরী

মেঘ কোকিলের শহরে আমি সিসিফাস

ফাহাদ চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

কবিতা

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৮:২০

জ্যোতির্মিতি







তুমি আলোর উপসর্গ । তোমার ছায়াপথে ধিকিধিকি জ্যোতি

উষ্ণ আবেগের ফিনিক ফোটায় । আমি তোমার হেমাভ অরোরা

পোহাই, আলোকিত হই । পরিসীমায় মেঘাবচ্ছিন্ন একটা হাওয়া

তোমার সাথে বেমানান, সেখানে তামাদী হয়ে পড়ে পরিমিতি ।



তুমি রাতকে জিম্মি করে আকাশের পুনর্লিখন দাবী করেছিলে,

আমি বিপথগামী তারাদের বলেছি, তোমার জন্য গান গাইতে-

ওরা রেবতীর কাছাকাছি এগিয়ে আসে, শোনায় নক্ষত্রগীত;

ফলে, অলকানন্দা গাগনিক মুঘলদের সলিল সমাধী হয়ে উঠে না ।



তুমি তখন বিপুল নীল, পাখি-সন্ত্রাস মুক্ত এই নক্ষত্রবীথিতলে

একলা কাকতাড়ুয়া । উল্কাপাতহীন চোখে একদল পরিতৃপ্ত হাঁসের

জলকেলী, দেহের শামিয়ানায় উড়ে চকখড়ির কসমিক উল্কি ।

আর আমি অভিকর্ষপ্রবণ তোমার কক্ষপথে, সময়ের কাস্তেতে

কাটি শুন্যতার ফসল আর বুনে চলি তারার বীজ ।



====





শূন্যতার গান







তোমরা বলেছিলে, নক্ষত্র বাগিচায় ঢুকে পড়া বোতামফুল আর এক ঝাঁক নাক্ষত্রিক ভ্রমরের গল্পকথা । শুনেছি প্রতিটি তারাই মৌলিক সুরে অস্তিত্বের গান গায় । তারাদের কোলে নিরব গ্রহের কোলাহল বাড়ে দিব্য ঐকতানে । চোখ উড়ে যায় হাঁসুলী চাঁদের দেশ পেরিয়ে নক্ষত্রসমাবেশে । আমি দেখি, ওরা মোহন ভ্রমনরত গ্রহদের শোনায় মধুর সেরেনেড ।



একনিবিষ্ট ঘূর্ণয়মান আঁধারের পেয়ালায় রুপালী চকলেট লিকারে দৈবনীল তারাফুল আর স্বপ্নচুর্ন মিশিয়ে দিলে মিটিমিটি বুদবুদ হয়ে উঠে মুছে যাওয়া সব স্মৃতিকনা । আমি চুমুক দেই, আমি অবলীঢ় হই কসমিক আঁধারে । আমার চিবুক বেয়ে নেমে আসে প্রগাঢ় এক আকাশগঙ্গা । ঐ দুগ্ধবৃত্তপথ আলোর রিবনে মোড়ান রুপালী চকলেট মুদ্রার গোপন গুপ্তধন ।



মখমল রাতে কিছু মেঘের আনাগোনা, আকাশে চেয়ে দ্যাখো, শুনতে কি পাও সে মধুসুর, সান্ধ্য সংগীত । তোমার সুর আজও প্রতিধ্বনিত হয় আমার কব্জির আঁধারে, মাথার ভিতর তুড়ি বাজায় শুন্যতার জ্বরগ্রস্থ দুইটা কসমিক আঙুল । তোমরা ভেবেছিলে নীলোপল কিছু সন্তশুভ্রতা মিটমিট জ্বলে জামিরা আঁধারের ঘুর্নাবর্তে আর আমি বলি, অরুণোপল কিছু সম্ভাবনা শুন্যতার বিবরে ধিকিধিকি মুছে যায় ।





====









অরণ্যে



বজরায় চেপে পাড়ি দিচ্ছি অরণ্যের থৈ থৈ সবুজ আঁধার । হিমরোদ থেকে জলের গভীরে আরো জলে ঢুকে পড়েছে একটা জলপাই সবুজ কাছিম ।



প্রতিটা তরুলতাই এখানে জোয়ারভাটার গল্প বলে, গান বাঁধে নতুন ঋতুর, ফিসফিসিয়ে বলে যায় যায় ঝিনুকসুপ্ত নির্জ্ঞানবাণী । সবুজের এই দপ্তরে চুনট সময়ের সুতোর বুননে শাখাপ্রশাখা মেলেছে কত পুরাণ ও কত রুপকথার নকশিকথা ।



মনের জানালার ফুলকেয়ারীতে স্মৃতিরা বুনেছিল বীজ । ডুবন্ত অরুণের নরোম কিরণ মুছে যেতে থাকলে মিটিমিটি উকি দেয় বয়াম বন্দী জোনাকী । ডুমুর ও ছাতিমের অরণ্যে নেমে আসা আবলুস আঁধার তখন জ্বলতে শুরু করে জলন্ত কয়লার মত ।



আমি নোঙর ফেলি পল্লববিতানের নিচে । দূর থেকে আমার বজরাই তখন যেন এক নিভুনিভু জোনাক । উপরে উড়ছে চাঁদের প্লেন । প্রত্যাশার বিবিধ রাশভারী তারাদের বুকপকেটে পুরে নিয়ে আমি ফিরে আসি ।



=====

















আসক্তি



রৌদ্রচিঠি নিয়ে প্রজাপতিটা উড়ে যেত জঠর থেকে, কখনো কখনো নাচতো আনমনে । তুমি ছিড়ে ফেলেছিলে রুপকথার সেই প্রজাপতির ডানা । হারিয়ে উড়ালপথের অধিকার, ছেঁড়া ডানার নিশ্চল প্রজাপতি মোচড় দিয়ে উঠে জঠরে ।



আমার চোখের পাতা আঁকড়ে ধরে মরফিয়াস । মৌতাতী সময়ে মাথার ভিতর করোটির দেয়াল বেয়ে আঁধার পথ পাড়ি দেয় ঘুম । কালশিরা পড়া হাতের জমিন এবড়ো থেবড়ো করে নদী বয়ে যায় । এই নদীর গল্প সমান্তরাল, বাঁকহীন ।



কণ্ঠ ধোয়া এসিড বৃষ্টিতে ভিজে যায় আমার ইনস্যানিটি শহরের পাতালপুরী । গোধুলীর বাসনা গুলো হত্যা করেছে মাঝ রাতের চুমুগুলোকে । মনসরণী এখন বেনিয়াদের পদচারনায় মুখরিত ।







====











কখনো বেলুন ফিয়েস্তা দেখি নাই,

প্যারাসুটে চেপে উড়ে যাই নাই সূর্যগন্ধি মেঘের দেশে ।

আমার বন্দর কখনই হয় নাই জাহাজ শুন্য,

সাগরচিলের ডানার ছায়ায় ভেষে পাড়ি দেই নাই সমুদ্রনীল ।

আমার কোন পাসপোর্ট নেই,

কাউন্টারে লাইনে দাড়িয়ে কাটি নাই কোন টিকিট ।



আমার আছে শুধুই মনের ডানা ।





=================





আপেল ও চাঁদ



আপেলের কাঁচাঘুমের প্রলম্বিত সীবন সিঁধে মধ্যযামের সুচেতনা

নীল-নির্জনতায় চন্দ্রবালিকার নাকে রুপালী ফুল, কানে ঝুমকোদুল



বালুকাবেলার টিকিট কেটে আলো ছড়ায় জলভ্রমনে, ডাঁসা আপেলের

লেবুপাতা ঠোঁটে চন্দ্রবালিকা হাসে, নির্লিপ্ততায় ভাষে উপল-কালো

লেগুনে ।



সোমত্ত বালিকা তখন বধু-চাঁদ, শরতশুভ্র আরক্তিম আপেল এক,

ঝিঁঝিঁ পোকাদের গল্পকথায় অনায়াস নিশ্বাস, ঝলমল আকাশে উড়ে

চাঁদের ফানুষ ।



টিকিট চেকিংয়ে আসে ভোর-পাখিরা, সূর্যদীপ্তির আড়ালে চাঁদ

তখন কেবলই হুইসপার, জলের বুকে ডুবে-ভাষে অমৃতার স্রোত ।

ব্রহ্মক্ষনে নিস্পত্র আপেলের শীতঘুম স্বপ্নবাজের কল্পচোখে আনে

গাঢ়তর ঝিম ।



একই চাঁদ পৃথিবীর পরে হারায়ে ফিরে বারেবার, পরাজয়ের

অভিকর্ষে নিঃসার আপেল খুঁজে পায় সবুজাভ-লাল প্রত্যুত্তর









========



জ্বলন্ত চাঁদ ও আদিম বেলাভুমি



মানব শরীর রোদের কাছে সমার্পিত বেলাভুমি এক, বন্য

বাতাস থেকে জন্ম নিয়েছে যে সমুদ্র তার বালুকা বেলার

অমথিত পথে লেপ্টে থাকে প্রবালের গাঢ় গন্ধ, কুয়াশার

রক্তরাঙা সাঁঝের মায়ায় সেখানে আদিম অন্ধকার নামে



মাছ-মুখো সুতনু আরক্তিম জ্যোতি এক, ঢেউয়ের পর ঢেউ খেলে

খোপার অন্ধকারের সমান বয়সী মদ্যপ স্রোতে, তাদের রমনীয়

সবুজ বাসনা ছড়িয়ে পড়ে । মধ্যযামের চুনট সময়ে জ্বলে

সোমত্ত চাঁদ, নখের দিগন্তে ম্যানিকিউর হতে থাকে প্রতিদিন ।



বালিয়াড়িতে গলে যায় নিরালোক চোখ কিংবা মেঘজর্জরিত ঠোঁট,

ঝড়-বিদ্ধস্ত বাতিঘর আলোহীন, অধঃক্ষেপনের উৎসবে সামিল

শিশির । লবনাক্ত ত্বকে উর্বরতার বীজ বুনে দোদুল্যমান জাহাজ

ফেনীল ঢেউজলে চেপে চলে যায়, শৈলান্তরীপের নির্জনতা ছেড়ে ।







=====













ডাঁস সংক্রান্ত



ডোবার ব্যাঙের বেসুর-সংগতির পাঠোদ্ধারে

একটা অর্কেষ্ট্রা -লড়ে যাচ্ছে গ্লাডিয়েটরের মত ।

শুরুতেই পাঠোদ্ধারের অসম্ভাব্যতা বিস্ফোরিত হয়

ক্যাকোফনির অনুনাসিকতায় । স্বরলিপি জুড়ে

মন্দানিল স্থিতি । আলো-আঁধারীর মসপিট থেকে

উড়ে আসে একটা ডাঁশ, বাদকদলের রোষ্টারে

প্রবেশ করে কোরাসমাস্টার । বেপরোয়া নাচে

তীক্ষ্ণ চোয়াল । গান গায় অসন্তষে, লঘু পরিহাসে ।

তুমুল ঝড়ে মাতে ঐকবাদনদল । সুর উঠে যায়

চড়ায় - সরোদ আর মৃদঙ্গের তীব্র সংঘাতে ।

কন্সার্ট হল কাঁপে অনুনাদে । পুনরাবৃত্ত সুর ম্রিয়মান-

ভেষে যায় মসৃন, নীল আকাশে । শঙ্খচিলে ডানায়

মুদ্রিত থাকে ক্লান্ত বাতাসের অশ্রুত রুপকথা ।



=====







কল্পবিহ্বলতা





দিঘির কালোজলে ডুবসাঁতারে অংশুমালী ছড়িয়েছে

আদ্রবিভা, যথারীতি । কাঠমালতীর ঝোপ পেরিয়ে

বেগুনী সন্ধার মাসকারাঘন নয়নে গোলাপী আভা

ছুঁয়ে যায় । গলির মোড় থেকে পৌষের সন্ধার

ফ্যাকাশে চাঁদটাকে অন্যান্য দিনের মত চোখের রেকাবে

পুরে নিয়ে ঘরে ফিরে আসি । অদীপ সন্ধ্যাসুরে

তখন দীপক রাগিণীর প্রথম ধুয়ো ।



কখনো এইসব দৃশ্যের মাঝামাঝি আমি তুমি পাশাপাশি

কিংবা কখনো তুমি আমি ইতস্তত । আমাদের এই

আশ্চর্য পারস্পারিকতার পিলসুজে অযথাই জেগে থাকে

সেঁজুতি, আরাত্রিক । কখনো চলিঞ্চু ফানুশের আলোছায়া

মিলিয়ে যায় আনমনা মেঘদলে, অচেনা এক অনধিকারে ।



আমাদের ভ্রমনিবাশের দেয়াল কেঁপে কেঁপে উঠে ।

আকাশের চাঁদোয়ায় মাথা গুঁজে থাকি বেভুল উপাস্যে ।

গহীন রাতারণ্যে দেবতারা পথ হারিয়ে ফেললে

রচনা করি আমাদের ব্যক্তিগত পুরান । নির্জন দেবদারু

আর আমলকি বনের আলোছায়ায় আমি অদেখাকে খুঁজি ।

আর বালুকাবেলায় খুঁজি ঝিনুকসুপ্ত নির্জ্ঞান ।



আমাদের সান্ধকালীন বিবিক্ত বোধগুলো অলীক দোলনায়

দুলে দুলে খুঁজে নেয় মেঘমল্লার সুর । অপ্রতিসম প্রশ্নগুলো

খুঁজে পায় হাওয়ার কন্ঠস্বর । নৈশব্দ্যের পাঠশালায়

নেমে আসে নির্ঘুম জোছনা যেভাবে আঙুলের চুড়ায়

নৃত্যচ্ছন্দে ডুবে থাকে ব্যালেরিনা । এভাবেই অপ্রাসঙ্গিক

কিংবা ব্যক্তিগত কল্পবিহ্বলতার এলোমেলো চুর আমাকে

টান মারে, অকারন । মদালস্যে ডুবিয়ে দেয় অহর্নিশি ।











===================















বৈকালিক অসুখ



মেঘরক্তিম আকাশে গুমোট বিকেল মৃত নাসপাতির মত

নিষ্প্রভ । এইসব বেওয়ারিশ বিকেলে মৃতমরুর পথে পথে

অজশ্র পাথরকুচি নৈবক্তিক কিছু একাকিত্ব নিয়ে পড়ে থাকে,

নির্জনতায় একটা ক্ষ্যাপাটে হলকা দিয়ে যায় গনগনে সুর্য ।



এইসব অপরাহ্নের কোলে অবারিত থাকে ছায়াদের মত প্রলম্বিত

বৈকালিক অসুখ । আহত সময়ের প্রতি সিকিভাগ কাটে

অস্থির ভেতরের অস্থিরতায় । অপ্রেমের পারাবারে নেমে আসে

গোলাপঝড়ের সতর্কসংকেত ।



তোমাকে খুঁজি সুর্যপ্রয়ানের কাছাকাছি । খুলে যায় গোপনে

কব্জির অলস কপাট । হাওয়ায় ভেষে আসে প্রয়াত প্রায় রোদ,

সর্বশেষ কিছু তপ্ত সময় । আনখমস্তক খুঁজে তলিয়ে যাই

নাভির ভর্টেক্সে, কল্পক্রাচে পাড়ি দিই এই হরিদ্রনগর ।



তোমার চপল চোখের ভ্রুকুটিতে অস্থির সময়ের চৌকাঠে হোচঁট

পাই, চিলের ছায়ার নিচে হারিয়ে যায় সোনালী গোধূমের মাঠ ।

শুধুমাত্র ঐ নীলের স্যানাটোরিয়ামে এক টুকরো সবুজের মাঝে

আজও জেগে আছে ব্যাধিহীন এক সুর্যচক্র ।



১১-১১-১২















ফুটনোটঃ উপরের পেইন্টিংটা স্পেনের কাতালান শহরের একজন বিখ্যাত গোঁফোওয়ালা madman এর। হিটলার আর স্টালিনের মৃত্যুর পর পৃথিবীর গোঁফসাম্রাজ্যের শুন্যতায় একটা সুররিয়াল প্রলেপ দিয়েছিলেন সেই পাগল। লোরকা আর বুনুয়েলের সাথে ছিল দারুন বন্ধুত্ব । তার পাগলত্ব নিয়ে তিনি নিজেই বলেছেন "There is only one difference between a madman and me. The madman thinks he is sane. I know I am mad.”পাগলের পুরো নাম সালভাদর ডোমিঙ্গ ফিলিপে জাসিন্টো দালি ই ডোমেনেচ, সঙক্ষেপে সালভাদর দালি



দালির ‘পারসিসটেন্স অফ মেমোরি ’তে ছিল ‘মেলটিং ওয়াচ’ । এই পেইন্টিংটা থেকে আমার একটা কবিতা আছে । পরে উপরের ছবিটাতে দেখলাম ‘সফট ওয়াচ’ । ছবির নাম Wounded Soft Watch, ১৯৭৪। মাথায় ছিল ম্যালাদিন । দালি কি ভেবে এঁকেছিলেন জানি না, তবে আমার ভাবনায় পেইন্টিং টার মুলসুর ‘বৈকালিক অসুখ’ ।



======================













অক্টোবর ও অন্যান্য



















০১



পোড়াবাড়িতে



ক্লান্ত জানালার কানাতে উদাসীন বাতাস ঝুলে আছে, রাইটার্স ব্লকের মত নিস্ফলা; কালিঝুলি মাখা ভাঙা সাঁড়শিটা একবার খোলে আবার বন্ধ হয়, ডাকিনীর জাদুর কাঠির হেলানে ।



জীর্ণশীর্ণ ঘরটা যেন গার্হস্হ্য শুন্যতার এক পোর্টফলিও । সেখানে ধুলিধুসর তৈজস বন্দী কিছু নৈমিত্তিক স্মৃতির হিষ্টরিয়া, খসে পড়েছে বোধের পলেস্তরায়, লেপটে আছে বেঢপ কিছু বিষণ্নতা ।



আসবেনা আর ডাকপিয়নের চিঠি, ইতিহাসের শরীরে সময়ের হাতুড়ি ঠুকেছে পেরেক, কালের রেহাননামায় আটকে পড়েছে বন্ধকি স্মৃতির বুদবুদ ।



ফুলগুলো সব হারিয়ে গেছে রুপকথায়, তবুও আজও বিমর্ষ কালো প্রজাপতি চুমুক দিয়ে টেনে নেয় প্রবীণ স্বপ্নের ত্রসরেণু











০২






শরত-হেমন্তে অক্টোবর



অক্টোবরের দিনগুলো শুরু হয় কাঁচাসোনা রোদ আর হলুদ গাদাঁর ঔরসে । প্রতিটি জানালায় সুর্য জেগে উঠে, জানালার ওপাসে জেগে উঠে ফুল, পাখি আর পাতারা । আমার পানে চেয়ে থাকে রঙপুর, তোমার আদ্র চোখের কামনা নিয়ে নীড় বুনে মনোবৃক্ষে ।



উড়ন্ত স্কার্টের ভাঁজে ভাঁজে ভাঙা ভাঙা দৃশ্যেজুড়ে ওড়ে শরতের কিছু মৌলিক অরিগ্যামি, সহশ্র সারস । ধবলমেঘের স্পর্ষপথে নভোলোক থেকে উড়ে আসে শুভ্র কসমিক কপোত, নেমে আসে শান্তির দেবদূত ।



ঝিলের পাড়ে আউশ ক্ষেত, ওপাড়ে কাঁশবন । তৃণাঙ্গনে চলে সবুজের অভিযান । ঐ সুদুরে মৃদুভাষে একপলকা কাঞ্চনজঙ্ঘার মুখ । প্রনয়ভরে পদ্মের ঠোঁটে ভ্রমর আকেঁ চুম্বন । মহুয়ার মাদকতায় গোখরা মাতাল । ফুলেল মলাটে লেগেছে সুর্যাস্তের আগুন । অলক্তরাগ রামধনু রঙ ছড়ায় আকাশের সুনীলে ।



মাঝে মাঝে শীতরাতের মত তোমার ডাক শুনি বসন্তের অন্তর্জগতে । চিলের ডানার ছায়ার মুখসে নেমে আসে মদির সন্ধারাত ।





০৩







জলজ নকটার্ন



সমুদ্রের জলজ সুরে ও ভাষায় কিছু একটা আছে, ঘ্রানহীন আর অস্পর্ষী । আর আছে কিছু সমুদ্রপুরান । গ্রীস্মের সমুদ্র অপেরায় বেলাভুমির জলে পা ডুবিয়ে কবি সেই ভাষা আর সুর উপলব্ধি করে, শঙ্খের জলকন্ঠে কবি শোনে সেইসব সমুদ্র-কিংবদন্তি । ভ্রাম্যমান জলফোয়ারা উজ্জল কানেস্তারার সহজাত প্রবনতায় কেঁপে কেঁপে উঠে ভীরুরাত্রির জলজ বুকে । বৈদূর্য্যের উষা ক্রমশ প্রকট হয়ে আসে । রাতারণ্য উদগিরন করে আঁধারের গিলে ফেলা সবুজ বৃক্ষরাজী । জলের ভিতরে রুপালিনীল আভাও স্পষ্ট হয়ে আসে । মুছে যায় জলজ নকটার্ন ।



ঝিনুকফোটা সাগরের নিঃসঙ্গতার খোলে আঙুরনীল সন্ধিপদীরা ক্রমশ সাম্রাজ্য বিস্তার করে চলে । বিভ্রান্ত মাছের ফ্যাকাশে চোখ তৃণের ফলায় খুঁজে পায় নর্স দেবতার স্পিয়ারগানের ভীতি । পোনা মাছেরা জলের অগভীরে সোনার মত চিকচিক করে, ডানা ঝাপটায় । আবার চাঁদের ডাকে পেসেইডানের ঠোঁটে ফোটে ক্রুর হাসিফুল । বিশাল ঢেউকাঠির জলসিম্ফোনিতে বাজায় ধ্বংসের ঢাকের বাদ্য । নীল সমাধীতে জলরঙস্বপ্ন গুলো বিবর্ন হয়ে যায় । ফিরে আসে জলজ নকটার্ন, বাতাসে প্রতিধ্বনীত হয় লোনা লুলুবে ।







০৪



নিকোটিন নাইটমেয়ার



টায়ারের আর্তনাদ, অকারণ হুইসিলে ভীতসন্ত্রস্ত কালো-ঝুঁটি শালিকটা স্নান অসমাপ্ত রেখে উড়ালপথে মিশে যায় রৌদ্র-ছাযায় ভিতরে । টায়ারটা কালোপথে রেখে গ্যাছে ঋতব্রত নাগরিকতার ছাপ । উড়ে গ্যাছে ঋতিময় শালিক রৌদ্রজামা পড়া নিকোটিনবাতাসের ভেতরে । ধানমন্ডি ৩২ এ সতেরো অক্টোবরের নাগরিক অপরাহ্ন শঙ্খশালিকদের কাছে হয়ে উঠলো একটি নিকোটিন নাইটমেয়ার ।





০৫









বৃষ্টি



মেঘের অডিটোরিয়ামে হয়ে গেলো ভয়ঙ্কর এক লেজার শো । উৎকন্ঠার মেঘ ভেঙ্গে ঢাকের বাদ্য বাজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো অজশ্র তরলসেনা । এরপর প্রতিটি তরলসেনার পৃথিবীর পথে আত্মঘাতমুলক শেষযাত্রা । ঘুমন্ত গাছেরা জেগে উঠলো । রঙিন ছাতাদের নিচে গড়ে উঠলো আমাদের স্বাধীন সাম্রজ্য । আর আমাদের সাম্রাজ্যের বাহিরে নির্লিপ্ত পৃথিবীটা হয়ে উঠলো বৃষ্টিগ্রস্থ ।











০৮



বিষণ্নিনা`কে





বিষণ্নিনা,

তোমার রঙধনুর আলোয়

ঊর্ণা মেঘের আড়াল থেকে আমাকে বিভ্রান্তিতে ফেলে ইশ্বর

রুপালী রিবনে সাজানো তোমার খোপার মেঘ



শার্সি গলে ডুবে গ্যাছে এই বলরুমের আঁধারে

ভীরু ঠোঁটে শুকিয়ে গ্যাছে ফুটন্ত লাল গোলাপ

এখানে থেমে গ্যাছে ট্যাঙ্গো নাচের প্রলয় ।



চোখের পিচকালোয় আকাশের তারাদের মত

পড়ে আছে ভাঙা টুকরো কাঁচ

শ্যাম ঘুঘুর দুপুরাণ্য নিঃপ্রান, নিঝুম

শুয়ে আছে গোলাপী অসুখ, স্বপ্ন আর ঘুম



বিষণ্নিনা,

তোমার গোলাপকপোলে একটা চুমুর স্বাদ

অধরাই রয়ে গ্যালো চিরকাল



নীল চাঁদের সুবাস ক্রমশ ফিকে হয়ে আসে

বেসুরো কোরাসে বাজে নকটার্ন

লাল গোলাপের আভাও মলিন হয়ে যায়



বিষণ্নিনা চেয়ে দ্যাখো,

তোমার অহমের নাকফুলে মৃত পড়ে আছে

একটা মাতাল মধুকর ।



=======









====================













জলডাকাত



কালো চুলে ঝুটি বেঁধে

নৈর্ব্যক্তিক কিছু জলজাহাজে চেপে

জলডাকাতেরা আসে ।

বর্তুল মুখসে মুখ ঢেকে

তারা একে একে নেমে আসে

আমার বাড়ির ছাদে ।

কিছু বনসাই ডাকাত

ছোট ছোট গ্রেনেড হয়ে

ফেঁটে পড়ে সাবলীল উল্লাসে ।

জলডাকাতেরা চলে গেলে

রুপকথার মত

জানালার কাচেঁ নদী জেগে উঠে ।





একটা ঝড়ে ক’ফোঁটা বৃষ্টি থাকে?





=======





মাছি বিষয়ক প্যারানয়া





ঐ দেখো,

মৃত মাছিটার উল্টো লাস কেমন ঝুলছে

মাকড়শার জালে



একদা গুপ্তচরের মত উড়ে বেড়াত চুপিসারে

আমাদের ফিকে দৃষ্টিরেখায়

দালানের চাঁদোয়ার ছায়াছন্নতায়



আমি ওকে গুনগুন করতে দেখেছি

আমাদের বিস্তারিত গোপন



ইশ্বরকে ধন্যবাদ, মাছিটা মরে গ্যাছে



হয়তো হলুদ পাপারাজ্জিদের মত

সে ছড়িয়ে দিত সত্যের বিভ্রম

আমাদের গোপন অভিসার



হে মাছি হন্তারক জনাব মাকড়শা

মধ্যস্থতাকারী হিসাবে আমাদের আন্তরিক ধন্যবাদ গ্রহন করন



====









মনোলগ-১











১/



আমার কন্ঠস্বর





গতকাল রাতে জলভ্রমি মেঘের মত একটা চঞ্চল ছায়া

আমাকে দেখে হেসেছিল ।

এরপর বরফকুচির নিঃশ্বাসের মত মিলিয়ে যায় ধোঁয়াশায় ।

অতপর আমার ঘরে যুদ্ধে পরাজিত বীর সৈন্যের মত

কিছু শীতকনা নেমে আসে,

চওড়া ফ্রেমে ঝুলে থাকে একজন ভ্যানগগ আর

তারকাময় রাত ।



দেয়াল টপকে দালানের কফিনে বেদনাবিলাসী পতঙ্গের মতো

আহত ডানায় উড়ে আসে রাত,

আমি কথা বলি তীক্ষ্ণ দাঁতের আচঁরে ফলের বুকে

ক্রোধের গ্রাফিটিগুলো এঁকে চলা নিশাচদের সাথে,

আমি আহবান করি ঘাসের অন্ধকারে কেটে ফেলা ঝাউবনের প্রতি

তাদের কঙ্কালগুলো সন্ধিগ্ধহাতে হাতছানি দেয় নৈশব্দ্যের অনুনাদে ।

আমাদের ডাষ্টবিনে পড়ে থাকে অবাঞ্চিত কাগজ

আর কাপড়টুকরো, আমাদের ক্ষেতগুলো ক্রমশ শণসূত্রশুন্য;

নিশিকন্যার গন্ধভারাতুর মদির শরীর শ্রান্ত হয়ে আসে,

রুটির যোগানে বিমর্ষ দরজির সেলাইকলে জরুরী তলব করি

পলাতক বাতাস, টর্নেডো আর সাইক্লোনের ।



আমি কথা বলি বিচ্ছিন্নতাকামী মেঘ আর প্রোলেতারিয়েত জোছনার সাথে ।

আমি কথা বলি নপুংসক প্রেমিক আর যৌবনবতী প্রেমিকাদের সাথে ।

আমি কথা বলি সুখপাখি আর বিমর্ষ বেড়ালের সাথে ।

আমি কথা বলি জীবিত আর আনখমস্তক মৃতদের সাথে ।

আমি কথা বলি বরফের মাঝে জেগে উঠা ক্রপোৎকিন আর কালো গোলাপের সাথে ।

আমি কথা বলি গোরখোদক আর আততায়ীদের সাথে ।

আমি কথা বলি ক্লেদজ কুসুম আর শেষ রাতের শিশিরের সাথে ।



আমি কথা বলি আমার প্রেয়সীর সাথে ।

আমি কথা বলি আমার প্রেমিকার সাথে ।

আমি কথা বলি আমার প্রণয়িনীর সাথে ।



রাতের মসৃন ডানা প্রসারিত হয়, আঁধারের তুরপুনে

আরো বিদ্ধ হয় আঁধার, অসার নিশাচর চোখের ফুলকি ছড়িয়ে

নৎসাত করে দেয় আলোর সংগ্রাম;

ছেঁড়া পাতলুন মেঘের বুননে

দ্রোহের পতাকায় উদিত হয় ব্যাকব্রাস করা একজন মায়কোভস্কি;

প্রেমিক-প্রেমিকারা অহোরাত্রি মেতে উঠে জল আর নক্ষত্রের মোহনভ্রমনে,

আমাদের স্বপ্নগুলো পাহারা দেয়

কালো গোঁফো বিড়ালের নীলচোখ আর তীব্র নখর,

অবসায়ক সমুদ্রঢেউ আছড়ে পড়ে পদতলে,

ঝড়-সঞ্জীবিত সাদাফুল থেকে বের হয়ে আসে মাতাল মৌমাছি,

আনমিত সবুজ বিটপপত্রে ফলে জ্যোৎস্না ফসল

আততায়ীর মৃত্যুক্ষুধায় ক্রমশ নিঃশোষিত গোরখাদক নিজেকে প্রশ্ন করে

‘আমার গোরখোদক হবে কে?’



অথচ, তুমি নিরুত্তর!!!













২/





নীলপাখি




একটা নীলপাখি প্রতি রাতেই আসে আমার বিজন মনের আকাশে । রাতপাখির পালক নীল । মনলোভা তার চোখের নীল চাহুনী । কন্ঠে নীল মনোটোন ।



মদের পেয়ালার আবহাওয়াবিদ্যা থেকে আমি পাঠ করি গুমোট নীলমেঘেদের মনস্তত্ত্ব । অথচ বারটেন্ডার কিংবা নৃত্যরতাদের অলক্ষে আমার থেকে যায় আমার নীলপাখি ।



ভোরের শাদা আকাশ থেকে নেমে আসে নীলাভ কুয়াশা, ট্রামলাইন ধরে এগিয়া আসে পরাজিত বীর সৈনিকের মত । নীলপাখি ঢুকে পড়ে পাজরের অবনীল শার্সিতে ।



আমার নীলপাখিটা ইয়েসেনিনের কর্তিত কবজী ভেতর থেকে উড়ে আসে প্রতিদিন । জ্যোৎস্নার নীল হেমলক পান শেষে যে রাতে পাখিটা মরে যাবে সেই রাতই হবে পৃথিবীতে কবিতার শেষরাত











৩/



ইদানিং আমার রাতের খাবার সাদা মদ আর দিনে ঝাঁঝালো শ্যাম্পেন ।









======================





আমার ভীষন মরে যেতে ইচ্ছে করে (জীবনানন্দদাশের ছায়া'কে)





মাঝে মাঝে চলে যেতে ইচ্ছে করে উড়ালপথে,

রোদে পোড়া বাতাসে ভেষে যেতে নীলের অসীমে

মৃত গোলাপের শহর ছেড়ে ডুব যেতে ইচ্ছে হয়

কালো বিড়ালের নীল চোখের ভিতরে ।



হিমচাঁপা সব ঝরে গেলে, ছুঁয়ে ক্লান্ত শিশিরের নম্রতা,

কালো বিড়ালটা আলতো পায়ে ধীরলয়ে হেঁটে যাবে

অন্ধকার করিডোরে, তিমিরের নিওলিথ স্তব্ধতায়

অস্তগামী ফুলেদের সাথে চলে যাব চোখের বিশ্রামে ।



ঝিল পেরিয়ে নেমে আসবে একটা ফিঙে-রঙ সন্ধা,

তৃণাঙ্গনে মুছে গ্যালে মাছরাঙা রঙ, আমি টের পাই

মগজের গারদে ডুকরে উঠে নাক্ষত্রিক বোধ, আমার

শরীরের রাষ্ট্রদ্রোহী নদীরা বিদ্রোহ ঘোষনা করে উঠে ।



আলো থেকে অন্ধকারে যাই, মরফিয়াসের ভাঁটিখানায়

প্রতিনিয়ত তৈরি হয় ঘুমের চোলাই । নদীজল উছলে

উঠলে তরমুজলাল প্লাবনে, আমার ভীষন মরে যেতে

ইচ্ছে করে, দুম করে হারিয়ে যেতে ইচ্ছা করে ।



আমার মুখবিবর ঘুমন্ত মুক্তায় ভরপুর হয়ে উঠলে

চাঁদের ঘড়ি কালো পেন্ডুলামের মত ঝুলে থাকবে

মেঘমন্থর সময়ে, চাঁদহীনতায় নির্লজ্জ্বের মতোন

বেঁচে থাকার চেয়ে নিমজ্জিত হবো কালের ফাঁটল ধরে ।



সেখানে আমার সুর্যরঙিন বোধের শাদা মেঘ গুলো

ভাসতে ভাসতে ব্যাধি গ্রস্থ কালো মেঘ হয়ে যাবে,

আমার মাথার ভিতর-উঠানে দৃশ্যের ল্যাব্রিনিথে

রক্তপ্লাবিত হয়ে পড়ে থাকবে একটা নিক্রপলিস ।









১৪/৩/২০১২





=============











জাদুকর



তার কোন বেঢপ টুপি ছিল না যেখান থেকে বের হয়ে আসবে মায়াবী শাদা খরগোশ কিংবা একগুচ্ছ লাল গোলাপ । তার রুমাল থেকে কখনো জন্ম হতো না শান্তির পায়রা কিংবা বিভ্রমের রঙপেনসিল । উড়ন্ত শিফন স্কার্ফ হয়ে উঠতো না ডানা ঝাপটানো ব্যাকুল কোন ঘুঘু । তবে তাকে আমি জাদুকর বলি ।



জাদুকর লুব্ধকের আলো জ্বেলে ঘোর কালির আঁধারে খুঁজে ফেরে সপ্তর্ষির সাত প্রশ্নের রহস্য । উষরের বুকে শব্দের মায়ায় ফোটাতে পারে নীলপদ্ম । ময়ুরপঙ্খী মেঘে চেপে ঘুরে বেড়ায় রঙধনু রঙে সাজানো স্বপ্নের দেশে । তীক্ষ্ণ দুপুরের পাপিয়া-শব্দ সুরে মুছে দিতে পারে অবসাদ ।



কবিতার জাদু মাছরাঙ্গার মত জ্যোতির্ময়, চোখ ধাঁধানো; ছড়ায় মন্ত্রমুগ্ধতার আলো ।









======





গ্রাফিটি










প্যালেট থেকে দৃশ্যের প্রচ্ছদে মিশিয়ে কল্পনার সাতরঙ

একজন বর্ষীয়ান মৃণ্ময়শিল্পি মেতে উঠেছে সৃষ্টির উল্লাসে



নীলাভ্র কাছিমের খোলে গড়ে তুলছে কুমরেপোকার ঘর

হিমাদ্রীর বুকে লেপটে দিয়েছে আর্দ্র পয়োধর



আঙ্গুলের আঁচড়ে আঁকছে হিমসরের গ্রাফিটি

জলধরের তটে লিখে চলেছে জাদুর অক্ষর



অবেলার পটে ফুটন্ত ম্যাগমার জলকন্ঠ ছড়িয়ে পড়লে

কুম্ভশালায় কলসির ভিতরে

আবারো হারিয়ে যায় ক্যালোরিহীন একটা চীজবল





==========











আজও কিছু নৈরাজ্য রয়ে গেছে এই পৃথিবীতে





১/



ঘড়িকলের কাঁটা নীল জড়তায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে

লঘুগ্রামে বাজছে আমাদের যান্ত্রিক জীবনের মনোটোন

চাকার খাঁজে ক্রমশ জড়িয়ে যাচ্ছে অবসন্নতার ব্লুজ



শিলারের শব্দগুলো নবম সিম্ফোনিতে বসে গেলে

জীবনের উল্লাসে উচ্চগ্রামে উঠে পড়ে

তৃষ্ণার্ত ভায়োলিন,

সোনাটায় বাজে আমাদের অসুখের নীল সিম্ফোনি



আমাদের স্বপ্নসঙ্কুল চোখে রাত্রি নেমে আসে,

ঘুমেরা আরো নির্ঘুম হয়ে উঠে, রীতিবহির্ভুত

ভাবে মরফিয়াস হয়ে উঠে অপেশাদার, উৎকন্ঠাহীন

পাথরের মত চোখ, অপলক

কপট কৌশলে টিকটিক টহল দেয় বিভ্রান্তির কাঁটা

আমাদের মাঝরাতের পানশালায়

ঝুলতে থাকা ঘড়িকলের অনুক্রম স্বগতোক্তিতে

সৃষ্টি হয় জুডাস,

সেখানে কালের অদৃশ্য চক্র ঘোরে শব্দহীন

বরফকুচির নিঃশ্বাসে স্ফটিক পেয়ালায় সৃষ্টি হয় ইশ্বর



আমাদের প্রান্তিক চিন্তগুলো যেন উদ্দিপ্ত ছুরির ফলা

সিনপসিসের লেন ধরে স্বেচ্ছাধীনতায়

অক্সনের গলিপথে পৌছে যায় কপট কৌশলে

অতঃপর ডানাহীন রঙিন প্রজাপতির মত

ভাষতে থাকে শুন্যে











২/



আজও কিছু নৈরাজ্য রয়ে গেছে এই পৃথিবীতে

সেই ছোট্ট পৃথিবীর বসতবাড়ি আমার মানসপটে

উড়ন্ত কিছু ছায়া সেখানে স্বৈরাচারী বিভ্রান্তিতে ভোগে



যে নন্দনকাননে আমার কল্পনারা পাখা মেলে

তার নৈসর্গের মুক্তাশুক্তির নিষ্ক্রিয় অংশীদার

আমার যাপিত জীবন

উরোগামী যে মাকড়শাটা সেই কাননে

নিরিবিলি জাল বুনেছে তা গরোলদগারী



সেখানে আজ প্রায়ই শোনা যায় পাখির কলকাকলী

আর মৌমাছিদের গুঞ্জন

আমি সেই দেবীর আরোধনা করি না যে

বিক্ষিপ্ত রাতের ঘুমঘোরে বারেবারে হানা দেয়



দ্রুতই চোখের পর্দা টেনে দেই, অশুভ ছায়া

বিভ্রান্ত হয়ে ফিরে গেলে নৈসর্গে হানা দেয় তুষারঝড় ।



















=================









সুইসাইড



ওপাড়ের শহর ঢেকে গ্যাছে চিলের ছায়ায়,

গাছগুলো ঢুকে গ্যাছে আকাশের পেটে,

সফেদ বালিপাহাড়ের বুক থেকে

আঙ্গুলে অস্তন্মুখ সুর্যের শেষ স্পর্ষানুভুতি্টুকু নিয়ে

তিনটে সারস উড়ে গ্যালো গোধুলীর বুকে,

সময়ের ভাঁড়ার থেকে ফুরায়ে যাচ্ছে রৌদ্রের তিমির

আর্ত রাত্রিপথে......





নদীজল ঝরে পড়ে বালুচরে সাঝের বেলায়,

তীরে দাড়িয়ে দেখি জলঘরের প্রতি পৃথিবী বন্দী

আমার আমি; জলের মৃদু প্রহারে

ক্রমেই অস্পষ্ট হয়ে যাচ্ছি, জলনীলিমার বুকে আড়াআড়ি

মনে হয় অপবিদ্ধ নদীর মুখ চেয়ে আছে

একটি সপ্রতীভ চুম্বনের প্রত্যাশায়





===================





মুক্তাচাঁদ







পাহাড়ের পিছন থেকে লাফ দিয়ে সামনে এসেছে

হাঁড় সাদা এক চিজবল, আধাঁরমোড়া বাতাসের শরীরে

একে একে ঢুকে পড়ছে তার বিশ্বস্ত রিবনগুলো



বটবৃক্ষের চুড়ায় বিরাট একটা হলুদ মথ

ছড়াচ্ছে গার্হস্থ্য জোছনার বিষ, মনোলিথগুলোর চুড়ায়

ঘু্মাচ্ছে গোলাকার একটা স্নো-ফ্লেক, নীলের সাগরে

ভেষে চলেছে শাদা পালতোলা এক ভুতড়ে জাহাজ



অতপর, শরীরে নীলজামা জড়িয়ে আকাশের ঝিনুক খোলে

আবারো হারিয়ে গ্যালো একটা মুক্তা







==================





স্টপ, রাশ আওয়ার চলছে







০১



অর্ধদগ্ধ চাঁদের ক্যালোরিহীন আলোস্নাত রাস্তায়

ট্রাফিকজ্যামে আটকে ঝিমাচ্ছে

কয়েকটা ক্লান্ত লেডিবাগ,

ধ্যানমগ্ন লেডিবাগ,

নির্বাণকামী লেডিবাগ......



চাকার ছাপে বাঁধাপথে বুকে হেঁটে চলে একঝাক বুনহাঁস

ল্যাম্পপোষ্টের আলোর নিচে ডেকে যাচ্ছে বিরামহীন,

মাথায় ঝিম ধরে আসে মৌমাছির একঘেয়ে গুনগুন,

উর্ণনাভ বরফচোখে স্টিয়ারিং হুইলে জড়িয়ে দিচ্ছে

নিরুত্তাপ মেঘক্রিষ্টাল......



সারিবদ্ধ ত্রিপদী ডাইনোসরগুলো সবুজের অপেক্ষায়

নিরক্ষীয় বলয়ে পালতোলা জাহাজের মত

প্যাডেলের দুই-একটা দুলকি চালে চলে

অস্থিরতার বিবমিষা জাগে টুংটাং মনোটোনে......



০২



যান্ত্রিক সুটকেইস বন্দী মানুষগুলোর আস্তিনজুড়ে

নুয়ে পড়ার বিষাদ,

স্বাদহীন চুইংগামের মত প্রলম্ববিত সময়ে

লোমকুপের ফুটন্ত রেডিয়েটর থেকে ঝরে পড়ে জীবন জ্বালানী,

নিদ্রালু চোখে ফুটপাতে অবসন্ন মানুষগুলো

শামুকের মত পা টেনে টেনে

হেটে যাচ্ছে, জড়সড়......



আঁধারবিধুর ধুম্রমেঘের লাল হলুদের বিভ্রম

ক্রমশ বিস্তৃত হয় চোখের ঘুলঘুলিতে,

উড়ালপথে হারিয়ে যায়

ছায়ালহরী্র ডানাহীন অজশ্র ত্রসরেণু......



লাল আলোর শহরে সান্ধ্যকালীন সিনেমায়

খোলা মেলা দৃশ্যে অংশ নেয় শপিংমলের ম্যানিকিন,

নিয়ন আলোর ক্যাপসুল গুলোতে বন্দী হয়

মৃত জোছনার রুপালী রঙ......



রাতের এই মেট্রোপলিসের কয়েকশত ল্যাম্পপোষ্ট দৈর্ঘ্যে

তখনো রাশ আওয়ার চলছে......







===============







জেগে উঠো বিষণ্ণিনা













নেবুলাস সন্ধার বিমর্ষ পৃথিবী আজ ছিল প্রচন্ড

শৈত্যাক্রান্ত, শববাহকের গাড়ি পৌষের আঁধারে

দিক হারিয়েছে রাতারন্যে, শুনে যাই ম্লানচোখে

কার হিমবেহালা বাজছে, হাড়ের শহরে অলিগলির

রাত্রিপথ ক্রমশ প্লাবিত হয় নীল মদের রুধিরে,

বায়ুকোষে বন্দী টলমল শিশিরের টুপটাপ নৈশব্দ্যে

ভারী হয় ভায়োলিনের আকাশ, নৈশব্দের শরীর

বেয়ে নিসঙ্গ শামুক ক্রমশ হারিয়ে যায় পৌষের

রাতের আধাঁরে, বায়ুকোষের শুন্যতাকে রক্তশুন্য

আঙুলগুলো বেঁধে রাখে চারটি তারে



ক্রমশ ক্ষয়ে যাওয়া চাঁদ পারদের মত ভেষে যায়

দিঘির কালোজলের অস্পর্ষে, শিরিষের ডালে বসে

সন্নাসব্রত পালনে ব্যস্ত দলছুট লক্ষিপ্যাঁচা করে যায়

বিষাদ নিদান, ভেঙে যায় কুয়াশা রাতের নকটার্ন,

আহ, ব্লুজ! কসমিক বেবিসিটার নবম মেঘে বসে

এইসব দেখে যায়, অতলান্তিক ঐশ্বরিক মনোপলি



বিষণ্নিনা,

পিরামিডের নৈশব্দ্য ভেঙে জেগে উঠো মৃত্যুঘুম থেকে













প্রিয় স্বদেশ হাসনাইনের বিষণ্নিনা কবিতায় কমেন্টকৃত ও পরিমার্জিত ।









===========



বিষন্ন রোববার











আঙুলগুলো ক্রমশ রক্তশুন্য, শাদা হয়ে আসে;

মুঠোবদ্ধ তালুর নিচে জমে প্রকট কালো মেঘ,

মখমলের দস্তানা পরিহিত বজ্রমুষ্টির নিচের

মেটাকারপাল যেন ক্রমেই চুর্ন হয়ে যাচ্ছে, যেন

কব্জি চিরে বেরিয়ে আসতে চাইছে লিলিথের

অন্ধকারাচ্ছন্নতা, রাত্রিদানবের অন্তর্বিরোধ;

কালো প্যাঁচার ডাকে এসব নিয়ত স্পষ্ট হয় ।





বিচ্ছিন্নতাবোধে আক্রান্ত নীলাভ শৈবাল গুলোর সাথে

স্তব্ধ নীহারিকাটিও হারিয়ে যায় জলের অতলান্তে,

সপ্তর্ষির ট্রাপিজিয়ামে বন্দী হয় নির্ঘুম জোনাকীরা ।





মৃত্যুবীজ জীবন্ত হয় সবুজ ফুসফুসের অলিগলি

পথে, সাদা পায়রার খোপে সন্ধাপবন বিষাদী মৌতাত

ছড়িয়ে দিলে মেঘের পুরুত্ব মাপি জামিরা আঁধারে,

স্লিপিং পিলেদের ঘুম ভেঙ্গে গেলে করোটির সিমেট্রিতে

জেগে উঠে একান্ত আপন একশ বিলিয়ন নিউরন সেল,

অবাধ্য পিয়ানোতে বিষাদসুরে অঝোরে কাদেঁ

বিষন্ন রোববার







=================











বিপ্রতীপ





দ্বিধাজড়িত অঙ্গুলিশীর্ষের স্পর্ষতায় অবয়ব অনুভুতিশুন্য,

স্পর্শানুভূতিতে অনুপস্থিত শারীরিক সংবেদন,

নিজ অনস্তিত্ত্বের শংকায় আঁতকে উঠি,

প্রতিবিম্বের ছলনায় আতঙ্কিত হই,

রুটি এবং মদে গড়া মাংস ও রক্ত কি সংবেদনহীন হয়ে পড়েছে?



চকচকে দর্পন- হিমশীতল, নিরুত্তাপ, অনুভব করি তার স্বাগতস্পর্ষ,

জমে যাওয়া প্রানহীন হামানদিস্তাও যেন কথা বলছে,

অথচ দর্পনে নিহিত অপরিমেয় প্রনয়ে প্রতিফলিত হয় আত্মপ্রতারণা ও প্রবঞ্চনা,

প্রতিফলক পৃষ্ঠে প্রতিবিম্বের প্রত্যক্ষ উপস্থিতিতে

অনবলোকিত থাকে প্রকট প্রত্যাশা ভ্রমের অবয়ব,

মরুর বুকে যেমন জলের ভ্রম, মরিচিকার দৃষ্টিবিভ্রম,

বিভাজক রেখা পাড়ি দিয়ে কিংবা অদৃশ্যের ঘুলঘুলি গলে ক্ষীণদীপ্ত আলো জ্বলে আর নিভে,

বিমুগ্ধ পাপের ভরকেন্দ্রে চিরআকর্ষন কেন্দ্রীভুত হয় আবারও,

অত্থচ সে শুষ্ক দেহ অস্পর্শিত থেকে যায় যায়,

প্রিয়তার অসূয়া প্রচ্ছায়ায়, মুখোসবন্দী চোখের অনির্বাণ দীপালোক আমি বিস্ময়বিমূঢ়, ভয়ার্ত হই,

যতদুরে যেতে চাই আমার সাথে ততটুকুই দুরত্ববাড়ে,

আয়নাঘরে মুখোসে বন্দী আমার প্রতিবিম্ব ।







====================







ঘুমসময়ের স্বেচ্ছাচারিতা







সিসিফাসচাকতি জ্যোৎস্নায় ডুবে গেলে

আলেয়ার ভিজে ওঠা মাঠে

গলে যাওয়া সময় বিমূর্ত হয় মহাকালের মিউজিয়ামে,

মেঘের বুরুজ ভাঙ্গে

নিমোসিনের বেলোয়ারী স্মৃতির ময়ুর-নীলিমায়

উকিঁ দেয়া বাঁকা চাঁদ কাস্তের অবতলে,

উপচে পড়ে রাত্রি পেয়ালায় সাদা মদ,

কঁচিঘাসের বুকে মৃত্যু-ঘুম আসে নিশুতি জ্যোৎস্না রাতে ।



নিঝুম ঝিঁঝির ঘুমপথের রাত্রি-পারাবার

অদৃশ্য হয় তিমিরের খেয়া, সবুজ অন্ধকার;

সোনালী চিলের ডানায় ভর করে

মেঘের ব্লেডে কেটে যাওয়া পলাতকা রাত্রি-পরবর্তি দৃশ্যগুলো;

অপাপবিদ্ধ আলোর ফুলকি অলকগুচ্ছ বেয়ে নেমে আসে

শব্দবিহীন প্রান্তরে, জ্বরমুখের অনাস্বাদে ।



সোনালী পাহাড়ের নিরুত্তাপ অভ্যার্থনায়,

ভীড় করে পিপড়ার ঝাঁক গলিত সূর্য-ঘড়ির ক্যানভাসে,

মৃত চন্দন-শাঁখায় ক্লান্তিতে নুয়ে পড়ে সময়ের একমুখী প্রক্ষেপক,

সমুদ্রদানবের চোখে কবি খুঁজে ফেরে নিজ প্রতিবিম্ব,

মনের ভিতর যুদ্ধ চলে বোধাতীত ঘুমসময়ের স্বেচ্ছাচারিতায় ।







===============











ব্লাক সোয়ান




আস্তিনের মর্মস্থলে ধারনককৃত হৃদপিন্ডে স্বয়ংপ্রভ সংবেদনগুলো

কথা বলে উঠলে অদৃশ্য মখমল ডানায় অনুভূত অহমের শিহরন,

বাতাসের কক্ষপথে অন্তর্গত ত্রাসের আয়োজন, মঞ্চের কৃষ্ণত্ব

দুরন্ত ব্যালেরিনার মাসকারঘন নয়নে বিলীয়মান ।



বৃত্তচাপগুলো সিফনকাপড়ে মলাটবন্দী, দুপায়ের মুদ্রায়

পৃথিবীকে ছুঁয়ে নির্ভুল উদ্বাহু বলাকার কালোভ্রমরের গুঞ্জনে

ছায়ালোকের আঁধারভ্রমন, যেন প্রলয়ঙ্করী সরোদের মৌনসুরে

জলের সমতলে ভাষমান ব্লাক সোয়ান ।



গ্রীবার উচ্চতায় ব্যক্তিগত ধ্বংসের কুজন, কাঁপানো কণ্ঠস্বরে

অন্তিম সংগীত ছড়িয়ে যায় ছাড়িয়ে তৃণাঙ্গন, ঝিলের ওপাড়ে

সাঁঝের মায়ায় নার্সিসাসের হলুদ হৃদয়ে বাজে ধ্বংসের নিনাদ ।



আকাশবিস্তীর্ণ শূন্যতা নিয়ে ঝিমিয়ে পড়া লাটিমের মত

নৃত্যনাট্যের অন্তিম যবনিকায় নেমে আসে মৃত্যুর পুর্নতা,

প্রসারিত বাহুলতার ক্রিস্টাল মূহুর্ত থমকে যায় কাঁচের বুদবুদে ।



[অনুপ্রেরনা ব্লাক সোয়ান(২০১১) ]







=======









======





মৃত্যু-২



রৌরব পুঁজারী ঘন্টা বাজায় বিধায়কের নির্দেশে,

অশ্বক্ষুরের ক্ষীপ্রতায় বার্তাবাহী দূত প্রবলবেগে ছুটে আসে

জীবনের সবুজ প্রান্তরে, কার্নিশে ঝিমাতে থাকা

কালো বেড়ালের অনুভবে হিমশীতল স্পর্ষ ।



অন্ধকার করিডোরের পথ ধরে আসে

দীর্ঘ হাতলের কাস্তেধারী ঘোড়াসওয়ারী,

রাত বিলাসী বাদুরের ডানার ঝাপটায় অশনি সংকেত ।

মৃতালয়ের ডাক শুনে পূর্ণিমার চাঁদের গ্রাসে

ঘনায় ঘনঘোর অমাবস্যা ।



রক্তফেনামাখা কাস্তের ধারে নিশ্বাষ ফেলে করোটি,

সোনালি বরণ হলুদিয়া পাখি নিড়ে ফিরে গেলে

গোধুলি সন্ধ্যায় রচিত হয় অন্তহীনের উপাখ্যান,

শুয়োপোকা শরীরে কালো পাখনা ধারন করে

জন্ম নেয় কাল প্রজাপতি ।



মৃতমরুর নৈঃশব্দে বালুকনাগুলোর বাঁকাচিত্তের ভাজে ভাজে

লুকিয়ে আছে জীবনের অবসাদ, তার বুকের জমীনে

স্তব্ধতার চাষবাদ ।



=========













লুসিফারিন









নীলকান্তমনি চুর্ন মাখা আকাশের কপালে সাদা ম্যাগনোলিয়ার বিভা

লেপটে গেলে দুধরাজের শ্বেতশুভ্র বুকের জমীনের দীপ্তি ছড়িয়ে পড়ে

শ্রাবনের মেঘগুলোতে, প্রলম্বিত হয় কৃষ্ণধূসরতা, মুছে যেতে থাকে

সৌরচিত্রের ছাপ । পাহাড়বালিকা চামেলীর চোখের মনির সূর্য স্নান

শেষে ধোঁয়াটে ক্ষনগুলোকে গিলে ফেলে মহাকাল । গোধুলীর দিগন্তে

হলুদের খেলা শেষে বিজন মনের আকাশে অঝরে ঝরে বৃষ্টিঘ্রানমাখা

লালরঙের কৃষ্ণচূড়ার ফিঁকে হয়ে আসা অনুভুতিগুলো ।



অতপর, প্রাগৈতিহাসিক অন্ধকারের গন্ধভরা কালকেউটের দেহ বেয়ে

জলগতিতে নেমে আসে সন্ধ্যা । একটা রাতপাখি জলাধার পেরিয়ে

লোকালয়ে এসে কিছুক্ষন জিরিয়ে নেয় । কিছু ভীরু নক্ষত্রের আলো

চোখ মেলে দুধালো বৃত্তপথে । ছায়াপথ ধরে আমি হেঁটে যাই ক্রমেই

নিভে আসা অজশ্র তারার দেশ । এক ফালি চাঁদ মেঘ-মন্থর অন্ধকূপে

ক্রমেই চূর্ণীকৃত হতে থাকে, জামিরা আঁধার যৌবনবতী হয়

আপন আলোয় জাগতিক ক্লেদের যবনিকাতে ।



ইদানিং পৃথিবীকে আলোকিত করতে অপারগ হয়ে পড়া চাঁদ কিংবা সুর্যের স্থান দখল নিয়েছে, জোনাকির শরীরের লুসিফারিন ।











==========







উপদ্রবকারী পতঙ্গ এবং কবিতা



কবিতা পাঠকরা পোকা গুলোকে চেটেপুটে খেতে থাকে,

শিশির বিন্দু শুকিয়ে আসে গোলাপের মখমল পাঁপড়িতে,

পোকা কাটা, কুঁকড়ে যাওয়া গোলাপের ঠোঁটে

মৌমাছি খোঁজে বিলুপ্ত কামজ উত্তাপ,

কবি তাকে গুটিসুটি মেরে বন্দি করে কবিতার খাতায় ।



কবিতার ড্রয়ারগুলো ছিপি আঁটা বোতলের মত সংরক্ষিত,

যদিও কবিতার শস্যাগারে উৎসবে আত্মভূত হয় উপদ্রবকারী পতঙ্গ,

গৃহস্থলির পরিচালনায় অপরিতোষ আর অতৃপ্ততার পরিণতি স্পষ্ট ।



বুক পকেট বিক্ষুব্ধ একবিন্দু জোনাক জোছনা নিয়ে

আধাঁর সমুদ্র সেঁচে চলে কবি প্রাণভোমরার খোঁজে,

নিঃশ্বাস পাক খেতে খেতে আটকে পড়ে হাঙ্গম্যান্স নটে,

আফ্রোদিতির আততায়ী হাসিতে ।



শৈতপ্রবাহ বেড়ে গেলে ড্রয়ারের অন্ধকার তৈজসে দেশলাই ঠুকে

কবি আরোহন করেন বৃক্ষের উচ্চবিভব নির্যাস;

ঝলসে যেতে থাকে রাত্রিযামীনিরা যৌবনবতী চাঁদের আলোয় ।



লৌকিক রীতিতে ডেকে উঠে প্রাপ্তবয়স্ক বুনোকুকুর ।



===











মাশরুম মেঘ





সূর্যাস্তের কাছাকাছি কোন এক রেস্তোরাঁয়

আততায়ীর অতিসুখাবিষ্টতায় গোলাপি মাশরুম পরিবেশিত হলে

অদ্ভুত পাঁপড়ি মেলে বেড়ে উঠে গগনচারী মেঘের প্যারাসুট;

কান্ড বেয়ে নেমে আসে অবাধ্য শর্করা-আমিষ,

অবধারিত ধ্বংসের বীজ ।



মাশরুমের অবগুণ্ঠন উন্মোচন হলে

ল্যাণ্ডস্কেপ জুড়ে বিচরন করে ক্ষীণকায় চতুর্থ ঘোড়ার সওয়ারী,

লম্বা হাতলের কাস্তেধারী সে আততায়ীর প্রজাপতিহনন শেষে

থেমে যায় নর্তকীর ঘুঙ্গু্র;

মুহুর্তেই বর্তুলাকার রক্তমেঘে ছেয়ে যায় আকাশ,

মেঘগুলো ক্রমশ কালো হয়ে এলে নেমে আসে হিমসন্ধ্যা ।



বনসাই পরমানু্র নির্মম রসায়নের বিকিরন ছড়িয়ে পড়লে

স্মোকস্ক্রিনের ক্যামোফ্লেজে কাতরাতে থাকে মানবতা,

পুড়ে যাওয়া দগ্ধদেহ আর মানবিক চোখগুলোতে

ভয়বিহ্বল অবিশ্বাসী আলো,

স্তম্ভিত অনুভুতি;

মৃত্যুর অন্ধকূপে ভুমিস্পর্ষী কান্ডের নিচে

শান্তিকামী গিনিপিগগুলোর

শরীরের সব হাড়ের জ্বলন্ত অঙ্গারে নৃশংস পোড়াগন্ধ ।



মাশরুম আজকাল প্রচন্ড অমানবিক ।





===================





একটি সিজোফ্রেনিক রাতের সাইকোসিস









শুন্যতার তীব্র রোদে তৃষ্ণার্ত কালো প্রজাপতিরা

ঝলসে উঠে নোঙ্গরহীন অন্ধকারে

সলতের পোড়া অংশে আঁধারের হৃৎপিণ্ড হয়ে



গোলাপ টাকে ঠোঁটে বন্দী রেখে কপোতনিশির ঘনফল বাড়ে

উত্তরের হাওয়ায় সময়ের তেতো স্বাদ

রক্তমেঘে গড়ে উঠে মাসরুম

লিলুয়া বাতাসের ঢেউয়ে মেঘতুফানের খেলা



শালুক-শাপলায় ভেসে ভেসে কিংবা ডুবসাঁতারে

গড়ে উঠে বিপন্ন জলপিপির পুরু স্মৃতির মলাট

রাত্রি-নরকে স্রোতস্বীনিতে বহে লোহিত রক্তকল্লোল



পাল গুটিয়ে থমকে গেছে নিদ্রিতা তরী,

মাস্তুল কাঁধে ফেরারী মাঝির আলোকের দুর্বিনীত শিখায়

ভাঙনের নাগরদোলার সরল ছন্দিত স্পন্দন



গ্রামোফোনের গোল চাকতি্জাত বিটফেন-সংকেত

বাতাসের সাইকোডেলিক কল্লোলে,

অদৃশ্য নৈঃশব্দ-কম্পাঙ্ক পাহাড়ের দেয়ালে সরু চিড় ধরায়



পত্রকন্টক বেয়ে চলা সালোকসংশ্লেষনি খনিজ

শীতযাপনের ব্যস্ততা কাটিয়ে

মেরুদন্ডী চোখের পাতার দেহাবয়ব বেয়ে ঝরে পড়ে,

দালানের চাঁদোয়ায় প্রতিচ্ছায়া

শেষ তিথির অনামিশা হয়ে গ্রাস করে



শুকতারার সত্বার অস্থিতে ভর করে

অস্তগত নেত্রপল্লবে

উড়ে যায় বসন্ত বৌরি সুররিয়াল কোন পৃথিবীতে









=================





মনে পড়ে না











মনে পড়ে শেষ বিকালের সোনারঙের পেলবতার স্নিগ্ধ কামুক রোদ । রোদের আভায় গ্লাডিওলাস আর নীল অর্কিডের লতা পেঁচিয়ে বেড়ে উঠা চকবন্দী ফুল-কেয়ারির ধারে স্বেদ-অশ্রু সিক্ত ঘাস-পাতার শরীরের নিবিড় অন্ধকার । জানালার পাশে শিরীষের বর্নীলফুল, মসৃনবাকলের ইউক্যালিপটাস সারি আর অনেক পৌঢ় মহুয়ার গাছে ফোঁটা হালকা ধূসর ফুলের মিষ্টি সুগন্ধ ।



মনে পড়ে শীতের সকালে খেজুরের রস আর শৈশবের সেইসব দুরন্তপনা, মেহগনির ছায়াঘন আড়ালে টিয়ার সবুজ পালক, আর বিড়ালের ঘাতক থাবায় বিক্ষত কবুতরের রক্তাত্ব পালক । মনে পড়ে দুপুরের রোদে মাছরাঙা-মাছের বিষাদান্দের খেলা, শেষ বিকালের নিস্তেজ রৌদ্রে উদাসী গাঙচিল ডানার স্পন্দন । চোখের কোনো ঘূর্ণিজলের ছায়া, কখনো রৌদ্র-ছায়ার খেলা, আবার কখনোবা মেঘ-অশ্রুর মেলা । জীবন যেন অংকের যোজন বিয়োজন খেলা ।



স্মৃতিতে ধরে রেখেছি সেই বাঁদর নাচের পরিহাস, ধূসর কুয়াশায় লবঙ্গ -রসুনের ঝাঁঝালো নির্যাশ, চাঁদের আলোয় প্যাঁচার ডাকে পাংশূ আবেগের নিশ্বাষ । কাঠবেলি দিয়ে তৈরি মালা অথবা চায়ের কাপের প্রান্তে লিপস্টিক চিহ্ন; এসব হয়ত সুররিয়াল কোন প্রাগৈতিহাসিক হলুদ ড্যাফডিল । আর নিয়ন আলোর রাজপথ থেকে শুন্যতার অজানায় অবাক চোখে দেখেছিলাম উদ্ভাসিত লুব্ধক । কাঁচ ঘেরা মঞ্চে ভাবনাগুলো স্বচ্ছ স্মৃতি, ঝিঁঝিঁ ডাকা চন্দ্রমল্লিকার রাতে নির্জন পেঁচার মত ডানা মেলে, শুঁকে যায় অঘ্রাণের ঘ্রানে পুর্ণ নৈস্বর্গিক অন্ধকার ।



মনে পড়ে আশ্বিনের সাদা-কালো পেঁজাতুলোর মত মেঘমালা, আষাঢ়ের কালো মেঘ জ্যোত্স্না শেষে নামায় মত্ত বাদল ধারা আর ঝড় শেষে বিলে-ঝিলে ভাষমান ব্যাঙের উল্টো মৃতদেহ ।





শুধু মনে পড়ে না

তোমায়, তোমাকে ।








===========================



ইনসমনিয়াক শুধু সাক্ষী হয়ে থাকে পাপের











শহরের নাম ইনসমনিয়া



বিনাশী নীল ছোবলের অনশনবন্দি স্বপ্নশহরে

নিদ্রাহীন রাত কাটে নোঙ্গরহীন নৈশব্দ্যে ।

নির্ঘুম নিশিথের ক্লোরোফর্ম স্মৃতির শিশির-পলি

জমে একস্টিকের ফ্রেডে অথবা এ্যাসট্রের জমিনে,

বিস্মৃতি ঘুরপাক খায় একই বৃত্তের কেন্দ্রে ।

অনিদ্রায় ভুগছে শহর-নাম তার ইনসমনিয়া ।





ফুটপাতে পড়ে থাকে সৎকারহীন কুকুর



শেষ বিকালে যান্ত্রিক শহরে অভূক্ত নেড়ী কুকুরটাকে

পিশে ফেলেছিল সমগ্র বাংলাদেশ পাঁচটন ।

শোকাহত সূর্য ডুবে গোধুলীর অশ্লীল লালে

গভীর হয় কুমারী কাকজ্যোৎস্না-রাত ।

চাঁদের অকৃপন রূপোর থালা ঝরায়

বাধভাঙা প্রলেতারিয়েত জোৎস্না ।

আর নগর কবিরা সব ব্যস্ত হয় চাঁদের জরায়ুর খোঁজে ।

শূভ্র চাঁদের আলোয় স্নাত শহরে নেই কি কোন কবি

ফুটপাতে পড়ে থাকা মৃত কুকুরটির অন্তত সৎকারের ব্যবস্থা করতে ?



আরশোলার অভিযোজন



জীবনন্দের জ্যামিতিক উপস্থানায় ব্যস্ত সুররিয়ালিষ্ট কবি,

ইতিহাসপাঠে ঋদ্ধ সে কবি সময়ের ক্রম বিবর্তনে

আজ পুঁজিবাদী সমাজের মনোরঞ্জন সওদাগর ।

আরশোলা মত টিকে থাকাই একমাত্র স্বার্থকতা নয়

যেখানে সহজ অভিযোজন বাজারের কাটতি মিটায় ।

নাইট্রাস অক্সাইড উৎপাদক সাহিত্য মৃদু বাতাসেই যায় মুছে

মনোরঞ্জন সওদাগর হয় বিস্মৃত সময়ের বিবর্তনে ।





টিকটিকির পাপের সাক্ষী হয়ে থাকে ইনসমনিয়াক



ব্ল্যাক আউটের নিষিদ্ধ শহরে,

অস্থির সময়ের ভঙ্গুরতা বাড়ে

ক্রমাগত অন্ধকারে বিলীন হয় পূর্নিমা তিথি ।

বিনাশী নীল ছোবলের অনশনবন্দি রাতের স্বপ্নশহরে

নোঙ্গরহীন নৈশব্দ্যের তন্দ্রা ভাঙে ইনসমনিয়াকের,

অভিষাপ বর্ষনে ঠান্ডা-রক্তের টিকটিকি দেয় অস্তিত্বের জানান ।



সুদৃশ্য আলমিরার আড়াল থেকে ধুসর বলাকা-রঙ ধারনকারী,

ছিন্ন-লেজের প্রগতিশীল টিকটিকি ঘন্টা-ধ্বনীর আওয়াজ আড়ি পেতে শুনে ।

জ্বলন্ত বাল্বের কামজ তপ্ততার গলনাঙ্কে মেতে উঠে রাত্রিগ্রস্ত টিকটিকি,

খাড়া মসৃণ দেয়াল বেয়ে হেঁটে যায়

ধুসর দেয়ালের কৃতদাস নির্বাক মোমের পুতুল পানে

সন্তর্পণে চলে সামন্ত থেকে পুঁজিবাদী সমাজবিকাশের সঞ্চারপথ উন্মোচন ।



দরোজার চাপায় চ্যাপ্টা হয়ে সুশিল শরীর মৃত্যু বরন করলে

মানবতাবাদী সোসাল রিফর্মিষ্টের স্বর্গোলোকে গমণ

পরের দিন লোকাল নিউজ পেপারে এ সংক্রান্ত খবর আসে ।



ইনসমনিয়াক শুধু সাক্ষী হয়ে থাকে সেই পাপের ।





পৌর-প্রতিভাস





নিকোটিনে সাজানো পসরার সিউডো সেক্যুলারিজম-শহরে

পানির তল্লাসে হাঁপায় কুকুরের কামাতুর জিভ ।

মেগালোম্যানিয়াক জীবনের যাপিত ভ্রান্তিবিলাসে

প্রতিটি ইট-বালুকণায় চলে ভাঙা গড়ার আদিম আয়োজন ।



নেত্রগোলকের থকথকে আঠালতায় দিশাহীন পথের অতলে

মুখশ ঢাকা অবয়বের ঘোরতর মেদপুঞ্জ ।

কীটের অন্ধকার ঘরে মাছিদের উল্লাসে স্বদ্ভোগের মামলেট,

বিলবোর্ড বাধায় দিকভ্রান্ত সমীরণ ছড়িয়ে দেয় যৌনতার মৌতাত ।



সোডিয়াম বাতির ম্লান আলোয় ব্যাভিচারী সন্ধ্যার দহনকাল

ক্লৈবত্য বেড়ে ওঠে ইউ.এস.বি পোর্ট আর সস্তা গনিকার ধাতব হাসিতে ।

গত জন্মের অপরিশোধিত পাপের ঋণ রাতভর গুঞ্জন করে

এ্যাম্ফিথিয়েটারে, অ্যালুমিনিয়াম রমনীর কঙ্কাল-প্রেম ।



যুদ্ধনন্দনে অবচেতন সংবেদনে বারুদের অশরীরি গন্ধ

রক্তজ্বালানী ফুরিয়ে গেলে থেমে যায় ডাবল ডেকার ।

নিষ্ঠুর শূণ্যতায় নিউরো সার্জন ব্যস্ত করোটি-গহ্বরে

ব্রেন টিস্যু আর রক্তনালী গুলোর পৃথকীকরনে



আর কবিকুল বিচরন করে স্বপ্ন-পথে

শুক্লপক্ষের চাঁদের নীল আলো খোঁজে কুয়াশা-প্রান্তরে

অথবা শিরীষের ডালে খোঁজে বিরহিনী লক্ষীপেঁচা

ছাপাখানার গুহায় কিংবা ড্রয়ারের অন্ধকারের তৈজসে খোঁজে স্মৃতি ।



====================

















নেফারতিতি!





তুমি হতে পার সুপ্রাচীন প্যাপিরাসের পাতায় বিস্মরন,

দৃষ্টির অন্তরালে যাপিত কুয়াশাজড়ানো মায়াজাল

নীলচাদ আকাশে তিন সহশ্রাব্দ রাত্রির অপার ঘুম; অথবা,

জোনাক জ্বলা মিটিমিটি আধো আলো-ছায়ার অঘোর নিরবতা ।



চলে গেছ তুমি অস্তাচলে, বাষ্পচাকতির অরুণাভা পেরিয়ে

উড়ন্ত কাশফুল আচ্ছাদনে মেঘদলে বিষাদ-পাখি হয়ে ।

রাতজাগা জোৎস্না বিলাসী তারার আলোর সেতু ধরে

ভোরের পর্দা তুলে স্বপ্নের ব্যালকুনির পথে এসেছিল তুমি!

হে প্রাচ্য সুন্দরী।



নক্ষত্র-রোদনে আরো নীলচে হয়েছে নীল নদ,

রুপালি রোদের মিছিলের নিবিড় জোছনা পথে ।

রাতজাগা জোৎস্নার রাতে মেঘ করেছে সাম্রাজ্য বিস্তার

জোৎস্না ঝরে গেছে ফিরে আসেনা সে আর!



অলংকার মোড়া নীল অববাহিকার পিরামিড শবাধার

আগলে রেখছিল তৈজস যাপনের হায়ারোগ্লিফিক ইতিহাস ।

বাতাসের নিঃশ্বাসে ভেসে আসে মশলা আরকে,

নিরাপদ তন্দ্রায় ডুবে থাকে মনোলিথ মানসী মমির মোড়কে ।



নেফারতিতি!

তন্দ্রালু চোখের সম্মোহনের ধ্যানে ফিরে এসো অশরীরী

ছায়াময় হিম বিষাদ সময়ের অবকাশে নীলাম্বরীর সাজে;

ভোরের শিশিরে ভেজা হৃদয়ের পরিধিতে

উন্মগ্ন অদিতির বিভাসিত আলোক স্নানে পরিপূর্ণ হয়ে,

নেফারতিতি ।



স্বপ্নময় চোখ, অপার্থিব লাবণ্যে বিস্ময়ের রাজকুমারী তুমি

অহোরাত্রি তোমার অপেক্ষায় দিন গুনি।

ক্লান্ত প্রাচীন শিশির রাতভর ঝরে পরে মৌনতায়,

মরীচিকার গোধূলিতে অনুপ্রাস প্রতিধ্বনি শুনি

নেফারতিতি!

নেফারতিতি!

নেফারতিতি!







=================





কবিতাঃ বিষাদ বনে মেঘমল্লার রাগে নেমে আসে না বৃষ্টি







১ ।



লাফিয়ে চলা ঘাসফড়িঙের মত প্রেমিকার বিক্ষিপ্ত প্রণয়গীতি

দাবানলের বিকীর্ণ তাপে নতুন মোহ-সুরে ছড়িয়ে পড়ে,

শেষ বিকালের রোদে সর্ষের হলুদ মাঠের পাশের টেলিগ্রাফের তারে

একাকি বসে থাকে ডারউইনের সেই উজ্জ্বল কাল ফিঙ্গে,

সূর্যাস্ত আইনের খাজনা প্রদানে কৃষক হয়ে পড়ে দিশেহারা

অতপরঃ সাঝের মায়ায় সারস ডানায় চন্দ্রলোক জড়িয়ে পড়লে

কষ্টগুলি বাসা বাধতে থাকে এ্যাসট্রের অস্থাবর সম্পত্তিতে

আর ডি মেজর স্কেলে ভেসে আসে বেলাবোস-বিষাদ ।



২ ।



নীরজার ‘ঘনপক্ষ্ম চোখের পল্লবে লেগেছে রোগের কালিমা’

ল্যাম্পপোষ্টের উল্টো পাশে যেমন থাকে মহাবৈশ্বিক অন্ধকার,

ফিকে হয়ে যায় কর্ণিয়া-বন্দী প্রেমিকার খোঁপার হলুদ গাঁদা ফুল

বুকে হেঁটে চলা পাঁচ পাপড়ির স্বর্ণচামেলীর সবুজ পাতা

বিদায় ক্ষণে ধারণ করে রৌদ্রে পোড়া পিঙ্গল বর্ণ,

নদী গর্ভে ভাঙনে বিলীন হতে থাকে সবুজের সমারোহের বিস্তৃত ফসলি জমি,

চড়ুইপাখি ধুলোস্নান শেষে ডাকবাক্সে জমা করে রোদাভার রক্তোত্তাপ,

দুঃখবিলাসী সাদা পায়রার খোপে বাসা বাঁধে বিষাদ জোছনা ।





৩ ।



তালপাতার পাখায় ভর করে

ভাদ্র মাসেও যে কুকুরের দেহে আসেনি বসন্ত,

পাঁজরভাঙা দীর্ঘশ্বাসে তার বয়ে যায় তৃষ্ণার উষ্ণ প্রস্রবণ

কন্ঠনিষাদে ক্ষরস্রোতা নদীর নৈশাব্দিক ধ্বংসের বীজ

আর ঘামগন্ধে তার শীতল বিষাদের চোরাবালী;

বেওয়ারিশ কুকুর নিধনে কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে

মৃত্যর খুব কাছাকাছি থাকা সে কুকুরের

বাঁকা লেজ সোজা হয়ে আসেনা ।



৪।



কৃষকের গোলা ভরা ধানে পিপড়া আর ইদুর মত্ত হয় শিল্পবিপ্লবে,

উঞ্চতা বেড়ে বাতাসের আদ্রতা বিপদসীমা অতিক্রম করে

চাদের স্নিগ্ধ আভায় জমে হিম হয় কান্নার শিশির নির্যাস,

নিস্তব্ধ রাতের বিষাদ বনে মেঘমল্লার রাগে নেমে আসেনা বৃষ্টি

রোদের প্রাচূর্যে ঝলসে ফসিল পাখির ডানায় ধরেছে মরিচা;

শীত নিদ্রা যাপনে ব্যস্ত পরিবর্তনশীল উজ্জ্বলতার বিষমতারায়,

ধ্রুপদের নিয়ম ভাঙ্গা কাওয়ালী খেয়ালের মত নেই পতনের প্রতিরোধ ।



এরই মাঝে নক্ষত্র থেকে নক্ষত্রান্তরে,

আকাশের বিশালতার মাঝে নর্স ভ্যালকাইরিদের বর্ম থেকে ঠিকরে পড়ে

মেরুজ্যোতির আলোকছটা অরোরা বোরিয়ালিস,

গাছের সবুজ পাতাগুলো বসন্তের আলোয় রং বদলিয়ে

মেতে উঠলে হলুদের দ্যোতনায় বাড়তে থাকে কবিতার ক্ষেত্রফল;

বধির রাতে সপ্তর্ষীর অসুয়া প্রশ্নের সমাধান খোঁজে

রাতবিলাসী লক্ষ্মী পেঁচা,

গত রাতের ঝড়ে মৃত গলিত ব্যাঙের উল্টো লাশের আত্মায় ।









==================











মৃত্যু



শেষ অঙ্কে নাট্যমঞ্চের অন্তিম যবনিকা নেমে পড়ে

শূন্যে হারায় অলক্তবর্ন অংশুমালী,

বালিঘড়ির প্রতিটি কনা লক্ষকোটি নক্ষত্রের পন্যরথে

কালচক্রে নিস্তেজ হয়ে পড়ে আরো একবার,

জাগতিক আলোর মৃত্যুগ্রাসে

চন্দনার গলার লালে আবেশসিক্ত হয় অপরাহ্ন

বৃদ্ধ প্যাচা অশ্বথের ডালে বসে করে যায় বিষাদ নিদান;

কোমল আধারের আস্তিনে ঢেকে আসে তারকাখচিত রাত

শবযাত্রার সঙ্গী ডানা ঝাপটানো কাল প্রজাপতি গুলো

কেঁপে কেঁপে ওঠে ছলছল অক্ষিপটে ।













কুয়াশা





সুঘ্রাণ সাদা বিন্দু কনায় বাবুই ঠোট

ইথারে মোহ মাখানো ছোয়ায় বুনে সতেজ কার্পাস,

রুপালী রেখার একীভবনে গড়ে ওঠে ভুমি স্পর্ষী বুড়ো মেঘ;

আকাশ অরুণলোচনে দেখে মেঘমেদুর অন্ধকার

আড়াল হয় মায়াবী জোছনা ছড়ানো মাধবী চাঁদ



সর্ষে ফুলের মাঠ,

চিরহরিৎ বৃক্ষ চাদোয়ার উপরে,

পাহাড়ের পায়ের কাছে,

সমুদ্রের জল ছুঁয়ে ছুঁয়ে দ্বিধাগ্রস্ত নদীর মোহনায়

অভ্রান্তচিত্ত শীতল বাতাস ছুয়ে যায় শরীর;



ভোরের বিরাট ধোঁয়াটে শরীর ঘনীভুত হয়ে

টুপটুপ পড়ে সবুজ পাতায় এলোমেলো

মৃত্তিকাকে আলিঙ্গন করে একে দেয় এক ফোটা গাঢ চুম্বন

তারপর,

দিনের আলোতে ঝিমাতে ঝিমাতে অপেক্ষায় থাকে

সুর্যের আর্শিবাদের ।











============





নিঃস্পন্দ নিশিথের তিক্ত নিষাদ









১...



শিতাক্ষীর চোখের সাদা বৃত্তাঙ্গীনার সুনীলে

নীল গম্বুজ যেভাবে গলে পড়লে

মাধবী চাঁদের বুকে মরিচা পড়ে,

গোধুলীর ঘ্রান মাখা ধুলোয়

অদ্ভুত বিষাদগ্রস্থ স্ফটিকাকার মেঘ হয়ে উঠে ক্লান্ত,

সোদামাটির নৈকট্য হারিয়ে

ঘাসের শিকড়ে আবাস গড়ে

অন্তরীক্ষের ঝু্লে থাকা শতকোটি মুক্তোদানার

বরফ শীতল আজন্ম অন্ধকার,

কাঠবিড়ালীর শরীর অংকিত হয় পাঁচটি কাল দাগ ।



২...



নিষ্প্রাণ আলোর বিমর্ষ চোখের আঙ্গিনায়

ঘুমন্ত রাত্রি ভেঙ্গে চৌচির হয়,

কুয়োর ভেতর স্থির জলের বুকে

বোতল বন্দি ভ্রমরের আত্মায় উপনিবেশ গড়ে চাঁদ,

বিষন্ন কদম ফুলের কিরণ মেখে

দাঁড়িয়ে থাকে কংকালসম ঝাউগাছ, আর

সুদৃশ্য কফিনে ঢাকা স্বপ্নখেকোর মৃতদেহের হৃদস্পন্দন

জরাগ্রস্ত অন্ধকার কাকের পালকগুলোর মতই ভাবলেশহীন;

দগ্ধ রাতের ফেলে যাওয়া

পুষ্পাগ্নির নির্গত লাভা স্বেদ

মমীর প্রাণে শীতঘুম নিয়ে আসে,

খরগোশের হৃদপিন্ডে বন্দী হয় বরফশীতল চিরনিদ্রা,

চিলেকোঠায় ফেরেনা অভিমানী পায়রা ।



৩...



কীটের অন্ধকার ঘরে সপ্তর্ষি বেষ্টিত অরুন্ধতী

মগজের অন্ধকার কোণে পাপের পরিখ খুঁড়ে

ঝিঁঝি পোকার নিস্বাদে,

ঝিনুক ভরা বালিয়াড়িতে

শীতল-রক্তের সমুদ্র প্রহরী কাছিমের ডিমগুলো

মরিচিকা বোধে আচ্ছন্ন হয়

অভ্রান্তচিত্ত নীরদের গর্জণে,

লালটুপি কাঠঠোকরা ব্যস্ত হয় আত্মগোপনে, আর

বাঁকাঠোটের কালো পানকৌড়ির হৃদস্পন্দনে

উদ্ভাসিত হয় নৈসর্গিক শুন্যতার মহাকাব্যিক নীলাচল,

বায়ুভুক কুমিরের চোখ থেকে ঝরে

স্বচ্ছ নিষাদ অশ্রু ।



৪...



পানসে চাদেঁর সুবাস মেখে

তিক্ত সুরে অঝোরে কাদেঁ অবাধ্য বেহালা,

সোডিয়াম আলো গুলো নিভে আসে,

অসহায়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকে

গার্হস্থ্য জোৎস্নার বিষের তৃষ্ণার্য় তৃষ্ণার্ত

রাস্তার পাশের লাইট পোস্টটা,

অন্ধ দাঁড়কাকগুলো মেতে উঠে বিষাদ বিলাসী চিৎকারে,

রক্তাভ চোখে তার বন্দি বিস্ফোরন বীজ ।



৫...



অ্যাডোনিসের রক্ত ছোপে গোলাপে ঘটে লোহিত সরণ,

নিঃস্পন্দ আঁধারের পৃথিবীতে

বাদুড়ের ডানার নৈশ সংকেতে

শূন্য থেকে ফেটে পড়ে বিভ্রান্তি আর অপচ্ছায়া,

শবভুক শকুন গুনে চলে ভাগ্যহত শুশুকের কংকাল ।





৬।





'রাত্রি হেঁটে যায় অনন্ত নীলিমার পথে হাতে নিয়ে

গোধুলীর ক্যানভাসে সেঁটে দেওয়া

সাদা আগুনে ভেজা দ্বাদশীর গোলক,

রাতের আকাশে আঁধারের দিগন্তে নিসঙ্গ রানী

মেঘের পর্দার আড়াল থেকে

মাঝরাতের সাম্রাজ্যে রাজত্য করে চলে,

নেকডের দল অভিষাপ বর্ষনে ব্যস্ত হলে

অনিদ্রায় ডুবে থাকা ডেইজি ফুল গুলো

রাতভর পাহারা দেয় পূরো পৃথিবী'





===============





মন্তব্য ৩৪ টি রেটিং +১৪/-০

মন্তব্য (৩৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৮:৪২

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
সময়ের কাস্তেতে
কাটি শুন্যতার ফসল আর বুনে চলি তারার বীজ ।


আমার চিবুক বেয়ে নেমে আসে প্রগাঢ় এক আকাশগঙ্গা । ঐ দুগ্ধবৃত্তপথ আলোর রিবনে মোড়ান রুপালী চকলেট মুদ্রার গোপন গুপ্তধন ।

সুপার্ব ।

অটঃ ফাহাদ ভাই আপনার আরেকটা লেখায় জামিরা শব্দটা আসছিলো ।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৮:৫৪

ফাহাদ চৌধুরী বলেছেন: জামিরা শব্দটা আরো দুইটা কবিতায় এসেছিল ।


Life was like a box of chocolates. You never know what you're gonna get.


ধন্যবাদ ।

২| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৮:৪৪

সায়েম মুন বলেছেন:
সুন্দর। প্রথমটার আবেশে পড়েছি। বেশ শব্দ করে পড়লাম। দ্বিতীয়টাও চমৎকার।
টাইপো: শুন্যতার গান>শূন্যতার গান

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৮:৫৬

ফাহাদ চৌধুরী বলেছেন:

ধন্যবাদ, সায়েম ভাই ।


কবিতায় কিন্তু কাকতাড়ুয়ার কথাও আছে । :)

৩| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৮:৪৮

জামান তালুকদার বলেছেন: সুন্দর !!!

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১০:২১

ফাহাদ চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ । শুভরাত্রি ।

৪| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১০:৩৩

Ashish বলেছেন: সুন্দর কবিতার পোস্ট।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১১:০৫

ফাহাদ চৌধুরী বলেছেন: সুন্দর একটা কমেন্ট । ধন্যবাদ ।

৫| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১২:২৭

শহিদুল ইসলাম বলেছেন: চমৎকার

বিশেষ করে শূন্যতার গান !

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ৮:১৯

ফাহাদ চৌধুরী বলেছেন:



ধন্যবাদ ।



শুভসকাল ।

৬| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১২:৩৩

টুম্পা মনি বলেছেন: অতিশয় সুন্দর।

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ৮:২০

ফাহাদ চৌধুরী বলেছেন:

অজশ্র ধন্যবাদ, টুম্পা মনি ।


শুভেচ্ছা ।

৭| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১:৪৪

আধারের কবি বলেছেন: :)
তুমি আলোর উপসর্গ । তোমার ছায়াপথে ধিকিধিকি জ্যোতি
উষ্ণ আবেগের ফিনিক ফোটায় । আমি তোমার হেমাভ অরোরা
পোহাই, আলোকিত হই । পরিসীমায় মেঘাবচ্ছিন্ন একটা হাওয়া
তোমার সাথে বেমানান, সেখানে তামাদী হয়ে পড়ে পরিমিতি ।

কিভাবে লিখলেন????? অসাধারন

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ৮:২২

ফাহাদ চৌধুরী বলেছেন:

কিবোর্ড দিয়ে :)


পাঠ ও মন্তব্যে অনেক ধন্যবাদ । শুভসকাল ।

৮| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:০৪

আহসান জামান বলেছেন:
চমৎকার! মুগ্ধপাঠ কবি।

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:০৭

ফাহাদ চৌধুরী বলেছেন:


থ্যাংস, জামান ভাই ।



শুভ দুপুর ।

৯| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:৪০

নস্টালজিক বলেছেন: জোতির্মিতি পড়লাম!

চমৎকার!

এই লেখাটা তোমার অন্য লেখার থেকে অনেক আলাদা! লেখার স্টাইলের কথা বলছি আমি!


শূন্যতা পড়বো! পড়ে কমেন্ট করবো।



শুভেচ্ছা অফুরান, পোয়েট!


ভালো থাকো নিরন্তর!

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:২০

ফাহাদ চৌধুরী বলেছেন:



কিছু কসমিক টিডবিট রটে গ্যাছে আনাক্ষত্রিক ।

১০| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:৪৪

নস্টালজিক বলেছেন: জোতির্মিতি পড়লাম!

চমৎকার!

এই লেখাটা তোমার অন্য লেখার থেকে অনেক আলাদা! লেখার স্টাইলের কথা বলছি আমি!


শূন্যতা পড়বো! পড়ে কমেন্ট করবো।



শুভেচ্ছা অফুরান, পোয়েট!


ভালো থাকো নিরন্তর!

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:২২

ফাহাদ চৌধুরী বলেছেন:

যে হাতে উপচে পড়ে অপাচ্য শুন্যতা, সেই হাতের বিঘত অন্তহীন অপরিমেয়তার এক কৃষ্ণগহবর ।


শুন্যতার অপেক্ষায় ।

১১| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:৫২

নস্টালজিক বলেছেন: জোতির্মিতি পড়লাম!

চমৎকার!

এই লেখাটা তোমার অন্য লেখার থেকে অনেক আলাদা! লেখার স্টাইলের কথা বলছি আমি!


শূন্যতা পড়বো! পড়ে কমেন্ট করবো।



শুভেচ্ছা অফুরান, পোয়েট!


ভালো থাকো নিরন্তর!

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:৪৯

ফাহাদ চৌধুরী বলেছেন: থ্যাংস অ্যা লট, রানা ভাই ।


ট্রিপল কমেন্ট । :)


শুভদুপুর ।

১২| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:১৫

রেজোওয়ানা বলেছেন: শূণ্যতার গান' বেশি সুন্দর!

তুমি ভাল গল্প লিখতে পারবে কবি সাহেব!

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ১০:৫৮

ফাহাদ চৌধুরী বলেছেন: থ্যাংস অ্যা লট, রেজোওয়ানা আপা ।



গল্প :||


রিসেন্টলি একটা লিখছি । সামনের বছর ব্লগে দিতারি :P


১৩| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৭

সোমহেপি বলেছেন: দুইটাই অনেক সুন্দর।

মনকাড়া

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:২২

ফাহাদ চৌধুরী বলেছেন:

থ্যাংস অ্যা লট ।


শুভদুপুর ।

১৪| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৪৯

গ্যাব্রিয়েল সুমন বলেছেন: সুখপাঠ্য...

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৩৩

ফাহাদ চৌধুরী বলেছেন:
পাঠ ও মন্তব্যে অনেক ধন্যবাদ ।


শুভশৈত্যযাপন ।

১৫| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:০৪

সমানুপাতিক বলেছেন: মুগ্ধ হলাম!

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৩০

ফাহাদ চৌধুরী বলেছেন:


থ্যাংস অ্যা লট ।


শুভেচ্ছা ।

১৬| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:০২

ভাঙ্গা কলমের আঁচড় বলেছেন: পরিণত :)

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৫

ফাহাদ চৌধুরী বলেছেন:

কবিতা পাঠে অজশ্র ধন্যবাদ জানবেন ।

১৭| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৭

সুবিদ্ বলেছেন: "তুমি রাতকে জিম্মি করে আকাশের পুনর্লিখন দাবী করেছিলে,
আমি বিপথগামী তারাদের বলেছি, তোমার জন্য গান গাইতে-"

সাব্বাশ!

১৮| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:২৭

রুদ্র জাহেদ বলেছেন: মৃত্যু
শেষ অঙ্কে নাট্যমঞ্চের অন্তিম যবনিকা
নেমে পড়ে
শূন্যে হারায় অলক্তবর্ন অংশুমালী,
বালিঘড়ির প্রতিটি কনা লক্ষকোটি নক্ষত্রের
পন্যরথে
কালচক্রে নিস্তেজ হয়ে পড়ে আরো একবার,
জাগতিক আলোর মৃত্যুগ্রাসে
চন্দনার গলার লালে আবেশসিক্ত হয় অপরাহ্ন
বৃদ্ধ প্যাচা অশ্বথের ডালে বসে করে যায়
বিষাদ নিদান;
কোমল আধারের আস্তিনে ঢেকে আসে
তারকাখচিত রাত
শবযাত্রার সঙ্গী ডানা ঝাপটানো কাল
প্রজাপতি গুলো
কেঁপে কেঁপে ওঠে ছলছল অক্ষিপটে ।

দারুণ অসাধারন সব কবিতা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.