নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
20.09.08
01.30am
আমার এমপি থ্রীতে একটা চমৎকার গান বাজতেছে । "আগুনের দিন শেষ হবে একদিন" ! আমি জানি আগুনের দিন একদিন শেষ হবে । আমার অপেক্ষার দিন একদিন শেষ হবে !
হবে না বল ?
যাই হোক গানটা আগে শুনি ! অবশ্য এখন গান শোনার সময় না ! এখন ঘুমানোর সময় ! আমি ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম কিন্তু কি যেন মনে হল তোমাকে কিছু বলা উচিৎ ! আসলে তোমাকে কিছু না বলে ঠিক থাকতে পারছিলাম না ! তাই কাগজ কলম নিয়ে বসলাম ! জানি না এই লেখা কোন দিন তোমার হাতে পৌছাবে কি না ! না পৌছানোর সম্ভাবনাই বেশি ! তবুও লিখতে বসেছি ! মনের ভিতর কেবল একটা ক্ষীন আশা যে হয়তো কোন দিন এই চিঠি তুমি পড়বে ! আর মনে মনে হাসবে ! জানতে পারবে একটা ছেলে তোমাকে কত খানি পছন্দ করতো ! আর একটু বাড়িয়ে বলতে গেলে কত খানি ভালবাসতো !
আচ্ছা এবার আসল কথায় আসা যাক ! তোমাকে প্রথম কবে দেখি তোমার মনে আছো তো ? আমার মনে হয় তুমিও আমাকে ঐদিনই প্রথম দেখেছিলে ! অবশ্য আমার সম্পর্কে নিহশ্চই আগেই শুনেছ ? আমি তখন স্কুলের বিখ্যাত মানুষ ! হিহিহি !!
আসলে তোমাকে প্রথম দেখেই আমার ভাল লেগে যায় ! একটু যেন বেশিই ভাল লেগে যায় ! আমার একটা দোষ আছে সেটা মোটামুটি সবাই জানে । সুন্দরী মেয়ে দেখা মাত্রই আমি তার প্রেমে পরে যাই ! কিন্তু সেই প্রেমটা হয় ক্ষনস্থায়ী ! সুন্দরী মেয়ে দেখি টুপ করে প্রেমে পড়ি তারপর আবার মেয়েটা যখন চোখের আড়ালে চলে যায় আমি তার কথা ভুলে যাই !
তোমাকে দেখলাম ! ভাল লাগলো । তোমার প্রেমে পড়লাম ! কিন্তু তুমি যখন চোখের আড়ালে চলে গেলে কিছুতেই তোমাকে ভুলে যেতে পারলাম না । একটু আশ্চার্য লাগল !
এমন তো হবার কথা না ! তাহলে ?
এমন কেন হচ্ছে ?
নিজের মনের কাছেই প্রশ্ন করলাম বার বার !
কোন উত্তর নাই ! তুমি কি জানতে যে কেবল তোমার সাথে পড়ার জন্যই আমি জুনিয়র ব্যাচের সাথে পড়তে গিয়েছিলাম !
একটু যে অস্বস্থি লাগতো না এমন বলব না কিন্তু কি পরিমান যে ভাল লাগতো তোমাকে বলে বোঝাতে পারবো না !
তোমাকে দেখতাম পড়ার আড়ালে !
তুমি কথা বলছ !
কথা বলেই যাচ্ছ ! এতো কথা বলতে পারো তুমি !
সত্যি কথা বলতে কি বেশি কথা বলা মেয়ে আমি একদম দুচোক্ষে দেখতে পারি না ! আমাদের সাথে পপি নামে একটা মেয়ে পড়তো না ?
মনে আছে তোমার ! ঐ মেয়েটাও একটু বাচাল কিসিমের ছিল তুমি জানতে ! ঐ মেয়ে যখন কথা আরাম্ভ করতো মনে হত স্যারের পাশে রাখা বড় ডিকশনারীটা পপির মুখ বরাবর ছুড়ে মারি । আর তুমি যখন কথা বলতে ! আর তুমি যখন কথা বলতে তখন.......
অপু চিঠিটা একটু উল্টে পাল্টে দেখলো ! আর লেখা নেই ! এই রকম অর্ধেক লেখা চিঠি !
সকাল বেলা থেকেই ঘরদোর পরিস্কার করছিল ! হঠাৎই একটা কার্ডটা খুজে পায় ! কার্ডের ভিতরে এই চিঠিটা ছিল ! নিজের লেখা চিঠি ! অনেক দিন আগে লিখেছিল একজন কে ! কিন্তু দেওয়া হয় নাই !
-কি হলে এতো দেরি ?
অপু কেবল একটু হাসলো !
-হাসছো কেন ?
নিশির পাশে বসতে বসতে অপু বলল
-আজকে অনেক কাজ করেছি ! তুমি তো জানোই ! একটু পরিশ্রম হয়ে গেছিল !
-বুঝলাম ! এখন চল !
-নিশি আজকে না যাই !
নিশি খানিকটা অবাক হয়ে বলল
-কেন ?
অপু কিছুটা সময় চুপ করে রইলো !
-ওখানে অনেক ভীড় হবে ! আজকে তোমার সাথে একা থাকতে ইচ্ছা করছে !
নিশি খানিকটা ইঙ্গিত পূর্ণ চোখে বলল
-আচ্ছা ! কোন বদ মতলব নাই তো ?
অপু একটু যেন লজ্জা পেল !
-আরে কি বলছো ?
নিশি হাসতে হাসতে বলল
-তোমাদের ছেলেদের কোন বিশ্বাস নাই !
-নিশি !!!
- আচ্ছা ! চল তাহলে বড় পুকুরটার পাড়ে যাই ! ওখানে নিরিবিলে কথা বলা যাবে ! যা ইচ্ছা তাই বলতেও পারবে আবার যা ইচ্ছা তা ক...।
-নিশি ! প্লিজ ! তুমি এমন দুষ্টামী কেন শুরু করেছ ?
-আচ্ছা ! বাবা ! আচ্ছা ! চল চল !
বড় পুকুরের পাড়টা সব সময়ে একটু নিরিবিলিই থাকে ! লোকজন কম আসে ! ওরা যখন পুকুর পাড়ে এসে বসলো তখন আসে পাশে কয়েকটা জোড়া ছাড়া আর কেউ ছিল না ! নিশি একটা গাড়ের গুড়ি দেখে বসলো ! অপুকেও বসতে বলল !
-এখন বলুন জনাব ! হঠাৎ আমার সাথে এইরকম নিড়িবিলি কথা কি দরকার একটু দেখি তো !
অপু কিছু না বলে নিশির পাশে বসলো ! তারপর পকেট থেকে একটা ভাজ করা কাগজ টা নিশির দিকে এগিয়ে দিল !
-কি এটা ?
-প্রেম পত্র !
নিশি খানিকটা অবাক হয়ে বলল
-তুমি আমাকে প্রেম পত্র লিখেছো ?
-তোমাকে না !
-তাহলে ?
-পড়ে দেখো ! তারপর বলছি !
নিশি কিছুক্ষন চিঠিটা মন দিয়ে পড়লো ! তারপর অপুর দিকে চোখ তুলে তাকিয়ে বলল
-এই চিঠি তুমি লিখেছো ?
-হুম !
-২০০৮ সালে ?
-হুম !
-তারমানে ২০০৮ সালে তোমার একটা প্রেমিকা ছিল !
-না !
-মানে কি ? তুমি তাকে উদ্দেশ্য করে চিঠি লিখেছো আর বলছো তোমার কোন প্রেমিকা ছিল না ? ফাজলামো পেয়েছ ? আমাকে বল নাই কেন ?
-আরে বাবা ! মেয়েটাকে আমি পছন্দ করতাম ! কিন্তু বলতে পারি নি ! চিঠি লিখেছিলাম কিন্তু দিতে পারি নাই !
-তাই না ? এতো দিন আমার কাছে কিভাবে গোপন করে রেখেছ !
-আর বাবা ! আমার নিজেরও মনে ছিল না ! আজকে ঘর গোছাতে গিয়ে হাতে পড়লো ! তাই মনে পড়লো !
-তা চিঠিটা দেও নাই কেন ?
-লজ্জায় দিতে পারি নাই !
-লজ্জা ? আমার সামনে তো খুব বীরত্ব দেখিয়েছিলে ? আর ঐ মেয়ের সামনে লজ্জা ?
অপু হাসলো !
-শুনো না ! একটা কবিতাও ছিল চিঠিতার সাথে !
-আরিবাব্বাহ ! আবার কবিতাও লিখতে পারতে নাকি !
-শুনবে ?
-শুনাও !
অপু আবার পকেট থেকে আর একটা কাগজ বের করে নিয়ে আসলো ! তারপর পড়তে শুরু করলো
মেঘ বালিকার মেঘের দেশে !
মেঘ গুলো সব যাচ্ছে ভেসে !
মেঘ গুলো তার সাদা কালো !
মেঘ ছাড়া সে রয় না ভাল !
মেঘের সাথেই করে খেলা !
মেঘকে ভেবেই যায় যে বেলা !
মেঘকে নিয়েই দিনের শুরু !
মেঘ দেখে বুক দুরু দুরু !
মেঘের সাথে কয় যে কথা !
মেঘ না পেলে পায় যে ব্যাথা !
মেঘ দিয়ে তার জীবন শুরু
মেঘ দিয়ে হয় শেষ !
মেঘের ডানায় যাবো আমি
মেঘবালিকার দেশ !
-বাহ ! তুমি আবার কবিতা লিখতে পারো ?
অপু হাসল !
-শুনো কাল থেকে প্রতিদিন আমাকে একটা করে কবিতা লিখে দিবে !
-আরে কি বল ! দেখো না কি হাস্যকর হয়েছে !
-হোক !
-নিশি !
-কোন নিশি ফিসি না ! যাকে কোন দিন বলতে পারো নাই তার জন্য কবিতা লিখতে পারো আর আমার জন্য লিখতে পারবে না ? এটা হতে পারে না ! যেদিন লিখবা না সেদিন তোমার খবর আছে !
-মানে কি ?
-কোন মানে নাই !
অপু চুপ করে রইলো !
নিশি বলল
-ঐ মেয়েটার সম্পর্কে কিছু বল !
-মেয়েটা !!
-নাম কি ছিল ?
-টিয়া !
-টিয়া পাখি ? বাহ ! আর ?
-মেয়েটা আমার থেকে এক বছরের জুনিয়র ছিল ! জানো আমি একদিন আমাদের ইংরেজি স্যারের কাছে গেছিলাম । স্যার তখন জুনিয়র ব্যাচ পড়াচ্ছিল ! তখনই মেয়েটাকে দেখি !
-তারপর ?
-দেখে আমি খানিকটা থ হয়ে রইলাম !
-পরদিনই আমি ব্যাচ চেঞ্জ করে ঐ জুনিয়র ব্যাচে চলে এলাম !
-তাই না ? লুল কোথাকার ! একদিন দেখেই মেয়ের প্রেমে পরে গেলে ?
অপু হাসলো !
-তোমাকে একবার দেখেই কিন্তু তোমার প্রেমে পরেছিলাম !
নিশি আবার বলল
-তুমি আমার সাথে কি করেছিলে মনে আছে ! বাবারে বাবা ! আমাকে দেখে আমার আর পিছুই ছাড়ে না ! সকাল বিকেল ! যেখানে যাই আমার পিছন পিছন ! নেহত সিনিয়র ছিলা ! নাইলে তোমার খবর ছিল !
-হুম ! বুঝলাম !
-শুনো ! কাল থেকে কিন্তু আমার কবিতা চাই ! আর আমাকে এবার থেকে চিঠি লিখবে !
-কি ?
-হুম !
-এই জামানায় কেউ চিঠি লিখে ?
-লিখতে হবে ! কোন কথা শুনবো না !
-নাহ ! তোমাকে দেখনোই ভুল হয়ে গেছে !
-হুম ! ভুল যখন হয়েই গেছে তখন আর কি করা !
-তাই না !
-চল ! ফুচকা খাওয়া যাক !
অপু একটু হাসলো আবার ! একবার ভেবেছিল নিশিকে পুরানো চিঠি টা দেখাবে না ! ও আবার না কি মনে করে ! কিন্তু না দেখিয়ে পারলো না ! তবে এটা ভাল যে নিশি এটা সহজ ভাবে নিয়েছে !
-চল !
লেখাটার কোন মানে নাই ! আজকে সত্যি ঘরের পরিস্কার পরিছন্ন কার্যক্রম চালানোর সময় একটা পুরানো ঈদ কার্ড খুজে পেলাম একটা বইয়ের ভিতর ! তার ভিতরেই ছিল এই চিঠিটা আর কবিতা লেখার কাগজটা ! প্রায় হুবাহুই তুলে দিলাম ! পুরানো কিছু স্মৃতি মনে পড়ে গেল !
চিঠিটা টিয়া পাখি কে লেখা আমার প্রথম চিঠি ! যেটা তাকে দেওয়া হয় নি !
যখন লিখেছিলাম তখন তার সাথে আমার সম্পর্ক ছিল না ! সে ছিল দুরের কেউ ! যখন কাছে এল তখন আমি চিঠিটা হারিয়ে ফেললাম । আর এখন আবার যখন পেলাম তখন সে আবার আমার থেকে দুরে !
বড় অদ্ভুদ !
প্রথম লেখার অনুভুতিটা তাকে জানানো হল না ! তার জন্য প্রথম লেখা কবিতাটাও সে পড়লো না !
Click This Link
২২ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১০:১২
অপু তানভীর বলেছেন:
২| ২১ শে জুন, ২০১৩ রাত ১১:৩৪
দুরন্ত-পথিক বলেছেন: আগুনের দিন শেষ হবে একদিন-আমার খুব প্রিয় একটা গান।
২২ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১০:১৩
অপু তানভীর বলেছেন: হুম ! আমারও একটা পছন্দের গান এটা !!
৩| ২১ শে জুন, ২০১৩ রাত ১১:৫২
অনন্যমানুষ বলেছেন: এখন সে কোথায়?
২২ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১০:১৬
অপু তানভীর বলেছেন: ঠিক জানি গো ভাই সে কই !
৪| ২২ শে জুন, ২০১৩ রাত ১২:০৮
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ১ম ভালোলাগা +++++
ভালো থাকবেন
২২ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৩০
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ অপূর্ণ ভাই !!
৫| ২২ শে জুন, ২০১৩ ভোর ৪:০৪
মুশাসি বলেছেন: ভালো লাগা রইলো
২২ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৩২
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ মুনসী ভাই !!
৬| ২৯ শে জুন, ২০১৩ ভোর ৪:২৮
নিষ্কর্মা বলেছেন: শেষটা পড়ে কষ্ট পেলাম।
২৯ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৫৭
অপু তানভীর বলেছেন:
৭| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৪৩
অপ্রচলিত বলেছেন: শেষটা সত্যিই করুণ, পড়ে মন খারাপ হয়ে গেল
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:০০
অপু তানভীর বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে জুন, ২০১৩ রাত ১১:২৬
ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: +++++++++