নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্পর্শীয়ার মনের ভিতর একটু ইতস্তত করতে লাগলো । গাড়ি থেকে নামবে কিনা ঠিক বুঝতে পারছে না । নামা টা ঠিক হবে কিনা কে জানে ! স্পর্শীয়া আর একবার গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরে তাকালো ।
খানিকটা অপরিচিত পরিবেশ । তবে অপরিচিত জায়গা না । অপুর সাথে আর একবার এসেছিল এখানে । আজকেও অবশ্য অপুর জন্যই এসেছে । কিন্তু ওকে না জানিয়েই । এই মানিক মিয়া এভিনিউ অপুর খুব পছন্দের জায়গা । প্রায় প্রতিদিনই ও এখানে আসে । বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয় । ফুসকা খায় । এই সবই স্পর্শীয়ার জানা । কিছুটা শুনেছে অপুর মুখ থেকে কিছুটা ওর বন্ধুদের কাছ থেকে ।
তাই আজকে চলে এসেছে এখানে । অপুর খোজে । অপুকে একটা ফোন দেওয়া উচিত্ ছিল ।
ও যদি আজকে না আসে তখন ?
কিন্তু স্পর্শীয়া কেন জানি ফোন দিতে পারে নি । অপুর ব্যাপারে ওর সব কিছুই ঠিক আছে কিন্তু কেন জানি খুব অস্বস্থি লাগে কথা বলতে । ইচ্ছা করে কথা বলতে কিন্তু এই সংকোচের কারনে স্পর্শীয়া পারে না ।
স্পর্শীয়া গাড়ি থেকে নামল । আর একবার নিজেকে জানালার কাঁচে দেখে নিল ।
আজকে স্পর্শীয়া কালো জিন্সের সাথে সাদা আর আকাশী মেশানো টপস পরেছে । গলায় একটা স্কার্প । চোখে ঘন করে কাজল দিয়েছে । অপু চোখে কাজল পছন্দ করে । চুল গুলো বাধতে চেয়েছে কিন্তু খোলাই রেখেছে ।
স্পর্শীয়া কয়েক কদম হেটে ওর ড্রাইভারের কাছে এল । বলল
-আপনি এখানে দাড়ান । গাড়িটা পার্ক করেন । আমি যাওয়ার সময় আপনাকে ডেকে নিবো ।
ড্রাইভার বলল
-এখানে একা একা নামবেন ? বড় সাহেব জানলে রাগ করবে ।
-সমস্যা নাই । আমার এক বন্ধু আছে এখানে ।
ড্রাইভার মুখ দেখে মনে হল না খুব বেশি সন্তুষ্ট হল । স্পর্শীয়া আর কিছু না ভেবে সামনের দিকে হাটা দিল ।
আসলে ওর নিজের ও কেমন জানি লাগতেছে । এতো মানুষ , এতো অপরিচিত মুখের ভিতর আসলেই স্পর্শীয়ার একটু অস্বস্থি লাগতে শুরু করলো । একবার মনে হল দরকার দেখা করার । সোজা বাসায় চলে যায় । অপুতো আর জানবে না যে ও এসেছিল ।
কিন্তু মনের অন্য একটি অংশ শুনতে চাইলো না কথাটা । মন বলল যখন এতো দুর চলেই এসেছে আর দেখা যাক না ।
যদি দেখা হয়ে যায় !
আর স্পর্শীয়ার কেন জানি মনে হচ্ছে যে অপুর সাথে ওর দেখা হবে । আরও কিছুদুর গিয়েছে তখনই অপুকে দেখতে পেল । বড় নারিকেল গাছটার গোড়ায় চুপ করে বসে আছে । অপুকে দেখতেই স্পর্শীয়ার বুকের ভিতর আবার সেই অস্বস্থি শুরু হল । এবার ওর সত্যি সত্যি মনে হল চলেই যায় ।
অপু ওকে এখানে দেখলে কি মনে করবে ?
কি ভেবে বসতে পারে ?
নাহ ।
যা ভাবে ভাবুক ।
ওর সামনে দিয়ে হেটে যেতে হবে তারপর হঠাত্ করেই যেন দেখা হয়েছে এমন একটা ভাব করতে হবে ।
হুম ।
স্পর্শীয়া আবারও হাটা শুরু করলো । এইতো আর অল্প কয়েক কদম । স্পর্শীয়ার মনে হল ওর বুকের ভেতরটা কেমন যেন কাঁপছে । হাটার সময় মনে হল ওর পাও যেন একটু একটু কাঁপতেছে ।
-আরে স্পর্শী ! তুমি ?
স্পর্শীয়া হাসলো একটু অপ্রস্তুত হয়ে ।
-এই তো !
-এখানে ?
-এই তো এক বন্ধুর বাসায় এসেছিলাম । যাওয়ার সময় ভাবলাম একটু হেটে যাই ।
-এখানে ?
অপুর মুখ দেখে মনে হল না ওর কথা খুব একটা বিশ্বাস করলো না ।
হেসে বলল
-এই এলাকায় বন্ধু আছে নাকি তোমার ?
-কেন থাকতে পারে না ? তুমি আছো না ?
-হুম । তা থাকবা কিছুক্ষন নাকি চলে যাবা এখনই ।
-বসি ! কিছুক্ষন ?
-হ্যা ।
অপু একটু সরে গিয়ে ওর বসার জায়গা করে দিল । স্পর্শীয়া আবারও সেই অস্বস্থিটা শুরু হল । কিন্তু এখন এই অস্বস্থির সাথে একটা ভাল লাগা লেখে আছে । স্পর্শীয়া অপুর পাশে গিয়ে বসল । হঠাত্ অপু বলল
-আমার গা দিয়ে কি ঘামের দুর্ঘন্ধ বের হচ্ছে ?
স্পর্শীয়া খানিকটা অবাক হয়ে বলল
-কেন এই কথা কেন বলতেছ ?
-না মানে এই যে এক হাত ফাঁকা রেখে বসে আছো । মানুষজন দেখলে কি ভাববে ?
স্পর্শীয়া হেসে ফেলল । মুহুর্তের ভিতরে ওর সব অস্বস্থি দুর হয়ে গেল । স্পর্শীয়া একটু হেসে ওর কাছে এসে বসল ।
-আর একটু কাছে এসে বস । যেন মানুষ তোমাকে আমার গার্লফ্রেন্ড মনে করে ।
-মানে ?
-না মানে দেখো আমি তো এখানে প্রতিই প্রায় আসি । বেশ কিছু কাপলও এখানে নিয়মিত আসে । আমার দিকে তারা কেমন চোখে তাকায় । বিশেষ করে ছেলে গুলো । এমন একটা ভাব যেন দেখ বেটা আমার গার্লফ্রেন্ড কত সুন্দর । আজকে তারা আসুক । তোমাকে এভাবে আমার পাশে বসতে বসে থাকতে দেখে ...
স্পর্শীয়া অপুর মুখের কথা শেষ করতে দিল না ।
-দেখে কি মনে করবে ?
-এই যে তোমার ভত এতো চমত্কার একটা মেয়ে আমার পাশে বসে আছে । তাই না ?
স্পর্শীয়া ওর হাত দিয়ে চুল ঠিক করলো ।
-আরে ! কি তুমি হাতে মেহেদি দিয়েছ ? ওয়াও । দেখি ।
বলতে বলতে অপু স্পর্শীয়ার হাতটা ধরলো । হাতটা ধরতেই স্পর্শীয়ার হাতটা একটু যেন কেঁপে উঠল ।
-সরি ।
স্পর্শীয়া বলল
-সরি কেন । এই যে তোমার হাত ধরে ফেলল । তুমি কিছু মনে কর নাই তো !
-একটু আগে বললা মানুষ জন যেন আমাকে তোমার গার্রফ্রেন্ড মনে করে ।
-হুম ।
-হাত ধরলে তো সেই ধারনাটা আমি স্পষ্ট হবে ।
অপু খুশি উঠল । ওর স্পর্শীয়ার হাতটা ধরেই রইল । একটু একটু করে ওর হাতের আল্পনা দেখতে লাগল । আর স্পর্শীয়া ওকে দেখতে লাগল ।
কি বাচ্চার মত একটা ছেলে !
ইস !
এই ছেলেটা যদি সারা জীবন ওর হাত ধরে থাকতো ।
-এই একটু হাটবা ?
-চল ।
তারপর ওরা হাটতে লাগলে মানিক মিয়া এভিনিউ এর রাস্তা ধরে । স্পর্শীয়ার হাতটা তখনও অপুর হাতে ।
-এই ।
-হুম ।
-ঐ ছেলেটাকে দেখছো না ?
-কোনটা?
-ঐ যে ফর্সা মত । কালো গেঞ্জি পরা ।
-হুম ।
-ঐটা খুব ভাব নিতো আমার সামনে ওর জি এফ নিয়ে । আজকে মনেহয় ওর জিএস আসে নাই । হাহাহা । এই বেটা দেখ । আজকে আমার সাথে কে রয়েছে ! তোর গার্লফ্রেন্ড থেকে হাজার গুন সুন্দর । দেখ বেটা । এদিকে তাকা !
অপুর ছেলে মানুষী দেখে স্পর্শীয়ার কেন জানি খুব ভাল লাগে । স্পর্শীয়ারও একটু দুষ্টামি করতে ইচ্ছা করে । স্পর্শীয়া হঠাত্ অপুকে টেনে নিয়ে ঐ ছেলেটার সামনে নিয়ে দাড়ায় । অপু একটু অবাক হয় । ছেলেটাও অবাক হয় বেশি । স্পর্শীয়া ছেলেটাকে বলল
-ভাইয়া একটা উপকার করবেন ?
ছেলেটা আসলেই একটু অবাক হয়েছে । বাস্তবে ফিরে আসতে একটু সময় নিল । তারপর বলল
-জি বলুন ।
-আমাদের একটা ছবি তুলে দিবেন প্লিজ ।
-হ্যা ।
-থ্যাঙ্কিউ ।
স্পর্শীয়া নিজের সনি এক্সপেরিয়াটা ছেলেটার হাতে দিয়ে অপুর সাথে দাড়াল খানিকটা কোল ঘেসে । ছেলেটা বেশ কয়েকটা ছবি তুলে দিল । আবার যখন ওরা হাটতে শুরু করলো অপু বলল
-এটা তুমি কি করলে ?
-না মানে ছেলেটা আর কখনও তোমাকে অবজ্ঞার চোখে দেখবে না । হাহা ।
স্পর্শীয়ার কেন জানি খুব ভাল লাগে । সারাটা বিকেল ও অপুর সাথেই কাটালো । মনেহচ্ছিল যেন স্বপ্নের ভিতর ছিল । সব স্বপ্ন যেমন ভাঙ্গে এই স্বপ্নটাও শেষ হওয়ার সময় এল ।
কিন্তু সুন্দর স্বপ্ন ভাঙ্গার পরেও যেমন একটা ভাল লাগা সারা দেহ মনে ছড়িয়ে থাকে তেমনি স্পর্শীয়া যখন ফেরার জন্য গাড়িতে উঠল ওর মনের ভিতরেও একটা ভাল লাগা ছড়িয়ে রইলো ।
কেবল একটাই কথা মনে হতে লাগল যে ইস ও যদি সত্যি সত্যিই অপুর গার্লফ্রেন্ড হত ।
গাড়ি কিছু দুর গিয়েছে এমন সময় স্পর্শীয়া পিছনে তাকিয়ে দেখে অপু মোবাইলে কি যেন করছে ।
স্পর্শীয়ার একটু মন খারাপ হয় । ও আশা করছিল অপু মনে হয় ওর দিকে তাকিয়ে থাকবে ।
কিন্তু কেনই বা থাকবে ?
ঠিক তখনই স্পর্শীয়ার মোবাইলে একটা এসএমএস আসলো । অপুর মেসেজ ।
স্পর্শী এবার থেকে আমার সাথে দেখা করতে ইচ্ছা করলেই চলে আসবে এখানে । কোন সংকোচ না করেই । ইস ! তুমি যদি আমার সত্যি ...
অপু আর কিছু লেখে নি । কিন্তু স্পর্শীয়ার বুকের ভেতরই এই অর্ধেক মেসেজ পরেই তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে । স্পর্শীয়া আবার পেছনে দিকে তাকাল । এবার দেখল অপু ওর দিকেই তাকিয়ে আছে । স্পর্শীয়া ড্রাইভারকে বলল
-গাড়ি ঘোরান !
-আফা ! এখন গাড়ি কিভাবে ঘোরাবো ?
স্পর্শীয়া আর কিছু শুনলো না ! কেবল গাড়ির দরজা খুলে অপুর দিকে দৌড় দিল ! ওর কেবল মনে হতে লাগল অপুর অসমাপ্ত কথাটা ওর শুনতেই হবে !
শুনতেই হবে !
ফেবু লিংক
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৬
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ আপু ! শুভ নববর্ষ !
২| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:৩৫
লাভ ভাই বলেছেন: ভাই এটা একটু দেখবেন?? http://www.aamjonota.com
লেখা টা সুন্দর.
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:০১
অপু তানভীর বলেছেন: দেখলাম !
ধন্যবাদ !!
৩| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১১:০২
রাতুল_শাহ বলেছেন: নামটা চেনা চেনা লাগে।
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:০৬
অপু তানভীর বলেছেন: চেনা চেনা ?? কোন কি ভাই ??
৪| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১১:৪৬
আজ আমি কোথাও যাবো না বলেছেন: ভালো লাগলো খুব!
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:০৭
অপু তানভীর বলেছেন:
ধন্যবাদ !!
৫| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:১৫
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
চমৎকার।
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:০৮
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ !!
৬| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:১৪
বটবৃক্ষ~ বলেছেন: হুম! খুব বেশি সুইট হয়েছে....স্পর্শীয়া নামটা বেশী সুইট.....
একগাদা প্লাস নিন......
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:১০
অপু তানভীর বলেছেন: হুম !!
আমার কাজ কারবার সব সুইট মেয়েদের নিয়ে !!
ধন্যবাদ !!
৭| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ২:১২
তারছেড়া লিমন বলেছেন: শুভ নববর্ষ............।
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:১১
অপু তানভীর বলেছেন: শুভ নববর্ষ !
৮| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৪:৪৩
ফারিয়া বলেছেন: বাহ ভাইয়া, বেশ ভালো লাগলো। কেমন আছো? শুভ নববর্ষ!
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:১১
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ | আপু ! অনেক দিন পরে আসলে আমার ব্লগে !!
শুভ নববর্ষ !
৯| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:০৬
আমিনুর রহমান বলেছেন:
শুভ নববর্ষ ভাইডি ...
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:১২
অপু তানভীর বলেছেন: শুভ নববর্ষ আমিনুর ভাই !!
১০| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৭
শ্রাবণ জল বলেছেন: অপু ভাই মেহেদি পছন্দ করে, খোলা চুল পছন্দ করে, অপু ভাইয়ের গার্লফ্রেন্ড একটু খেয়ালী, অভিমানী, বেশি আবেগী।
অনেক লেখা পড়েছি তো আপনার, দেখসেন, কত কিছু বুঝে ফেললাম! হা হা
বরাবরের মতই সুন্দর লিখেছেন।
তবে টাইপিং এ কিছু মিস্টেক দেখতে পাই। আপনি পোস্ট করার আগে একবার চেক করবেন, তাহলেই আর এই প্রব্লেম হবেনা আশা করি।
ভাল থাকুন।
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৯:৫৯
অপু তানভীর বলেছেন: বাহ ! ভালও তো লক্ষ্য করেছেন দেখছি !
ধন্যবাদ !
আর টাইপিং মিস্টেকের কথা আর বইলেন না ! এটা আমে লেখার একটা বৈশিষ্ট বলতে পারেন ! এটা হবেই !!
১১| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৯:২৯
সাজ্জাতুল ইমরান ফয়সাল বলেছেন: চলারেবল ......।চলে ..
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:১১
অপু তানভীর বলেছেন:
১২| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৫:৫২
saifulchowdury বলেছেন: শোন ছেলে, তুমি নিশি, নিশীনদের থাকো, স্পর্শীয়া হলও আমার; তুমি চোখ দিলে নগদ সীসা ডাইলা তোমার চোখ সিল গালা কইরা দিমু।
মনে থাকে জেন
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৭
অপু তানভীর বলেছেন: হাহাহাহা !!
বাদ যাবে না একটি মেয়ে !!
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৯:৫৭
প্রিয়তমেষূ বলেছেন: অপূর্ব !!!! সব সময়ের মতই অসাধারণ।