নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"স্যাডো এ্ড বোন"
স্যাডো এন্ড বোন হচ্ছে গ্রিসা ট্রিলজির প্রথম বই । বইয়ের মূল চরিত্র এলিনা স্টাকোভ । সে রাভকা কিংডোমে থাকে । এতিম । রাভকা রাজ্যের চারিদিকে শত্রু রাজ্য দ্বারা পরিবেষ্টিত । এবং তাদের মাঝে যুদ্ধ লেগেই আছে । রাভকার মূল সমস্যা হচ্ছে রাভকা রাজ্যটার মাঝ দিয়ে স্যাডো ফোল্ড নামের একটা ভয়ংকর স্থান রয়েছে । এটা রাজ্যকে দুটো অংশে বিভক্ত করে রেখেছে যা রাজ্যের শক্তিকে অর্ধেক করে দিয়েছে । স্যাডো ফোল্ড হচ্ছে একটা অন্ধকারাচ্ছন্ন ভয়ংকর স্থান । এখানে ভলক্রা নামের ভয়ংকর একটা প্রাণীর বাস যারা মানুষের মাংশ খায় । প্রতিবার এই স্যাডো ফোল্ড পার করার সময় রাভকা রাজ্যের অনেক সৈন্য অহত নিহত হয় !
এলিনা এবং ম্যাল এতিম । ছোট বেলা থেকে এক ডিউকের এতিমখানায় মানুষ হয়েছে । রাভকাতে দুই ধরনের মানুষ রয়েছে এক হচ্ছে যাদের ভেতরে গ্রিসা পাওয়ার আছে এবং যাদের ভেতরে নেই । গ্রিসা পাওয়া হচ্ছে এমন একটা শক্তি যেটা দিয়ে তারা কোন একটা এলিমেন্ট (বাতাস, আগুন, আলো) কে নিয়ন্ত্রন করতে পারে এবং সেটাকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করতে পারে । প্রত্যেক শিশুকে ছোট বেলাতেই টেস্ট করা হয় । যাদের এই গ্রিসা পাওয়ার আছে তাদেরকে আলাদা করে নিয়ে যাওয়া হয় লিটিল প্যালেসে । তাদের প্রশিক্ষন দেওয়া হয় । সোলজার তৈরি করা হয় । আর যাদের এই পাওয়ার নেই তাদের কেও মিলিটারি ট্রেনিং নিতে হয় ।
টেস্টে এলিনা এবং ম্যালের কোন গ্রিসার পাওয়ার পাওয়া যায় না । এলিনা এমনি ভাবে একজন ম্যাপ তৈরি কারক হয় অন্য দিকে তার বেস্ট ফ্রেন্ড ম্যাল হয় ট্রাকার ! গল্পের শুরুর দিকে তারা স্যাডো ফোল্ড পার করতে যায় এবং একটা পর্যায়ে ভলক্রার দ্বারা আক্রান্ত হয় । সেই অন্তিম মুহুর্তে এলিনা যখন বুঝতে পারে সে মারা যাচ্ছে তখনই এলিনার ভেতরে এক আশ্চর্য গ্রিসা শক্তির প্রকাশ ঘটে । এমন এক শক্তি যেটা এই স্যাডো ফোল্ডকে ধ্বংস করতে পারবে । এলিনাকে প্রথমবারের মত ডার্কলিংকের সামনে হাজির করা হয় । ডার্কলিংক হচ্ছে সকল গ্রিসা সৈন্যদের লিডার । রাজ্যে রাজার পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর মানুষ ।
এলিনাকে নিয়ে যাওয়া হয় লিটল প্যালেসে । সেখানে তার ট্রেনিং শুরু হয় । সেই সাথে সে ধীরে ধীরে অনেক কিছু জানতে পারে । এক পর্যায়ে ডার্কলিংকের প্রতি সে দূর্বল হতে শুরু করে । ডার্কলিংকও এলিনার প্রতি আলাদা একটা দৃষ্টি রাখে সব সময় । অন্য সবার কাছ থেকে সে সব থেকে গুরুত্বপূর্ন !
কিন্তু এক সময়ে এলিনা আসল এক সত্য জানতে পারে । ভয়ংকর এক যড়যন্ত্রের ব্যাপারে সে জানে । ম্যালের সাথে তার আবারও দেখা হয়ে যায় । এরপর দুজন মিলে সামনে এগিয়ে চলে । প্রতিপক্ষ যখন ভয়ংকর এবং শক্তিশালী । কোন ভাবেই তার সাথে এলিনা কিংবা ম্যালের পেরে ওঠার কথা না । তবুও তারা এক সাথে এগিয়ে যায় ।
যারা ফ্যান্টাসী গল্প পড়তে পছন্দ করেন, তাদেরকে অবশ্যই এই বইটা পড়তে বলবো ! সময় বৃথা যাবে না বলতে পারি ।
সীজ এন্ড স্ট্রম
ডার্কলিংঙ্ককে স্যাডো ফোল্ডের মাঝে রেখেই এলিনা ম্যাল কে নিয়ে বের হয়ে যায় । তারপর থেকে তারা পালিয়ে যেতে থাকা রাভকা থেকে যত দুরে পারা যায় । পেছনে কি হয়েছে সেটা তারা দুজনের কেউই জানে না । কেবল খবর উড়ে আসতে লাগে যে স্যাডো ফোল্ডের এই দিন এলিনা এবং ডার্কলিংঙ্ক দুজনেই মারা গিয়েছে । এলিনার জন্য এই খবর গুলো ভালই হয়েছে ।
কিন্তু বইয়ের শুরুতেই তারা আবারও ধরা পরে যায় ডার্কলিংঙ্কের হাতে । তখনই এনিলা আবিস্কার করে যে ঐদিন ডার্কলিংঙ্ককে স্যাডো ফোল্ডের মাঝে রেখে আসার ফলে তার মাঝে নতুন একটা ক্ষমতার জন্ম দিয়েছে । ভয়ংকর একটা ক্ষমতা ।
এলিনা এবং ম্যালকে সে ধরে নিয়ে যায় ট্রু সীতে । সেখানে নতুন কিছুর একটা সন্ধ্যানে নামে তারা । সী উইপ । এলিনার দ্বিতীয় এম্প্লিফায়ার যেটা ওর শক্তিকে আরও বৃদ্ধি করবে । কথিত আছে যে একজন গ্রিসা একটার বেশি এম্প্লিফায়ার গ্রহন করতে পারে না কিন্তু এলিনার বেলাতে সব কিছু ব্যতীক্রম হতে শুরু করে ।
যখন ম্যাল দ্বিতীয় এম্প্লিফায়ারটা খুজে পায় তখনই ডার্কলিংঙ্কের উপর হামলা করে ডাহাজের রহস্যময় ক্যাপ্টেন স্টুর্মহোন্ড । ডার্কলিংঙ্কের গ্রিসা বাহিনী এবং স্যাডো আর্মি থেকে আলিনা এবং ম্যালকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় । এলিনা আর ম্যাল কিছুই বুঝতে পারে না যে আসলে কেন প্রাইভেটিয়ার স্টুর্মহোন্ড তাদেরকে ডার্কলিংঙ্কের হাত থেকে রক্ষা করলো ! স্টুর্মহোন্ড তাদের বলে যে তার নতুন ক্লাইন্ট তাকে নতুন একটা প্রস্তাব দিতে চায় । তার কাজ হচ্ছে এলিনা এবং ম্যালকে রাভকাতে পৌছে দেওয়া । এবং যদি এলিনা এই প্রস্তাবে রাজি না হয় তখন সে নিজে তাদের কে পালানোর ব্যবস্থা করে দিবে । এলিনা এবং ম্যাল প্রথমে কিছুই বুঝতে পারে না এবং স্টুর্মহোন্ডকে ঠিক বিশ্বাসও করতে পারে না । কিন্তু যখন তারা স্টুর্মহোন্ডের আসল পরিচয় জানতে পারে তারা দুজনেই অবাক হয়ে যায় । দুজনের কেউই ভাবতেও পারে নি যে এই স্টুর্মহোন্ড এমন কেউ হতে পারে । তার সাথেই এলিনা আবারও রাফকাতে গিয়ে হাজির হয় ।
নতুন করে আবারও ডার্কলিংঙ্কের স্যাডো বাহিনীর সাথে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে থাকে । এবং একটা সময়ে আবারও মুখোমুখী হয়ে দাড়ায় ডার্কলিংঙ্কের !
কিন্তু শেষ পর্যন্ত কি সে পারবে ডার্কলিংঙ্কের সাথে ?
প্রথম বইটার মতই সীজ এন্ড স্ট্রম একই গতিতে এগিয়ে চলেছে । এই বইটারও কাহিনীও এগিয়ে চলেছে খুবই দ্রুত । ম্যালের সাথে এলিনার ভালবাসা তারপর দুজনের মাঝে দুরত্ব এলিনার মনের ভেতরে ডার্কলিংঙ্কের জন্য আলাদা একটা অনুভূতি আর নতুন করে যুক্ত হয় প্রিন্স নিকোলাই । সব মিলিয়ে একটা জটিল অবস্থার সৃষ্টি হয় । আমি যেন একেবারে কাহিনীর ভেতরে ঢুকে গিয়েছিলাম । চোখের সামনে সব কিছু দেখতে পাচ্ছিলাম ! কেবল মাত্র ফ্যান্টাসীতেই এই বইটা সীমাবদ্ধ থাকে নি এখানে প্রেম, ভালবাসা, বন্ধুত্ব, কুটনৈতিক চাল সব কিছু মিলিয়ে চমৎকার গতিতে এগিয়ে চলেছে কাহিনী !
অবশ্যই বইটা পড়ার জন্য রেকোমেন্ড করবো ।
রুইন এন্ড রাইজিং
গ্রিসা ট্রিলজির শেষ বই হচ্ছে "রুইন এন্ড রাইজিং"
ডার্কলিংঙ্ক এখন রাভকার সিংহাসনে বসেছে । তার স্যাডো আর্মির সামনে কেউ টিকতে পারছে না । প্রিন্স নিকোলাই রাভকার রাজা আর রানীকে নিয়ে রাজ্যের অন্য দিকে সরে গেছে এবং সেখান থেকেই ডার্কলিঙ্কের সৈন্যের বিরুদ্ধে লড়াই করছে বসে শোনা যাচ্ছে ।
ডার্কলিংঙ্কের সাথে শেষ যুদ্ধে এলিনা প্রায় মরতে বসেছিলো । কারন ডার্কলিংঙ্ককে শেষ করার এক মাত্র উপায় ছিল । তাকে শেষ করার সাথে সাথে নিজেও শেষ করে ফেলা কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়ে ওঠে নি । তবে এই যুদ্ধে এলিনা তার সে নতুন স্থানে আত্মগোপন করেছে । তবে যুদ্ধে এলিনা তার সান সামোনারিং শক্তি ফেলেছে । সে আর নিজের শরীর থেকে আলো বের করতে পারছে না ।
আনিলা জানে ডার্কলিংঙ্কের সাথে তার আবারও মুখোমুখি হতে হবে এবং ডার্ক লিংঙ্কের শক্তির সাথে সে কোন ভাবেই পেরে উঠবে না যদি না তৃতীয় এমপ্লিফায়ার ফায়ারবার্ড তারা খুজে না পায় । এলিনার শক্তির পরিপূর্ণতা পাওয়ার জন্য এই ফায়ারবার্ডের খুজে পাওয়াটা খুবই জরুরী । যা কি না রাভকার ভবিষ্যৎ নির্ণয় করবে । কিন্তু এই শক্তির জন্য এলিনাকে খুব চড়া মুল্য দিতে হবে । এলিনা কি সেই মূল্য দিতে প্রস্তুত হবে ? শেষ পর্যন্ত কি পারবে ?
ফ্যান্টাসী সিরিজের ভেতরে এই গ্রিসা ট্রিলজিটা আমার বেশ পছন্দ হয়েছে । প্রতিটা বই পড়ার সময় আমার আগ্রহ একেবারে অটুট ছিল । ইংরেজি বই পড়তে গেলে যেটা হয় বেশি লম্বা বই হলে সেটা পড়ে শেষ করা যায় না কিন্তু এই তিনটা বইয়ের বেলাতে সেরকম কিছুই হয় নি । আমি অতি আগ্রহ নিয়ে পড় গুলো পড়ে চলেছি । এবং একটা সময় যখন শেষ হয়ে গেল কাহিনী মনে হয়েছে যাহ শেষ হয়ে গেল । একটা ফ্যান্টাসী জগত থেকে আমাকে বেরিয়ে আসতে হলে ।
এই বইয়ের একটা খারাপ দিক আমার মনে হয়েছে । সেটা হচ্ছে বইয়ের স্থানের নাম গুলো । এগুলো যদি আরও একটু সহজ হত তাহলে হয়তো বই পড়ে আরও বেশি মজা পেতাম । মাঝে মাঝে স্থানের নাম পড়ে আমি ভুলে যাচ্ছিলাম যে এটা যেন কোন এলাকা ! এখানে যেন কারা থাকে ! এটা বাদ দিয়ে আর কোন সমস্যা আমার মনে হয় !
তবে যাদের হাতে সময় আছে অবশ্যই এই তিনটা বই এক টানে পড়ে ফেলুন । সময় খারাপ কাটবে না বলতে পারি !
তিনটি বই একেবারে একটানে পড়ে ফেলার মত । পড়তে গিয়ে কো প্রকার বিরক্ত হবেন না যদি ফ্যান্টাসী পড়তে ভালবাসেন ।
হ্যাপি রিডিং !
ব্যক্তিগত ব্লগে আগেই প্রকাশিত
স্যাডো এন্ড বোন
সীজ এন্ড স্ট্রোম
রুইন এন্ড রাইজিং
০৩ রা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৫৫
অপু তানভীর বলেছেন: না অনুবাদ হয় নি
২| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:২৪
অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:
এটা কি মেমরী অব গিসার সাথে কোন সম্পৃক্ততা হয়েছে ?
বইটি কি পেপারব্যাক বা হার্ড কপি বাংলাদেশে পাওয়া যাবে?
০৩ রা নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৩৯
অপু তানভীর বলেছেন: এই তিনটা আলাদা বই । কাহিনী একেবারে আলাদা ! মেমরী অব গিসার ব্যাপারে বলতে পারছি না ।
বাতিঘর বুক স্টোরে গিয়ে এই বই তিনটার আসল কপি সংগ্রহ করতে পারেন । অথবা লোকাল প্রিন্ট পেতে পারেন নীলক্ষেত থেকে। কিছু অনলাইন পেইজ থেকেও অর্ডার দিতে পারেন ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:১৪
রাজীব নুর বলেছেন: বইটির অনুবাদ কারা করেছে??