নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রতিবার পহেলা বৈশাখ এলেই আমার কেবল এই ঘটনা মনে পড়ে । আমার প্রথম প্রেম শুরু হওয়ার গল্প । গত ভালবাসা দিবসে আমি আমার প্রেমিকা চলে যাওয়ার গল্প বলেছিলাম । আশা করি সেটা সবারই মনে আছে । এই গল্পটা আসলেই সেই গল্পের গল্পেরই শুরু । অর্থ্যাৎ আমার প্রথম প্রেমিকার সাথে আমার প্রথম প্রেমটা কিভাবে শুরু হয়েছিলো সেটা ।
ধরে নিই আমার আমার প্রথম প্রেমিকার নাম নিশি । নিশিকে আমি প্রথম দেখি যখন ক্লাস সেভেনে পড়ি । প্রথম দেখাতেই প্রেম যাকে বলে । তবে তখন সেই সুযোগ ছিল না কোন ভাবেই । আমি আবার বরাবরই বড়ই লজ্জাশীল মেয়েদের ব্যাপারে । অর্থ্যাৎ মেয়েদের সাথে ঠিকঠাক মত কথা বলতে পারি না । তাই তার পেছনে ঠিকমত ঘুরতে পারি নাই । সেই ছোট বেলার প্রেম মনের ভেতরেই রয়ে গেল বহুদিন ।
ক্লাস সেভেন আইচ নাইন পার করে উঠলাম ক্লাস টেন । আমাদের স্কুলটা কম্বাইন হলেও ছেলে ও মেয়েদের ক্লাস রুম ছিল আলাদা । কিন্তু ক্লাস টেনে এসে আমাদের একই ক্লাস রুমে ক্লাস শুরু হল । প্রতিটা দিন তখন বড় রঙ্গিন মনে হত । এরই ভেতরে একদি আমারই এক কাছের বন্ধু জানালো যে সে প্রেম শুরু করে দিয়েছে ক্লাসেরই আরেক মেয়ের সাথে । সেই মেয়ে আবার নিশির ঘনিষ্ঠ বান্ধবী । বন্ধুর প্রেমের কথা শুনেই বুঝি এতো দিন মনের ভেতরে লুকায়িত থাকা সেই প্রেমটা জেগে উঠলো । বন্ধুর কাছে মনের কথা বলে দিলাম । বললাম যে ক্লাসের নিশিকে আমি সেই কবে থেকে পছন্দ করি । সম্ভবত এই কথা সে তার প্রেমিকার কাছেও পাস করে দিয়েছিলো এবং খবর পৌছে গেল নিশির কাছে ।
তারপর একদিন আমার কাছের দুএকজন বন্ধুর মাধ্যমে খবর এল যে নিশিও প্রেমের সম্পর্ক করতে প্রস্তুত তবে একটাই শর্ত যে আমাকে আগে প্রেম নিবেদন করতে হবে । আমি তো এক পায়ে খাড়া ! এক টিফিন প্রিয়ডে একটা রুমাল একটা চিঠি লিখে পাঠিয়ে দিলাম । আমি তো নিশ্চিত জানি যে আজ থেকেই সে আমার প্রেমিকা হয়ে যাচ্ছে । এতো দিনের মনের ভেতরে সে ইচ্ছে ছিল সেটা আজকে পুরণ হতে যাচ্ছে ।
কিন্তু ওমা ! কিছু সময় পরেই তার বান্ধুবী দুজন রুমাল আর চিঠি ফেরৎ দিয়ে বলল যে নিশি এখন প্রেমের কথা ভাবছে না । আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম । কী বলে এই মেয়ে ! এই না বলল যে আমি প্রেম নিবেদন করলেই সে রাজি হয়ে যাবে !
পরে আসলে জেনেছিলাম যে নিশি এই ব্যাপারে কিছু জানতো না । আমার বন্ধুরা মিলে এই প্লান করেছিলো । তাদের একটা ধারণা ছিল যে আমি প্রেম নিবেদন করলে নিশি রাজি হয়ে যাবে কিন্তু নিশি রাজি হল না ।
টিফিন প্রিরিয়ডে প্রেম নিবেদন করে ছ্যাঁকা খেলাম। ছুটি হতে না হতে পুরো স্কুল এই কথা জেনে গেল । আমি লজ্জা্য আর নেই । সময় টা সম্ভবত ছিল মার্চের শেষের দিকে । এরপর আরও নানান ঘটনা । এতো কথা ঠিক মনেও নেই । তবে আগেকার দিনের প্রেমিক প্রেমিকাদের মাঝে হাত কেটে রক্ত বের করার একটা রীতি ছিল । আমিও সেই একই রীতি ফলো করলাম । কয়েকটা কাগজ গেল আবারও ।
এরপর নিশির এক বান্ধবীর ছোট ভাইয়ের জন্মদিনে আমাদের কয়েকজনের দাওয়াত পড়লো । যাবো না যাবো না করেও হাজির হলাম ।সে দিন ঠিক হল যে পহেলা বৈশাখে আমাদের বাসায় তারা যাবে । ততদিনে শুনেছি যে নিশির মন নাকি খানিকটা গলেছে । এটা একটা গ্রিন সিগনাল ।
যথারীতি ১৪ই এপ্রিল এল । সকাল সাড়ে দশটার দিকে তারা চারজন আমাদের বাসায় এসে হাজির । সাথে আমার তিন বন্ধুও ছিল । খাওয়া দাওয়া নাস্তা চলল, আড্ডা চলল । এরই মাঝে এলো সেই সময় । তার এক বান্ধবী আমাকে ডেকে বলল যে নিশি আমার সাথে আলাদা কথা বলতে চায় ।
তাকে নিয়ে বারান্দায় বসলাম । সে জানতে চাইলো যে তোমার কি বলা আছে বল । আগেই বলেছি যে আমি কথা বলার ব্যাপারে বেশ লজ্জাশীল । তাই শত চেষ্টা করেও বলতে পারলাম না । তারপর বলল যে লিখে দেই?
সে সম্মতি জানালো । আমি লিখেই তাকে আবারও প্রেম নিবেদন করলাম । এইবার গতবারের মত হল না । সে রাজি হল ।
ঘটনা সেখানেই শেষ না । আমরা ঘরে ফিরে এলাম আর সোফার উপরেই বসলাম । সোফার পাশে রাখা একটা ছোট বক্স টেবিলের ড্রায়ার খুলে হঠাৎ একটা এন্টিকাটার বের করলাম। কেন করলাম আমি নিজেও জানি না । নিশি আমার দিকে তাকিয়ে বলল, এই কাটার দিয়েই হাত কেটেছো?
আমি বললাম হ্যা ।
ঘটনা সত্যি ছিল ।
সে বলল, এখন কাটো দেখি !
ব্যাপার একটা একবার ভাবেন । সদ্য হওয়া প্রেমিকা আমাকে বলছে তার সামনে হাত কাটতে । ডান হাতে কাটারটা ধরে বাঁম হাতের উপরে এক টান দিলাম ।
এই এন্টিকাটার গুলো নিশ্চয়ই চেনেন । তীব্র ধার যুক্ত ব্লেড । দেড় ইঞ্জি মত কেটে গেল । একেবারে সাদা মাংস বের হয়ে গেল । সেদিন আমার কেমন ব্যাথা লেগেছিলো সেটা আমার এখন আর মনে নেই । তবে নিশি যে দৃষ্টি নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল সেটা এখনও মনে আছে । এবং সেই কাটা দাগ এখনও আমার হাতে রয়েছে । ছবি যুক্ত করে দিলাম ।
মোটামুটি এই হচ্ছে আমার পহেলা বৈশাখের চমৎকার এক স্মৃতি । এটা কোন দিন ভোলা যাবে না মনে হয় !
সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা । সেই সাথে রমজান মোবাকর ।
আপনাদের দিন শুভ হোক !
ভ্যালেন্টাইনের দুঃখ ভর্তি কাহিনী জানতে এই পোস্টে ঢু মারতে পারেন।
Photo by engin akyurt on Unsplash
১৪ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:২৩
অপু তানভীর বলেছেন: এইটা শতভাগ কাটার দাগ ।
পান্তা আমি খাই না । আমি ডাল দিয়ে ভাত খাই ।
২| ১৪ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:২০
চাঁদগাজী বলেছেন:
ভালোবাসা সম্পর্কে আপনার কোন সঠিক ধারণা নেই; আপনার গল্পগুলো এজন্যই হয়তো একটু পংগু ধরণের হয়।
১৪ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:২৩
অপু তানভীর বলেছেন: হা হা হা । গাজী সাহেব তখন আমি ক্লাস টেনে পড়ি । ঐ সময়ের প্রেম আর কেমন হবে !
৩| ১৪ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:৩২
চাঁদগাজী বলেছেন:
স্যরি, তখনকার অনুভুতিগুলো প্রাকৃতিকই ছিলো, হৃদয় থেকেই ছিলো; আজকে লিখতে গিয়ে আপনি সেগুলোকে সঠিকভাবে প্রকাশ করতে পারছেন না।
১৪ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:৫০
অপু তানভীর বলেছেন: হয়তো !
৪| ১৪ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:৪২
শায়মা বলেছেন: যাক চাঁদাগাজী ভাইয়ার ক্লাস টেনে প্রেমে পড়ার কাহিনীটাও মনে পড়ে গেছে। তাই মিলিয়ে ফেলে দুঃখ পেলো।
১৪ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:৫১
অপু তানভীর বলেছেন: এতো দুঃখ পাওয়ার কিছু নেই আসলে ।
৫| ১৪ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:৫৫
চাঁদগাজী বলেছেন:
@শায়মা ,
আমি আমার পড়ালেখার জীবনে, ১ম দিন থেকে মেয়েদের সাথে পড়েছি, তাদের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক ছিলো, হাজার স্মৃতি আছে। আমি ১ পয়সার যেসব জীবন কাহিনী লিখি, সেখানে আপনি মেয়েদেরকে অনেক উচ্চ আসনে দেখতে পাবেন।
৬| ১৪ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:১২
ওমেরা বলেছেন: এত কঠিন পরিক্ষা দেওয়ার পরও ভালোবাসা টিকলো না।
১৪ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:৫৩
অপু তানভীর বলেছেন: আসলে কেন যে টিকলো না সেই হিসাব করা এখন অর্থহীন । কেবল আমাদের পথ আলাদা হয়ে হয়ে গেছে আর কি !
৭| ১৪ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:২৪
অধীতি বলেছেন: হুমায়ুন আজাদের সব কিছু ভেঙ্গে পড়ে বইটা পড়তে পারেন। আপনার প্রেমটা জোশ ছিল তবে শেষটা সাদামাটা ভাবেই মানে সাধারনত যেটা হয় সেটাই হয়েছে।
১৪ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:৫৪
অপু তানভীর বলেছেন: হ্যা আমাদের প্রথম প্রেমের শুরুটা আসলেই চমৎকার ছিল । তবে শেষটা হয়েছিলো কী কারণে সেসব এখন আর ভাবি না ।
৮| ১৫ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:০৪
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি ভাগ্যবান।
১৬ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১:২৩
অপু তানভীর বলেছেন: এই লেখা পড়ে আমাকে ভাগ্যবান মনে হল !!
৯| ১৫ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:১৮
আখেনাটেন বলেছেন: ওএমজি........আপনি তো দেখছি বিশ্বপ্রেমিক........এরপর কি হলো.............নিশি কি তার ভালোবাসার শিশির মুখ খুলেছিল?
নাকি কাটা হাতই এখন স্মৃতি হয়ে নিশিদিন হানা দিয়ে যাচ্ছে........।
১৬ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১:২৫
অপু তানভীর বলেছেন: এই ঘটনা অনেক দিন আগের । হাত কাটার জায়গাটা এখনও সেই ঘটনা মনে করিয়ে দেয় । এর বেশি কিছু আসলে না । মনের ভেতরে আসলে কোন হানাফানা দিয়ে যাচ্ছে না । তাকে না পাওয়ার বিন্দু মাত্র দুঃখবোধ নেই । কারণ হয়তো তারপরে যে এসেছিলো সে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ন ছিল ।
১০| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:৪০
মিরোরডডল বলেছেন:
হুম, বলবেই তো সামনে হাত কেটে দেখাতে । বিশ্বাসের একটা ব্যাপার আছে নাহ
কারন আমিও যখন এরকম হাত কেটে রক্ত দিয়ে লেখা চিঠি পেয়েছিলাম, কখনও বিশ্বাস করিনি যে ছেলেটা সত্যিই এ কাজ করেছে । বলেছিলাম নিশ্চয়ই এটা মুরগীর রক্ত দিয়ে লেখা চিঠি , সো সিরিয়াসলি নেয়ার মানেই হয়না
তানভীর লেখা পড়ে এখন মনে হচ্ছে, কে জানে হয়তো সেও আসলেই কেটেছিল, বেচারা
১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:১৮
অপু তানভীর বলেছেন: আজই তাকে ফোন দিন । তার কাছে সরি বলুন । হাত কাটতে কিন্তু ব্যাথা লাগে । এতো সহজ না ব্যাপারটা !
১১| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:০০
মা.হাসান বলেছেন: আপনি মোটেই জেন্ডার ইকুয়ালিটিতে বিশ্বাসি না। প্রথম চাকু আপনার হাতে পড়েছিলো। বিশ্বাসি হলে ২য়বার চাকু অন্য কোথাও পড়তো । তাহলে আর আপনাকে পহেলা বৈশাখ আর ১৪ ফেব্রুয়ারি একা একা কাটাতে হতো না।
১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:২০
অপু তানভীর বলেছেন: না না এমনটা ভাবা ঠিক না । আসলে প্রেম শুরুর কদিন পরে কন্যা আমাকে একটা চিঠি লিখে পাঠিয়েছিলো, সেখানে সে যেভাবে রক্ত দিয়ে লিখেছিল আমি তার ধারে কাছেও যাই নি ।
আসলে আমার কপালে না, এই জন্য আমাকে একা একা কাটাইতে হইছে ।
১২| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:০৩
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: হায়রে, সিরিয়াল প্রেমিক!
১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:২১
অপু তানভীর বলেছেন: তখনকার আবেগ কিন্তু নির্ভেজাল ছিল !
১৩| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ ভোর ৪:০৪
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: আবার যখন 'সত্যিকার' ভাবে কারো প্রেমে পড়বেন, দেখবেন তখনকার আবেগও কত নির্ভেজাল!
১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:৪৬
অপু তানভীর বলেছেন: এখনকার আবেগ গুলো ভেজালের । তখন কেবল আবেগই আসতো এখন আবেগের সাথে আরো কত কিছু চলে আসে না চাইতেও ।
১৪| ১৪ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১০:২০
মনিরা সুলতানা বলেছেন: আপনার আবেগ নির্ভেজাল থাকলেও পাত্রী নির্ভেজাল ছিল না মনে হয়।
১৪ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১১:০৩
অপু তানভীর বলেছেন: আসলে তখন সে কি হয়েছিলো আর কেন হয়েছিলো সেটা আমি নিজেও সঠিক ভাবে বলতে পারি না ।
হয়তো তার দোষ ছিল কিংবা আমার দোষ । অনেক দিন আগের কথা ।
১৫| ২৬ শে মে, ২০২৩ ভোর ৪:৪৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: হুম, 'রক্ত দিয়ে লেখা চিঠি'র ভালোই প্রচলন ছিল মনে হয় এক সময়। কিন্তু তার পরেও এমন একটা 'রক্ত দিয়ে লেখা চিঠি' 'মিরোরডডল' এর মনে মোটেই ঠাঁই পেল না! কাটা দাগটা নিয়ে দেখছি শায়মা এর মনেও যথেষ্ট সন্দেহ রয়ে গেছে!
২৭ শে মে, ২০২৩ রাত ১১:২১
অপু তানভীর বলেছেন: এখন এসব নেই মোটেও । এখনকার ছেলে মেয়েরা বড় চালান হয়েগেছে ।
কাঁটা দাগটা এখনও রয়েছে আমার হাতে ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:১৬
শায়মা বলেছেন: এইটা কাঁটা দাগ?
নাকি শিরা দাগ???
যাইহোক আমার পান্তাবুড়ির হাড়ি হতে পান্তাভাত খাও ......