নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.oputanvir.com

অপু তানভীর

আমার চোখে ঠোঁটে মুখে তুমি লেগে আছো

অপু তানভীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আধুনিক রূপকথার গল্পঃ খরগোশ ও কচ্ছপ

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৫৭

ঢাকা শহরের এক এলাকাতে বাস করতো এক খরগোশ আর এক কচ্ছপ ।

দুজনের বসবাস পাশপাশি এলাকাতেই ছিল । খরগোশ যেমন দৌড়াতে পারতো খুব দ্রুত ঠিক তেমনি সে সব কিছুতেই ছিল ওয়েল আপডেটেড । আধুনিক সব যন্ত্রপাতির উপর তার দখল ছিল বেশ ভাল । ইন্টারনেট ফেসবুকে সে ছিল বেশ একটিভ । সব সময় সব কিছু আপডেট দেওয়া রেস্টুরেন্টে চেক ইন দেওয়া, আরও নানান কাজে সে ছিল সিদ্ধ হস্ত । ইনবক্সে নানান মেয়েদের সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা সে চ্যাটিং চালিয়ে যেত । সব ইস্যু নিয়ে তার একটা স্টাটাস থাকা চাই ই চাই ।

অন্য দিকে কচ্ছপ ছিল একেবারে উল্টো । নিজের কাজ ছাড়া সে অন্য কিছুতেই ছিল না । এমনি তার একটা এন্ড্রোয়েড ফোন পর্যন্ত ছিল না । নিজের একটা নোকিয়া জাভা ফোন ছিল । সেটা দিয়ে মাঝে মধ্য ফেসবুকে ঢুকতো সে । কয়েক লাইনের স্টাটাস দিতো । ব্যস এই ছিল তার অনলাইন জীবন ।

একদিন কচ্ছপ ফেসবুকে ঢুকেই দেখতে পেল তার কাছে বেশ কিছু নোটিফিকেশন এসে হাজির হয়েছে । সে বেশ অবাকই হল । তার বন্ধুর সংখ্যা খুব বেশি নেই । নোটিফিকেশন অন করেই অবাক হয়ে গেল । দেখলো খরগোশ তাকে ট্যাগ করে একটা ভিডিও আপলোড করেছে । অনেক কষ্টে নিজের জাভা ফোন আর টু জি নেট দিয়ে সে ভিডিওটা দেখতে পেল । ভিডিওতে তার নিজের পথ চলার কিছু অংশ ধারন করা হয়েছে । খরগোশ সব সময় তার চলাচল নিয়ে হাসি ঠাট্টা করে । সে এসবে কিছু মনে করে নি । কিন্তু আজকে সে সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে । ভিডিওর নিচে খরগোশ লিখেছে, হেই মিস্টার কচ্ছপ এই ভাবে পথ চললে তো তোমার বউ অন্যের সাথে পালিয়ে যাবে । একটু দ্রুত হাটো !

নিচে শয়ে শয়ে কমেন্ট এসে হাজির ! সবাই হা হা রিএকশনের বন্যা বইয়ে দিয়েছে । কেউ কেউ কমেন্ট সেকশনে লিখেছে বউ সামনে দিয়ে পালিয়ে গেলেও সে তাকে ধরতে পারবে না !

কচ্ছপের রাগে শরীর জ্বলতে শুরু করলো । কি করবে বুঝতে পারলো না । একবার মনে হল সে মামলা করে দেয় খরগোশের নামে । মানুষকে এই ভাবে সবার সামনে অপদস্ত করার অধিকার তার নেই । কিন্তু তাতে তো এই অপমানের প্রতিশোধ নেওয়া হবে না । বরং লোকজন আরও বেশি কথা বলবে ।
খরগোশ তো তার গতি নিয়ে সব সময় গর্ব করে । তাকে এই গতি দিয়েই হারাতে হবে । হারুক জিতুক একটা চেষ্টা তাকে করতেই হবে।

তখনই সে খরগোশ কে ট্যাগ করে একটা পোস্ট দিয়ে ফেলল । তাতে লিখলো যে "গতি নিয়ে এতো গর্ব তোমার । তাহলে এসো হয়ে যাক একটা রেস"

খরগোশ নিচে কমেন্ট করলো, তোমার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে ?
কচ্ছপ লিখলো, কেন ভয় পাচ্ছ নাকি? হেরে যাবে এই ভয়ে ?

আর যায় কোথায় । খরগোশকে তার গতি নিয়ে খোটা দেওয়া হচ্ছে । সে রাজি হয়ে গেল । ইভেন্ট তৈরি হয়ে গেল । শত শত মানুষ সেখানে গোয়িং দিল । শেয়ার হল হাজারে হাজার ।

নির্দিষ্ট দিনে যথা সময়েই দুজনে হাজির হল নির্ধারিত স্থানে । তারপর দৌড় শুরু হল । দৌড় শুরু হতেই খরগোশ তো এক দৌড়েই চলে গেল অনেক খানি দুর । এদিকে কচ্ছপ আস্তে আস্তে এগিয়ে আসতে লাগলো । খরগোশ পেছনে তাকিয়ে দেখে কচ্ছপের দুর দুরান্তে কোন দেখা নেই । রেস শুরু হয়েছিলো ধানমন্ডি ২৭ নম্বর থেকে । শেষ হওয়ার কথা ছিল শাহবাগে গিয়ে । মাঝে বসুন্ধরা সিটি পড়ে । খরগোশ ভাবলো কচ্ছপের তো আসা দেরি আছে । এরই ফাঁকে একটু বসুন্ধরার ভেতরে একটু ঢু মারা যাক । যেই ভাবা সেই কাজ ।

সে বসুন্ধরার ভেতরে ঢুকে পড়লো । তারপর টুকটুক করতে গিয়ে হাজির হল লেভেল এইটের ফুড কোর্টে। সেখানে গিয়ে হাজির হতেই চারিদিক থেকে তার ভক্তরা তাকে ঘিরে ধরলো । সবাই তার সাথে কথা বলতে চায় তার সাথে একটা সেলফি তুলতে চায় । খরগোশও নিশ্চিন্তে সবার সাথে আড্ডা দিতে শুরু করলো । সেলফি তুলে পোস্ট করতে শুরু করলো । ইনবক্সে চ্যাটিং করতে শুরু করলো । এরই ফাঁকে যে কত সময় পার হয়ে গেছে সেটা খরগোশের কোন খেয়াল রইলো না ।

তারপর যখন খেয়াল হল তখন সে দ্রুত বের হয়ে এল বসুন্ধরা থেকে । আবারও দৌড় শুরু করতে যাবে তখনই মোবাইলে একটা নোটিফিকেশ এসে হাজির হল । এমনিতেই তার মোবাইলে নোটিফিকেশন সব সময় আসেই । অভ্যাসবশত সেটা অন করতেই তার চোখ চড়কগাছ ! এক মিনিট আগে একটা ছবি পোস্ট করা হয়েছে । সেখানে দেখা যাচ্ছে কচ্ছপ প্রায় ফিনিসিং লাইনের কাছে পৌছে গেছে ।

খরগোশ আর দেরি করলো না । সর্ব শক্তি দিয়ে দৌড় শুরু করলো । কিন্তু শেষ রক্ষা হল না । শেষষ সীমানাতে গিয়ে দেখে কচ্ছপ লাইনের শেষ মাথায় পৌছে গেছে । সে হেরে গেছে কচ্ছপের কাছে । বিজয়ীর বেশে সে খরগোসের দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসতে লাগলো ।

মোরাল অব দ্য স্টোরিঃ কাজের সময় ফেসবুকিং আড্ডা আর চ্যাটিং থেকে দুরে থাকলেই সফলতা আসবে ।


(রূপকথা অবলম্বনে)

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:০৩

শের শায়রী বলেছেন: মোরাল অভ দ্য ষ্টোরিঃ সেলিব্রিটি হওয়া মানেই বাঁশ খাওয়া ;)

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:০৬

অপু তানভীর বলেছেন: ইহাও মিথ্যা নহে অবশ্য ;)

২| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:১৩

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: চমৎকার।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৩৫

অপু তানভীর বলেছেন: :) :)

৩| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৪৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
Time and tide
wait for none

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:০৩

অপু তানভীর বলেছেন: সত্য

৪| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৭:২০

ইসিয়াক বলেছেন: খুব ই সুন্দর।

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১০

অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ

৫| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: মোবাইল টা আমাদের আড্ডা কেড়ে নিচ্ছে। এমন কি পরিবারকে সময় পর্যন্ত দেওয়া হয় না।

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১১

অপু তানভীর বলেছেন: সঠিক কথা ।

৬| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:৫২

পদ্মপুকুর বলেছেন: জোস, তবে মিথ্যাবাদি রাখালেরটা বেসম্ভব ভালো ছিলো।

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৫

অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ

৭| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:০৫

লাজুক জাহিদ বলেছেন: ধন্যবাদ ভালো লেগেছে, ভাইয়া।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫৩

অপু তানভীর বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ

৮| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:০৪

কায়েস মাহমুদ! বলেছেন: হা হা হা

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:২২

অপু তানভীর বলেছেন: B-))

৯| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৫১

রূপম রিজওয়ান বলেছেন: ওয়াহ! জবরদস্ত ডিজিটাল ভার্সন বানিয়েছেন! হা হা হা।

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:০৭

অপু তানভীর বলেছেন: :D B-))

১০| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:০৯

আমি তুমি আমরা বলেছেন: কথা সইত্য।

০১ লা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ২:১৭

অপু তানভীর বলেছেন: :D

১১| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৫০

নাম প্রকাশে ইচ্ছুক নহে বলেছেন: মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর আধুনিক ঈশপের গল্প পড়ে মজা পেয়েছিলাম। আপনার এইটা পড়েও বেশ মজা লাগল।
অনেক বছর পর আপনার গল্প পড়লাম। ব্লগে আসা হয় নাই।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৩৩

অপু তানভীর বলেছেন: ব্লগে আবার ফিরে আসুন নতুন ভাবে ।

গল্প পড়ার জন্য ধন্যবাদ ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.